ভবিষ্যতে কোনো সরকারের মদদে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে যাতে কেউ গুমের শিকার না হন, সেজন্য স্থায়ী কমিশন গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, আগামী এক মাসের মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি আইন প্রণয়ন করা হবে।
সোমবার,(১৬ জুন ২০২৬) সচিবালয়ে জাতিসংঘের গুমবিষয়ক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে আইন উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, ‘বর্তমান গুম কমিশন যেখানে কাজ শেষ করবে, পরবর্তী কমিশন সেখান থেকে কাজ শুরু করবে। গুম-সংক্রান্ত কমিশন গঠন ও আইন তৈরির উদ্যোগ নেয়ায় জাতিসংঘের প্রতিনিধিদল আমাদের প্রশংসা করেছেন। এ বিষয়ে তারা আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে চেয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘এই আইন হলে যে কোনো সরকারের জন্য কাউকে গুম করা অনেক রিস্ক ও কষ্টসাধ্য হবে। জুলাইয়ে গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তির আগে আরও ভালো কিছু কাজ করা হবে।’
সাংবাদিকদের একজন বলেন, প্রস্তাবিত আইনটি তো পরবর্তী সরকার বাতিল করতে পারে। তখন আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘বিএনপি, জামায়াত নেতারা নিজেই গুমের শিকার হয়েছেন। এনসিপি ও ইসলামী দলগুলো গুমের ব্যাপারে সোচ্চার রয়েছেন। যারাই ক্ষমতায় আসুক, এমন কিছু করবে বলে মনে হয় না।’
আইন উপদেষ্টা বলেন, অতীতে যারা গুমের শিকার হয়েছেন, তাদের ‘মিসিং সার্টিফিকেট’ দিতে আইনে বিধান যুক্ত করা যায় কিনা, তা চিন্তাভাবনা করছে সরকার।
শিক্ষার্থী-জনতার প্রবল আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে ‘গুম ও আয়নাঘরের’ বিষয়টি আবার সামনে আসে। অন্তর্বর্তী সরকার
দায়িত্বে এসে এসব ঘটনা তদন্তে গত ২৭ আগস্ট অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের গুম তদন্ত কমিশন গঠন করে। এই কমিশন গত ৪ জুন দ্বিতীয় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন জমা দেয়, যেখানে ভয়াবহ ও নিষ্ঠুর নির্যাতনের বর্ণনা উঠে এসেছে। কয়েক দফা বাড়ানোর পর এই কমিশনের মেয়াদ ৩০ জুন ঠিক করা হয়েছে।
গুম প্রতিরোধ ও অভিযোগ নিষ্পত্তিতে বাংলাদেশকে আরও সহযোগিতা করবে জাতিসংঘ
গুম প্রতিরোধ ও অভিযোগ নিষ্পত্তিতে বাংলাদেশকে আরও সহযোগিতা করবে জাতিসংঘ। ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিকীর সঙ্গে জাতিসংঘের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপের (ডব্লিউজিইআইডি) সদস্যদের বৈঠকে এমন আশ্বাস দেয়া হয়। সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশের গুমের ঘটনা মোকাবিলায় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে জাতিসংঘ। বিশেষ করে গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদ ‘ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন ফর দ্য প্রটেকশন অব অল পারসনস ফ্রম এনফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স (আইসিপিপিইডি)’ -এ বাংলাদেশের সম্পৃক্ততাকে স্বাগত জানিয়েছে সংস্থাটি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সোমবার ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব মো. রুহুল আলম সিদ্দিকীর সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন জাতিসংঘের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ (ডব্লিউজিইআইডি)-এর ভাইস-চেয়ারপারসন গ্রাজিনা বারানোভস্কা ও সদস্য আনা লোরেনা দেলগাদিলো পেরেজ।
বৈঠকে ডব্লিউজিইআইডির প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, তারা ১৫ থেকে আগামী ১৯ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশ সফরে রয়েছেন। এ সময় গুমবিষয়ক বাস্তব চিত্র ও সরকারি উদ্যোগ পর্যবেক্ষণ করছেন।
