সিইপিজেডের আগুন নেভাতে ব্যস্ত ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা -সংগৃহীত
প্রায় আট ঘণ্টায়ও (রাত পৌণে দশটা পর্যন্ত) নিয়ন্ত্রণে আসেনি চট্টগ্রাম ইপিজেডে কারখানার আগুন। আগুন নেভাতে প্রথমে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আগুনের তীব্রতা বাড়ে। পরে আরো দু’টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়।
বৃহস্পতিবার, (১৬ অক্টোবর ২০২৫) দুপুর ২টার দিকে চট্টগ্রাম ইপিজেডের ৫ নম্বর রোডে অ্যাডামস ক্যাপস অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড ও জিহং মেডিকেল কোম্পানির গুদামে আগুন লাগে। প্রথমে ভবনের সাততলায় আগুন লেগেছিল, তা এখন ছড়িয়ে পড়েছে ছয়তলাতেও। তবে শ্রমিকদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইপিজেড কর্তৃপক্ষ।
ইপিজেড কর্তৃপক্ষ ও কারখানার শ্রমিকদের বরাতে জানা যায়, দুপুরের দিকে অ্যাডামস ক্যাপস অ্যান্ড টেক্সটাইলস লিমিটেডের সাততলায় আগুনের সূত্রপাত হয়। সাততলা ভবনটিতে দুটি কারখানা রয়েছে—অ্যাডামস ক্যাপস অ্যান্ড টেক্সটাইলস এবং চীনা মালিকানাধীন জিহং মেডিকেল কোম্পানি লিমিটেড, যার কার্যক্রম চলছে ভবনের পাঁচতলায়।
ভবনের ছয় ও সাততলায় উভয় কারখানার গুদাম ও মালামাল সংরক্ষণের জায়গা হিসেবে ব্যবহৃত হতো। দুই ও তিনতলায় ছিল অ্যাডামস ক্যাপসের সেলাই ও কাটিং বিভাগ, যেখানে প্রায় ৪০০ শ্রমিক কাজ করেন।
অন্যদিকে, জেহং মেডিকেলের পাঁচতলায় ৬০০ থেকে ৭শ’ শ্রমিক কাজ করেন, যারা সার্জিক্যাল মাস্ক, পিপিই এবং হ্যান্ড গ্লাভসসহ নন-ওভেন মেডিকেল সামগ্রী তৈরি করেন।
অ্যাডামস ক্যাপসের ফাইন্যান্স ম্যানেজার রিফাত হাসান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, দুপুরের খাবারের কিছুক্ষণ পর ২টার দিকে আগুন লাগে। আমাদের কাটিং ও সেলাই বিভাগ তিন ও চারতলায়। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে আমরা সব শ্রমিককে নিরাপদে বের করে আনি। আগুনের সূত্রপাত হয় স্টোরেজ এলাকায়, যেখানে কাঁচামাল ও কাপড় ছিল। তিনি আরও বলেন, কয়েক দিন আগে আমরা একটি নতুন অর্ডার পেয়েছিলাম। সেই অর্ডারের কাপড় ও কাঁচামাল গুদামে আনা হয়েছিল। সবকিছু এখন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
জেহং মেডিকেলের সেলাই অপারেটর ইয়াসিন বলেন, দুপুরের খাবারের পর এক নারী সহকর্মী জানান, তিনতলায় আগুনের গন্ধ পাচ্ছেন। পরে সাততলায় গিয়ে দেখি কালো ধোঁয়া ও আগুনের শিখা। সঙ্গে সঙ্গে নিচে নেমে অন্যদের বেরিয়ে যেতে বলি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের শ্রমিকরা তিন, চার ও পাঁচতলায় ছিলেন। দ্রুত নিচে নামার সময় কয়েকজন নারী শ্রমিক পড়ে আহত হন। পরে তাদের বেপজা মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. আব্দুস সোবহান জানান, শ্রমিকদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, ভেতরে এখন কেউ নেই।
ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, ভবনের ভেতরে দাহ্য পদার্থ বেশি থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। আমাদের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছেন। আধুনিক সরঞ্জাম ব্যবহার করা হলেও পানির চাপ কম থাকায় কাজ কঠিন হয়ে পড়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস অ্যান্ড বন্ড কমিশনার মাহফুজুল হক ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে বলেন, বন্ড ওয়্যার হাউস কারখানা কম্পাউন্ডের মধ্যে হতে হবে। একই ভবনের উপর বা নিচে হতে পারে। তবে নির্মাণের আগে নকশা জমা দিয়ে অনুমোদন নিতে হয়। বন্ড ওয়্যার হাউজে বৈদ্যুতিক সংযোগ রাখা রাখার অনুমতি নেই। যদি কেউ সংযোগ রাখে তবে তারা কোনো ক্ষতিপূরণ পাবে না। তিনি আরও বলেন, আজ সিইপিজেড অগ্নিকাণ্ডে এমন কোনো কিছু হয়েছিল কি না, তা এখনো জানা সম্ভব হয়নি।
সিইপিজেডের আগুন নেভাতে ব্যস্ত ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা -সংগৃহীত
বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
প্রায় আট ঘণ্টায়ও (রাত পৌণে দশটা পর্যন্ত) নিয়ন্ত্রণে আসেনি চট্টগ্রাম ইপিজেডে কারখানার আগুন। আগুন নেভাতে প্রথমে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের ১৭টি ইউনিট। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আগুনের তীব্রতা বাড়ে। পরে আরো দু’টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে যোগ দেয়।
বৃহস্পতিবার, (১৬ অক্টোবর ২০২৫) দুপুর ২টার দিকে চট্টগ্রাম ইপিজেডের ৫ নম্বর রোডে অ্যাডামস ক্যাপস অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড ও জিহং মেডিকেল কোম্পানির গুদামে আগুন লাগে। প্রথমে ভবনের সাততলায় আগুন লেগেছিল, তা এখন ছড়িয়ে পড়েছে ছয়তলাতেও। তবে শ্রমিকদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইপিজেড কর্তৃপক্ষ।
ইপিজেড কর্তৃপক্ষ ও কারখানার শ্রমিকদের বরাতে জানা যায়, দুপুরের দিকে অ্যাডামস ক্যাপস অ্যান্ড টেক্সটাইলস লিমিটেডের সাততলায় আগুনের সূত্রপাত হয়। সাততলা ভবনটিতে দুটি কারখানা রয়েছে—অ্যাডামস ক্যাপস অ্যান্ড টেক্সটাইলস এবং চীনা মালিকানাধীন জিহং মেডিকেল কোম্পানি লিমিটেড, যার কার্যক্রম চলছে ভবনের পাঁচতলায়।
ভবনের ছয় ও সাততলায় উভয় কারখানার গুদাম ও মালামাল সংরক্ষণের জায়গা হিসেবে ব্যবহৃত হতো। দুই ও তিনতলায় ছিল অ্যাডামস ক্যাপসের সেলাই ও কাটিং বিভাগ, যেখানে প্রায় ৪০০ শ্রমিক কাজ করেন।
অন্যদিকে, জেহং মেডিকেলের পাঁচতলায় ৬০০ থেকে ৭শ’ শ্রমিক কাজ করেন, যারা সার্জিক্যাল মাস্ক, পিপিই এবং হ্যান্ড গ্লাভসসহ নন-ওভেন মেডিকেল সামগ্রী তৈরি করেন।
অ্যাডামস ক্যাপসের ফাইন্যান্স ম্যানেজার রিফাত হাসান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, দুপুরের খাবারের কিছুক্ষণ পর ২টার দিকে আগুন লাগে। আমাদের কাটিং ও সেলাই বিভাগ তিন ও চারতলায়। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে আমরা সব শ্রমিককে নিরাপদে বের করে আনি। আগুনের সূত্রপাত হয় স্টোরেজ এলাকায়, যেখানে কাঁচামাল ও কাপড় ছিল। তিনি আরও বলেন, কয়েক দিন আগে আমরা একটি নতুন অর্ডার পেয়েছিলাম। সেই অর্ডারের কাপড় ও কাঁচামাল গুদামে আনা হয়েছিল। সবকিছু এখন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
জেহং মেডিকেলের সেলাই অপারেটর ইয়াসিন বলেন, দুপুরের খাবারের পর এক নারী সহকর্মী জানান, তিনতলায় আগুনের গন্ধ পাচ্ছেন। পরে সাততলায় গিয়ে দেখি কালো ধোঁয়া ও আগুনের শিখা। সঙ্গে সঙ্গে নিচে নেমে অন্যদের বেরিয়ে যেতে বলি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের শ্রমিকরা তিন, চার ও পাঁচতলায় ছিলেন। দ্রুত নিচে নামার সময় কয়েকজন নারী শ্রমিক পড়ে আহত হন। পরে তাদের বেপজা মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. আব্দুস সোবহান জানান, শ্রমিকদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, ভেতরে এখন কেউ নেই।
ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, ভবনের ভেতরে দাহ্য পদার্থ বেশি থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। আমাদের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছেন। আধুনিক সরঞ্জাম ব্যবহার করা হলেও পানির চাপ কম থাকায় কাজ কঠিন হয়ে পড়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টমস অ্যান্ড বন্ড কমিশনার মাহফুজুল হক ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে বলেন, বন্ড ওয়্যার হাউস কারখানা কম্পাউন্ডের মধ্যে হতে হবে। একই ভবনের উপর বা নিচে হতে পারে। তবে নির্মাণের আগে নকশা জমা দিয়ে অনুমোদন নিতে হয়। বন্ড ওয়্যার হাউজে বৈদ্যুতিক সংযোগ রাখা রাখার অনুমতি নেই। যদি কেউ সংযোগ রাখে তবে তারা কোনো ক্ষতিপূরণ পাবে না। তিনি আরও বলেন, আজ সিইপিজেড অগ্নিকাণ্ডে এমন কোনো কিছু হয়েছিল কি না, তা এখনো জানা সম্ভব হয়নি।