হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু রোগী -সংবাদ
ডেঙ্গুতে একদিনে আরও ৮ জন মারা গেছেন। গতকাল শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার,(২৩ নভেম্বর ২০২৫) সকাল ৮টা পর্যন্ত (একদিনে) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৭৭৮ জন। এ নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে রোববার পর্যন্ত হাসপাতালে মোট ভর্তি হয়েছে ৯০ হাজার ২৬৪ জন এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ৩৬৪ জন।
রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তিকৃতদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৮৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৩৪ জন, ঢাকা বিভাগে ১২১ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১২৯ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৮১ জন, খুলনা বিভাগে ১১২ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৪৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪৮ জন, রংপুর বিভাগে ১৯ জন ও সিলেট বিভাগে ৭ জন।
নিহত ৮ জনের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১ জন, ঢাকা বিভাগে ১ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ২ জন ও ময়মনসিংহ বিভাগে ৩ জন মারা গেছেন।
চলতি নভেম্বর মাসের রোববার পর্যন্ত ৮৬ জন মারা গেছেন। চলতি বছরের রোববার পর্যন্ত রাজধানীতে ২২৮ জন ডেঙ্গুতে মারা গেছেন। তার মধ্যে দক্ষিণ সিটিতে ১৬৭ জন ও উত্তর সিটিতে ৬১ জন মারা গেছেন।
আক্রান্তদের মধ্যে ৫ বছরের শিশু ৪৩টি, ৬-১০ বছরের ৩৭ জন, ১১-১৫ বছরের ৪৭ জন, ১৬-২০ বছরের ১০২ জন, ২১-২৫ বছরের ১০৬ জন, ২৬-৩০ বছরের ১০৭ জন, ৩১-৩৫ বছরের ৮০ জন, ৩৬-৪০ বছরের ৭৭ জন, ৪১-৪৫ বছরের ৪৫ জন, ৪৬-৫০ বছরের ৩৫ জন, ৭১-৭৫ বছরের ৬ জন, ৮০ বছর বয়সের ৩ জন রয়েছে। সারাদেশের হাসপাতালগুলোতে এখনও ২ হাজার ৪৫৮ জন ভর্তি আছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে একক কোনো ব্যবস্থা কার্যকর নয়। বরং দরকার সমন্বিত ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট।
বিশেষজ্ঞদের গবেষণায় দেখা গেছে, ডেঙ্গুর শতকরা ৭০-৮০ ভাগ প্রজনন স্থানই আবাসিক ভবনের ভেতরে বা চারপাশে, কিন্তু নাগরিকদের অনেকেই এখনও মনে করেন মশা নিয়ন্ত্রণ শুধু সরকারের দায়িত্ব। অথচ প্রতি পরিবারের উচিত সপ্তাহে অন্তত একদিন জমে থাকা পানি পরিষ্কার করা। কারণ এডিস মশার জীবনচক্র মাত্র ৫-৭ দিন।
কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেঙ্গুর বিস্তার জলবায়ু উপাদানের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত। সম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের আহাওয়ার ধরন বদলে গেছে। বর্ষাকাল দীর্ঘায়িত হয়েছে। এডিস মশা বৃষ্টিপাতের সুবিধা নিয়ে প্রজননচক্র চালিয়ে যায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য ইতোমধ্যে সতর্ক করেছে যে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও আফ্রিকার শহরাঞ্চলগুলোতে এডিস ইজিপ্টি ও এডিস অ্যালবোপিকটাস মশার প্রজনন ও টিকে থাকার হার দ্রুত বাড়ছে।
এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ এখন একটি আদর্শ কেস স্টাডি, এক সময় জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকা ডেঙ্গু সংক্রমণ এখন জানুয়ারি পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের স্বাস্থ্যগত প্রভাব, বিশেষ করে ভেক্টরবাহিত রোগ যেমন- ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাসের বিস্তার ঘটছে। ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত এবং আদ্রতার পরিবর্তন এ রোগগুলোর সংক্রমণ পরিধি ও মৌসুমী ধরন আমূল বদলে দিচ্ছে বলে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেন।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু রোগী -সংবাদ