বৈঠকে জাতিসংঘের কর্মকর্তারা গুম বিষয়ক তদন্ত কমিশন (সিওআই)-এর কার্যক্রম ও প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেন। ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব মানবাধিকার সমুন্নত রাখা, সুরক্ষা এবং গুমের শিকারদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সরকারের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বাংলাদেশের গৃহীত পদক্ষেপগুলো সফলভাবে বাস্তবায়নে জাতিসংঘের অব্যাহত সমর্থন ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা কামনা করেন।
এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ আছে
জাতিসংঘের বলপূর্বক গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপের ভাইস-চেয়ারম্যান গ্রাজিনা বারানোস্কা বলেছেন, ঢাকা জাতিসংঘের গুম সনদে স্বাক্ষর করলেও এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। এ সংকট কাটানোর সব থেকে সহজ ও দ্রুততর উপায় হচ্ছে, গুমের শিকার পরিবারগুলোর কথা শোনা। ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিকীর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বারানোস্কা বলেন, গুমবিষয়ক সনদ স্বাক্ষরের পরে আমরা বাংলাদেশে এসেছি। সফরটি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের কাছে ভুক্তভোগীদের সহযোগিতা করাই আসল বিষয়। এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। এখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ বাড়াতে হবে।
ওয়ার্কিং গ্রুপের অন্য এক সদস্য আনা লোরেনা ডেলগাদিলো পেরেজ বলেন, আমরা সরকার, সুশীল সমাজ, গুমের ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে চেষ্টা করছি। ভুক্তভোগীদের সহযোগিতার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতেই এখানে এসেছি। যারা গুম হয়েছে, তাদের বিচারের বিষয়টিও আলোচনা করছি।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপের দুই সদস্যের প্রতিনিধিদল গতকাল রোববার চার দিনের সফরে ঢাকায় এসেছে।
সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫
ভবিষ্যতে কোনো সরকারের মদদে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে যাতে কেউ গুমের শিকার না হন, সেজন্য স্থায়ী কমিশন গঠন করা হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, আগামী এক মাসের মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি আইন প্রণয়ন করা হবে।
সোমবার,(১৬ জুন ২০২৬) সচিবালয়ে জাতিসংঘের গুমবিষয়ক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে আইন উপদেষ্টা সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
আসিফ নজরুল বলেন, ‘বর্তমান গুম কমিশন যেখানে কাজ শেষ করবে, পরবর্তী কমিশন সেখান থেকে কাজ শুরু করবে। গুম-সংক্রান্ত কমিশন গঠন ও আইন তৈরির উদ্যোগ নেয়ায় জাতিসংঘের প্রতিনিধিদল আমাদের প্রশংসা করেছেন। এ বিষয়ে তারা আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করতে চেয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘এই আইন হলে যে কোনো সরকারের জন্য কাউকে গুম করা অনেক রিস্ক ও কষ্টসাধ্য হবে। জুলাইয়ে গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তির আগে আরও ভালো কিছু কাজ করা হবে।’
সাংবাদিকদের একজন বলেন, প্রস্তাবিত আইনটি তো পরবর্তী সরকার বাতিল করতে পারে। তখন আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘বিএনপি, জামায়াত নেতারা নিজেই গুমের শিকার হয়েছেন। এনসিপি ও ইসলামী দলগুলো গুমের ব্যাপারে সোচ্চার রয়েছেন। যারাই ক্ষমতায় আসুক, এমন কিছু করবে বলে মনে হয় না।’
আইন উপদেষ্টা বলেন, অতীতে যারা গুমের শিকার হয়েছেন, তাদের ‘মিসিং সার্টিফিকেট’ দিতে আইনে বিধান যুক্ত করা যায় কিনা, তা চিন্তাভাবনা করছে সরকার।
শিক্ষার্থী-জনতার প্রবল আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে ‘গুম ও আয়নাঘরের’ বিষয়টি আবার সামনে আসে। অন্তর্বর্তী সরকার
