৩০ নভেম্বর আরও ১৭৫ জন বাংলাদেশিকে প্রত্যাবাসনের চেষ্টা চলছে
দেশে ফিরে আসা ১৭০ বাংলাদেশি। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে -পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সৌজন্যে
লিবিয়া থেকে অনিয়মিত ১৭০ বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। মঙ্গলবার, (১৮ নভেম্বর ২০২৫) সকাল ৬টা ১০ মিনিটে বুরাক এয়ারের একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে তারা ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। লিবিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৩০ নভেম্বর ত্রিপলীর তাজুরা ডিটেনশন সেন্টার থেকে আরও ১৭৫ জন বাংলাদেশিকে প্রত্যাবাসনের জন্য দূতাবাসের প্রচেষ্টা চলমান রয়েছে।
লিবিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে লিবিয়া সরকার ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার সহযোগিতায় লিবিয়া হতে প্রত্যাবাসনেচ্ছুক এই বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার কর্মকর্তাগণ তাদের বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান।
জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ফিরে আসা ব্যক্তিদের দুর্বিষহ অভিজ্ঞতা সম্ভাব্য সবার সঙ্গে বিনিময় করার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার পক্ষ থেকে তাদের প্রত্যেককে পথখরচ, কিছু খাদ্যসামগ্রী এবং প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রত্যাবসিত বাংলাদেশিদের বেশিরভাগই সমুদ্রপথে অবৈধভাবে ইউরোপ গমনের উদ্দেশ্যে মানবপাচারকারীদের প্ররোচনায় ও সহযোগিতায় লিবিয়ায় অনুপ্রবেশ করেন বলে জানা যায়। তাদের অনেকে লিবিয়াতে বিভিন্ন সময়ে অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
লিবিয়ার বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে আটক বাংলাদেশিদের নিরাপদে দেশে ফেরাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, লিবিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা একসঙ্গে কাজ করছে।
দেশে ফেরার আগে
এর আগে সোমবার (১৭ নভেম্বর) আইওএম-এর সহায়তায় বেনগাজীর গানফুদা ডিটেনশন সেন্টার থেকে ১৭০ জন বাংলাদেশি নাগরিককে দেশে প্রত্যাবাসন করা হয়।
এসময় লিবিয়ায় বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মুহাম্মদ খায়রুল বাশার গানফুদা ডিটেনশন সেন্টারে উপস্থিত থেকে প্রত্যাবাসন কার্যক্রম তদারকি করেন এবং প্রত্যাবাসিতদের বিদায় জানান।
এসময় লিবিয়ার অভিবাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক, ফরেন অফিসের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এবং দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রদূত প্রত্যাবাসন কার্যক্রমে সহযোগিতার জন্য লিবিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও আইওএম-এর প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান এবং ভবিষ্যতেও এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
অভিবাসীদের উদ্দেশে রাষ্ট্রদূত বলেন, বিদেশে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বৈধ ও নিরাপদ পথই একমাত্র সঠিক উপায়। তিনি প্রত্যেককে দেশে ফিরে প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন, সরকারি প্রশিক্ষণ গ্রহণ এবং বৈধ প্রক্রিয়া বিদেশ গমনের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির আহ্বান জানান।
তিনি উল্লেখ করেন, অবৈধ অভিবাসন শুধু ঝুঁকিপূর্ণই নয়, বরং ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও জাতীয়ভাবে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, দেশে ফিরে শুধু চাকরির অপেক্ষায় না থেকে নিজেদের অভিজ্ঞতা ও শ্রমকে কাজে লাগিয়ে ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। সরকারের বিভিন্ন সুবিধা, ঋণ সহায়তা ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে দেশের অর্থনীতিতে সক্রিয় অবদান রাখার সুযোগ এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি।
রাষ্ট্রদূত অভিবাসীদের আইনগত অধিকার সম্পর্কেও অবহিত করেন এবং মানবপাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধে দেশে ফিরে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেন। এই প্রক্রিয়ায় তিনি দূতাবাসের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান।
পূর্ববর্তী সময়ে বাংলাদেশ দূতাবাস আটক অভিবাসীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ গ্রহণ ও পরিচয় যাচাই-বাছাইয়ের পর তাদের অনুকূলে ট্রাভেল পারমিট ইস্যু করা হয়। পরবর্তীতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ও আইওএম-এর সার্বিক সহযোগিতায় তাদের দেশে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়।
এর আগে কয়েক দফায় বহু বাংলাদেশিকে ইতোমধ্যে দেশে ফেরানো হয়েছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
