alt

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল: রাজসাক্ষীকে জেরায় উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক : বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকার আশুলিয়ায় ছয়জনকে গুলি করে ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় জেরা করার সময় প্রসিকিউটরের (রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী) সঙ্গে আসামিপক্ষের আইনজীবীর উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়েছে। বৃহস্পতিবার, (২০ নভেম্বর ২০২৫) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ এই ঘটনা ঘটে।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় ‘অ্যাপ্রুভার’ বা রাজসাক্ষী হিসেবে পুলিশের সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) শেখ আবজালুল হককে দ্বিতীয় দিনের মতো জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী। জেরায় এক প্রশ্নের জবাবে আবজালুল বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট তিনি অনুমতি ছাড়া আশুলিয়া থানা ত্যাগ করেন। থানায় ফিরে আসেন গত বছরের ১৫ আগস্ট।

গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকার আশুলিয়া থানায় কর্মরত ছিলেন আবজালুল। পরে তাকে আশুলিয়ায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়।

যে প্রশ্ন নিয়ে উত্তাপ ছড়ালো

জেরায় আবজালুলকে আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুর রহমান প্রশ্ন করেন, থানায় এসে এসআই (সহকারী উপপরিদর্শক) রাজু আহমেদের মারা যাওয়ার কথা তিনি শুনেছিলেন কি না। মূলত এই প্রশ্নকে কেন্দ্র করেই এজলাসকক্ষে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় শুরু হয়।

আসামিপক্ষের আইনজীবীর করা ওই প্রশ্নের বিরোধিতা করেন প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম। তিনি বলেন, রাজসাক্ষীর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে, তবে তাকে এ ধরনের প্রশ্ন করা যাবে না।

তখন আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুর রহমান বলেন, ‘একজন দারোগাকে মেরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে, এই প্রশ্ন করা যাবে না? এ রকম বিচার করতে কোর্ট এখানে আসেন নাই।’

প্রসিকিউশন যেমন একজন মায়ের আবেদনের বিচারের জন্য এখানে এসেছে, তেমনি এটাও আরেক স্ত্রীর (নিহত পুলিশ সদস্য রাজুর স্ত্রী) আবেদন বলে উল্লেখ করেন আইনজীবী মিজানুর রহমান। তখন তার হাতে ছিল এসআই রাজুর স্ত্রীর করা মামলার নথি।

এ পর্যায়ে প্রসিকিউটর বলেন, আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুর যে ডকুমেন্টস (নথি) এনেছেন, এটা দেখানোর অনুমতি আছে কি না। ট্রাইব্যুনালে সাফাই সাক্ষীর (আসামিপক্ষ) তালিকা ও ডকুমেন্টস কি দেয়া হয়েছে?

তখন আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুর রহমান বলেন, আরেকটা সুখরঞ্জন বালি (মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদ- পাওয়া দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলায় সাক্ষ্য দিতে এসে গুম হন সুখরঞ্জন বালি) তৈরি করতে চান? সাফাই সাক্ষীর নাম দিলে শুরু হয়ে যায় থ্রেট (হুমকি দেয়া) করা।

এর জবাবে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম বলেন, তাদের (আসামিপক্ষের আইনজীবীদের) কোর্টে আসাই উচিত হয়নি। তারা বলতে পারেন, এটা হাইড (সাফাই সাক্ষীর পরিচয় গোপন রাখা) রাখুন। তারা এটা বলেছেন?

এ সময় ট্রাইব্যুনাল অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, ‘সাক্ষ্য নিতে গেলেই এত কাহিনি’। পরে ট্রাইব্যুনাল বলেন, আইনকে আইনের মতো করে প্রয়োগ করলে কাজ হয়।

তখন আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুর রহমান বলেন, আইনে বলা আছে অ্যাপ্রুভার (রাজসাক্ষী) তার জ্ঞানে থাকা ঘটনা সম্পর্কে সত্য ও পূর্ণ প্রকাশ করবেন। এটা (পুলিশ হত্যা) তার জানার মধ্যেই আছে। তিনি (আবজালুল) ছিলেন রাজুর স্ত্রীর করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।

এ জবাবে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি এই (আশুলিয়ায় ছয় হত্যাকা-) অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে হবে।

‘গায়ের জোর’ ও ‘হোয়াট ইজ দিস’

