শুক্রবার জুলাই সনদ স্বাক্ষরের দিন জাতীয় সংসদ এলাকায় জুলাই যোদ্ধাদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয় -সংবাদ
জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, আইনি সুরক্ষা, পুনর্বাসনের দাবিতে জুলাই সনদ সই অনুষ্ঠানের মঞ্চের সামনে অবস্থান নেয়া ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ পিটিয়ে টিয়ারশেল ছুঁড়ে সরালো পুলিশ। জুলাই শহীদদের পরিবার ও আহতরা শুক্রবার,(১৭ অক্টোবর ২০২৫) দুপুরে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ‘জুলাই সনদ ২০২৫’ সই অনুষ্ঠানস্থলে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ মঞ্চে এসে তাদের দাবি পূরণে জুলাই সনদে সংশোধনী আনার ঘোষণা দেন।
ওই প্রতিশ্রুতির পরও ‘জুলাই যোদ্ধারা’ সেখান থেকে না সরলে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে ও লাঠিপেটা করে সেখান থেকে তাদের সরায়। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেডও ব্যবহার করে পুলিশ। এ সময় ‘জুলাই যোদ্ধারা’ সংসদ ভবনের বাইরে কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করে। সড়কে টায়ার, কাঠ এবং অনুষ্ঠানের জন্য বাইরে বানানো ছোট ছোট তাঁবু একসঙ্গে করে তারা আগুন ধরিয়ে দেন।
পুলিশের লাঠিপেটায় আহত কয়েকজনকে এ সময় হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা যায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধাওয়ায় বিক্ষোভকারীরা খামারবাড়ি মোড় ও আসাদ গেইটের দিকে অবস্থান নেন। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মাদ ইউনূসের নেতৃত্বে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে জুলাই সনদ সই অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা বিকেল ৪টায়। তার ঘণ্টা তিনেক আগে সনদ সই অনুষ্ঠানের মঞ্চ ঘিরে এ ঘটনা ঘটল।
কমিশনের সভাপতি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস আড়ম্বরপূর্ণভাবে ঐতিহাসিক এই ক্ষণ উদযাপনে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আইনি ভিত্তি ‘স্পষ্ট’ না হওয়ার যুক্তি দেখিয়ে সই অনুষ্ঠানে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে এনসিপি। এছাড়া ইতিহাস ‘সঠিকভাবে না আসা’ এবং সংবিধানের মূলনীতি পরিবর্তন নিয়ে আপত্তির কারণে বাম ধারার চারটি দল সনদে সই না করার ঘোষণা দিয়ে রেখেছে। দলগুলো হলো- বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাসদ (মার্ক্সবাদী) ও বাংলাদেশ জাসদ।
এর মধ্যে জুলাই শহীদের পরিবার ও আহত জুলাই যোদ্ধারা কয়েকটি দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনের মানিক মিয়া এভিনিউয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। শুক্রবার সকালে তারা জাতীয় সংসদ ভবনের প্রবেশের ফটক টপকে ভেতরে ঢুকে পড়ে কয়েকশ মানুষ। একপর্যায়ে তারা দক্ষিণ প্লাজায় সনদ সই মঞ্চের সামনে পৌঁছে যান। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের বাধা দেয়া চেষ্টা করলে জুলাই যোদ্ধারা অতিথিদের জন্য রাখা চেয়ারে বসে পড়েন।
শহীদ পরিবার-জুলাই যোদ্ধাদের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের সুরক্ষা ও দায়মুক্তি আইনের প্রতিশ্রুতি জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তারা।
আয়োজকরা বিভিন্নভাবে তাদের বুঝিয়ে শান্ত করার এবং সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। একপর্যায়ে ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ মঞ্চে এসে জুলাই যোদ্ধাদের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করেন এবং দাবি পূরণের আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ ও আন্তরিকভাবে ক্ষমতা প্রার্থনা করছি আপনাদের কাছে। আপনাদের এভাবে দেখা করতে হচ্ছে এটা শুধু লজ্জার, ক্ষোভের, দুঃখের বিষয় নয়। আমরা কমিশনের পক্ষ থেকে ক্ষমাপ্রার্থী।’
