ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শুক্রবার,(২১ নভেম্বর ২০২৫) সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে দিনের শুরুতে কর্মসূচি অনুযায়ী দেশের সব সেনানিবাস, নৌ ঘাঁটি ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটির মসজিদসমূহে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে দেশের কল্যাণ ও সমৃদ্ধি, সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর উন্নতি ও অগ্রগতি এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করা হয়।
১৯৭১ সালের এ দিনে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সমন্বয়ে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী গঠিত হয়। ওই সময় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ওপর সর্বাত্মক আক্রমণ শুরু করেন, যা মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়কে ত্বরান্বিত করে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে প্রতি বছর ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।
শিখা অনির্বাণে শ্রদ্ধা নিবেদন
স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর শহীদ সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। তারা সকালে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে।
পুষ্পস্তবক অর্পণকালে শহীদদের স্মরণে বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা শিখা অনির্বাণে রক্ষিত পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন। শিখা অনির্বাণে পৌঁছালে তিন বাহিনী প্রধানরা এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার তাদের স্বাগত জানান।
এছাড়া মুক্তিযুদ্ধে শাহাদত বরণকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মরণে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌ বাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন নিজ-নিজ বাহিনীর পক্ষ থেকে সম্মিলিতভাবে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
# তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ
শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধান উপদেষ্টা সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে যান। সেখানে তাকে অভ্যর্থনা জানান সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান এবং মহাপরিচালকরা। এ সময় ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২৫’ উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিন বাহিনীর প্রধানরা।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, ঢাকা সেনানিবাসে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার?উজ?জামান, নৌ বাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নজমুল হাসান এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন।
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের প্রধান উপদেষ্টা সব সদস্যকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরাই প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধে এগিয়ে আসেন এবং দীর্ঘ লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেন। সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর অকুতোভয় সদস্যরা ২১ নভেম্বর সম্মিলিতভাবে দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণের সূচনা করেন। মুক্তিবাহিনী, বিভিন্ন আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যরা ও দেশপ্রেমিক জনতা এই সমন্বিত আক্রমণে অংশ নেন। হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে ১৬ ডিসেম্বর আমরা চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করি।’
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা, শিল্প কারখানায় নিরাপত্তা প্রদানসহ দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ ও অস্ত্র উদ্ধারসহ সব কার্যক্রমে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদানের জন্য আমি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের ধন্যবাদ জানাই।’ গত ১৫ মাসে সশস্ত্র বাহিনীর সহযোগিতায় দেশের সার্বিক পরিস্থিতির উন্নয়নসহ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা সম্ভব হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
# বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা
পরে প্রধান উপদেষ্টা আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে নির্বাচিত খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা প্রদান করেন। এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সাত জন বীরশ্রেষ্ঠের কাছের আত্মীয় এবং ৯৩ জন অন্যান্য খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীসহ সর্বমোট ১০১ জন যোগদান করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্ন অনুযায়ী একটি বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত ও জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনে অঙ্গীকারবদ্ধ। মুক্তিযোদ্ধারা একটি বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত, জনকল্যাণমুখী ও স্বাধীন রাষ্ট্রের যে স্বপ্ন নিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন, আমরা সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ঘটনা হলো মহান মুক্তিযুদ্ধ। এই যুদ্ধে অর্জিত বিজয়ের মাধ্যমে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম (বীর প্রতীক), প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়নবিষয়ক বিশেষ সহকারী লে. জেনারেল আব্দুল হাফিজ (অব.), প্রধান উপদেষ্টার জাতীয় ও নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং রোহিঙ্গা সমস্যা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টিটিভ ড. খলিলুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তারা।
# সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে বিকেল ৪টায় রওনা করেন। মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী বিএনপি চেয়ারপারসন এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন। সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কিছু সময় কাটান এবং তার শারীরিক খোঁজখবর নেন প্রধান উপদেষ্টা।
এ সময় খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসন মেডিকেল বোর্ড প্রধান ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার, মিসেস নাসরিন সাঈদ ইস্কান্দার, সৈয়দা শামিলা রহমানসহ আরও অনেকে।
বিএনপি মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা শায়রুল কবীর খান বলেন, ‘মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনাকুঞ্জের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বিকেল ৪টায় গুলশানের বাসা থেকে রওনা দেন।’
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ একাধিক শীর্ষ নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
শুক্রবার, ২১ নভেম্বর ২০২৫
যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শুক্রবার,(২১ নভেম্বর ২০২৫) সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপিত হয়েছে। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে দিনের শুরুতে কর্মসূচি অনুযায়ী দেশের সব সেনানিবাস, নৌ ঘাঁটি ও স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটির মসজিদসমূহে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। মোনাজাতে দেশের কল্যাণ ও সমৃদ্ধি, সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর উন্নতি ও অগ্রগতি এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করা হয়।
১৯৭১ সালের এ দিনে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সমন্বয়ে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী গঠিত হয়। ওই সময় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর ওপর সর্বাত্মক আক্রমণ শুরু করেন, যা মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়কে ত্বরান্বিত করে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে প্রতি বছর ২১ নভেম্বর সশস্ত্র বাহিনী দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে।
শিখা অনির্বাণে শ্রদ্ধা নিবেদন
স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর শহীদ সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। তারা সকালে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে।
পুষ্পস্তবক অর্পণকালে শহীদদের স্মরণে বিউগলে করুণ সুর বাজানো হয়। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা শিখা অনির্বাণে রক্ষিত পরিদর্শন বইয়ে স্বাক্ষর করেন। শিখা অনির্বাণে পৌঁছালে তিন বাহিনী প্রধানরা এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার তাদের স্বাগত জানান।
এছাড়া মুক্তিযুদ্ধে শাহাদত বরণকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মরণে সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌ বাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন নিজ-নিজ বাহিনীর পক্ষ থেকে সম্মিলিতভাবে শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
# তিন বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ
শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধান উপদেষ্টা সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে যান। সেখানে তাকে অভ্যর্থনা জানান সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান এবং মহাপরিচালকরা। এ সময় ‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২৫’ উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন তিন বাহিনীর প্রধানরা।
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, ঢাকা সেনানিবাসে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার?উজ?জামান, নৌ বাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম নজমুল হাসান এবং বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন।
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের প্রধান উপদেষ্টা সব সদস্যকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরাই প্রথম প্রতিরোধ যুদ্ধে এগিয়ে আসেন এবং দীর্ঘ লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেন। সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর অকুতোভয় সদস্যরা ২১ নভেম্বর সম্মিলিতভাবে দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণের সূচনা করেন। মুক্তিবাহিনী, বিভিন্ন আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যরা ও দেশপ্রেমিক জনতা এই সমন্বিত আক্রমণে অংশ নেন। হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে ১৬ ডিসেম্বর আমরা চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করি।’
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা, শিল্প কারখানায় নিরাপত্তা প্রদানসহ দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ ও অস্ত্র উদ্ধারসহ সব কার্যক্রমে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদানের জন্য আমি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের ধন্যবাদ জানাই।’ গত ১৫ মাসে সশস্ত্র বাহিনীর সহযোগিতায় দেশের সার্বিক পরিস্থিতির উন্নয়নসহ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা সম্ভব হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
# বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা
পরে প্রধান উপদেষ্টা আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে নির্বাচিত খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা প্রদান করেন। এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সাত জন বীরশ্রেষ্ঠের কাছের আত্মীয় এবং ৯৩ জন অন্যান্য খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীসহ সর্বমোট ১০১ জন যোগদান করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের স্বপ্ন অনুযায়ী একটি বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত ও জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনে অঙ্গীকারবদ্ধ। মুক্তিযোদ্ধারা একটি বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত, জনকল্যাণমুখী ও স্বাধীন রাষ্ট্রের যে স্বপ্ন নিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন, আমরা সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ঘটনা হলো মহান মুক্তিযুদ্ধ। এই যুদ্ধে অর্জিত বিজয়ের মাধ্যমে পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম (বীর প্রতীক), প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা ও জাতীয় সংহতি উন্নয়নবিষয়ক বিশেষ সহকারী লে. জেনারেল আব্দুল হাফিজ (অব.), প্রধান উপদেষ্টার জাতীয় ও নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং রোহিঙ্গা সমস্যা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টিটিভ ড. খলিলুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন সামরিক ও অসামরিক কর্মকর্তারা।
# সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়া
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে বিকেল ৪টায় রওনা করেন। মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী বিএনপি চেয়ারপারসন এই অনুষ্ঠানে অংশ নেন। সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কিছু সময় কাটান এবং তার শারীরিক খোঁজখবর নেন প্রধান উপদেষ্টা।
এ সময় খালেদা জিয়ার সঙ্গে ছিলেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসন মেডিকেল বোর্ড প্রধান ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার, মিসেস নাসরিন সাঈদ ইস্কান্দার, সৈয়দা শামিলা রহমানসহ আরও অনেকে।
বিএনপি মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা শায়রুল কবীর খান বলেন, ‘মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনাকুঞ্জের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বিকেল ৪টায় গুলশানের বাসা থেকে রওনা দেন।’
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ একাধিক শীর্ষ নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।