রাজসাক্ষী আবজালুলকে সাবেক এএসআই রাজুর স্ত্রীর করা মামলা প্রসঙ্গে আবার প্রশ্ন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুর রহমান। সঙ্গে সঙ্গে আবার আপত্তি জানিয়ে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম বলেন, আবজালুলের বিশ্বাসযোগ্যতা সম্পর্কে প্রশ্ন করা যাবে, এই বিষয়ে নয়।

তাহলে এটা কিসের বিষয়, এই প্রশ্ন রাখেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুর রহমান। এই আইনজীবী বলেন, গায়ের জোরের কাছে তিনি পেরে উঠছেন না। এরপর প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম উচ্চ স্বরে বারবার বলতে থাকেন ‘হোয়াট ইজ দিস’। তখন বিচারকেরা দুই পক্ষকেই ট্রাইব্যুনালের পরিবেশ বজায় রাখার অনুরোধ করেন।

একপর্যায়ে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম কথা বলার অনুমতি চান ট্রাইব্যুনালের কাছে। তখন ট্রাইব্যুনাল বলেন, একটু আস্তে কথা বলবেন। তখন প্রসিকিউটর বলেন, আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুর শুরু থেকেই প্রত্যেক সাক্ষীকে এ বিষয়ে (আশুলিয়ায় পুলিশ হত্যা) জেরা করছেন। তাকে ট্রাইব্যুনালে এসব ডকুমেন্টস দিতে কে বাধা দিয়েছে? আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুর রহমান এর জবাব দিতে গেলে ট্রাইব্যুনাল পরের প্রশ্নে যাওয়ার অনুরোধ করেন।

আশুলিয়ায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আসামি ১৬ জন। এর মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, আশুলিয়া থানার তৎকালীন ওসি এ এফ এম সায়েদ, এএসআই বিশ্বজিৎ সাহাসহ আট আসামি পলাতক। গ্রেপ্তার হওয়া বাকি আসামিরা হলেন ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহিল কাফী ও মো. শহিদুল ইসলাম (সাভার সার্কেল); ঢাকা জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সাবেক পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন, আশুলিয়া থানার এসআই আবদুল মালেক, আরাফাত উদ্দীন, কামরুল হাসান ও শেখ আবজালুল হক এবং সাবেক কনস্টেবল মুকুল চোকদার।

বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী অনুপস্থিত থাকায় বৃহস্পতিবার, ট্রাইব্যুনাল-২ এর নেতৃত্ব দেন বিচারক মো. মঞ্জুরুল বাছিদ। তার সঙ্গে ছিলেন এই ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্য বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।

সৌদিতে অপহরণ, ঢাকায় মুক্তিপণ আদায়

বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয়, আগামী সপ্তাহেই গেজেট

ছবি

পিয়াসকে ছাড়ার পর খুললো মোবাইল মার্কেট

বিদায়ের সময় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি খাদ্য মজুত থাকবে: উপদেষ্টা

রোহিঙ্গাদের মায়ানমারে ফেরাতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে প্রস্তাব গৃহীত

দুষ্কৃতকারীদের ওপর সর্বোচ্চ বল প্রয়োগে পুলিশ দ্বিধা করবে না: ডিএমপি কমিশনার

ছবি

নিরাপত্তায় উন্মুক্ত সহযোগিতা, তবে সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ নয়: জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা

হাসিনাকে ফেরাতে আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার কথা ভাবছে অন্তর্বর্তী সরকার

তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল, তবে ফেব্রুয়ারির নির্বাচন অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনেই

ছবি

তিন দিনের সফরে শনিবার ঢাকায় আসছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী

ছবি

ঝালকাঠি জেলার ২টি আসনের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ

ছবি

সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল, পরের জাতীয় নির্বাচন থেকে কার্যকর

ছবি

২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবস

ছবি

ডেঙ্গুতে একদিনে আরও ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৭৮৮ জন

ছবি

রোজ গার্ডেন কিনে রাষ্ট্রের ‘৩৩২ কোটি টাকা ক্ষতি’, অনুসন্ধানে দুদক

ছবি

আমার মায়ের জীবন বাঁচানোয় মোদি সরকারের প্রতি চিরকৃতজ্ঞ: জয়

ছবি

ওসি সায়েদ ও এএসআই বিশ্বজিৎ ৬টি মরদেহ পুড়িয়েছে: রাজসাক্ষী আফজালুল

মৃত ও ভুয়া ভোটারের সংখ্যা বাড়ছে, খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা, বললেন ডিসি

ছবি

আশুলিয়ায় ছয়জনকে গুলি ও পুড়িয়ে হত্যা: মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় সাবেক এসআই আবজালুলের রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি

ছবি

গণভোট: করণীয় ঠিক করতে অধ্যাদেশের অপেক্ষায় ইসি

ছবি

খেলাপি ঋণ অবলোপনের সময়সীমা তুলে দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক

ছবি

একইদিনে ইসির সংলাপে বিএনপি-জামায়াত-এনসিপি, বিভিন্ন প্রস্তাব

ছবি

নির্বাচন শান্তিপূর্ণ করতে সেনা ও পুলিশের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা

ছবি

।দিল্লিতে অজিত দোভালের সঙ্গে বৈঠকে খলিলুর রহমান, আলোচনায় সিএসসি ও দ্বিপক্ষীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু

ছবি

বিজয় দিবসে এবারও প্যারেড নয়: জানালেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

সংসদ নির্বাচনের প্রচারণায় ২৫ কোটি টাকা খরচ করবে সরকার

ছবি

পলাতক ও দণ্ডিত আসামিদের বক্তব্য প্রচারে উদ্বেগ, সতর্ক করলো এনসিএসএ

ছবি

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সাবেক চেয়ারম্যান মোশাররফের বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক

ছবি

নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ পালনে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা

ছবি

জাতীয় নির্বাচনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ছবি

গাড়ি ভাঙচুর-পোড়ানোর মামলায় বিএমইউর চিকিৎসক গ্রেপ্তার, জামিন নামঞ্জুর

ছবি

এনসিপি ও বাসদ মার্কসবাদীকে নিবন্ধন দিয়ে ইসির প্রজ্ঞাপন

ছবি

নাসা গ্রুপের কর্ণধার নজরুলের সম্পদ জব্দ ও ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ

ছবি

হাসিনা-আসাদুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড: বিচারে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে চলা আবশ্যক: এইচআরডব্লিউ

ছবি

দেশে মোট ভোটার ১২ কোটি ৭৬ লাখের বেশি

ছবি

অ্যাপে প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন শুরু, ব্যালট ডাকযোগে

tab

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল: রাজসাক্ষীকে জেরায় উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

বৃহস্পতিবার, ২০ নভেম্বর ২০২৫

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকার আশুলিয়ায় ছয়জনকে গুলি করে ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় জেরা করার সময় প্রসিকিউটরের (রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী) সঙ্গে আসামিপক্ষের আইনজীবীর উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়েছে। বৃহস্পতিবার, (২০ নভেম্বর ২০২৫) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ এই ঘটনা ঘটে।

মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় ‘অ্যাপ্রুভার’ বা রাজসাক্ষী হিসেবে পুলিশের সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) শেখ আবজালুল হককে দ্বিতীয় দিনের মতো জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী। জেরায় এক প্রশ্নের জবাবে আবজালুল বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট তিনি অনুমতি ছাড়া আশুলিয়া থানা ত্যাগ করেন। থানায় ফিরে আসেন গত বছরের ১৫ আগস্ট।

গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকার আশুলিয়া থানায় কর্মরত ছিলেন আবজালুল। পরে তাকে আশুলিয়ায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়।

যে প্রশ্ন নিয়ে উত্তাপ ছড়ালো

জেরায় আবজালুলকে আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুর রহমান প্রশ্ন করেন, থানায় এসে এসআই (সহকারী উপপরিদর্শক) রাজু আহমেদের মারা যাওয়ার কথা তিনি শুনেছিলেন কি না। মূলত এই প্রশ্নকে কেন্দ্র করেই এজলাসকক্ষে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় শুরু হয়।

আসামিপক্ষের আইনজীবীর করা ওই প্রশ্নের বিরোধিতা করেন প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম। তিনি বলেন, রাজসাক্ষীর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে, তবে তাকে এ ধরনের প্রশ্ন করা যাবে না।

তখন আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুর রহমান বলেন, ‘একজন দারোগাকে মেরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে, এই প্রশ্ন করা যাবে না? এ রকম বিচার করতে কোর্ট এখানে আসেন নাই।’

প্রসিকিউশন যেমন একজন মায়ের আবেদনের বিচারের জন্য এখানে এসেছে, তেমনি এটাও আরেক স্ত্রীর (নিহত পুলিশ সদস্য রাজুর স্ত্রী) আবেদন বলে উল্লেখ করেন আইনজীবী মিজানুর রহমান। তখন তার হাতে ছিল এসআই রাজুর স্ত্রীর করা মামলার নথি।

এ পর্যায়ে প্রসিকিউটর বলেন, আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুর যে ডকুমেন্টস (নথি) এনেছেন, এটা দেখানোর অনুমতি আছে কি না। ট্রাইব্যুনালে সাফাই সাক্ষীর (আসামিপক্ষ) তালিকা ও ডকুমেন্টস কি দেয়া হয়েছে?

