ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীর এক লাখ সদস্য দায়িত্ব পালন করবে।
তবে নির্বাচন শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নির্ভর করে না, জনগণের ভূমিকা এখানে মুখ্য। বুধবার,(২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে বিভাগের সব জেলা প্রশাসক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। মতবিনিময়ে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা, জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং মাদক প্রতিরোধের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে উপদেষ্টা জানান।
নির্বাচনের প্রস্তুতি বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতি খুব ভালো, তাদের প্রশিক্ষণ কিন্তু শুরু হয়ে গেছে। তাদের সংখ্যা আমরা অনেক বাড়িয়ে দিয়েছি। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী সবাই কিন্তু এবার ইলেকশনে থাকবে। এখন মাঠে ত্রিশ হাজারের মতো সেনাবাহিনী আছে, ওই সময় কিন্তু এক লাখের মতো সেনাবাহিনী থাকবে, নেভি থাকবে, এয়ারফোর্স থাকবে। আর আমাদের তো পুলিশ আছেই, বিজিবি আছে, আনসার আছে, কোস্টগার্ড আছে, র্যাব আছে, সর্বোপরি প্রশাসন তো রয়ে গেছে।
কিন্তু নির্বাচনটা তো শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নির্ভর করে না। নির্বাচন নির্ভর করে জনগণের ওপর। জনগণ হলো এখানে মেইন। জনগণ যদি নির্বাচনের মাঠে নেমে যায়, তাহলে কেউ কিন্তু আর আটকাতে পারবে না।
আর রাজনৈতিক দলগুলো, তাদের মধ্যে যদি একটা মতৈক্য হয়ে যায়, তাহলে সবার সুবিধা হয়। তারপরে আছে ইলেকশন কমিশন, তারা যে একটা আইন-টাইন করবে, এটার ওপর নির্ভর করবে। তারপর প্রশাসন আছে, তাদের একটা ভূমিকা নির্ভর করবে। তারপরে হলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা থাকতে হবে।
দুর্গাপূজায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রস্তুতির বিষয়ে সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আপনারা জানেন, আগামী ২৮ তারিখ থেকে আমাদের শারদীয় দুর্গাপূজা। আলোচনার মাধ্যমে আমরা আশা করছি যে, এবারের দুর্গাপূজাটা খুবই শান্তিপূর্ণ এবং খুবই উৎসবমুখর হবে। কোনো জায়গায় কোনো ধরনের বড় কোনো সমস্যা নেই। এটা শান্তিপূর্ণভাবে এবং উৎসবমুখর হবে। এটা একটা ধর্মীয় উৎসব, এটার পবিত্রতা যেন রক্ষা পায়, ওদিকে সবার খেয়াল রাখতে হবে।
যারা এই উদ্যাপনটা করছে তাদের মধ্যে ভাগ ছিল, কেউ বলে দুই ভাগ, কেউ বলে তিন ভাগ। যেহেতু এটা একটা ধর্মীয় উৎসব, তাই এটা পালনের ক্ষেত্রে ভাগ কোনো ধরনের বাধা হবে না। কারণ এটা তাদের জন্য একটা পূণ্য কাজ। এ পূণ্য কাজটা করার জন্য কেউ কোনো ধরনের বাধার সৃষ্টি করবে না, এটা আমরা আশা করি। এটা যেন খুব ভালোভাবে, আমি সব ধর্মের লোকজনদের বলবো, কো-অপারেট করেন, এটা যেন খুব ভালোভাবে হয়ে যায়। শান্তিপূর্ণভাবে যেন হয়ে যায় এবং ধর্মীয় পবিত্রতাটা রক্ষা করে যেন এটা হয়।
দুর্গাপূজা নিয়ে কোনো আশঙ্কা না থাকলেও সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো আশঙ্কা দেখছি না।
কিন্তু আপনারাও লোকজনকে সজাগ করবেন। এটা যেহেতু একটা ধর্মীয় অনুষ্ঠান, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য নিয়ে যাতে এ জিনিসটা হয় এবং এটার পবিত্রতা যেন রক্ষা পায় সেদিকে আপনারা সজাগ থাকবেন।