তিনি বলেন, জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিনিধিরা যে দাবি এনেছেন, বৃহস্পতিবারের (গত) আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ঐকমত্য কমিশন জাতীয় সনদের পঞ্চম দফার অঙ্গীকারনামার বিষয়ে দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে দাবির প্রতিফলন ঘটাতে প্রয়োজনীয় সংশোধনী তৈরি করেছে। ‘এটি জাতীয় সনদের চূড়ান্ত ভাষ্য রাষ্ট্রীয়ভাবে সংরক্ষণ করা হবে। যার প্রতিশ্রুতিতে পরবর্তী সরকার পদক্ষেপ নেবে। সেখানে সুস্পষ্টভাবে বলবো- যেন এ অঙ্গীকারনামা বাস্তবায়নে সরকার যেন ব্যবস্থা করে। এ নিয়ে দল ও ঐকমত্য কমিশনের কোনো মতপার্থক্য নেই।’ অঙ্গীকারনামার ৫ নম্বর দফার সংশোধিত ভাষ্য পড়ে শোনান সহ-সভাপতি।
তিনি বলেন, ‘যেখানে জুলাই যোদ্ধাদের অবদানের স্বীকৃতি, প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকার রয়েছে- আপনাদের রাষ্ট্রীয় মযাদা, সুযোগ-সুবিধা ও আইনি সুরক্ষা, নিরাপত্তার বিধান রয়েছে।’ অঙ্গীকারনামায় বলা হয়- গণঅভ্যুত্থানপূর্ব ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রামে গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানকালে সংঘটিত সব হত্যাকাণ্ডের বিচার, শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান ও শহীদ পরিবারগুলোকে যথোপযুক্ত সহায়তা প্রদান এবং আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।’
আলী রীয়াজ বলেন, এ অঙ্গীকারনামায় দলগুলো সই করবে এবং অবিলম্বে বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে বলা হবে। ‘এটাই শেষ কথা নয়। সরকার যে ব্যবস্থা নেবে আমরা নজর রাখব। আপনাদের বক্তব্য পরবর্তী সময়ে শুনবো, আপনারা আসবেন, কথা বলবো। বিকেলে সনদ সই হবে। আপনাদের দাবি পূরণের ব্যবস্থা করছি।’ এ সময় জুলাই যোদ্ধারা হইচই শুরু করেন। জুমার নামাজের সময় হওয়ায় জুলাই যোদ্ধাদের মঞ্চের আশপাশের জায়গা ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করেন আলী রীয়াজ।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার বক্তব্য দিতে চাইলে ‘ভুয়া ভুয়া’ ম্লোগান দেয় জুলাই যোদ্ধারা। মনির হায়দার এ সময় বলেন, ‘আপনারা আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর কাজের সহায়তা করুন। আপনারা এখান থেকে চলে যান, পরে আপনাদের সঙ্গে কথা হবে, দাবিগুলো প্রয়োজনে লিখে দেন।’ এ সময় ঐকমত্য কমিশনের কয়েকজন সদস্য ছাড়াও ডিএমপির কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীকে সেখানে দেখা যায়।
জুলাই যোদ্ধারা এরপরও অনুষ্ঠানস্থল থেকে সরে যেতে রাজি না হলে বলপ্রয়োগ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশের ধাওয়ায় জুলাই যোদ্ধারা প্রথমে দক্ষিণ প্লাজা থেকে বেরিয়ে গেলেও আবার ফিরে এসে বিক্ষোভ দেখানোর চেষ্টা করলে দুটি সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। আন্দোলনকারীরা ইটপাটকেল ছুঁড়তে ছুঁড়তে এগিয়ে আসতে চাইলে পুলিশ টিয়ারশেলও ছোড়ে। দুপুর ২টার দিকে মানিক মিয়া এভিনিউর পুরো সড়কের নিয়ন্ত্রণ নেয় পুলিশ। জুলাই যোদ্ধারের একটি গ্রুপ আড়ংয়ের দিকে, অন্যটি গ্রুপ খামার বাড়ির দিকে অবস্থান নেয়। তখনও থেমে থেমে সাউন্ড গ্রেনেডের বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এ সময় মানিক মিয়া এভিনিউ এবং মিরপুর সড়কেও যান চলাচল বন্ধ থাকে।
শুক্রবার জুলাই সনদ স্বাক্ষরের দিন জাতীয় সংসদ এলাকায় জুলাই যোদ্ধাদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয় -সংবাদ
শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫
জুলাই অভ্যুত্থানে আহতদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, আইনি সুরক্ষা, পুনর্বাসনের দাবিতে জুলাই সনদ সই অনুষ্ঠানের মঞ্চের সামনে অবস্থান নেয়া ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ পিটিয়ে টিয়ারশেল ছুঁড়ে সরালো পুলিশ। জুলাই শহীদদের পরিবার ও আহতরা শুক্রবার,(১৭ অক্টোবর ২০২৫) দুপুরে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ‘জুলাই সনদ ২০২৫’ সই অনুষ্ঠানস্থলে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ মঞ্চে এসে তাদের দাবি পূরণে জুলাই সনদে সংশোধনী আনার ঘোষণা দেন।
ওই প্রতিশ্রুতির পরও ‘জুলাই যোদ্ধারা’ সেখান থেকে না সরলে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে ও লাঠিপেটা করে সেখান থেকে তাদের সরায়। তাদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেডও ব্যবহার করে পুলিশ। এ সময় ‘জুলাই যোদ্ধারা’ সংসদ ভবনের বাইরে কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করে। সড়কে টায়ার, কাঠ এবং অনুষ্ঠানের জন্য বাইরে বানানো ছোট ছোট তাঁবু একসঙ্গে করে তারা আগুন ধরিয়ে দেন।
পুলিশের লাঠিপেটায় আহত কয়েকজনকে এ সময় হাসপাতালে নিয়ে যেতে দেখা যায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধাওয়ায় বিক্ষোভকারীরা খামারবাড়ি মোড় ও আসাদ গেইটের দিকে অবস্থান নেন। প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মাদ ইউনূসের নেতৃত্বে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে জুলাই সনদ সই অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা বিকেল ৪টায়। তার ঘণ্টা তিনেক আগে সনদ সই অনুষ্ঠানের মঞ্চ ঘিরে এ ঘটনা ঘটল।
কমিশনের সভাপতি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস আড়ম্বরপূর্ণভাবে ঐতিহাসিক এই ক্ষণ উদযাপনে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের আইনি ভিত্তি ‘স্পষ্ট’ না হওয়ার যুক্তি দেখিয়ে সই অনুষ্ঠানে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে এনসিপি। এছাড়া ইতিহাস ‘সঠিকভাবে না আসা’ এবং সংবিধানের মূলনীতি পরিবর্তন নিয়ে আপত্তির কারণে বাম ধারার চারটি দল সনদে সই না করার ঘোষণা দিয়ে রেখেছে। দলগুলো হলো- বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাসদ (মার্ক্সবাদী) ও বাংলাদেশ জাসদ।
এর মধ্যে জুলাই শহীদের পরিবার ও আহত জুলাই যোদ্ধারা কয়েকটি দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনের মানিক মিয়া এভিনিউয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। শুক্রবার সকালে তারা জাতীয় সংসদ ভবনের প্রবেশের ফটক টপকে ভেতরে ঢুকে পড়ে কয়েকশ মানুষ। একপর্যায়ে তারা দক্ষিণ প্লাজায় সনদ সই মঞ্চের সামনে পৌঁছে যান। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের বাধা দেয়া চেষ্টা করলে জুলাই যোদ্ধারা অতিথিদের জন্য রাখা চেয়ারে বসে পড়েন।
শহীদ পরিবার-জুলাই যোদ্ধাদের মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ, রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের সুরক্ষা ও দায়মুক্তি আইনের প্রতিশ্রুতি জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিতে সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন তারা।
আয়োজকরা বিভিন্নভাবে তাদের বুঝিয়ে শান্ত করার এবং সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। একপর্যায়ে ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ মঞ্চে এসে জুলাই যোদ্ধাদের প্রতি দুঃখ প্রকাশ করেন এবং দাবি পূরণের আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ ও আন্তরিকভাবে ক্ষমতা প্রার্থনা করছি আপনাদের কাছে। আপনাদের এভাবে দেখা করতে হচ্ছে এটা শুধু লজ্জার, ক্ষোভের, দুঃখের বিষয় নয়। আমরা কমিশনের পক্ষ থেকে ক্ষমাপ্রার্থী।’
