ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
জুলাই অভ্যুত্থানে আশুলিয়া থানার ওসি এবং এক এএসআই পেট্রোল ঢেলে ৬টি মরদেহ পুড়িয়েছেন বলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছেন এ মামলার রাজসাক্ষী পুলিশ সদস্য আফজালুল হক। দুই সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-২ বুধবার, (১৯ নভেম্বর ২০২৫) এসআই আফজালুল হকের জবানবন্দি রেকর্ড করে। এই বেঞ্চের দুই সদস্য হলেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
জবানবন্দি দেয়ার পর আফজালুল শহীদদের পরিবারসহ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এ মামলার ২৩ নম্বর সাক্ষী হিসেবে দেয়া জবানবন্দিতে তিনি ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের ঘটনার বিবরণে বলেন, মরদেহ পোড়ানোর সময় তিনি ছিলেন না। তবে ১৫ আগস্ট নিজের নামে থাকা অস্ত্র জমা দিতে থানায় গিয়ে লাশ পুড়িয়ে দেয়ার কথা জানতে পারেন।
আশুলিয়া থানার তৎকালীন ওসি সায়েদ ও এএসআই বিশ্বজিৎ ৬টি মরদেহ ‘পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দেন’ বলে সাক্ষ্য দেন আফজালুল। এ বছরের ২ জুলাই এ মামলায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেয় প্রসিকিউশন। অভিযোগটি আমলে নিয়ে পলাতক ৮ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয় সেদিন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগের সঙ্গে অন্যান্য তথ্যসূত্র হিসেবে ৩১৩ পৃষ্ঠা নথি, সাক্ষী ৬২ জন, দালিলিক প্রমাণাদি ১৬৮ পৃষ্ঠা ও দুটি পেনড্রাইভ যুক্ত করা হয়। পরে এ মামলায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল।
এরপর ২১ আগস্ট মামলায় ১৬ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-২। সেসময় উপস্থিত ৮ আসামির মধ্যে ৭ জন নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। তবে এসআই শেখ আফজালুল হক দোষ স্বীকার করেন এবং রাজসাক্ষী হয়ে মামলার তথ্য আদালতের কাছে জানাতে চান। তার দোষ স্বীকারের অংশও রেকর্ড করা হয় এবং লিখিত আবেদন অনুযায়ী তিনি রাজসাক্ষী হতে অনুমতি পান।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে ৫ জন নিহত হন এবং একজন গুরুতর আহত হন। পরে নিহত ৫ জনের লাশ এবং আহত ব্যক্তিকে পুলিশ ভ্যানে তুলে পেট্রোল ছড়িয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়। ওই সময় নিহত হন সাজ্জাদ হোসেন (সজল), আস সাবুর, তানজীল মাহমুদ সুজয়, বায়েজিদ বুসতামি ও আবুল হোসেন, একজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় ১১ জন আসামির নাম উল্লেখ করা হয়। গত ২১ আগস্ট কারাগারে থাকা আটজনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তারা হলেন- ঢাকা জেলা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আব্দুল্লাহিল কাফী, সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) শাহিদুল ইসলাম, পরিদর্শক আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক, এসআই শেখ আফজালুল হক, এসআই আরাফাত উদ্দিন, এএসআই কামরুল হাসান ও কনস্টেবল মুকুল।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫
জুলাই অভ্যুত্থানে আশুলিয়া থানার ওসি এবং এক এএসআই পেট্রোল ঢেলে ৬টি মরদেহ পুড়িয়েছেন বলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছেন এ মামলার রাজসাক্ষী পুলিশ সদস্য আফজালুল হক। দুই সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-২ বুধবার, (১৯ নভেম্বর ২০২৫) এসআই আফজালুল হকের জবানবন্দি রেকর্ড করে। এই বেঞ্চের দুই সদস্য হলেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
জবানবন্দি দেয়ার পর আফজালুল শহীদদের পরিবারসহ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এ মামলার ২৩ নম্বর সাক্ষী হিসেবে দেয়া জবানবন্দিতে তিনি ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের ঘটনার বিবরণে বলেন, মরদেহ পোড়ানোর সময় তিনি ছিলেন না। তবে ১৫ আগস্ট নিজের নামে থাকা অস্ত্র জমা দিতে থানায় গিয়ে লাশ পুড়িয়ে দেয়ার কথা জানতে পারেন।
আশুলিয়া থানার তৎকালীন ওসি সায়েদ ও এএসআই বিশ্বজিৎ ৬টি মরদেহ ‘পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দেন’ বলে সাক্ষ্য দেন আফজালুল। এ বছরের ২ জুলাই এ মামলায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেয় প্রসিকিউশন। অভিযোগটি আমলে নিয়ে পলাতক ৮ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয় সেদিন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগের সঙ্গে অন্যান্য তথ্যসূত্র হিসেবে ৩১৩ পৃষ্ঠা নথি, সাক্ষী ৬২ জন, দালিলিক প্রমাণাদি ১৬৮ পৃষ্ঠা ও দুটি পেনড্রাইভ যুক্ত করা হয়। পরে এ মামলায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল।
এরপর ২১ আগস্ট মামলায় ১৬ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল-২। সেসময় উপস্থিত ৮ আসামির মধ্যে ৭ জন নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। তবে এসআই শেখ আফজালুল হক দোষ স্বীকার করেন এবং রাজসাক্ষী হয়ে মামলার তথ্য আদালতের কাছে জানাতে চান। তার দোষ স্বীকারের অংশও রেকর্ড করা হয় এবং লিখিত আবেদন অনুযায়ী তিনি রাজসাক্ষী হতে অনুমতি পান।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে ৫ জন নিহত হন এবং একজন গুরুতর আহত হন। পরে নিহত ৫ জনের লাশ এবং আহত ব্যক্তিকে পুলিশ ভ্যানে তুলে পেট্রোল ছড়িয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়। ওই সময় নিহত হন সাজ্জাদ হোসেন (সজল), আস সাবুর, তানজীল মাহমুদ সুজয়, বায়েজিদ বুসতামি ও আবুল হোসেন, একজনের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় গত বছরের ১১ সেপ্টেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় ১১ জন আসামির নাম উল্লেখ করা হয়। গত ২১ আগস্ট কারাগারে থাকা আটজনকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তারা হলেন- ঢাকা জেলা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আব্দুল্লাহিল কাফী, সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) শাহিদুল ইসলাম, পরিদর্শক আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক, এসআই শেখ আফজালুল হক, এসআই আরাফাত উদ্দিন, এএসআই কামরুল হাসান ও কনস্টেবল মুকুল।