গুজব প্রতিরোধে সাংবাদিকদের ভূমিকা প্রত্যাশা করে তিনি বলেন, সর্বোপরি রয়ে গেছেন আপনারা (সাংবাদিক)। আপনারা সত্যি খবরটা যদি দেন, দেখেন প্রথমদিকে আমাদের পার্শ¦বর্তী দেশ কিন্তু অনেক উল্টাপাল্টা খবর দিত, আপনারা কাউন্টার করায়, আপনারা সত্যি খবরটা দেয়ায় এখন কিন্তু সেটার সংখ্যা কমে গেছে। কিন্তু পূজা উপলক্ষে কিন্তু তারা আবার করা শুরু করবে। আমি আপনাদের অনুরোধ করবো, আপনারা আগে যে ভূমিকাটা পালন করতেন, এবারও সেই ভূমিকাটাই পালন করবেন। তাদের কাউন্টার করবেন, জনগণ যেন সত্যি ঘটনাটা পায়। আমি ডিসি-এসপি সবাইকে বলেছি, ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে সত্যি ঘটনাটা যাতে সবাই প্রকাশ করে দেয়। সত্যি ঘটনা প্রকাশ না করলে বিভিন্ন ধরনের গুজব সৃষ্টি হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার নিয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ইউটিউবে যেগুলো দিয়ে দেয়, সেগুলো তো আমরা সরাসরি কিছু করতে পারি না। আমরা রিকুয়েস্ট করতে পারি। দেখা গেছে, লোকালি এগুলো বেশি হয়, কিছু কিছু ঘটনা দেখা যাচ্ছে তেমন কিছুই হয় নাই, অথচ সেটা মিডিয়ায় চলে আসছে, এগুলো কিন্তু প্রচারও আবার বেশি হয়। এগুলোর ক্ষেত্রে আমাদের সবারই সজাগ থাকতে হবে। সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে। বাহিনীর প্রধানদের আমরা নির্দেশনা দিয়েছি, এই কাজের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা। এজন্য আমি আপনাদেরও সাহায্য-সহযোগিতা চাই। আপনারা পয়েন্ট আউট করে দিলে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসা যাবে।
সারাদেশে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, অনেককে কিন্তু আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। আইনের আওতায় আনার পরেও অনেকে কিন্তু জামিন পেয়ে যায়। আমরা চেষ্টা করছি এরা যেন আর সহজে জামিন না পায়, এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য। নির্বাচনের সময় মিছিলের সংখ্যা বাড়বে, প্রচুর মিছিল হবে, কিন্তু এই মিছিল তখন হবে না। তখন সবাই মিছিলের জন্য বেরিয়ে যাবে, অনেক মিছিল হবে কিন্তু এখন যারা ছোটখাট মিছিল করছে এগুলো তখন হবে না।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থানা থেকে লুট করা অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশের অনেক সফলতা আছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এরা (পুলিশ) কিন্তু অনেক অস্ত্র উদ্ধার করেছে। তারপরও কিছু কিছু অস্ত্র এখনও বাইরে রয়ে গেছে।
এ সময় একজন সাংবাদিক মন্তব্য করেন, চট্টগ্রামে অস্ত্র উদ্ধার সেভাবে হয়নি। জবাবে উপদেষ্টা বলেন, সব জায়গায় হয়েছে, চট্টগ্রামেও আছে। তবে চট্টগ্রাম এলাকাটা একটু ভিন্ন। এটা ভৌগলিকভাবে একটু ডিফারেন্ট। এখানে পাহাড় আছে, সমুদ্রও আছে, প্লেন ল্যান্ডও আছে। অন্য কোনো জায়গায় কিন্তু এভাবে পাহাড়, সমুদ্র, প্লেন ল্যান্ড নাই। যেমন- ফটিকছড়ি, রাউজান এসব এলাকায় অর্ধেক পাহাড়, আর অর্ধেক আবার প্লেন ল্যান্ড। এসব জায়গায় ইয়ে করা একটু ডিফিকাল্ট। চাকরি জীবনে আমি তিনবার এখানে চাকরি করেছি। এ জায়গায় সমস্যাটা আছে। তারপরও কিছু কিছু উদ্ধার হচ্ছে, ইলেকশনের আগে আরও উদ্ধার হবে।