রোববার, ২৩ নভেম্বর ২০২৫
ডেঙ্গুতে একদিনে আরও ৮ জন মারা গেছেন। গতকাল শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার,(২৩ নভেম্বর ২০২৫) সকাল ৮টা পর্যন্ত (একদিনে) হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৭৭৮ জন। এ নিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে রোববার পর্যন্ত হাসপাতালে মোট ভর্তি হয়েছে ৯০ হাজার ২৬৪ জন এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ৩৬৪ জন।
রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তিকৃতদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৮৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৩৪ জন, ঢাকা বিভাগে ১২১ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১২৯ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৮১ জন, খুলনা বিভাগে ১১২ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৪৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ৪৮ জন, রংপুর বিভাগে ১৯ জন ও সিলেট বিভাগে ৭ জন।
নিহত ৮ জনের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ১ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১ জন, ঢাকা বিভাগে ১ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ২ জন ও ময়মনসিংহ বিভাগে ৩ জন মারা গেছেন।
চলতি নভেম্বর মাসের রোববার পর্যন্ত ৮৬ জন মারা গেছেন। চলতি বছরের রোববার পর্যন্ত রাজধানীতে ২২৮ জন ডেঙ্গুতে মারা গেছেন। তার মধ্যে দক্ষিণ সিটিতে ১৬৭ জন ও উত্তর সিটিতে ৬১ জন মারা গেছেন।
আক্রান্তদের মধ্যে ৫ বছরের শিশু ৪৩টি, ৬-১০ বছরের ৩৭ জন, ১১-১৫ বছরের ৪৭ জন, ১৬-২০ বছরের ১০২ জন, ২১-২৫ বছরের ১০৬ জন, ২৬-৩০ বছরের ১০৭ জন, ৩১-৩৫ বছরের ৮০ জন, ৩৬-৪০ বছরের ৭৭ জন, ৪১-৪৫ বছরের ৪৫ জন, ৪৬-৫০ বছরের ৩৫ জন, ৭১-৭৫ বছরের ৬ জন, ৮০ বছর বয়সের ৩ জন রয়েছে। সারাদেশের হাসপাতালগুলোতে এখনও ২ হাজার ৪৫৮ জন ভর্তি আছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধে একক কোনো ব্যবস্থা কার্যকর নয়। বরং দরকার সমন্বিত ভেক্টর ম্যানেজমেন্ট।
বিশেষজ্ঞদের গবেষণায় দেখা গেছে, ডেঙ্গুর শতকরা ৭০-৮০ ভাগ প্রজনন স্থানই আবাসিক ভবনের ভেতরে বা চারপাশে, কিন্তু নাগরিকদের অনেকেই এখনও মনে করেন মশা নিয়ন্ত্রণ শুধু সরকারের দায়িত্ব। অথচ প্রতি পরিবারের উচিত সপ্তাহে অন্তত একদিন জমে থাকা পানি পরিষ্কার করা। কারণ এডিস মশার জীবনচক্র মাত্র ৫-৭ দিন।
কীটতত্ত্ব বিশেষজ্ঞদের মতে, ডেঙ্গুর বিস্তার জলবায়ু উপাদানের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত। সম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের আহাওয়ার ধরন বদলে গেছে। বর্ষাকাল দীর্ঘায়িত হয়েছে। এডিস মশা বৃষ্টিপাতের সুবিধা নিয়ে প্রজননচক্র চালিয়ে যায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য ইতোমধ্যে সতর্ক করেছে যে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও আফ্রিকার শহরাঞ্চলগুলোতে এডিস ইজিপ্টি ও এডিস অ্যালবোপিকটাস মশার প্রজনন ও টিকে থাকার হার দ্রুত বাড়ছে।
এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ এখন একটি আদর্শ কেস স্টাডি, এক সময় জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকা ডেঙ্গু সংক্রমণ এখন জানুয়ারি পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের স্বাস্থ্যগত প্রভাব, বিশেষ করে ভেক্টরবাহিত রোগ যেমন- ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাসের বিস্তার ঘটছে। ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত এবং আদ্রতার পরিবর্তন এ রোগগুলোর সংক্রমণ পরিধি ও মৌসুমী ধরন আমূল বদলে দিচ্ছে বলে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেন।