তিন দফা দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজধানীর কাকরাইলে অবস্থান নেন। আগের দিন প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে তাদের মিছিল পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এরপর দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা -সোহরাব আলম
দাবি আদায়ে ক্যাম্পাসে ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনে নামা শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার(১৫-০৫-২০২৫) আন্দোলনরত শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার পর এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিরি সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রইস উদ্দিন।
এ দিন বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বক্তব্যের সময় তিনি বলেন, ‘আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকারের দাবি নিয়ে এসেছি। সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের মদদে আমাদের ওপরে গতকাল বুধবার নির্বিচারে পুলিশ হামলা চালিয়েছে। এটি সম্পূর্ণ অরাজকতা ও অন্যায়।‘ ‘আমরা কারও বিরুদ্ধে এখানে কথা বলতে আসিনি, কোনো ষড়যন্ত্র করতেও আসিনি। দাবি আদায় না করে আমরা ঘরে ফিরবো না। যতক্ষণ দাবি মেনে না নেবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ শাটডাউন থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের এখান থেকে সরিয়ে দেয়ার কোনো পদক্ষেপ নেয়া হলে তা ভালো হবে না। আমার চোখের সামনে আমার কোনো শিক্ষার্থীকে কেউ আঘাত করতে পারবে না।’ প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস না আসা পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার কথা বলছেন আন্দোলনকারীরা। প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনের এলাকায় তারা দাবি আদায়ে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।
বুধবার রাতভর সড়কে অবস্থান করা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমবেত হতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৩০টি একতলা ও দোতলা বাসে করে শিক্ষার্থীরা আসেন কাকরাইল মোড়ে আসেন। এর আগে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদদীন ফেইসবুক লাইভে এসে আন্দোলনে যোগ দিতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান। তার ডাকে সাড়া দিয়ে শিক্ষকদের অন্তত পাঁচটি বাস আন্দোলনস্থলে আসে।
সড়ক অবরোধ, আশপাশে যানজটে ভোগান্তি
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার (বৃহস্পতিবার ১৫-০৫-২০২৫) স্বাভাবিক সময়ই রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যানজট তুলনামূলক বেশি থাকে। এর মধ্যে কাকরাইল মোড়ে সড়ক অবরোধ করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে। এতে আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কাকরাইল মসজিদের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করছেন। আন্দোলনে কাকরাইল গির্জার সামনের মোড় থেকে কাকরাইল মসজিদ মোড় হয়ে মৎস্য ভবন মোড় পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখা হয়েছে। এর ফলে কোনো যানবাহন কাকরাইল মোড় থেকে সরাসরি হেয়ার রোড দিয়ে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হয়ে বাংলামোটরের দিকে কিংবা মৎস্য ভবন মোড় দিয়ে শাহবাগ বা গুলিস্তানের দিকে যাতায়াত করতে পারছে না।
এর ফলে যানবাহনের চাপ বেড়েছে বীর উত্তম শামসুল আলম সড়ক, মগবাজার রোড, কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ, শহীদ নজরুল ইসলাম সড়ক, বীর উত্তম জিয়াউর রহমান সড়ক ও ভিআইপি রোডে। প্রতিটি সড়কে দীর্ঘক্ষণ যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে গাড়িগুলোকে। ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা জানিয়েছেন, কাকরাইলে সড়ক অবরোধের কারণে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত অফিসগামী লোক জনকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। দুপুরের পর থেকে যানজট আরও তীব্র হয়।
মালিবাগের উদ্দেশে মিরপুর ১১ নম্বর থেকে মেট্রোরেলে করে প্রেসক্লাবের সামনে নামেন আসাদুল ইসলাম। সেখান থেকে তিনি রিকশা নিয়েছিলেন গন্তব্যে যেতে। কিন্তু ভেতরের রাস্তায় রিকশায় তাকে আধা ঘণ্টার বেশি সময় যানজটে বসে থাকতে হয়। পরে রিকশা থেকে নেমে হাঁটা শুরু করেন তিনি। দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে কাকরাইল মোড়ে আসাদুল ইসলাম বলেন, প্রেসক্লাব থেকে রিকশাচালক প্রথমে সেগুনবাগিচা দিয়ে আসছিলেন। যানজট দেখে ভেতরের আরেকটি সড়ক দিয়ে আসার চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছু দূর এগিয়ে আবার যানজট আটকে পড়তে হয়। সেখানে প্রায় ৩০ মিনিট রিকশায় বসে ছিলেন। দেরি হচ্ছে দেখে নেমে হাঁটা শুরু করেছেন। কাকরাইল মোড় থেকে কিছু দূর হেঁটে আবার রিকশা নিতে হবে।
