মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে করা মামলার বিষয়বহির্ভূত উল্লেখ করে বিভিন্ন থানায় পুলিশ হত্যার বিষয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবীকে জেরা করতে দেয়নি প্রসিকিউশন।
‘দি ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট, ১৯৭৩’-এ সাক্ষীকে জেরা করার সীমাবদ্ধতা রয়েছে উল্লেখ করে প্রসিকিউশন তা ট্রাইব্যুনালকে বোঝাতে সক্ষম হয়। পরে এ বিষয়ে জেরা করা হয়নি।
মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১-এ এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরকে জেরার সময় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন বিষয়টি নিয়ে বাধার মুখে পড়েন। পরে তিনি ওই অংশ বাদ দিয়ে অন্য বিষয় নিয়ে জেরা চালিয়ে যান। মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনেও জেরা শেষ না হওয়ায় বুধবারও তা চলবে।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে দুই সদস্যের ট্রাইব্যুনাল–১-এ দুপুর সোয়া ১টা পর্যন্ত জেরা চলে। ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত অপর বিচারক ছিলেন মো. শফিউল আলম মাহমুদ।
জেরার সময় এক প্রশ্নের জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর বলেন, ২ অগাস্ট প্রকাশিত ‘গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ৩২ শিশু’ এবং ৪ অগাস্ট প্রকাশিত ‘গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ১৩৩ শিশু’ শিরোনামের প্রতিবেদন তিনি দেখেছেন। তিনি জানান, এসব খবর অন্য অনেক পত্রিকাতেও ছাপা হয়েছে।
আইনজীবীর প্রশ্নের জবাবে আলমগীর বলেন, তদন্তকালে উল্লেখিত শহীদ শিশুদের সবার বাড়িতে তিনি যাননি; শুধুমাত্র একজনের বাড়িতে গিয়েছেন। তবে যে শিশুর বাড়িতে গিয়েছেন, তার বাবা–মায়ের নাম তিনি বলতে পারেননি। এসব শিশুর মৃত্যু নিয়ে সঠিক তদন্ত না করার অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।
আইনজীবী আমির হোসেন সাক্ষীকে বলেন, আল জাজিরা নির্মিত ‘জুলাইয়ের ৩৬ দিন: উন্মোচিত হচ্ছে শেখ হাসিনার গোপন আদেশনামা’ শিরোনামের ৪৯ মিনিট ৫৫ সেকেন্ডের অনুসন্ধানী তথ্যচিত্রটি ‘এআই জেনারেটেড’। এ বক্তব্য অস্বীকার করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
আরেকটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করে ‘জুলাই রেভ্যুলিউশনারি অ্যালায়েন্স (জেআরএ)’ নামের সংগঠন। তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে ৭ অগাস্ট প্রকাশিত ৩ মিনিট ২৩ সেকেন্ডের তথ্যচিত্রকেও আইনজীবী ‘এআই নির্মিত’ বলে দাবি করেন। তবে তদন্ত কর্মকর্তা সেটিও অস্বীকার করেন।
আইনজীবীর প্রশ্নের জবাবে সাক্ষী আলমগীর জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামাল ও হাসানুল হক ইনুর কথোপকথনের সত্যতা পরীক্ষার জন্য আলামতগুলো সিআইডি ছাড়া অন্য কোনো দেশি বা বিদেশি প্রতিষ্ঠানে পাঠাননি।
আইনজীবী আরও উল্লেখ করেন, ৯ জুলাই প্রচারিত বিবিসি বাংলার ৩৫ মিনিট ৩৫ সেকেন্ডের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি বর্তমান সরকারের প্রভাবে তৈরি করা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর এই অভিযোগও অস্বীকার করেন।
জুলাই আন্দোলনে ২৫ হাজার ব্যক্তি আহত হয়েছেন বলে সাক্ষ্যে উল্লেখ করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। তবে তিনি মাত্র তিনজন আহত ব্যক্তির জখমি সনদপত্র সংগ্রহ করেছেন। আইনজীবী তার বিরুদ্ধে অসম্পূর্ণ তদন্তের অভিযোগ তুললে তিনি তা নাকচ করেন।
আইনজীবী আমির হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল ‘দি ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট, ১৯৭৩’-এর ৩(২)(এ)(জি)(এইচ) ও ৪(১)(২)(৩) ধারায় কোনো অপরাধ করেননি। কিন্তু সাক্ষী মো. আলমগীর এই বক্তব্য অস্বীকার করেন।
জেরার এক পর্যায়ে আইনজীবী দেশের বিভিন্ন থানায় পুলিশ হত্যার বিষয়ে সাক্ষীকে প্রশ্ন করেন। তবে ট্রাইব্যুনালের রেকর্ডে এ অংশ রাখা হয়নি।
আইনজীবী বলেন, “সিরাজগঞ্জ, যাত্রাবাড়ী, আশুলিয়া, রামপুরা থানায় পুলিশ হত্যা করা হয়েছে—আপনি জানেন কিনা?”
