বাংলাদেশের আসন্ন ২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে ভুয়া তথ্য ও বিদ্বেষমূলক প্রচারণা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা, সামাজিক স্থিতি এবং নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণের জন্য নজিরবিহীন ঝুঁকি তৈরি করেছে।
প্রস্তুতি দুর্বল, ফ্যাক্টচেকার অপ্রতুল
গণমাধ্যম, সরকার ও প্ল্যাটফর্মের সমন্বয় জরুরি
সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে লক্ষ্যভিত্তিক প্রচারণা
এমন সতর্কবার্তা এসেছে ডিজিটাল অধিকার ও তথ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান ডিজিটালি রাইট-এর নতুন এক গবেষণায়।
‘ট্যাকলিং ইলেকশন ডিসইনফরমেশন ইন বাংলাদেশ: বিল্ডিং কালেকটিভ রেসপন্সেস ফর ইলেক্টোরাল ইন্টেগ্রিটি’ শিরোনামের এই গবেষণাটি সম্পন্ন হয়েছে এশিয়া ফাউন্ডেশনের সহায়তায় এবং যুক্তরাজ্যের ফরেইন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও) এর অর্থায়নে।
রোববার, (০২ নভেম্বর ২০২৫) ঢাকার গুলশানের এক অনুষ্ঠানে গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এতে গণমাধ্যম প্রতিনিধি, ফ্যাক্টচেকার, শিক্ষাবিদ, নির্বাচন পর্যবেক্ষক ও নাগরিক সমাজের নেতারা অংশ নেন।
গবেষণায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অনলাইন তথ্যপরিবেশ এখন ‘ভীষণভাবে ভঙ্গুর ও বিভক্ত।’ রাজনৈতিক দল, ধর্মীয় গোষ্ঠী, প্রবাসী ও বিদেশি প্রভাবকরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর কনটেন্ট, প্রোপাগান্ডা নেটওয়ার্ক এবং বাণিজ্যিক কনটেন্ট নির্মাতাদের মাধ্যমে জনমত প্রভাবিত করার প্রতিযোগিতায় নেমেছে।
গবেষণায় আরও দেখা যায়, বিকৃত ছবি, মনগড়া ভিডিও ও এআই-নির্ভর কনটেন্ট নারী প্রার্থী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে নির্বাচনের আগে ভয়ভীতি, হয়রানি ও ভোটার দমন বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় ১৭ কোটি জনসংখ্যার দেশে ফ্যাক্টচেকারের সংখ্যা মাত্র ৪০ থেকে ৫০ জন। অধিকাংশ গণমাধ্যমে তথ্য যাচাইয়ের নির্দিষ্ট বিভাগ নেই, সাংবাদিকরা পর্যাপ্ত প্রযুক্তিগত সরঞ্জাম ও সমন্বয়ের ঘাটতিতে ভুগছেন।
সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলোও অন্য অংশীজনদের সঙ্গে সমন্বয় করছে না। নির্বাচন কমিশনের নীতিকাঠামো ও সক্ষমতাও অপর্যাপ্ত বলে উল্লেখ করা হয়।
ইউল্যাবের অধ্যাপক সুমন রহমান বলেন, ‘ভুল তথ্য মোকাবিলায় ফেসবুক ও ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্মের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি। সরকারকে তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে, কিন্তু ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে সে অবস্থান এখন দুর্বল।’
ডিজিটালি রাইটের গবেষণা প্রধান আব্দুল্লাহ তিতির বলেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে যেসব বিধিমালা তৈরি হচ্ছে, সেগুলোতে সংজ্ঞার অস্পষ্টতা ও অপব্যবহারের ঝুঁকি রয়েছে। অংশীজনদের সঙ্গে যথাযথ পরামর্শ ছাড়া এসব আইন প্রণয়ন করা হলে বৈধ সমালোচনাও দমন হতে পারে।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আই’সোশ্যলের চেয়ারম্যান অনন্য রায়হান, এফসিডিও-র গভর্নেন্স অ্যাডভাইজার এমা উইন্ড, দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ এবং ডিজিটালি রাইটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিরাজ আহমেদ চৌধুরী।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
