নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ভোটার তালিকা অনুযায়ী বর্তমানে দেশের জনসংখ্যা ১৯ কোটি বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার তাহমিদা আহমদ। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছেন ১ কোটি ৫১ লাখ মানুষ।
রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আয়োজিত সংলাপে তিনি এ তথ্য জানান। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে এই সংলাপের আয়োজন করা হয়।
বিবিএসের তথ্যকে প্রশ্নবিদ্ধ উল্লেখ করে তাহমিদা আহমদ বলেন, “জনসংখ্যা নিয়ে বিবিএসের ডেটা প্রশ্নবিদ্ধ। একবার তারা যেটা প্রকাশ করল, পরে আবার সেটা কমিয়ে দেখানোর জন্য বলা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে যে ভোটার তালিকা করেছি, সেটি একদম নির্ভুল তথ্য। আমাদের লোকসংখ্যা হলো ১৯ কোটি। এর মধ্যে ১ কোটি ৫১ লাখ প্রবাসী। শুধু ঢাকায় রয়েছে ১ কোটি ৫১ লাখ মানুষ।”
সংলাপের শুরুতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, “আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা অনেক কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন করতে পেরেছি। সবচেয়ে বড় কাজ যেটা করতে পেরেছি, সেটা হচ্ছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা। এটা একটা বিশাল কাজ। আমরা প্রায় ২১ লাখ মৃত ভোটার কর্তন করতে পেরেছি।”
তিনি আরও জানান, কমিশন নয়টি আইন সংশোধন করেছে। “নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য যা যা করা দরকার, তার অনেকটাই এগিয়ে নেওয়া হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত সংস্কার কমিশন নির্বাচন কমিশনের অনেক কাজ এগিয়ে রেখেছে,” বলেন সিইসি।
সংলাপে অংশ নিয়ে সাংবাদিক ও কবি সোহরাব হাসান বলেন, “নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমাদের আস্থা আছে কি না, এটার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো, এই কমিশন মনে করে কি না যে বর্তমান সরকারের আমলে অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করা সম্ভব? যদি মনে করে, তাহলে নির্বাচন কমিশনকে পরবর্তী নির্বাচনের দায় নিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “নির্বাচন কমিশন কিছু বিতর্ক এড়াতে পারত। একটা পক্ষকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। ধরে নিলাম, তারা নির্বাচন করতে পারবে না। কিন্তু যেসব রাজনৈতিক দল সরকারের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনে বসেছে, তাদের মধ্যে কেউ যদি মনে করে পরিস্থিতি অনুকূলে নয়, আমরা জিতব না, সুতরাং নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালাম—তাহলে কী পরিস্থিতি হবে, ভেবে দেখুন।”
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, তরুণ প্রজন্মের মতামতকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে প্রবীণ, দরিদ্র, নারী ও সংখ্যালঘুদের যাতে পিছিয়ে দেওয়া না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন, “আগামী সংসদ নির্বাচনে ৫ থেকে ৭ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্বের প্রস্তাবে নারী সমাজ রাজি নয়। রাজনৈতিক দলগুলো বলছে, তারা আমাদের পাঁচ থেকে সাত শতাংশ স্থান দেবে। এটা কি দান-দক্ষিণা? ৫৫ বছর পর এটা শুনতে অবাক লেগেছে।”
তিনি নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে বলছি, পাঁচ থেকে সাত পার্সেন্ট আমরা মানি না।”
ইসির আমন্ত্রণে সংলাপে অংশ নেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার, সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আল মাহমুদ হাসানউজ্জামান, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মাহফুজুর রহমান, পুলিশ সংস্কার কমিশনের সদস্য মোহাম্মদ হারুন চৌধুরী, বিজিএমইর পরিচালক রশিদ আহমেদ হোসাইনি, কবি মোহন রায়হান, টিআইবির পরিচালক মোহাম্মদ বদিউজ্জামান, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি জারিফ রহমান প্রমুখ।