তখন আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুর রহমান বলেন, আরেকটা সুখরঞ্জন বালি (মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদ- পাওয়া দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলায় সাক্ষ্য দিতে এসে গুম হন সুখরঞ্জন বালি) তৈরি করতে চান? সাফাই সাক্ষীর নাম দিলে শুরু হয়ে যায় থ্রেট (হুমকি দেয়া) করা।

এর জবাবে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম বলেন, তাদের (আসামিপক্ষের আইনজীবীদের) কোর্টে আসাই উচিত হয়নি। তারা বলতে পারেন, এটা হাইড (সাফাই সাক্ষীর পরিচয় গোপন রাখা) রাখুন। তারা এটা বলেছেন?

এ সময় ট্রাইব্যুনাল অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে বলেন, ‘সাক্ষ্য নিতে গেলেই এত কাহিনি’। পরে ট্রাইব্যুনাল বলেন, আইনকে আইনের মতো করে প্রয়োগ করলে কাজ হয়।

তখন আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুর রহমান বলেন, আইনে বলা আছে অ্যাপ্রুভার (রাজসাক্ষী) তার জ্ঞানে থাকা ঘটনা সম্পর্কে সত্য ও পূর্ণ প্রকাশ করবেন। এটা (পুলিশ হত্যা) তার জানার মধ্যেই আছে। তিনি (আবজালুল) ছিলেন রাজুর স্ত্রীর করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।

এ জবাবে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি এই (আশুলিয়ায় ছয় হত্যাকা-) অপরাধের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে হবে।

‘গায়ের জোর’ ও ‘হোয়াট ইজ দিস’

রাজসাক্ষী আবজালুলকে সাবেক এএসআই রাজুর স্ত্রীর করা মামলা প্রসঙ্গে আবার প্রশ্ন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুর রহমান। সঙ্গে সঙ্গে আবার আপত্তি জানিয়ে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম বলেন, আবজালুলের বিশ্বাসযোগ্যতা সম্পর্কে প্রশ্ন করা যাবে, এই বিষয়ে নয়।

তাহলে এটা কিসের বিষয়, এই প্রশ্ন রাখেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুর রহমান। এই আইনজীবী বলেন, গায়ের জোরের কাছে তিনি পেরে উঠছেন না। এরপর প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম উচ্চ স্বরে বারবার বলতে থাকেন ‘হোয়াট ইজ দিস’। তখন বিচারকেরা দুই পক্ষকেই ট্রাইব্যুনালের পরিবেশ বজায় রাখার অনুরোধ করেন।

একপর্যায়ে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম কথা বলার অনুমতি চান ট্রাইব্যুনালের কাছে। তখন ট্রাইব্যুনাল বলেন, একটু আস্তে কথা বলবেন। তখন প্রসিকিউটর বলেন, আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুর শুরু থেকেই প্রত্যেক সাক্ষীকে এ বিষয়ে (আশুলিয়ায় পুলিশ হত্যা) জেরা করছেন। তাকে ট্রাইব্যুনালে এসব ডকুমেন্টস দিতে কে বাধা দিয়েছে? আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুর রহমান এর জবাব দিতে গেলে ট্রাইব্যুনাল পরের প্রশ্নে যাওয়ার অনুরোধ করেন।

আশুলিয়ায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আসামি ১৬ জন। এর মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, আশুলিয়া থানার তৎকালীন ওসি এ এফ এম সায়েদ, এএসআই বিশ্বজিৎ সাহাসহ আট আসামি পলাতক। গ্রেপ্তার হওয়া বাকি আসামিরা হলেন ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহিল কাফী ও মো. শহিদুল ইসলাম (সাভার সার্কেল); ঢাকা জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সাবেক পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন, আশুলিয়া থানার এসআই আবদুল মালেক, আরাফাত উদ্দীন, কামরুল হাসান ও শেখ আবজালুল হক এবং সাবেক কনস্টেবল মুকুল চোকদার।

বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী অনুপস্থিত থাকায় বৃহস্পতিবার, ট্রাইব্যুনাল-২ এর নেতৃত্ব দেন বিচারক মো. মঞ্জুরুল বাছিদ। তার সঙ্গে ছিলেন এই ট্রাইব্যুনালের অন্য সদস্য বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।

back to top