সাক্ষী আলমগীর জবাবে বলেন, “এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।”
এ সময় কৌঁসুলি মো. মিজানুল ইসলাম আপত্তি জানান, “বিষয়টি এ তদন্ত কর্মকর্তার আওতাধীন নয়, তাই এটি এখানে প্রাসঙ্গিক নয়।”
এর জবাবে আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, “আন্দোলন চলাকালে এসব ঘটনা ঘটেছে, প্রাসঙ্গিকভাবে আসতেই পারে।”
তখন জ্যেষ্ঠ বিচারক বলেন, “জেরার কোনো লিমিট নেই।”
এই পর্যায়ে কৌঁসুলি এম এইচ তামিম ট্রাইব্যুনাল আইন তুলে ধরে দেখান যে, সাক্ষীকে জেরা করার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। পরে ট্রাইব্যুনাল প্রসিকিউশনের বক্তব্য মেনে নেয়।
মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান কামাল ও চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের বিরুদ্ধে করা মামলার বিষয়বহির্ভূত উল্লেখ করে বিভিন্ন থানায় পুলিশ হত্যার বিষয়ে আসামিপক্ষের আইনজীবীকে জেরা করতে দেয়নি প্রসিকিউশন।
‘দি ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট, ১৯৭৩’-এ সাক্ষীকে জেরা করার সীমাবদ্ধতা রয়েছে উল্লেখ করে প্রসিকিউশন তা ট্রাইব্যুনালকে বোঝাতে সক্ষম হয়। পরে এ বিষয়ে জেরা করা হয়নি।
মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১-এ এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আলমগীরকে জেরার সময় শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন বিষয়টি নিয়ে বাধার মুখে পড়েন। পরে তিনি ওই অংশ বাদ দিয়ে অন্য বিষয় নিয়ে জেরা চালিয়ে যান। মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিনেও জেরা শেষ না হওয়ায় বুধবারও তা চলবে।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে দুই সদস্যের ট্রাইব্যুনাল–১-এ দুপুর সোয়া ১টা পর্যন্ত জেরা চলে। ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত অপর বিচারক ছিলেন মো. শফিউল আলম মাহমুদ।
জেরার সময় এক প্রশ্নের জবাবে তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর বলেন, ২ অগাস্ট প্রকাশিত ‘গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ৩২ শিশু’ এবং ৪ অগাস্ট প্রকাশিত ‘গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ১৩৩ শিশু’ শিরোনামের প্রতিবেদন তিনি দেখেছেন। তিনি জানান, এসব খবর অন্য অনেক পত্রিকাতেও ছাপা হয়েছে।
আইনজীবীর প্রশ্নের জবাবে আলমগীর বলেন, তদন্তকালে উল্লেখিত শহীদ শিশুদের সবার বাড়িতে তিনি যাননি; শুধুমাত্র একজনের বাড়িতে গিয়েছেন। তবে যে শিশুর বাড়িতে গিয়েছেন, তার বাবা–মায়ের নাম তিনি বলতে পারেননি। এসব শিশুর মৃত্যু নিয়ে সঠিক তদন্ত না করার অভিযোগ তিনি অস্বীকার করেন।
