ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গুম-নির্যাতনের মাধ্যমে ও জুলাই আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের পৃথক তিনটি মামলায় সাবেক ও বর্তমান ২৫ সেনা কর্মকর্তাসহ ৩২ আসামির বুধবার (আজ) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার দিন ধার্য রয়েছে। তবে তারা যদি হাজির না হন অথবা তাদের হাজির না করা হয়, তাহলে তাদের হাজির হতে দুটি সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলে জানান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম ।
মঙ্গলবার,(২১ অক্টোবর ২০২৫) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এক ব্রিফিংয়ে প্রসিকিউটর এমএইচ তামীম এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়া আসামিরা যদি কাল (আজ) হাজির হন এবং ট্রাইব্যুনাল তাদের জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন, তাহলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে কারা কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে তার কোন কারাগারে থাকবেন।’
মামলা তিনটির মধ্যে দুটি হচ্ছে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গুম ও নির্যাতনের মাধ্যমে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায়। অন্যটি জুলাই আন্দোলনের সময় রাজধানীর রামপুরা ও বনশ্রী এলাকায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায়।
প্রসিকিউটর তামীম বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। আজ ট্রাইব্যুনালে ওই মামলা তিনটির নির্ধারিত তারিখ আছে। ট্রাইব্যুনাল এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করতে পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) আদেশ দিয়েছিলেন। এসব আসামির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কপি পাঠানো হয়েছে।’
আইন অনুযায়ী দুটি উপায় উল্লেখ করে এই প্রসিকিউটর বলেন, ‘তারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে পারেন। অথবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের গ্রেপ্তার করে ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসবেন। ট্রাইব্যুনালে তারা উপস্থিত হয়ে জামিন চাইতে পারেন। জামিনের ভিত্তি থাকলে ট্রাইব্যুনাল তাদের জামিন দিতে পারেন। আর যদি আসামিদের জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়, তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে কারা কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে তারা কোন কারাগারে থাকবেন।’
অভিযুক্তরা বুধবার (আজ) যদি হাজির না হন অথবা হাজির না করা হয়, তবে আইন অনুযায়ী তাদের ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হতে দুটি জাতীয় পত্রিকায় (একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি) বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়ে তামীম বলেন, ‘সেখানে তাদেরকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে একটি তারিখ নির্ধারণ করে দেয়া হবে। সেদিনও যদি তারা হাজির না হন, তাহলে তাদের পলাতক ঘোষণা করে স্টেট ডিফেন্স কাউন্সিল (রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী) দেয়া হবে। এই স্টেট ডিফেন্স কাউন্সিল তাদের পক্ষে মামলা পরিচালনা করবে।’
আসামিদের মধ্যে সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তাদের বাইরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বেনজীর আহমেদসহ র্যাবের সাবেক তিন মহাপরিচালক (ডিজি) ও পুলিশের দুই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। এছাড়া অভিযুক্ত সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৫ জন সেনা হেফাজতে আছেন।
এর আগে গত ১১ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল সামরিক বাহিনীর যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন, তার মধ্যে ১৫ জনকে হেফাজতে ও একজন ‘অবৈধভাবে’ অনুপস্থিত বলে জানিয়েছিল সেনা সদর। ওইদিন এক সংবাদ সস্মেলনে ‘কেউ চার্জশিটভুক্ত আসামি হলেই সে অপরাধী হিসেবে প্রমাণিত নয়’ বলে দাবি করেছিলেন সেনাবাহিনীর অ্যাডজুটান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান। এর পরদিন ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘ঢাকা সেনানিবাসের বাশার রোডসংলগ্ন উত্তর দিকে অবস্থিত ‘এম ই এস বিল্ডিং নম্বর-৫৪’কে সাময়িকভাবে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা হলো।’ তবে ওইদিনই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া ১৫ সেনা কর্মকর্তাদের ‘অবশ্যই আদালতে আনতে হবে’ বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তবে সেনাসদরের সংবাদ সম্মেলনে সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে তারা তা পায়নি বলে জানিয়েছিল। তবে তার আগেই চাকরিরত ওই কর্মকর্তাদের হেফাজতে নেয়ার পদক্ষেপ নেয় তারা বলে দাবি তাদের।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫
আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গুম-নির্যাতনের মাধ্যমে ও জুলাই আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের পৃথক তিনটি মামলায় সাবেক ও বর্তমান ২৫ সেনা কর্মকর্তাসহ ৩২ আসামির বুধবার (আজ) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার দিন ধার্য রয়েছে। তবে তারা যদি হাজির না হন অথবা তাদের হাজির না করা হয়, তাহলে তাদের হাজির হতে দুটি সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলে জানান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম ।
মঙ্গলবার,(২১ অক্টোবর ২০২৫) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এক ব্রিফিংয়ে প্রসিকিউটর এমএইচ তামীম এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘এছাড়া আসামিরা যদি কাল (আজ) হাজির হন এবং ট্রাইব্যুনাল তাদের জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন, তাহলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে কারা কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে তার কোন কারাগারে থাকবেন।’
মামলা তিনটির মধ্যে দুটি হচ্ছে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে গুম ও নির্যাতনের মাধ্যমে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায়। অন্যটি জুলাই আন্দোলনের সময় রাজধানীর রামপুরা ও বনশ্রী এলাকায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায়।
প্রসিকিউটর তামীম বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান সামরিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গুমের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। আজ ট্রাইব্যুনালে ওই মামলা তিনটির নির্ধারিত তারিখ আছে। ট্রাইব্যুনাল এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করতে পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) আদেশ দিয়েছিলেন। এসব আসামির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কপি পাঠানো হয়েছে।’
আইন অনুযায়ী দুটি উপায় উল্লেখ করে এই প্রসিকিউটর বলেন, ‘তারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে পারেন। অথবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের গ্রেপ্তার করে ট্রাইব্যুনালে নিয়ে আসবেন। ট্রাইব্যুনালে তারা উপস্থিত হয়ে জামিন চাইতে পারেন। জামিনের ভিত্তি থাকলে ট্রাইব্যুনাল তাদের জামিন দিতে পারেন। আর যদি আসামিদের জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়, তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে কারা কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে তারা কোন কারাগারে থাকবেন।’
অভিযুক্তরা বুধবার (আজ) যদি হাজির না হন অথবা হাজির না করা হয়, তবে আইন অনুযায়ী তাদের ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হতে দুটি জাতীয় পত্রিকায় (একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি) বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়ে তামীম বলেন, ‘সেখানে তাদেরকে ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে একটি তারিখ নির্ধারণ করে দেয়া হবে। সেদিনও যদি তারা হাজির না হন, তাহলে তাদের পলাতক ঘোষণা করে স্টেট ডিফেন্স কাউন্সিল (রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী) দেয়া হবে। এই স্টেট ডিফেন্স কাউন্সিল তাদের পক্ষে মামলা পরিচালনা করবে।’
আসামিদের মধ্যে সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তাদের বাইরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বেনজীর আহমেদসহ র্যাবের সাবেক তিন মহাপরিচালক (ডিজি) ও পুলিশের দুই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। এছাড়া অভিযুক্ত সাবেক ও বর্তমান সেনা কর্মকর্তাদের মধ্যে ১৫ জন সেনা হেফাজতে আছেন।
এর আগে গত ১১ অক্টোবর ট্রাইব্যুনাল সামরিক বাহিনীর যেসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন, তার মধ্যে ১৫ জনকে হেফাজতে ও একজন ‘অবৈধভাবে’ অনুপস্থিত বলে জানিয়েছিল সেনা সদর। ওইদিন এক সংবাদ সস্মেলনে ‘কেউ চার্জশিটভুক্ত আসামি হলেই সে অপরাধী হিসেবে প্রমাণিত নয়’ বলে দাবি করেছিলেন সেনাবাহিনীর অ্যাডজুটান্ট জেনারেল মেজর জেনারেল মো. হাকিমুজ্জামান। এর পরদিন ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবনকে সাময়িকভাবে কারাগার ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘ঢাকা সেনানিবাসের বাশার রোডসংলগ্ন উত্তর দিকে অবস্থিত ‘এম ই এস বিল্ডিং নম্বর-৫৪’কে সাময়িকভাবে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করা হলো।’ তবে ওইদিনই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া ১৫ সেনা কর্মকর্তাদের ‘অবশ্যই আদালতে আনতে হবে’ বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। তবে সেনাসদরের সংবাদ সম্মেলনে সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে তারা তা পায়নি বলে জানিয়েছিল। তবে তার আগেই চাকরিরত ওই কর্মকর্তাদের হেফাজতে নেয়ার পদক্ষেপ নেয় তারা বলে দাবি তাদের।