তিনি বলেন, জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিনিধিরা যে দাবি এনেছেন, বৃহস্পতিবারের (গত) আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ঐকমত্য কমিশন জাতীয় সনদের পঞ্চম দফার অঙ্গীকারনামার বিষয়ে দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে দাবির প্রতিফলন ঘটাতে প্রয়োজনীয় সংশোধনী তৈরি করেছে। ‘এটি জাতীয় সনদের চূড়ান্ত ভাষ্য রাষ্ট্রীয়ভাবে সংরক্ষণ করা হবে। যার প্রতিশ্রুতিতে পরবর্তী সরকার পদক্ষেপ নেবে। সেখানে সুস্পষ্টভাবে বলবো- যেন এ অঙ্গীকারনামা বাস্তবায়নে সরকার যেন ব্যবস্থা করে। এ নিয়ে দল ও ঐকমত্য কমিশনের কোনো মতপার্থক্য নেই।’ অঙ্গীকারনামার ৫ নম্বর দফার সংশোধিত ভাষ্য পড়ে শোনান সহ-সভাপতি।
তিনি বলেন, ‘যেখানে জুলাই যোদ্ধাদের অবদানের স্বীকৃতি, প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকার রয়েছে- আপনাদের রাষ্ট্রীয় মযাদা, সুযোগ-সুবিধা ও আইনি সুরক্ষা, নিরাপত্তার বিধান রয়েছে।’ অঙ্গীকারনামায় বলা হয়- গণঅভ্যুত্থানপূর্ব ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রামে গুম, খুন ও নির্যাতনের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানকালে সংঘটিত সব হত্যাকাণ্ডের বিচার, শহীদদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদা প্রদান ও শহীদ পরিবারগুলোকে যথোপযুক্ত সহায়তা প্রদান এবং আহতদের সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।’
আলী রীয়াজ বলেন, এ অঙ্গীকারনামায় দলগুলো সই করবে এবং অবিলম্বে বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে বলা হবে। ‘এটাই শেষ কথা নয়। সরকার যে ব্যবস্থা নেবে আমরা নজর রাখব। আপনাদের বক্তব্য পরবর্তী সময়ে শুনবো, আপনারা আসবেন, কথা বলবো। বিকেলে সনদ সই হবে। আপনাদের দাবি পূরণের ব্যবস্থা করছি।’ এ সময় জুলাই যোদ্ধারা হইচই শুরু করেন। জুমার নামাজের সময় হওয়ায় জুলাই যোদ্ধাদের মঞ্চের আশপাশের জায়গা ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করেন আলী রীয়াজ।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার বক্তব্য দিতে চাইলে ‘ভুয়া ভুয়া’ ম্লোগান দেয় জুলাই যোদ্ধারা। মনির হায়দার এ সময় বলেন, ‘আপনারা আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর কাজের সহায়তা করুন। আপনারা এখান থেকে চলে যান, পরে আপনাদের সঙ্গে কথা হবে, দাবিগুলো প্রয়োজনে লিখে দেন।’ এ সময় ঐকমত্য কমিশনের কয়েকজন সদস্য ছাড়াও ডিএমপির কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীকে সেখানে দেখা যায়।
জুলাই যোদ্ধারা এরপরও অনুষ্ঠানস্থল থেকে সরে যেতে রাজি না হলে বলপ্রয়োগ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশের ধাওয়ায় জুলাই যোদ্ধারা প্রথমে দক্ষিণ প্লাজা থেকে বেরিয়ে গেলেও আবার ফিরে এসে বিক্ষোভ দেখানোর চেষ্টা করলে দুটি সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। আন্দোলনকারীরা ইটপাটকেল ছুঁড়তে ছুঁড়তে এগিয়ে আসতে চাইলে পুলিশ টিয়ারশেলও ছোড়ে। দুপুর ২টার দিকে মানিক মিয়া এভিনিউর পুরো সড়কের নিয়ন্ত্রণ নেয় পুলিশ। জুলাই যোদ্ধারের একটি গ্রুপ আড়ংয়ের দিকে, অন্যটি গ্রুপ খামার বাড়ির দিকে অবস্থান নেয়। তখনও থেমে থেমে সাউন্ড গ্রেনেডের বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এ সময় মানিক মিয়া এভিনিউ এবং মিরপুর সড়কেও যান চলাচল বন্ধ থাকে।