৪৪ হাজারের বেশি কন্টেইনার জমলেও বন্দরের কাজে তেমন প্রভাব পড়েনি : কর্তৃপক্ষ
চট্টগ্রাম বন্দরে একের পর এক কন্টেইনার জট ক্রমান্বয়ে স্বাভাভিক হচ্ছে। ঈদুল আজহার ছুটি শেষে বন্দরের কার্যক্রম চলতে থাকায় দু’দিনের মধ্যে কন্টেইনার জট পরিস্থিতি আর থাকবে না বলে জানা গেছে। এর আগে ঈদুল আজহার টানা সরকারি ছুটিতে খালাস ঠিকমতো না হওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরে প্রায় ৪৫ হাজার কন্টেইনারের জট তৈরি হয়েছে। তবে ছুটি শেষে জাহাজ ও কন্টেইনার হ্যান্ডলিং এবং খালাস আগের নিয়মে ফিরে যাচ্ছে। বন্দরকেন্দ্রিক শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি কন্টেইনার ডিপোগুলোতে পুরোপুরি কার্যক্রম শুরুর পর বন্দর থেকে আমদানি কন্টেইনার ডেলিভারি এবং রপ্তানি কন্টেইনার প্রবেশের হার বেড়েছে।
বন্দরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২৪ ঘণ্টায় তিন হাজারেরও বেশি আমদানি কন্টেইনার বন্দর থেকে ডেলিভারি হয়েছে। এ গতি অব্যাহত থাকলে সর্বোচ্চ ক্রমান্বয়ে কন্টেইনার জট পরিস্থিতি আর থাকবে না। বন্দরের সার্বিক কার্যক্রমও স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের অভ্যন্তরে ৫৩ হাজার ৫১৮ টিইইউস (প্রতিটি ২০ ফুট দৈর্ঘ্যের একক হিসেবে) কন্টেইনার রাখার জায়গা আছে। তবে ৪০ হাজার টিইইউসের বেশি কন্টেইনার ডেলিভারির জন্য বন্দরের ভেতরে অপেক্ষমান থাকলে স্বাভাবিক কার্যক্রমে প্রভাব পড়ে এবং দ্রুত জট পরিস্থিতি তৈরি হয়। গতকাল রোববার কর্মদিবস শুরুর প্রথম দিনেই পুরোদমে ডেলিভারি শুরু হয়েছে। আইসিডিগুলো থেকেও কন্টেইনার আসছে।
ডেলিভারি রেট বেড়েছে। সোমবার,(১৬ জুন ২০২৬) ও পুরোদমে কার্যক্রম চলছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্যানুযায়ী, ছুটি শেষে খোলার প্রথমদিন গতকাল রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত বন্দরের অভ্যন্তরে আমদানি-রপ্তানি পণ্যবোঝাই ও খালিসহ মোট কন্টেইনার ছিল ৪৪ হাজার ৫৪৮ টিইইউস (প্রতিটি ২০ ফুট দৈর্ঘ্যেও একক হিসেবে)। সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বন্দর থেকে ডেলিভারি হয়েছে ২৪৩৬ টিইইউস কন্টেইনার। জেটিতে ১০টি জাহাজ থেকে কন্টেইনার খালাস চলছিল। জাহাজগুলোতে মোট ৪২০০ টিইইউস কন্টেইনার আছে।
এছাড়া জেটিতে প্রবেশের অপেক্ষায় বন্দরের বর্হিনোঙ্গরে অপেক্ষমান আছে আরও ১০টি জাহাজ, যাতে কন্টেইনার আছে ১০ হাজার টিইইউস। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার ও মেরিন) ক্যাপ্টেন আহমেদ আমিন আবদুল্লাহ বলেন, সরকারি ছুটির শেষদিন অর্থাৎ গত শনিবার থেকেই বন্দওে কাজের গতি বেড়েছে। স্টেকহোল্ডাররা সবাই কাজে যোগ দিয়েছেন, সবার কাছ থেকে ভালো সাড়া পাচ্ছি।