মাদক প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা জানেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তারা কিন্তু এখন আর বর্ডার এলাকায় নেই। পুরোটা কিন্তু আরাকান আর্মি দখল করে নিয়েছে। এখন মায়ানমার আর্মির সঙ্গে আরাকান আর্মির একটা যুদ্ধ চলছে। এখানে আমাদের আরএসও রয়ে গেছে, আরসা রয়ে গেছে। ওই এলাকাটা কিন্তু সমস্যা ইয়ে এলাকা। বাট আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিন্তু ভালো কাজ করছে। পরিস্থিতি মোটামুটি একটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে ধরে রেখেছে। তাদের যে ইন্টারনাল সমস্যা, এগুলো অনেকসময় আমাদের ওপর এসে পড়ে। প্রতিবেশির সমস্যা তো এসে পড়ে।
এই যে মায়ানমারের আরাকান আর্মিটা, এটা বেঁচে আছে শুধু মাদকের ওপরে। প্রচুর মাদক আসে। আর মাদকের পরিবর্তে আমাদের দেশ থেকে যাচ্ছে চাউল, সার, ওষুধপত্র এবং আরও অন্যান্য জিনিস। আমরা আলোচনা করেছি, এগুলো যেন না যেতে পারে। মাদক যেন কোনো অবস্থায় আসতে না পারে। মাদকটা কিন্তু আমাদের পুরো সমাজটা নষ্ট করে দিচ্ছে। দেশের অন্যান্য বেল্ট দিয়ে যে মাদক আসে না তা নয়, কিন্তু কক্সবাজার দিয়ে সবচেয়ে বেশি আসে। সেজন্য আমরা কক্সবাজারে আস্তে আস্তে ফোর্সের সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়েছি। আশা করি যে, আস্তে আস্তে এটা কমে আসবে। সমস্যাটা কমে আসছে কিন্তু পুরোপুরি রিমুভ হয়নাই।
রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে সরকার সজাগ আছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে তাদের যত দ্রুত সম্ভব তাদের দেশে পাঠিয়ে দেয়া। যত তাড়াতাড়ি পাঠিয়ে দিতে পারবো, তত তাড়াতাড়ি আমাদের সমস্যা সমাধান হবে।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বুধবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীর এক লাখ সদস্য দায়িত্ব পালন করবে।
তবে নির্বাচন শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নির্ভর করে না, জনগণের ভূমিকা এখানে মুখ্য। বুধবার,(২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫) দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে বিভাগের সব জেলা প্রশাসক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। মতবিনিময়ে আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা, জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং মাদক প্রতিরোধের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে উপদেষ্টা জানান।
নির্বাচনের প্রস্তুতি বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতি খুব ভালো, তাদের প্রশিক্ষণ কিন্তু শুরু হয়ে গেছে। তাদের সংখ্যা আমরা অনেক বাড়িয়ে দিয়েছি। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী সবাই কিন্তু এবার ইলেকশনে থাকবে। এখন মাঠে ত্রিশ হাজারের মতো সেনাবাহিনী আছে, ওই সময় কিন্তু এক লাখের মতো সেনাবাহিনী থাকবে, নেভি থাকবে, এয়ারফোর্স থাকবে। আর আমাদের তো পুলিশ আছেই, বিজিবি আছে, আনসার আছে, কোস্টগার্ড আছে, র্যাব আছে, সর্বোপরি প্রশাসন তো রয়ে গেছে।
কিন্তু নির্বাচনটা তো শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নির্ভর করে না। নির্বাচন নির্ভর করে জনগণের ওপর। জনগণ হলো এখানে মেইন। জনগণ যদি নির্বাচনের মাঠে নেমে যায়, তাহলে কেউ কিন্তু আর আটকাতে পারবে না।
