আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এবার ‘অ্যাপ্রুভার’ বা রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন পুলিশের সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) শেখ আবজালুল হক। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় তিনি ঢাকার আশুলিয়া থানায় কর্মরত ছিলেন। ওই সময় আশুলিয়ায় ছয়জনকে গুলি করে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পরবর্তীতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২–এ রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন শেখ আবজালুল। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দ্বিতীয় কোনো পুলিশ সদস্য হিসেবে তিনি ‘অ্যাপ্রুভার’ হলেন। এর আগে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের আরেকটি মামলায় অ্যাপ্রুভার হয়েছিলেন।
সেই মামলায় মামুনের সঙ্গে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানও আসামি ছিলেন। গত সোমবার এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ড এবং মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর ঘটনা
আশুলিয়ায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মোট আসামি ১৬ জন। এর মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, আশুলিয়া থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম সায়েদ, এএসআই বিশ্বজিৎ সাহাসহ আটজন পলাতক। গ্রেপ্তার হওয়া বাকি আসামিরা হলেন—ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহিল কাফী ও মো. শহিদুল ইসলাম (সাভার সার্কেল); ঢাকা জেলা গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সাবেক পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন; আশুলিয়া থানার সাবেক এসআই আবদুল মালেক, আরাফাত উদ্দীন, কামরুল হাসান ও শেখ আবজালুল হক এবং সাবেক কনস্টেবল মুকুল চোকদার।
এ মামলার ২৩তম সাক্ষী হিসেবে আজ জবানবন্দি দেন শেখ আবজালুল। তিনি জানান, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আশুলিয়া এলাকায় ছাত্র-জনতা বিজয় মিছিল বের করেন। মিছিলটি থানার দিকে গেলে তৎকালীন ওসি সায়েদের নির্দেশে বিশ্বজিৎসহ আরেক পুলিশ সদস্য গুলি চালান।
জবানবন্দি শেষে তাঁকে জেরা করেন আসামি আবদুল্লাহিল কাফীর আইনজীবী সৈয়দ মিজানুর রহমান। জেরায় আবজালুল বলেন, গত বছরের ১৫ আগস্ট আশুলিয়া থানার অস্ত্রাগারের দায়িত্বে থাকা এসআই আউয়ালের কাছে নিজের নামে ইস্যু করা ১০টি গুলিই জমা দেন।
তিনি জানান, গত বছরের ৫ থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত তিনি ‘ট্রমায়’ ছিলেন। ১৫ আগস্ট অস্ত্র জমা দিতে এসে তিনি আশুলিয়া থানাকে এলোমেলো অবস্থায় দেখতে পান।
জবানবন্দি শেষে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে ব্রিফিং করেন প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম। তিনি বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়েছেন আবজালুল। তবে তিনি লাশ পোড়ানোর ঘটনাটি নিজে দেখেননি; অন্যদের কাছ থেকে শুনেছেন। প্রসিকিউশনের মতে, আবজালুল আশুলিয়ার ঘটনা সম্পর্কে পূর্ণ সত্য তুলে ধরেছেন।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এবার ‘অ্যাপ্রুভার’ বা রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন পুলিশের সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) শেখ আবজালুল হক। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় তিনি ঢাকার আশুলিয়া থানায় কর্মরত ছিলেন। ওই সময় আশুলিয়ায় ছয়জনকে গুলি করে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পরবর্তীতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২–এ রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন শেখ আবজালুল। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দ্বিতীয় কোনো পুলিশ সদস্য হিসেবে তিনি ‘অ্যাপ্রুভার’ হলেন। এর আগে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের আরেকটি মামলায় অ্যাপ্রুভার হয়েছিলেন।
সেই মামলায় মামুনের সঙ্গে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানও আসামি ছিলেন। গত সোমবার এ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ড এবং মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর ঘটনা
আশুলিয়ায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মোট আসামি ১৬ জন। এর মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, আশুলিয়া থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম সায়েদ, এএসআই বিশ্বজিৎ সাহাসহ আটজন পলাতক। গ্রেপ্তার হওয়া বাকি আসামিরা হলেন—ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহিল কাফী ও মো. শহিদুল ইসলাম (সাভার সার্কেল); ঢাকা জেলা গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সাবেক পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন; আশুলিয়া থানার সাবেক এসআই আবদুল মালেক, আরাফাত উদ্দীন, কামরুল হাসান ও শেখ আবজালুল হক এবং সাবেক কনস্টেবল মুকুল চোকদার।
এ মামলার ২৩তম সাক্ষী হিসেবে আজ জবানবন্দি দেন শেখ আবজালুল। তিনি জানান, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আশুলিয়া এলাকায় ছাত্র-জনতা বিজয় মিছিল বের করেন। মিছিলটি থানার দিকে গেলে তৎকালীন ওসি সায়েদের নির্দেশে বিশ্বজিৎসহ আরেক পুলিশ সদস্য গুলি চালান।
জবানবন্দি শেষে তাঁকে জেরা করেন আসামি আবদুল্লাহিল কাফীর আইনজীবী সৈয়দ মিজানুর রহমান। জেরায় আবজালুল বলেন, গত বছরের ১৫ আগস্ট আশুলিয়া থানার অস্ত্রাগারের দায়িত্বে থাকা এসআই আউয়ালের কাছে নিজের নামে ইস্যু করা ১০টি গুলিই জমা দেন।
তিনি জানান, গত বছরের ৫ থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত তিনি ‘ট্রমায়’ ছিলেন। ১৫ আগস্ট অস্ত্র জমা দিতে এসে তিনি আশুলিয়া থানাকে এলোমেলো অবস্থায় দেখতে পান।
জবানবন্দি শেষে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে ব্রিফিং করেন প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম। তিনি বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়েছেন আবজালুল। তবে তিনি লাশ পোড়ানোর ঘটনাটি নিজে দেখেননি; অন্যদের কাছ থেকে শুনেছেন। প্রসিকিউশনের মতে, আবজালুল আশুলিয়ার ঘটনা সম্পর্কে পূর্ণ সত্য তুলে ধরেছেন।