রোববার, ০২ নভেম্বর ২০২৫
বাংলাদেশের আসন্ন ২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে ভুয়া তথ্য ও বিদ্বেষমূলক প্রচারণা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা, সামাজিক স্থিতি এবং নারী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণের জন্য নজিরবিহীন ঝুঁকি তৈরি করেছে।
প্রস্তুতি দুর্বল, ফ্যাক্টচেকার অপ্রতুল
গণমাধ্যম, সরকার ও প্ল্যাটফর্মের সমন্বয় জরুরি
সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে লক্ষ্যভিত্তিক প্রচারণা
এমন সতর্কবার্তা এসেছে ডিজিটাল অধিকার ও তথ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান ডিজিটালি রাইট-এর নতুন এক গবেষণায়।
‘ট্যাকলিং ইলেকশন ডিসইনফরমেশন ইন বাংলাদেশ: বিল্ডিং কালেকটিভ রেসপন্সেস ফর ইলেক্টোরাল ইন্টেগ্রিটি’ শিরোনামের এই গবেষণাটি সম্পন্ন হয়েছে এশিয়া ফাউন্ডেশনের সহায়তায় এবং যুক্তরাজ্যের ফরেইন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও) এর অর্থায়নে।
রোববার, (০২ নভেম্বর ২০২৫) ঢাকার গুলশানের এক অনুষ্ঠানে গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এতে গণমাধ্যম প্রতিনিধি, ফ্যাক্টচেকার, শিক্ষাবিদ, নির্বাচন পর্যবেক্ষক ও নাগরিক সমাজের নেতারা অংশ নেন।
গবেষণায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অনলাইন তথ্যপরিবেশ এখন ‘ভীষণভাবে ভঙ্গুর ও বিভক্ত।’ রাজনৈতিক দল, ধর্মীয় গোষ্ঠী, প্রবাসী ও বিদেশি প্রভাবকরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর কনটেন্ট, প্রোপাগান্ডা নেটওয়ার্ক এবং বাণিজ্যিক কনটেন্ট নির্মাতাদের মাধ্যমে জনমত প্রভাবিত করার প্রতিযোগিতায় নেমেছে।
গবেষণায় আরও দেখা যায়, বিকৃত ছবি, মনগড়া ভিডিও ও এআই-নির্ভর কনটেন্ট নারী প্রার্থী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে নির্বাচনের আগে ভয়ভীতি, হয়রানি ও ভোটার দমন বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রায় ১৭ কোটি জনসংখ্যার দেশে ফ্যাক্টচেকারের সংখ্যা মাত্র ৪০ থেকে ৫০ জন। অধিকাংশ গণমাধ্যমে তথ্য যাচাইয়ের নির্দিষ্ট বিভাগ নেই, সাংবাদিকরা পর্যাপ্ত প্রযুক্তিগত সরঞ্জাম ও সমন্বয়ের ঘাটতিতে ভুগছেন।
সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মগুলোও অন্য অংশীজনদের সঙ্গে সমন্বয় করছে না। নির্বাচন কমিশনের নীতিকাঠামো ও সক্ষমতাও অপর্যাপ্ত বলে উল্লেখ করা হয়।
ইউল্যাবের অধ্যাপক সুমন রহমান বলেন, ‘ভুল তথ্য মোকাবিলায় ফেসবুক ও ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্মের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি। সরকারকে তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে, কিন্তু ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে সে অবস্থান এখন দুর্বল।’
ডিজিটালি রাইটের গবেষণা প্রধান আব্দুল্লাহ তিতির বলেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে যেসব বিধিমালা তৈরি হচ্ছে, সেগুলোতে সংজ্ঞার অস্পষ্টতা ও অপব্যবহারের ঝুঁকি রয়েছে। অংশীজনদের সঙ্গে যথাযথ পরামর্শ ছাড়া এসব আইন প্রণয়ন করা হলে বৈধ সমালোচনাও দমন হতে পারে।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আই’সোশ্যলের চেয়ারম্যান অনন্য রায়হান, এফসিডিও-র গভর্নেন্স অ্যাডভাইজার এমা উইন্ড, দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ কাজী ফয়সাল বিন সিরাজ এবং ডিজিটালি রাইটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিরাজ আহমেদ চৌধুরী।