আর রাজনৈতিক দলগুলো, তাদের মধ্যে যদি একটা মতৈক্য হয়ে যায়, তাহলে সবার সুবিধা হয়। তারপরে আছে ইলেকশন কমিশন, তারা যে একটা আইন-টাইন করবে, এটার ওপর নির্ভর করবে। তারপর প্রশাসন আছে, তাদের একটা ভূমিকা নির্ভর করবে। তারপরে হলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা থাকতে হবে।
দুর্গাপূজায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রস্তুতির বিষয়ে সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আপনারা জানেন, আগামী ২৮ তারিখ থেকে আমাদের শারদীয় দুর্গাপূজা। আলোচনার মাধ্যমে আমরা আশা করছি যে, এবারের দুর্গাপূজাটা খুবই শান্তিপূর্ণ এবং খুবই উৎসবমুখর হবে। কোনো জায়গায় কোনো ধরনের বড় কোনো সমস্যা নেই। এটা শান্তিপূর্ণভাবে এবং উৎসবমুখর হবে। এটা একটা ধর্মীয় উৎসব, এটার পবিত্রতা যেন রক্ষা পায়, ওদিকে সবার খেয়াল রাখতে হবে।
যারা এই উদ্যাপনটা করছে তাদের মধ্যে ভাগ ছিল, কেউ বলে দুই ভাগ, কেউ বলে তিন ভাগ। যেহেতু এটা একটা ধর্মীয় উৎসব, তাই এটা পালনের ক্ষেত্রে ভাগ কোনো ধরনের বাধা হবে না। কারণ এটা তাদের জন্য একটা পূণ্য কাজ। এ পূণ্য কাজটা করার জন্য কেউ কোনো ধরনের বাধার সৃষ্টি করবে না, এটা আমরা আশা করি। এটা যেন খুব ভালোভাবে, আমি সব ধর্মের লোকজনদের বলবো, কো-অপারেট করেন, এটা যেন খুব ভালোভাবে হয়ে যায়। শান্তিপূর্ণভাবে যেন হয়ে যায় এবং ধর্মীয় পবিত্রতাটা রক্ষা করে যেন এটা হয়।
দুর্গাপূজা নিয়ে কোনো আশঙ্কা না থাকলেও সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, কোনো আশঙ্কা দেখছি না।
কিন্তু আপনারাও লোকজনকে সজাগ করবেন। এটা যেহেতু একটা ধর্মীয় অনুষ্ঠান, ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য নিয়ে যাতে এ জিনিসটা হয় এবং এটার পবিত্রতা যেন রক্ষা পায় সেদিকে আপনারা সজাগ থাকবেন।
গুজব প্রতিরোধে সাংবাদিকদের ভূমিকা প্রত্যাশা করে তিনি বলেন, সর্বোপরি রয়ে গেছেন আপনারা (সাংবাদিক)। আপনারা সত্যি খবরটা যদি দেন, দেখেন প্রথমদিকে আমাদের পার্শ¦বর্তী দেশ কিন্তু অনেক উল্টাপাল্টা খবর দিত, আপনারা কাউন্টার করায়, আপনারা সত্যি খবরটা দেয়ায় এখন কিন্তু সেটার সংখ্যা কমে গেছে। কিন্তু পূজা উপলক্ষে কিন্তু তারা আবার করা শুরু করবে। আমি আপনাদের অনুরোধ করবো, আপনারা আগে যে ভূমিকাটা পালন করতেন, এবারও সেই ভূমিকাটাই পালন করবেন। তাদের কাউন্টার করবেন, জনগণ যেন সত্যি ঘটনাটা পায়। আমি ডিসি-এসপি সবাইকে বলেছি, ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গে সত্যি ঘটনাটা যাতে সবাই প্রকাশ করে দেয়। সত্যি ঘটনা প্রকাশ না করলে বিভিন্ন ধরনের গুজব সৃষ্টি হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার নিয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, ইউটিউবে যেগুলো দিয়ে দেয়, সেগুলো তো আমরা সরাসরি কিছু করতে পারি না। আমরা রিকুয়েস্ট করতে পারি। দেখা গেছে, লোকালি এগুলো বেশি হয়, কিছু কিছু ঘটনা দেখা যাচ্ছে তেমন কিছুই হয় নাই, অথচ সেটা মিডিয়ায় চলে আসছে, এগুলো কিন্তু প্রচারও আবার বেশি হয়। এগুলোর ক্ষেত্রে আমাদের সবারই সজাগ থাকতে হবে। সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে। বাহিনীর প্রধানদের আমরা নির্দেশনা দিয়েছি, এই কাজের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা। এজন্য আমি আপনাদেরও সাহায্য-সহযোগিতা চাই। আপনারা পয়েন্ট আউট করে দিলে তাদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসা যাবে।
