আমাদের প্রয়োজন একটি জাতীয় ঐক্যের: আলী রীয়াজ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কিছু প্রস্তাব মানা রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য ‘চ্যালেঞ্জিং’ বলে মনে করছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)। দলটির মতে, ‘চ্যালেঞ্জিং বিষয়গুলোতে’ ঐকমত্যে পৌঁছানো খুব কঠিন।বৃহস্পতিবার(১৫-০৫-২০২৫) জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয় বাসদ।
আলোচনার শুরুতে দলটির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, ‘প্রতিবেদনের কিছু বিষয় রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য চ্যালেঞ্জিং। সেগুলোতে ঐকমত্যে পৌঁছানো খুব দুরূহ ব্যাপার। সেগুলো বিরোধাত্মক অনেকটা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে।’
তিনি বলেন, ‘মৌলিক বিরোধগুলো বাদ রেখে কাছাকাছি ও আংশিক ঐকমত্য (যেখানে) আছে, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে (যেখানে) ঐকমত্য পৌঁছান যাবে, সেগুলো নিয়ে সামনে অগ্রসর হতে হবে।’
সংলাপের শুরুতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা যেন একটি জাতীয় সনদ তৈরি করতে পারি। সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার ক্ষেত্রে যেন সবাই মিলে ঐক্যের মাধ্যমে অগ্রসর হতে পারি। যে ঐক্যের মাধ্যমে একটি ফ্যাসিবাদী শাসনের শীর্ষ ব্যক্তি ও তার অনুসারীদের পলায়নে বাধ্য করেছি, তাতে যেন অটুট থাকি।’
বার বার ফ্যাসিবাদের উত্থান
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে যে নতুন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা দীর্ঘ সংগ্রামের ফল। জুলাই গণঅভ্যুত্থান মানুষের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ যেমন প্রকাশ করেছে, তেমনি প্রত্যাশাকেও প্রকাশ করেছে। মানুষ চান যেন বারবার বাংলাদেশে এমন ফ্যাসিবাদের উত্থান না ঘটে। যেন আমরা এমন একটি রাষ্ট্র ও ব্যবস্থা তৈরি করতে পারি, যেখানে সবার সমান অধিকার থাকবে, নাগরিকের অধিকার সুনিশ্চিত হবে, যেন আমরা ভিন্ন মতকে শুধু সহ্য করার পাশাপাশি শ্রদ্ধা করতে পারি। সে রকম রাষ্ট্র আমরা চাই।’
আলী রীয়াজ বলেন, ‘অনেকগুলো বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য আছে, পাশাপাশি ভিন্নমত আছে। সেটা অস্বাভাবিক নয়। প্রত্যোকটি রাজনৈতিক দল রাষ্ট্র গঠন ও পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে তাদের অবস্থানে থাকবেন, আদর্শে থাকবেন, পরিকল্পনার কথা বলবেন। পাশাপাশি আমাদের প্রয়োজন একটি জাতীয় ঐক্যের।’
বাসদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজের নেতৃত্বে বৈঠকে (সংলাপ) অংশনেন দলটির সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, কেন্দ্রীয় ফোরামের সদস্য নিখিল দাস, জনার্দন দত্ত নান্টু, শম্পা বসু, মনীষা চক্রবর্ত্তী, জুলফিকার আলী, আহসান হাবিব বুলবুল, খালেকুজ্জামান লিপন, আবু নাঈম খান বিপ্লব ও গাজীপুর জেলা কমিটির সদস্যসচিব রাহাত আহম্মেদ।
পরিবর্তনের আকাক্সক্ষা
বাসদ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘জাতির পরিবর্তনের আকাক্সক্ষা হলো- যেমন ছিল, যেমন চলছে- সেইভাবে বাংলাদেশ চলতে পারে না। নিশ্চয় কিছু না কিছু পরিবর্তন সাধন করতে হবে। পরিবর্তনের আকাক্সক্ষা নিয়ে গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে।’
রাজনৈতিক ঐকমত্যে জাতীয় সনদ তৈরির আশা প্রকাশ করে বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, ‘জাতীয় সনদে সবার অঙ্গীকারের জায়গায় আসত পারবো। যদিও আমাদের দেশের ইতিহাসে ঐকমত্য,
সনদ অনেক তৈরি হয়েছিল। কারণ সংবিধান মেনে গত ৫৪ বছরে কেউ দেশ পরিচালনা করেনি। সংবিধানে অনেক অসম্পূর্ণতা আছে।’
নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর তিন জোটের রূপরেখায় দেশ পরিচালনা করার কথা ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেটাও পরবর্তীতে রাষ্ট্র ক্ষমতা যাওয়া দলগুলো বাস্তবায়ন করেনি। ছাত্রদের ১০ দফা, শ্রমিকের পাঁচ দফা, কৃষকের ১০ দফা, নারীদের দফা- এগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গীকার ছিল, কিন্তু তা মানেননি।’
*চুন খেয়ে মুখ পুড়ে*
‘চুন খেয়ে মুখ পুড়ে গেলে, দই দেখলেও ভয় লাগে’- সেই প্রবাদ মনে করিয়ে দিয়ে বজলুর রশীদ বলেন, ‘এখন অঙ্গীকার যতই করি না কেন, মানসিকতার পরিবর্তন না হলে কতটুকু কার্যকর হবে তা নিয়ে প্রশ্ন থাকবে।’ তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গীকার বাস্তবায়নের জন্য গণতান্ত্রিক আন্দোলন, মূল্যবোধ ও চেতনা কতটুকু গড়ে তোলা সম্ভব হবে, তার ওপর নির্ভর করবে রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় গিয়ে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করবে কি না। সেজন্য গণতান্ত্রিক সংগ্রাম জারি রাখতে হবে।’
সংস্কার কমিশনগুলো মৌলিক কিছু বিষয় সামনে এনেছে উল্লেখ করে বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, ‘সেগুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা, মত বিনিময়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে, যেটা বিগত ৫৪ বছরে লক্ষ্য করিনি। সব রাজনৈতিক দলের মতামত জানার চেষ্টা ইতোপূর্বে পরিলক্ষিত হয়নি। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এটিই হলো অগ্রগতি। ভিন্নমত প্রকাশের স্বাধীনতা গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। সেটাই গণতন্ত্রের নীতি। আবার মৌলিক কিছু বিষয়ে আমাদের ঐকমত্য লাগবে। সেগুলো দেশ, জাতিকে অগ্রসর করে নিয়ে যাওয়ার জন্য।’
ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বে বৈঠকে অংশ নেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার।
* রাষ্ট্র পুনর্গঠন*
শুরুতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘দেশের মানুষের আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে অগ্রসর হতে হবে। যাতে করে ভবিষ্যতে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলোকে বাস্তবায়নের পথে ভূমিকা পালন করতে পারে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগ এক অর্থে বাংলাদেশের মানুষের আকক্সক্ষাকে প্রতিফলিত করা, ধারণ করা এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে আকাক্সক্ষার প্রকাশ ঘটেছে, তার সুনির্দিষ্ট রূপ দেয়া। সেই আশায় আমরা ৩৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেছি।’
তিনি বলেন, ‘কারণ রাষ্ট্র পুর্নগঠন কেবল কোনো দলের বিষয় নয়, কোনো ব্যক্তির বিষয় নয়, কোনো সংগঠনের বিষয় নয়, এটি জনগণের বিষয়। রাজনৈতিক দলগুলো তার নেতৃত্বে আছেন, সিভিল সোসাইটি তার অংশ হিসেবে আছেন, অগ্রণী ভূমিকায় আছেন, নাগরিকরা আছেন। আমরা আশাকরি প্রত্যোকটি রাজনৈতিক দল তার অবস্থানে থেকে জনগণের কাছে যাবেন। কিন্তু কিছু কিছু বিষয়ে ছাড় দিয়ে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আমরা যাতে অগ্রসর হতে পারি, সে বিষয়ে বিশেষভাবে মনোযোগ দেবেন।’
আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনার পর যে বিষয়গুলোতে কাছাকাছি আছি, সেগুলো নিয়ে গভীরভাবে দ্রুততার সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। আমরা যেমন ঐতিহাসিক মুহূর্তে আছি, তেমনি সময় দীর্ঘ নয়, আমাদেরকে দ্রুততার সঙ্গে কাজকে এগিয়ে নিতে হবে।’
আমাদের প্রয়োজন একটি জাতীয় ঐক্যের: আলী রীয়াজ
বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কিছু প্রস্তাব মানা রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য ‘চ্যালেঞ্জিং’ বলে মনে করছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)। দলটির মতে, ‘চ্যালেঞ্জিং বিষয়গুলোতে’ ঐকমত্যে পৌঁছানো খুব কঠিন।বৃহস্পতিবার(১৫-০৫-২০২৫) জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপে অংশ নেয় বাসদ।
আলোচনার শুরুতে দলটির সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, ‘প্রতিবেদনের কিছু বিষয় রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য চ্যালেঞ্জিং। সেগুলোতে ঐকমত্যে পৌঁছানো খুব দুরূহ ব্যাপার। সেগুলো বিরোধাত্মক অনেকটা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে।’
তিনি বলেন, ‘মৌলিক বিরোধগুলো বাদ রেখে কাছাকাছি ও আংশিক ঐকমত্য (যেখানে) আছে, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে (যেখানে) ঐকমত্য পৌঁছান যাবে, সেগুলো নিয়ে সামনে অগ্রসর হতে হবে।’
সংলাপের শুরুতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা যেন একটি জাতীয় সনদ তৈরি করতে পারি। সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার ক্ষেত্রে যেন সবাই মিলে ঐক্যের মাধ্যমে অগ্রসর হতে পারি। যে ঐক্যের মাধ্যমে একটি ফ্যাসিবাদী শাসনের শীর্ষ ব্যক্তি ও তার অনুসারীদের পলায়নে বাধ্য করেছি, তাতে যেন অটুট থাকি।’
বার বার ফ্যাসিবাদের উত্থান
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে যে নতুন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা দীর্ঘ সংগ্রামের ফল। জুলাই গণঅভ্যুত্থান মানুষের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ যেমন প্রকাশ করেছে, তেমনি প্রত্যাশাকেও প্রকাশ করেছে। মানুষ চান যেন বারবার বাংলাদেশে এমন ফ্যাসিবাদের উত্থান না ঘটে। যেন আমরা এমন একটি রাষ্ট্র ও ব্যবস্থা তৈরি করতে পারি, যেখানে সবার সমান অধিকার থাকবে, নাগরিকের অধিকার সুনিশ্চিত হবে, যেন আমরা ভিন্ন মতকে শুধু সহ্য করার পাশাপাশি শ্রদ্ধা করতে পারি। সে রকম রাষ্ট্র আমরা চাই।’
আলী রীয়াজ বলেন, ‘অনেকগুলো বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য আছে, পাশাপাশি ভিন্নমত আছে। সেটা অস্বাভাবিক নয়। প্রত্যোকটি রাজনৈতিক দল রাষ্ট্র গঠন ও পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে তাদের অবস্থানে থাকবেন, আদর্শে থাকবেন, পরিকল্পনার কথা বলবেন। পাশাপাশি আমাদের প্রয়োজন একটি জাতীয় ঐক্যের।’
বাসদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজের নেতৃত্বে বৈঠকে (সংলাপ) অংশনেন দলটির সহকারী সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন, কেন্দ্রীয় ফোরামের সদস্য নিখিল দাস, জনার্দন দত্ত নান্টু, শম্পা বসু, মনীষা চক্রবর্ত্তী, জুলফিকার আলী, আহসান হাবিব বুলবুল, খালেকুজ্জামান লিপন, আবু নাঈম খান বিপ্লব ও গাজীপুর জেলা কমিটির সদস্যসচিব রাহাত আহম্মেদ।
পরিবর্তনের আকাক্সক্ষা
বাসদ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘জাতির পরিবর্তনের আকাক্সক্ষা হলো- যেমন ছিল, যেমন চলছে- সেইভাবে বাংলাদেশ চলতে পারে না। নিশ্চয় কিছু না কিছু পরিবর্তন সাধন করতে হবে। পরিবর্তনের আকাক্সক্ষা নিয়ে গণঅভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে।’
রাজনৈতিক ঐকমত্যে জাতীয় সনদ তৈরির আশা প্রকাশ করে বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, ‘জাতীয় সনদে সবার অঙ্গীকারের জায়গায় আসত পারবো। যদিও আমাদের দেশের ইতিহাসে ঐকমত্য,
সনদ অনেক তৈরি হয়েছিল। কারণ সংবিধান মেনে গত ৫৪ বছরে কেউ দেশ পরিচালনা করেনি। সংবিধানে অনেক অসম্পূর্ণতা আছে।’
নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর তিন জোটের রূপরেখায় দেশ পরিচালনা করার কথা ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সেটাও পরবর্তীতে রাষ্ট্র ক্ষমতা যাওয়া দলগুলো বাস্তবায়ন করেনি। ছাত্রদের ১০ দফা, শ্রমিকের পাঁচ দফা, কৃষকের ১০ দফা, নারীদের দফা- এগুলো রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গীকার ছিল, কিন্তু তা মানেননি।’
*চুন খেয়ে মুখ পুড়ে*
‘চুন খেয়ে মুখ পুড়ে গেলে, দই দেখলেও ভয় লাগে’- সেই প্রবাদ মনে করিয়ে দিয়ে বজলুর রশীদ বলেন, ‘এখন অঙ্গীকার যতই করি না কেন, মানসিকতার পরিবর্তন না হলে কতটুকু কার্যকর হবে তা নিয়ে প্রশ্ন থাকবে।’ তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর অঙ্গীকার বাস্তবায়নের জন্য গণতান্ত্রিক আন্দোলন, মূল্যবোধ ও চেতনা কতটুকু গড়ে তোলা সম্ভব হবে, তার ওপর নির্ভর করবে রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় গিয়ে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করবে কি না। সেজন্য গণতান্ত্রিক সংগ্রাম জারি রাখতে হবে।’
সংস্কার কমিশনগুলো মৌলিক কিছু বিষয় সামনে এনেছে উল্লেখ করে বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, ‘সেগুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা, মত বিনিময়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে, যেটা বিগত ৫৪ বছরে লক্ষ্য করিনি। সব রাজনৈতিক দলের মতামত জানার চেষ্টা ইতোপূর্বে পরিলক্ষিত হয়নি। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এটিই হলো অগ্রগতি। ভিন্নমত প্রকাশের স্বাধীনতা গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। সেটাই গণতন্ত্রের নীতি। আবার মৌলিক কিছু বিষয়ে আমাদের ঐকমত্য লাগবে। সেগুলো দেশ, জাতিকে অগ্রসর করে নিয়ে যাওয়ার জন্য।’
ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বে বৈঠকে অংশ নেন কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার।
* রাষ্ট্র পুনর্গঠন*
শুরুতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘দেশের মানুষের আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে দেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে অগ্রসর হতে হবে। যাতে করে ভবিষ্যতে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলোকে বাস্তবায়নের পথে ভূমিকা পালন করতে পারে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগ এক অর্থে বাংলাদেশের মানুষের আকক্সক্ষাকে প্রতিফলিত করা, ধারণ করা এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে আকাক্সক্ষার প্রকাশ ঘটেছে, তার সুনির্দিষ্ট রূপ দেয়া। সেই আশায় আমরা ৩৩টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেছি।’
তিনি বলেন, ‘কারণ রাষ্ট্র পুর্নগঠন কেবল কোনো দলের বিষয় নয়, কোনো ব্যক্তির বিষয় নয়, কোনো সংগঠনের বিষয় নয়, এটি জনগণের বিষয়। রাজনৈতিক দলগুলো তার নেতৃত্বে আছেন, সিভিল সোসাইটি তার অংশ হিসেবে আছেন, অগ্রণী ভূমিকায় আছেন, নাগরিকরা আছেন। আমরা আশাকরি প্রত্যোকটি রাজনৈতিক দল তার অবস্থানে থেকে জনগণের কাছে যাবেন। কিন্তু কিছু কিছু বিষয়ে ছাড় দিয়ে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে আমরা যাতে অগ্রসর হতে পারি, সে বিষয়ে বিশেষভাবে মনোযোগ দেবেন।’
আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনার পর যে বিষয়গুলোতে কাছাকাছি আছি, সেগুলো নিয়ে গভীরভাবে দ্রুততার সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। আমরা যেমন ঐতিহাসিক মুহূর্তে আছি, তেমনি সময় দীর্ঘ নয়, আমাদেরকে দ্রুততার সঙ্গে কাজকে এগিয়ে নিতে হবে।’