দুপুরে মগবাজার থেকে মতিঝিলের দিকে যাচ্ছিলেন রফিকুল ইসলাম নামের এক জন। তিনি বলেন, ‘মগবাজার থেকে কাকরাইল মোড় পৌঁছাতেই দেড় ঘণ্টা সময় লেগেছে। কতক্ষণে মতিঝিল যেতে পারবো, জানি না।’ ট্রাফিক পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, কাকরাইল মসজিদের সামনের সড়ক অবরোধ করায় আশপাশের সড়কে গাড়ির চাপ বেড়েছে। এতে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি যানজট তৈরি হয়েছে। ওই সড়কে চলাচলকারী গাড়িগুলোকে বিকল্প সড়কে তুলে দেয়া হচ্ছে। যানজট পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে চেষ্টা চলছে। আন্দোলনরত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলছেন, দাবি না মানা পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
তিন দফা দাবিতে এ আন্দোলন শুরু হয়। এগুলো হলো- ১. আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি কার্যকর করতে হবে। ২. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করেই অনুমোদন করতে হবে। ৩. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে। ‘পুলিশি হামলার’ অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার আরেকটি দাবি যুক্ত করেন আন্দোলনকারীরা।
তাদের নতুন দাবি হলো, গত বুধবার শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত দিতে হবে। প্রথম তিনটি দাবি নিয়ে বুধবার দুপুরে আন্দোলনকারীরা ক্যাম্পাস থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ও দপ্তর যমুনা অভিমুখে ‘লং মার্চ’ শুরু করেন। মিছিলটি গুলিস্তান গোলাপ শাহ মাজার, জিরো পয়েন্ট, সচিবালয়, শিক্ষা ভবন, হাইকোর্ট ও মৎস্য ভবন মোড়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়লেও তা উপেক্ষা করে কাকরাইল মসজিদের সামনে আসে। একপর্যায়ে মিছিলটি প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে এলে সেখানে পুলিশ টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।
পরে পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেই আলোচনা ফলপ্রসূ না হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা যমুনায় যান। তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে ‘অসদাচরণের’ অভিযোগ ওঠে। এ পরিস্থিতিতে রাত ৮টা থেকে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা কাকরাইল মসজিদ মোড় ও প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়ে আসছেন।
তিন দফা দাবিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাজধানীর কাকরাইলে অবস্থান নেন। আগের দিন প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে তাদের মিছিল পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এরপর দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা -সোহরাব আলম
বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫
দাবি আদায়ে ক্যাম্পাসে ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনে নামা শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার(১৫-০৫-২০২৫) আন্দোলনরত শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার পর এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিরি সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রইস উদ্দিন।
এ দিন বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বক্তব্যের সময় তিনি বলেন, ‘আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকারের দাবি নিয়ে এসেছি। সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের মদদে আমাদের ওপরে গতকাল বুধবার নির্বিচারে পুলিশ হামলা চালিয়েছে। এটি সম্পূর্ণ অরাজকতা ও অন্যায়।‘ ‘আমরা কারও বিরুদ্ধে এখানে কথা বলতে আসিনি, কোনো ষড়যন্ত্র করতেও আসিনি। দাবি আদায় না করে আমরা ঘরে ফিরবো না। যতক্ষণ দাবি মেনে না নেবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণাঙ্গ শাটডাউন থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের এখান থেকে সরিয়ে দেয়ার কোনো পদক্ষেপ নেয়া হলে তা ভালো হবে না। আমার চোখের সামনে আমার কোনো শিক্ষার্থীকে কেউ আঘাত করতে পারবে না।’ প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস না আসা পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার কথা বলছেন আন্দোলনকারীরা। প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনের এলাকায় তারা দাবি আদায়ে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।
বুধবার রাতভর সড়কে অবস্থান করা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সমবেত হতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ৩০টি একতলা ও দোতলা বাসে করে শিক্ষার্থীরা আসেন কাকরাইল মোড়ে আসেন। এর আগে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদদীন ফেইসবুক লাইভে এসে আন্দোলনে যোগ দিতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান। তার ডাকে সাড়া দিয়ে শিক্ষকদের অন্তত পাঁচটি বাস আন্দোলনস্থলে আসে।