জানা গেছে, ঈদুল আজহা উপলক্ষে গত ৫ জুন থেকে সরকারি ছুটি শুরু হয়, যা ১৪ জুন পর্যন্ত টানা ১০ দিন ছিল। এত দীর্ঘ ছুটির কারণে বন্দরে অপারেশনাল কার্যক্রমে অচলাবস্থা তৈরি এবং আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে মারাত্মক প্রভাবের আশংকা করে আসছিলেন বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা। এ আশংকাকে আমলে নিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ ঈদুল আজহার টানা ছুটিতে সম্ভাব্য অচলাবস্থা মোকাবিলায় ১০টি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
এ সিদ্ধান্তের আলোকে চট্টগ্রাম বন্দরে শুধুমাত্র ঈদের দিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ ছিল। কিন্তু এরপর থেকে আগের মতোই ২৪ ঘণ্টা সচল আছে বন্দর। তবে ছুটিতে কলকারখানা বন্ধ থাকায় এবং বেসরকারি ডিপোগুলোতে শ্রমিক সংকটের কারণে কন্টেইনার ডেলিভারির হার ‘অস্বাভাবিক’ কমে গিয়েছিল।
এতে কন্টেইনার খালাসের জন্য নোঙ্গর করা জাহাজকে জেটিতে অতিরিক্ত একদিন অপেক্ষা করতে হচ্ছিল। বন্দর কর্মকর্তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, সরকারি ছুটি শুরুর দিন গত ৫ জুন বন্দরে কন্টেইনার ডেলিভারি হয়েছিল ৪ হাজার ১২২ টিইইউস। এদিন জাহাজে রপ্তানি কন্টেইনার তোলা হয়েছিল ৯ হাজার ৭২০ টিইইউস
আর আমদানি কন্টেইনার জাহাজ থেকে নামানো হয়েছিল ৫ হাজার ৪১১ টিইইউস। কিন্তু ঈদুল আজহার আগের দিন ৬ জুন থেকে পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকে। এদিন মাত্র ৫২১ টিইইউস কন্টেইনার ডেলিভারি হয়। ঈদের দিন ৭ জুন বিকেল ৪টা থেকে অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু হলেও বন্দর থেকে কোনো কন্টেইনার ডেলিভারি হয়নি। তবে কন্টেইনার জাহাজ থেকে ডেলিভারি হয় ৩০৮ টিইইউস। ঈদের পরদিন ৮ জুনও কোনো কন্টেইনার ডেলিভারি হয়নি। ৯ জুন ৪৩১ টিইইউস, ১০ জুন ১ হাজার ৩৮১ টিইইউস, ১১ জুন ১ হাজার ৭৮১ টিইইউস ডেলিভারি হয়।
ঈদের ছুটিতে জাহাজ থেকে কন্টেইনার খালাসের পরিমাণও কমে যায়। স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন আমদানি কন্টেইনার নামানো হয় ৫ হাজারের মতো। কিন্তু ৫ জুন থেকে ১০ জুন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৫৪৪ টিইইউস এবং সর্বনিম্ন ২ হাজার ৩১১ ?টিইইউস আমদানি কন্টেইনার জাহাজ থেকে খালাস হয়। টানা ১০ দিনের ঈদের ছুটির শেষ দিন গত শনিবার (১৪ জুন) সকাল ৮টা পর্যন্ত বন্দরের ইয়ার্ডে জমে থাকা কন্টেইনারের পরিমাণ ছিল ৪২ হাজার ৪১৬ টিইইউস। এর পরের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ডেলিভারি বাদে আরও দুই হাজার কন্টেইনার জমা হয়। এ হিসেবে বন্দরের ধারণক্ষমতার ৮০ শতাংশ জায়গায় কন্টেইনার জমে গেছে।
ক্যাপ্টেন আহমেদ আমিন আবদুল্লাহ বলেন, সারাদিন বেশ গতিতে ডেলিভারি হচ্ছে। তবে ৪৪ হাজারের বেশি কন্টেইনার জমলেও বন্দরের কাজে তেমন প্রভাব পড়েনি। এখন যেভাবে কাজের গতি বেড়েছে, এই জটটাও আশা করছি আর থাকবে না।