৩০ নভেম্বর আরও ১৭৫ জন বাংলাদেশিকে প্রত্যাবাসনের চেষ্টা চলছে
দেশে ফিরে আসা ১৭০ বাংলাদেশি। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে -পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সৌজন্যে
মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
লিবিয়া থেকে অনিয়মিত ১৭০ বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। মঙ্গলবার, (১৮ নভেম্বর ২০২৫) সকাল ৬টা ১০ মিনিটে বুরাক এয়ারের একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে তারা ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। লিবিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৩০ নভেম্বর ত্রিপলীর তাজুরা ডিটেনশন সেন্টার থেকে আরও ১৭৫ জন বাংলাদেশিকে প্রত্যাবাসনের জন্য দূতাবাসের প্রচেষ্টা চলমান রয়েছে।
লিবিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে লিবিয়া সরকার ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার সহযোগিতায় লিবিয়া হতে প্রত্যাবাসনেচ্ছুক এই বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার কর্মকর্তাগণ তাদের বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান।
জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ফিরে আসা ব্যক্তিদের দুর্বিষহ অভিজ্ঞতা সম্ভাব্য সবার সঙ্গে বিনিময় করার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার পক্ষ থেকে তাদের প্রত্যেককে পথখরচ, কিছু খাদ্যসামগ্রী এবং প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রত্যাবসিত বাংলাদেশিদের বেশিরভাগই সমুদ্রপথে অবৈধভাবে ইউরোপ গমনের উদ্দেশ্যে মানবপাচারকারীদের প্ররোচনায় ও সহযোগিতায় লিবিয়ায় অনুপ্রবেশ করেন বলে জানা যায়। তাদের অনেকে লিবিয়াতে বিভিন্ন সময়ে অপহরণ ও নির্যাতনের শিকার হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
লিবিয়ার বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টারে আটক বাংলাদেশিদের নিরাপদে দেশে ফেরাতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, লিবিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা একসঙ্গে কাজ করছে।
দেশে ফেরার আগে
এর আগে সোমবার (১৭ নভেম্বর) আইওএম-এর সহায়তায় বেনগাজীর গানফুদা ডিটেনশন সেন্টার থেকে ১৭০ জন বাংলাদেশি নাগরিককে দেশে প্রত্যাবাসন করা হয়।
এসময় লিবিয়ায় বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মুহাম্মদ খায়রুল বাশার গানফুদা ডিটেনশন সেন্টারে উপস্থিত থেকে প্রত্যাবাসন কার্যক্রম তদারকি করেন এবং প্রত্যাবাসিতদের বিদায় জানান।
এসময় লিবিয়ার অভিবাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক, ফরেন অফিসের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা এবং দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রদূত প্রত্যাবাসন কার্যক্রমে সহযোগিতার জন্য লিবিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও আইওএম-এর প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান এবং ভবিষ্যতেও এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
অভিবাসীদের উদ্দেশে রাষ্ট্রদূত বলেন, বিদেশে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বৈধ ও নিরাপদ পথই একমাত্র সঠিক উপায়। তিনি প্রত্যেককে দেশে ফিরে প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন, সরকারি প্রশিক্ষণ গ্রহণ এবং বৈধ প্রক্রিয়া বিদেশ গমনের বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির আহ্বান জানান।
তিনি উল্লেখ করেন, অবৈধ অভিবাসন শুধু ঝুঁকিপূর্ণই নয়, বরং ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও জাতীয়ভাবে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, দেশে ফিরে শুধু চাকরির অপেক্ষায় না থেকে নিজেদের অভিজ্ঞতা ও শ্রমকে কাজে লাগিয়ে ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। সরকারের বিভিন্ন সুবিধা, ঋণ সহায়তা ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে দেশের অর্থনীতিতে সক্রিয় অবদান রাখার সুযোগ এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি।
রাষ্ট্রদূত অভিবাসীদের আইনগত অধিকার সম্পর্কেও অবহিত করেন এবং মানবপাচারকারী চক্রের বিরুদ্ধে দেশে ফিরে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেন। এই প্রক্রিয়ায় তিনি দূতাবাসের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান।
পূর্ববর্তী সময়ে বাংলাদেশ দূতাবাস আটক অভিবাসীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ গ্রহণ ও পরিচয় যাচাই-বাছাইয়ের পর তাদের অনুকূলে ট্রাভেল পারমিট ইস্যু করা হয়। পরবর্তীতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ও আইওএম-এর সার্বিক সহযোগিতায় তাদের দেশে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়।
এর আগে কয়েক দফায় বহু বাংলাদেশিকে ইতোমধ্যে দেশে ফেরানো হয়েছে।