ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বিচার বিভাগে নারীর অংশগ্রহণ ন্যায় বিচারের গুণগত উৎকর্ষ ও জনআস্থার বিশেষ প্রতীক বলে মনে করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। গতকাল বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ডের ব্যাংককে নারী বিচারকদের এক সেমিনারে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
শুক্রবার,(১৭ অক্টোবর ২০২৫) সুপ্রিম কোর্টের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি ইউএনডিপি আয়োজিত ‘রিজিওনাল কনভেনিং অন জুডিশিয়াল লিডারশিপ ফর ওম্যান জাজেস ইন এশিয়া’ সংক্রান্ত ‘শিফট আন্ডারওয়ে অ্যাডভান্সিং জেন্ডার অন দ্য বেঞ্চ ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক এক কনফারেন্সে তিনি বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, ‘বিচার বিভাগে নারীর অংশগ্রহণ কেবল প্রতিনিধিত্বের প্রশ্ন নয় বরং এটি ন্যায় বিচারের গুণগত উৎকর্ষ ও জনআস্থার বিশেষ প্রতীক।’ নারী বিচারকরা লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা, কর্মক্ষেত্রে হয়রানি ও পারিবারিক বিরোধের মতো সংবেদনশীল মামলায় মানবিক অন্তর্দৃষ্টি ও বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে বিচার প্রক্রিয়াকে সমৃদ্ধ করে থাকেন বলে মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি।
জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, নারী বিচারকরা ক্ষমতার ভারসাম্য ও মর্যাদার সূক্ষ্ম দিকগুলো অনুধাবন করতে বেশি সক্ষম, যা বিচার ব্যবস্থাকে আরও ন্যায়সংগত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করে তোলে। বিচার কর্মবিভাগে সত্যিকারের সমতা শুধু নিয়োগের মাধ্যমে আসে না মন্তব্য করে প্রধান বিচারপতি বলেন, এটি একটি রূপান্তরের প্রক্রিয়া।
এ লক্ষ্যে তিনি স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া, নারীবান্ধব পেশাগত পরিবেশ, মেন্টরশিপ নেটওয়ার্কের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করে এশিয়ার বিচার বিভাগগুলোতে সমৃদ্ধ প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার আহ্বান জানান। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের জেলা আদালতসমূহে ৬২৫ জন নারী বিচারক কর্মরত থাকলেও উচ্চ আদালতে তাদের সংখ্যা মাত্র ১০ শতাংশ।
‘এছাড়া, বাংলাদেশে আইন পেশায় নারীর সংখ্যা ১২ শতাংশেরও কম, যা পেশাগত অগ্রগতিতে নারীর সীমিত অংশগ্রহণের ইঙ্গিত বহন করে।’ তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে ২৫ জনের মধ্যে ৩ জন নারী বিচারক নিযুক্ত হওয়া প্রমাণ করে যে বাংলাদেশে নারীবান্ধব বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠায় এখনও কিছু কাঠামোগত ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতা বিদ্যমান রয়েছে। এসব প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে তিনি নারীদের জন্য পেশাগত প্রস্তুতি, কার্যকর দিকনির্দেশনা ও নীতিগত সহায়তা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
এ প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক সংস্থা, উন্নয়ন সহযোগী ও দাতাগোষ্ঠীর ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, নারীর বিচারিক নেতৃত্ব বিকাশে তাদের ভূমিকা নিছক সহায়তা নয় বরং এটি এক প্রকারের অংশীদারত্ব।
তিনি জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশে ইউএনডিপি সুপ্রিম কোর্ট, সরকার ও সিভিল সোসাইটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে বিচার বিভাগের সক্ষমতা ও জেন্ডার সমতা নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এর পাশাপাশি তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সুইডেন, যুক্তরাজ্য ও জার্মানির অবদানকেও বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।
প্রধান বিচারপতি গত ১৫ অক্টোবর থাইল্যান্ডের বিচারমন্ত্রী রুত্তাফন নাওয়ারাতের সঙ্গে বৈঠক করেন। এছাড়া একইদিন তিনি ডেপুটি রিজিওনাল ডিরেক্ট ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক ক্রিস্টোফি বাহুয়েট এবং নেপালের ডেপুটি চিফ জাস্টিস স্বপ্না প্রধান মলের সঙ্গে পৃথক পৃথক সাক্ষাতে মিলিত হন। আজ তিনি দেশে ফিরবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫
বিচার বিভাগে নারীর অংশগ্রহণ ন্যায় বিচারের গুণগত উৎকর্ষ ও জনআস্থার বিশেষ প্রতীক বলে মনে করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। গতকাল বৃহস্পতিবার থাইল্যান্ডের ব্যাংককে নারী বিচারকদের এক সেমিনারে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
শুক্রবার,(১৭ অক্টোবর ২০২৫) সুপ্রিম কোর্টের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি ইউএনডিপি আয়োজিত ‘রিজিওনাল কনভেনিং অন জুডিশিয়াল লিডারশিপ ফর ওম্যান জাজেস ইন এশিয়া’ সংক্রান্ত ‘শিফট আন্ডারওয়ে অ্যাডভান্সিং জেন্ডার অন দ্য বেঞ্চ ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক এক কনফারেন্সে তিনি বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, ‘বিচার বিভাগে নারীর অংশগ্রহণ কেবল প্রতিনিধিত্বের প্রশ্ন নয় বরং এটি ন্যায় বিচারের গুণগত উৎকর্ষ ও জনআস্থার বিশেষ প্রতীক।’ নারী বিচারকরা লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা, কর্মক্ষেত্রে হয়রানি ও পারিবারিক বিরোধের মতো সংবেদনশীল মামলায় মানবিক অন্তর্দৃষ্টি ও বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে বিচার প্রক্রিয়াকে সমৃদ্ধ করে থাকেন বলে মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি।
জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, নারী বিচারকরা ক্ষমতার ভারসাম্য ও মর্যাদার সূক্ষ্ম দিকগুলো অনুধাবন করতে বেশি সক্ষম, যা বিচার ব্যবস্থাকে আরও ন্যায়সংগত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করে তোলে। বিচার কর্মবিভাগে সত্যিকারের সমতা শুধু নিয়োগের মাধ্যমে আসে না মন্তব্য করে প্রধান বিচারপতি বলেন, এটি একটি রূপান্তরের প্রক্রিয়া।
এ লক্ষ্যে তিনি স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া, নারীবান্ধব পেশাগত পরিবেশ, মেন্টরশিপ নেটওয়ার্কের ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করে এশিয়ার বিচার বিভাগগুলোতে সমৃদ্ধ প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কৃতি গড়ে তোলার আহ্বান জানান। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের জেলা আদালতসমূহে ৬২৫ জন নারী বিচারক কর্মরত থাকলেও উচ্চ আদালতে তাদের সংখ্যা মাত্র ১০ শতাংশ।
‘এছাড়া, বাংলাদেশে আইন পেশায় নারীর সংখ্যা ১২ শতাংশেরও কম, যা পেশাগত অগ্রগতিতে নারীর সীমিত অংশগ্রহণের ইঙ্গিত বহন করে।’ তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে ২৫ জনের মধ্যে ৩ জন নারী বিচারক নিযুক্ত হওয়া প্রমাণ করে যে বাংলাদেশে নারীবান্ধব বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠায় এখনও কিছু কাঠামোগত ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতা বিদ্যমান রয়েছে। এসব প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে তিনি নারীদের জন্য পেশাগত প্রস্তুতি, কার্যকর দিকনির্দেশনা ও নীতিগত সহায়তা বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
এ প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক সংস্থা, উন্নয়ন সহযোগী ও দাতাগোষ্ঠীর ভূমিকার প্রশংসা করে তিনি বলেন, নারীর বিচারিক নেতৃত্ব বিকাশে তাদের ভূমিকা নিছক সহায়তা নয় বরং এটি এক প্রকারের অংশীদারত্ব।
তিনি জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশে ইউএনডিপি সুপ্রিম কোর্ট, সরকার ও সিভিল সোসাইটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে বিচার বিভাগের সক্ষমতা ও জেন্ডার সমতা নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এর পাশাপাশি তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সুইডেন, যুক্তরাজ্য ও জার্মানির অবদানকেও বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।
প্রধান বিচারপতি গত ১৫ অক্টোবর থাইল্যান্ডের বিচারমন্ত্রী রুত্তাফন নাওয়ারাতের সঙ্গে বৈঠক করেন। এছাড়া একইদিন তিনি ডেপুটি রিজিওনাল ডিরেক্ট ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক ক্রিস্টোফি বাহুয়েট এবং নেপালের ডেপুটি চিফ জাস্টিস স্বপ্না প্রধান মলের সঙ্গে পৃথক পৃথক সাক্ষাতে মিলিত হন। আজ তিনি দেশে ফিরবেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।