আইনজীবী আমির হোসেন সাক্ষীকে বলেন, আল জাজিরা নির্মিত ‘জুলাইয়ের ৩৬ দিন: উন্মোচিত হচ্ছে শেখ হাসিনার গোপন আদেশনামা’ শিরোনামের ৪৯ মিনিট ৫৫ সেকেন্ডের অনুসন্ধানী তথ্যচিত্রটি ‘এআই জেনারেটেড’। এ বক্তব্য অস্বীকার করেন তদন্ত কর্মকর্তা।
আরেকটি তথ্যচিত্র প্রকাশ করে ‘জুলাই রেভ্যুলিউশনারি অ্যালায়েন্স (জেআরএ)’ নামের সংগঠন। তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে ৭ অগাস্ট প্রকাশিত ৩ মিনিট ২৩ সেকেন্ডের তথ্যচিত্রকেও আইনজীবী ‘এআই নির্মিত’ বলে দাবি করেন। তবে তদন্ত কর্মকর্তা সেটিও অস্বীকার করেন।
আইনজীবীর প্রশ্নের জবাবে সাক্ষী আলমগীর জানান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এ এস এম মাকসুদ কামাল ও হাসানুল হক ইনুর কথোপকথনের সত্যতা পরীক্ষার জন্য আলামতগুলো সিআইডি ছাড়া অন্য কোনো দেশি বা বিদেশি প্রতিষ্ঠানে পাঠাননি।
আইনজীবী আরও উল্লেখ করেন, ৯ জুলাই প্রচারিত বিবিসি বাংলার ৩৫ মিনিট ৩৫ সেকেন্ডের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি বর্তমান সরকারের প্রভাবে তৈরি করা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর এই অভিযোগও অস্বীকার করেন।
জুলাই আন্দোলনে ২৫ হাজার ব্যক্তি আহত হয়েছেন বলে সাক্ষ্যে উল্লেখ করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। তবে তিনি মাত্র তিনজন আহত ব্যক্তির জখমি সনদপত্র সংগ্রহ করেছেন। আইনজীবী তার বিরুদ্ধে অসম্পূর্ণ তদন্তের অভিযোগ তুললে তিনি তা নাকচ করেন।
আইনজীবী আমির হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামাল ‘দি ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট, ১৯৭৩’-এর ৩(২)(এ)(জি)(এইচ) ও ৪(১)(২)(৩) ধারায় কোনো অপরাধ করেননি। কিন্তু সাক্ষী মো. আলমগীর এই বক্তব্য অস্বীকার করেন।
জেরার এক পর্যায়ে আইনজীবী দেশের বিভিন্ন থানায় পুলিশ হত্যার বিষয়ে সাক্ষীকে প্রশ্ন করেন। তবে ট্রাইব্যুনালের রেকর্ডে এ অংশ রাখা হয়নি।
আইনজীবী বলেন, “সিরাজগঞ্জ, যাত্রাবাড়ী, আশুলিয়া, রামপুরা থানায় পুলিশ হত্যা করা হয়েছে—আপনি জানেন কিনা?”
সাক্ষী আলমগীর জবাবে বলেন, “এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই।”
এ সময় কৌঁসুলি মো. মিজানুল ইসলাম আপত্তি জানান, “বিষয়টি এ তদন্ত কর্মকর্তার আওতাধীন নয়, তাই এটি এখানে প্রাসঙ্গিক নয়।”
এর জবাবে আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, “আন্দোলন চলাকালে এসব ঘটনা ঘটেছে, প্রাসঙ্গিকভাবে আসতেই পারে।”
তখন জ্যেষ্ঠ বিচারক বলেন, “জেরার কোনো লিমিট নেই।”
এই পর্যায়ে কৌঁসুলি এম এইচ তামিম ট্রাইব্যুনাল আইন তুলে ধরে দেখান যে, সাক্ষীকে জেরা করার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। পরে ট্রাইব্যুনাল প্রসিকিউশনের বক্তব্য মেনে নেয়।