৪৪ হাজারের বেশি কন্টেইনার জমলেও বন্দরের কাজে তেমন প্রভাব পড়েনি : কর্তৃপক্ষ
সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫
চট্টগ্রাম বন্দরে একের পর এক কন্টেইনার জট ক্রমান্বয়ে স্বাভাভিক হচ্ছে। ঈদুল আজহার ছুটি শেষে বন্দরের কার্যক্রম চলতে থাকায় দু’দিনের মধ্যে কন্টেইনার জট পরিস্থিতি আর থাকবে না বলে জানা গেছে। এর আগে ঈদুল আজহার টানা সরকারি ছুটিতে খালাস ঠিকমতো না হওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরে প্রায় ৪৫ হাজার কন্টেইনারের জট তৈরি হয়েছে। তবে ছুটি শেষে জাহাজ ও কন্টেইনার হ্যান্ডলিং এবং খালাস আগের নিয়মে ফিরে যাচ্ছে। বন্দরকেন্দ্রিক শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং বেসরকারি কন্টেইনার ডিপোগুলোতে পুরোপুরি কার্যক্রম শুরুর পর বন্দর থেকে আমদানি কন্টেইনার ডেলিভারি এবং রপ্তানি কন্টেইনার প্রবেশের হার বেড়েছে।
বন্দরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২৪ ঘণ্টায় তিন হাজারেরও বেশি আমদানি কন্টেইনার বন্দর থেকে ডেলিভারি হয়েছে। এ গতি অব্যাহত থাকলে সর্বোচ্চ ক্রমান্বয়ে কন্টেইনার জট পরিস্থিতি আর থাকবে না। বন্দরের সার্বিক কার্যক্রমও স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরের অভ্যন্তরে ৫৩ হাজার ৫১৮ টিইইউস (প্রতিটি ২০ ফুট দৈর্ঘ্যের একক হিসেবে) কন্টেইনার রাখার জায়গা আছে। তবে ৪০ হাজার টিইইউসের বেশি কন্টেইনার ডেলিভারির জন্য বন্দরের ভেতরে অপেক্ষমান থাকলে স্বাভাবিক কার্যক্রমে প্রভাব পড়ে এবং দ্রুত জট পরিস্থিতি তৈরি হয়। গতকাল রোববার কর্মদিবস শুরুর প্রথম দিনেই পুরোদমে ডেলিভারি শুরু হয়েছে। আইসিডিগুলো থেকেও কন্টেইনার আসছে।
ডেলিভারি রেট বেড়েছে। সোমবার,(১৬ জুন ২০২৬) ও পুরোদমে কার্যক্রম চলছে। বন্দর কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্যানুযায়ী, ছুটি শেষে খোলার প্রথমদিন গতকাল রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত বন্দরের অভ্যন্তরে আমদানি-রপ্তানি পণ্যবোঝাই ও খালিসহ মোট কন্টেইনার ছিল ৪৪ হাজার ৫৪৮ টিইইউস (প্রতিটি ২০ ফুট দৈর্ঘ্যেও একক হিসেবে)। সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বন্দর থেকে ডেলিভারি হয়েছে ২৪৩৬ টিইইউস কন্টেইনার। জেটিতে ১০টি জাহাজ থেকে কন্টেইনার খালাস চলছিল। জাহাজগুলোতে মোট ৪২০০ টিইইউস কন্টেইনার আছে।
এছাড়া জেটিতে প্রবেশের অপেক্ষায় বন্দরের বর্হিনোঙ্গরে অপেক্ষমান আছে আরও ১০টি জাহাজ, যাতে কন্টেইনার আছে ১০ হাজার টিইইউস। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার ও মেরিন) ক্যাপ্টেন আহমেদ আমিন আবদুল্লাহ বলেন, সরকারি ছুটির শেষদিন অর্থাৎ গত শনিবার থেকেই বন্দওে কাজের গতি বেড়েছে। স্টেকহোল্ডাররা সবাই কাজে যোগ দিয়েছেন, সবার কাছ থেকে ভালো সাড়া পাচ্ছি।