সারাদেশে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিল নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, অনেককে কিন্তু আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। আইনের আওতায় আনার পরেও অনেকে কিন্তু জামিন পেয়ে যায়। আমরা চেষ্টা করছি এরা যেন আর সহজে জামিন না পায়, এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য। নির্বাচনের সময় মিছিলের সংখ্যা বাড়বে, প্রচুর মিছিল হবে, কিন্তু এই মিছিল তখন হবে না। তখন সবাই মিছিলের জন্য বেরিয়ে যাবে, অনেক মিছিল হবে কিন্তু এখন যারা ছোটখাট মিছিল করছে এগুলো তখন হবে না।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট থানা থেকে লুট করা অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশের অনেক সফলতা আছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এরা (পুলিশ) কিন্তু অনেক অস্ত্র উদ্ধার করেছে। তারপরও কিছু কিছু অস্ত্র এখনও বাইরে রয়ে গেছে।
এ সময় একজন সাংবাদিক মন্তব্য করেন, চট্টগ্রামে অস্ত্র উদ্ধার সেভাবে হয়নি। জবাবে উপদেষ্টা বলেন, সব জায়গায় হয়েছে, চট্টগ্রামেও আছে। তবে চট্টগ্রাম এলাকাটা একটু ভিন্ন। এটা ভৌগলিকভাবে একটু ডিফারেন্ট। এখানে পাহাড় আছে, সমুদ্রও আছে, প্লেন ল্যান্ডও আছে। অন্য কোনো জায়গায় কিন্তু এভাবে পাহাড়, সমুদ্র, প্লেন ল্যান্ড নাই। যেমন- ফটিকছড়ি, রাউজান এসব এলাকায় অর্ধেক পাহাড়, আর অর্ধেক আবার প্লেন ল্যান্ড। এসব জায়গায় ইয়ে করা একটু ডিফিকাল্ট। চাকরি জীবনে আমি তিনবার এখানে চাকরি করেছি। এ জায়গায় সমস্যাটা আছে। তারপরও কিছু কিছু উদ্ধার হচ্ছে, ইলেকশনের আগে আরও উদ্ধার হবে।
মাদক প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা জানেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী তারা কিন্তু এখন আর বর্ডার এলাকায় নেই। পুরোটা কিন্তু আরাকান আর্মি দখল করে নিয়েছে। এখন মায়ানমার আর্মির সঙ্গে আরাকান আর্মির একটা যুদ্ধ চলছে। এখানে আমাদের আরএসও রয়ে গেছে, আরসা রয়ে গেছে। ওই এলাকাটা কিন্তু সমস্যা ইয়ে এলাকা। বাট আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কিন্তু ভালো কাজ করছে। পরিস্থিতি মোটামুটি একটা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে ধরে রেখেছে। তাদের যে ইন্টারনাল সমস্যা, এগুলো অনেকসময় আমাদের ওপর এসে পড়ে। প্রতিবেশির সমস্যা তো এসে পড়ে।
এই যে মায়ানমারের আরাকান আর্মিটা, এটা বেঁচে আছে শুধু মাদকের ওপরে। প্রচুর মাদক আসে। আর মাদকের পরিবর্তে আমাদের দেশ থেকে যাচ্ছে চাউল, সার, ওষুধপত্র এবং আরও অন্যান্য জিনিস। আমরা আলোচনা করেছি, এগুলো যেন না যেতে পারে। মাদক যেন কোনো অবস্থায় আসতে না পারে। মাদকটা কিন্তু আমাদের পুরো সমাজটা নষ্ট করে দিচ্ছে। দেশের অন্যান্য বেল্ট দিয়ে যে মাদক আসে না তা নয়, কিন্তু কক্সবাজার দিয়ে সবচেয়ে বেশি আসে। সেজন্য আমরা কক্সবাজারে আস্তে আস্তে ফোর্সের সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়েছি। আশা করি যে, আস্তে আস্তে এটা কমে আসবে। সমস্যাটা কমে আসছে কিন্তু পুরোপুরি রিমুভ হয়নাই।
রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে সরকার সজাগ আছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে তাদের যত দ্রুত সম্ভব তাদের দেশে পাঠিয়ে দেয়া। যত তাড়াতাড়ি পাঠিয়ে দিতে পারবো, তত তাড়াতাড়ি আমাদের সমস্যা সমাধান হবে।