সড়ক অবরোধ, আশপাশে যানজটে ভোগান্তি
সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার (বৃহস্পতিবার ১৫-০৫-২০২৫) স্বাভাবিক সময়ই রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে যানজট তুলনামূলক বেশি থাকে। এর মধ্যে কাকরাইল মোড়ে সড়ক অবরোধ করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে। এতে আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কাকরাইল মসজিদের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করছেন। আন্দোলনে কাকরাইল গির্জার সামনের মোড় থেকে কাকরাইল মসজিদ মোড় হয়ে মৎস্য ভবন মোড় পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখা হয়েছে। এর ফলে কোনো যানবাহন কাকরাইল মোড় থেকে সরাসরি হেয়ার রোড দিয়ে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হয়ে বাংলামোটরের দিকে কিংবা মৎস্য ভবন মোড় দিয়ে শাহবাগ বা গুলিস্তানের দিকে যাতায়াত করতে পারছে না।
এর ফলে যানবাহনের চাপ বেড়েছে বীর উত্তম শামসুল আলম সড়ক, মগবাজার রোড, কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউ, শহীদ নজরুল ইসলাম সড়ক, বীর উত্তম জিয়াউর রহমান সড়ক ও ভিআইপি রোডে। প্রতিটি সড়কে দীর্ঘক্ষণ যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে গাড়িগুলোকে। ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা জানিয়েছেন, কাকরাইলে সড়ক অবরোধের কারণে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত অফিসগামী লোক জনকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। দুপুরের পর থেকে যানজট আরও তীব্র হয়।
মালিবাগের উদ্দেশে মিরপুর ১১ নম্বর থেকে মেট্রোরেলে করে প্রেসক্লাবের সামনে নামেন আসাদুল ইসলাম। সেখান থেকে তিনি রিকশা নিয়েছিলেন গন্তব্যে যেতে। কিন্তু ভেতরের রাস্তায় রিকশায় তাকে আধা ঘণ্টার বেশি সময় যানজটে বসে থাকতে হয়। পরে রিকশা থেকে নেমে হাঁটা শুরু করেন তিনি। দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে কাকরাইল মোড়ে আসাদুল ইসলাম বলেন, প্রেসক্লাব থেকে রিকশাচালক প্রথমে সেগুনবাগিচা দিয়ে আসছিলেন। যানজট দেখে ভেতরের আরেকটি সড়ক দিয়ে আসার চেষ্টা করেন। কিন্তু কিছু দূর এগিয়ে আবার যানজট আটকে পড়তে হয়। সেখানে প্রায় ৩০ মিনিট রিকশায় বসে ছিলেন। দেরি হচ্ছে দেখে নেমে হাঁটা শুরু করেছেন। কাকরাইল মোড় থেকে কিছু দূর হেঁটে আবার রিকশা নিতে হবে।
দুপুরে মগবাজার থেকে মতিঝিলের দিকে যাচ্ছিলেন রফিকুল ইসলাম নামের এক জন। তিনি বলেন, ‘মগবাজার থেকে কাকরাইল মোড় পৌঁছাতেই দেড় ঘণ্টা সময় লেগেছে। কতক্ষণে মতিঝিল যেতে পারবো, জানি না।’ ট্রাফিক পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, কাকরাইল মসজিদের সামনের সড়ক অবরোধ করায় আশপাশের সড়কে গাড়ির চাপ বেড়েছে। এতে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি যানজট তৈরি হয়েছে। ওই সড়কে চলাচলকারী গাড়িগুলোকে বিকল্প সড়কে তুলে দেয়া হচ্ছে। যানজট পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে চেষ্টা চলছে। আন্দোলনরত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলছেন, দাবি না মানা পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
তিন দফা দাবিতে এ আন্দোলন শুরু হয়। এগুলো হলো- ১. আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি কার্যকর করতে হবে। ২. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করেই অনুমোদন করতে হবে। ৩. জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে। ‘পুলিশি হামলার’ অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার আরেকটি দাবি যুক্ত করেন আন্দোলনকারীরা।
তাদের নতুন দাবি হলো, গত বুধবার শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত দিতে হবে। প্রথম তিনটি দাবি নিয়ে বুধবার দুপুরে আন্দোলনকারীরা ক্যাম্পাস থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ও দপ্তর যমুনা অভিমুখে ‘লং মার্চ’ শুরু করেন। মিছিলটি গুলিস্তান গোলাপ শাহ মাজার, জিরো পয়েন্ট, সচিবালয়, শিক্ষা ভবন, হাইকোর্ট ও মৎস্য ভবন মোড়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়লেও তা উপেক্ষা করে কাকরাইল মসজিদের সামনে আসে। একপর্যায়ে মিছিলটি প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে এলে সেখানে পুলিশ টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।
পরে পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেই আলোচনা ফলপ্রসূ না হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা যমুনায় যান। তখন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে ‘অসদাচরণের’ অভিযোগ ওঠে। এ পরিস্থিতিতে রাত ৮টা থেকে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা কাকরাইল মসজিদ মোড় ও প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়ে আসছেন।