জানা গেছে, ঈদুল আজহা উপলক্ষে গত ৫ জুন থেকে সরকারি ছুটি শুরু হয়, যা ১৪ জুন পর্যন্ত টানা ১০ দিন ছিল। এত দীর্ঘ ছুটির কারণে বন্দরে অপারেশনাল কার্যক্রমে অচলাবস্থা তৈরি এবং আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে মারাত্মক প্রভাবের আশংকা করে আসছিলেন বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা। এ আশংকাকে আমলে নিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ ঈদুল আজহার টানা ছুটিতে সম্ভাব্য অচলাবস্থা মোকাবিলায় ১০টি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
এ সিদ্ধান্তের আলোকে চট্টগ্রাম বন্দরে শুধুমাত্র ঈদের দিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ ছিল। কিন্তু এরপর থেকে আগের মতোই ২৪ ঘণ্টা সচল আছে বন্দর। তবে ছুটিতে কলকারখানা বন্ধ থাকায় এবং বেসরকারি ডিপোগুলোতে শ্রমিক সংকটের কারণে কন্টেইনার ডেলিভারির হার ‘অস্বাভাবিক’ কমে গিয়েছিল।
এতে কন্টেইনার খালাসের জন্য নোঙ্গর করা জাহাজকে জেটিতে অতিরিক্ত একদিন অপেক্ষা করতে হচ্ছিল। বন্দর কর্মকর্তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, সরকারি ছুটি শুরুর দিন গত ৫ জুন বন্দরে কন্টেইনার ডেলিভারি হয়েছিল ৪ হাজার ১২২ টিইইউস। এদিন জাহাজে রপ্তানি কন্টেইনার তোলা হয়েছিল ৯ হাজার ৭২০ টিইইউস
আর আমদানি কন্টেইনার জাহাজ থেকে নামানো হয়েছিল ৫ হাজার ৪১১ টিইইউস। কিন্তু ঈদুল আজহার আগের দিন ৬ জুন থেকে পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকে। এদিন মাত্র ৫২১ টিইইউস কন্টেইনার ডেলিভারি হয়। ঈদের দিন ৭ জুন বিকেল ৪টা থেকে অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু হলেও বন্দর থেকে কোনো কন্টেইনার ডেলিভারি হয়নি। তবে কন্টেইনার জাহাজ থেকে ডেলিভারি হয় ৩০৮ টিইইউস। ঈদের পরদিন ৮ জুনও কোনো কন্টেইনার ডেলিভারি হয়নি। ৯ জুন ৪৩১ টিইইউস, ১০ জুন ১ হাজার ৩৮১ টিইইউস, ১১ জুন ১ হাজার ৭৮১ টিইইউস ডেলিভারি হয়।
ঈদের ছুটিতে জাহাজ থেকে কন্টেইনার খালাসের পরিমাণও কমে যায়। স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন আমদানি কন্টেইনার নামানো হয় ৫ হাজারের মতো। কিন্তু ৫ জুন থেকে ১০ জুন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৫৪৪ টিইইউস এবং সর্বনিম্ন ২ হাজার ৩১১ ?টিইইউস আমদানি কন্টেইনার জাহাজ থেকে খালাস হয়। টানা ১০ দিনের ঈদের ছুটির শেষ দিন গত শনিবার (১৪ জুন) সকাল ৮টা পর্যন্ত বন্দরের ইয়ার্ডে জমে থাকা কন্টেইনারের পরিমাণ ছিল ৪২ হাজার ৪১৬ টিইইউস। এর পরের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ডেলিভারি বাদে আরও দুই হাজার কন্টেইনার জমা হয়। এ হিসেবে বন্দরের ধারণক্ষমতার ৮০ শতাংশ জায়গায় কন্টেইনার জমে গেছে।
ক্যাপ্টেন আহমেদ আমিন আবদুল্লাহ বলেন, সারাদিন বেশ গতিতে ডেলিভারি হচ্ছে। তবে ৪৪ হাজারের বেশি কন্টেইনার জমলেও বন্দরের কাজে তেমন প্রভাব পড়েনি। এখন যেভাবে কাজের গতি বেড়েছে, এই জটটাও আশা করছি আর থাকবে না।