রোববার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ভোটার তালিকা অনুযায়ী বর্তমানে দেশের জনসংখ্যা ১৯ কোটি বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার তাহমিদা আহমদ। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় বসবাস করছেন ১ কোটি ৫১ লাখ মানুষ।
রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আয়োজিত সংলাপে তিনি এ তথ্য জানান। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে এই সংলাপের আয়োজন করা হয়।
বিবিএসের তথ্যকে প্রশ্নবিদ্ধ উল্লেখ করে তাহমিদা আহমদ বলেন, “জনসংখ্যা নিয়ে বিবিএসের ডেটা প্রশ্নবিদ্ধ। একবার তারা যেটা প্রকাশ করল, পরে আবার সেটা কমিয়ে দেখানোর জন্য বলা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে যে ভোটার তালিকা করেছি, সেটি একদম নির্ভুল তথ্য। আমাদের লোকসংখ্যা হলো ১৯ কোটি। এর মধ্যে ১ কোটি ৫১ লাখ প্রবাসী। শুধু ঢাকায় রয়েছে ১ কোটি ৫১ লাখ মানুষ।”
সংলাপের শুরুতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, “আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে আমরা অনেক কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন করতে পেরেছি। সবচেয়ে বড় কাজ যেটা করতে পেরেছি, সেটা হচ্ছে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা। এটা একটা বিশাল কাজ। আমরা প্রায় ২১ লাখ মৃত ভোটার কর্তন করতে পেরেছি।”
তিনি আরও জানান, কমিশন নয়টি আইন সংশোধন করেছে। “নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য যা যা করা দরকার, তার অনেকটাই এগিয়ে নেওয়া হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত সংস্কার কমিশন নির্বাচন কমিশনের অনেক কাজ এগিয়ে রেখেছে,” বলেন সিইসি।
সংলাপে অংশ নিয়ে সাংবাদিক ও কবি সোহরাব হাসান বলেন, “নির্বাচন কমিশনের প্রতি আমাদের আস্থা আছে কি না, এটার চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো, এই কমিশন মনে করে কি না যে বর্তমান সরকারের আমলে অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন করা সম্ভব? যদি মনে করে, তাহলে নির্বাচন কমিশনকে পরবর্তী নির্বাচনের দায় নিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “নির্বাচন কমিশন কিছু বিতর্ক এড়াতে পারত। একটা পক্ষকে নির্বাচন থেকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা চলছে। ধরে নিলাম, তারা নির্বাচন করতে পারবে না। কিন্তু যেসব রাজনৈতিক দল সরকারের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনে বসেছে, তাদের মধ্যে কেউ যদি মনে করে পরিস্থিতি অনুকূলে নয়, আমরা জিতব না, সুতরাং নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালাম—তাহলে কী পরিস্থিতি হবে, ভেবে দেখুন।”
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী বলেন, তরুণ প্রজন্মের মতামতকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে প্রবীণ, দরিদ্র, নারী ও সংখ্যালঘুদের যাতে পিছিয়ে দেওয়া না হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন, “আগামী সংসদ নির্বাচনে ৫ থেকে ৭ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্বের প্রস্তাবে নারী সমাজ রাজি নয়। রাজনৈতিক দলগুলো বলছে, তারা আমাদের পাঁচ থেকে সাত শতাংশ স্থান দেবে। এটা কি দান-দক্ষিণা? ৫৫ বছর পর এটা শুনতে অবাক লেগেছে।”
তিনি নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “৩৩ শতাংশ নারী প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে বলছি, পাঁচ থেকে সাত পার্সেন্ট আমরা মানি না।”
ইসির আমন্ত্রণে সংলাপে অংশ নেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার, সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবীর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আল মাহমুদ হাসানউজ্জামান, নিরাপত্তা বিশ্লেষক মাহফুজুর রহমান, পুলিশ সংস্কার কমিশনের সদস্য মোহাম্মদ হারুন চৌধুরী, বিজিএমইর পরিচালক রশিদ আহমেদ হোসাইনি, কবি মোহন রায়হান, টিআইবির পরিচালক মোহাম্মদ বদিউজ্জামান, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি জারিফ রহমান প্রমুখ।