ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলকে (বাসদ মার্কসবাদী) নিবন্ধন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মঙ্গলবার,(১৮ নভেম্বর ২০২৫) বিকেলে ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এক ব্রিফিংয়ে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, নতুন এ দুটি দলকে প্রতীক বরাদ্দ দিয়ে নিবন্ধন দেয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়েছে।
আজ ইসির সংলাপেও এ দুটি দলকে আমন্ত্রণও জানানো হয়েছে। এদিকে বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টির বিরুদ্ধে অভিযোগ আসায় দলটির নিবন্ধন এখনও চূড়ান্ত করেনি ইসি।
ইসি সূত্র জানায়, গত ৪ নভেম্বর কমিশন তিন দলকে নিবন্ধন দেয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। গত ১২ নভেম্বর পর্যন্ত দাবি-আপত্তি জানানোর সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়। ওই সময়ের মধ্যে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের বিরুদ্ধে কোনো দাবি বা আপত্তি জমা হয়নি।
তবে বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টির বিরুদ্ধে ১০-১৫টি দাবি-আপত্তি কমিশনে জমা পড়ে। এসব আবেদন কমিশনের পর্যালোচনায় রয়েছে।
বৈষম্যবিরোধীদের গড়া রাজনৈতিক দল এনসিপি তাদের প্রতীক হিসেবে ইসির কাছে ‘শাপলা’ দাবি করেছিল। তবে শাপলা জাতীয় প্রতীক হওয়ায় ইসি এই প্রতীক কোন দলকে না দেয়ার সিদ্ধান্তে অনড় ছিল। এনসিপির নেতারাও অন্য কোনো প্রতীক নেবেন না বলে ঘোষণা দিয়ে ইসিকে নানাভাবে চাপ দিচ্ছিলেন। শেষ পর্যন্ত ইসি দলটিকে দিয়েছে ‘শাপলা কলি’ প্রতীক। এ বছর নতুন রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন দিতে আবেদন আহ্বান থেকে চূড়ান্ত করার পুরো প্রক্রিয়ায় আট মাসের বেশি সময় নেয় এএমএম নাসির উদ্দিন নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। নিবন্ধন আগ্রহী দলগুলোর কাছ থেকে গত ১০ মার্চ আবেদন আহ্বান করা হয়। এক দফা সময় বাড়ানোর পর গত ২২ জুনের মধ্যে মোট ১৪৩টি দল আবেদন জমা দেয়।
প্রাথমিক বাছাইয়ে নিবন্ধনের শর্ত পূরণ করতে না পারায় ১২১টি দল বাদ পড়ে। এরপর বাকি ২২টি দলের বিষয়ে ইসির সংশ্লিষ্ট কমিটি সরেজমিন তদন্ত চালায়। গত ৩০ সেপ্টেম্বর জানানো হয়, দুটি দলকে নিবন্ধন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তদন্তের সময় একটি দলের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত আপত্তি ওঠায় পুনরায় অনুসন্ধান করা হয়।
সর্বশেষ গত ৪ নভেম্বর ঘোষণা দেয়া হয়, তিনটি দলকে নিবন্ধন দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে- এনসিপিকে ‘শাপলা কলি’, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলকে (মার্কসবাদী) ‘কাঁচি’ এবং বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টিকে ‘হ্যান্ডশ্যাক’ প্রতীক বরাদ্দ দিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে কারও আপত্তি থাকলে গত ১২ নভেম্বরের মধ্যে লিখিতভাবে জানানোর আহ্বান জানানো হয়। আপত্তি নিষ্পত্তির পর অবশেষে দুটি দলের নিবন্ধন চূড়ান্ত করা হয়েছে।
২০০৮ সালে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করার পর এ পর্যন্ত মোট ৫৫টি দলের নিবন্ধন রইল। এর বাইরে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত, আর ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন ও পিডিপির নিবন্ধন বাতিল রয়েছে।
*নিবন্ধনের পরিসংখ্যান*
এটিএম শামসুল হুদা নেতৃত্বাধীন ইসি নবম সংসদ নির্বাচনের সময় ৩৯টি দলকে নিবন্ধন দেয়। কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদ নেতৃত্বাধীন ইসি দশম সংসদ নির্বাচনের আগে দুটি দলকে নিবন্ধন দেয়। কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন কমিশন একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় নিবন্ধনযোগ্য কোনো দল পায়নি; তবে আদালতের নির্দেশে কয়েকটি দল তালিকায় যুক্ত হয়।
কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে দুটি দলকে নিবন্ধন প্রদান করে। বর্তমান এএমএম নাসির উদ্দিন নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন দিয়েছে দুটি দলকে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলকে (বাসদ মার্কসবাদী) নিবন্ধন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মঙ্গলবার,(১৮ নভেম্বর ২০২৫) বিকেলে ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এক ব্রিফিংয়ে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, নতুন এ দুটি দলকে প্রতীক বরাদ্দ দিয়ে নিবন্ধন দেয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপনও জারি করা হয়েছে।
আজ ইসির সংলাপেও এ দুটি দলকে আমন্ত্রণও জানানো হয়েছে। এদিকে বাংলাদেশ আম জনগণ পার্টির বিরুদ্ধে অভিযোগ আসায় দলটির নিবন্ধন এখনও চূড়ান্ত করেনি ইসি।
ইসি সূত্র জানায়, গত ৪ নভেম্বর কমিশন তিন দলকে নিবন্ধন দেয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। গত ১২ নভেম্বর পর্যন্ত দাবি-আপত্তি জানানোর সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়। ওই সময়ের মধ্যে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের বিরুদ্ধে কোনো দাবি বা আপত্তি জমা হয়নি।
তবে বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টির বিরুদ্ধে ১০-১৫টি দাবি-আপত্তি কমিশনে জমা পড়ে। এসব আবেদন কমিশনের পর্যালোচনায় রয়েছে।
বৈষম্যবিরোধীদের গড়া রাজনৈতিক দল এনসিপি তাদের প্রতীক হিসেবে ইসির কাছে ‘শাপলা’ দাবি করেছিল। তবে শাপলা জাতীয় প্রতীক হওয়ায় ইসি এই প্রতীক কোন দলকে না দেয়ার সিদ্ধান্তে অনড় ছিল। এনসিপির নেতারাও অন্য কোনো প্রতীক নেবেন না বলে ঘোষণা দিয়ে ইসিকে নানাভাবে চাপ দিচ্ছিলেন। শেষ পর্যন্ত ইসি দলটিকে দিয়েছে ‘শাপলা কলি’ প্রতীক। এ বছর নতুন রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধন দিতে আবেদন আহ্বান থেকে চূড়ান্ত করার পুরো প্রক্রিয়ায় আট মাসের বেশি সময় নেয় এএমএম নাসির উদ্দিন নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। নিবন্ধন আগ্রহী দলগুলোর কাছ থেকে গত ১০ মার্চ আবেদন আহ্বান করা হয়। এক দফা সময় বাড়ানোর পর গত ২২ জুনের মধ্যে মোট ১৪৩টি দল আবেদন জমা দেয়।
প্রাথমিক বাছাইয়ে নিবন্ধনের শর্ত পূরণ করতে না পারায় ১২১টি দল বাদ পড়ে। এরপর বাকি ২২টি দলের বিষয়ে ইসির সংশ্লিষ্ট কমিটি সরেজমিন তদন্ত চালায়। গত ৩০ সেপ্টেম্বর জানানো হয়, দুটি দলকে নিবন্ধন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তদন্তের সময় একটি দলের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত আপত্তি ওঠায় পুনরায় অনুসন্ধান করা হয়।
সর্বশেষ গত ৪ নভেম্বর ঘোষণা দেয়া হয়, তিনটি দলকে নিবন্ধন দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে- এনসিপিকে ‘শাপলা কলি’, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলকে (মার্কসবাদী) ‘কাঁচি’ এবং বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টিকে ‘হ্যান্ডশ্যাক’ প্রতীক বরাদ্দ দিয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে কারও আপত্তি থাকলে গত ১২ নভেম্বরের মধ্যে লিখিতভাবে জানানোর আহ্বান জানানো হয়। আপত্তি নিষ্পত্তির পর অবশেষে দুটি দলের নিবন্ধন চূড়ান্ত করা হয়েছে।
২০০৮ সালে সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করার পর এ পর্যন্ত মোট ৫৫টি দলের নিবন্ধন রইল। এর বাইরে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত, আর ফ্রিডম পার্টি, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন ও পিডিপির নিবন্ধন বাতিল রয়েছে।
*নিবন্ধনের পরিসংখ্যান*
এটিএম শামসুল হুদা নেতৃত্বাধীন ইসি নবম সংসদ নির্বাচনের সময় ৩৯টি দলকে নিবন্ধন দেয়। কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদ নেতৃত্বাধীন ইসি দশম সংসদ নির্বাচনের আগে দুটি দলকে নিবন্ধন দেয়। কে এম নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন কমিশন একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় নিবন্ধনযোগ্য কোনো দল পায়নি; তবে আদালতের নির্দেশে কয়েকটি দল তালিকায় যুক্ত হয়।
কাজী হাবিবুল আউয়াল নেতৃত্বাধীন কমিশন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে দুটি দলকে নিবন্ধন প্রদান করে। বর্তমান এএমএম নাসির উদ্দিন নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন নিবন্ধন দিয়েছে দুটি দলকে।