দায়িত্বে এসে এসব ঘটনা তদন্তে গত ২৭ আগস্ট অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের গুম তদন্ত কমিশন গঠন করে। এই কমিশন গত ৪ জুন দ্বিতীয় অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন জমা দেয়, যেখানে ভয়াবহ ও নিষ্ঠুর নির্যাতনের বর্ণনা উঠে এসেছে। কয়েক দফা বাড়ানোর পর এই কমিশনের মেয়াদ ৩০ জুন ঠিক করা হয়েছে।
গুম প্রতিরোধ ও অভিযোগ নিষ্পত্তিতে বাংলাদেশকে আরও সহযোগিতা করবে জাতিসংঘ
গুম প্রতিরোধ ও অভিযোগ নিষ্পত্তিতে বাংলাদেশকে আরও সহযোগিতা করবে জাতিসংঘ। ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিকীর সঙ্গে জাতিসংঘের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপের (ডব্লিউজিইআইডি) সদস্যদের বৈঠকে এমন আশ্বাস দেয়া হয়। সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে বাংলাদেশের গুমের ঘটনা মোকাবিলায় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে জাতিসংঘ। বিশেষ করে গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদ ‘ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন ফর দ্য প্রটেকশন অব অল পারসনস ফ্রম এনফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স (আইসিপিপিইডি)’ -এ বাংলাদেশের সম্পৃক্ততাকে স্বাগত জানিয়েছে সংস্থাটি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, সোমবার ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব মো. রুহুল আলম সিদ্দিকীর সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেন জাতিসংঘের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপ (ডব্লিউজিইআইডি)-এর ভাইস-চেয়ারপারসন গ্রাজিনা বারানোভস্কা ও সদস্য আনা লোরেনা দেলগাদিলো পেরেজ।
বৈঠকে ডব্লিউজিইআইডির প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, তারা ১৫ থেকে আগামী ১৯ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশ সফরে রয়েছেন। এ সময় গুমবিষয়ক বাস্তব চিত্র ও সরকারি উদ্যোগ পর্যবেক্ষণ করছেন।
বৈঠকে জাতিসংঘের কর্মকর্তারা গুম বিষয়ক তদন্ত কমিশন (সিওআই)-এর কার্যক্রম ও প্রতিশ্রুতির প্রশংসা করেন। ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব মানবাধিকার সমুন্নত রাখা, সুরক্ষা এবং গুমের শিকারদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সরকারের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বাংলাদেশের গৃহীত পদক্ষেপগুলো সফলভাবে বাস্তবায়নে জাতিসংঘের অব্যাহত সমর্থন ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা কামনা করেন।
এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ আছে
জাতিসংঘের বলপূর্বক গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপের ভাইস-চেয়ারম্যান গ্রাজিনা বারানোস্কা বলেছেন, ঢাকা জাতিসংঘের গুম সনদে স্বাক্ষর করলেও এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। এ সংকট কাটানোর সব থেকে সহজ ও দ্রুততর উপায় হচ্ছে, গুমের শিকার পরিবারগুলোর কথা শোনা। ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব রুহুল আলম সিদ্দিকীর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বারানোস্কা বলেন, গুমবিষয়ক সনদ স্বাক্ষরের পরে আমরা বাংলাদেশে এসেছি। সফরটি গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের কাছে ভুক্তভোগীদের সহযোগিতা করাই আসল বিষয়। এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। এখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ বাড়াতে হবে।
ওয়ার্কিং গ্রুপের অন্য এক সদস্য আনা লোরেনা ডেলগাদিলো পেরেজ বলেন, আমরা সরকার, সুশীল সমাজ, গুমের ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে চেষ্টা করছি। ভুক্তভোগীদের সহযোগিতার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতেই এখানে এসেছি। যারা গুম হয়েছে, তাদের বিচারের বিষয়টিও আলোচনা করছি।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের গুমবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপের দুই সদস্যের প্রতিনিধিদল গতকাল রোববার চার দিনের সফরে ঢাকায় এসেছে।