অগ্নিকাণ্ডের ১৩ বছরেও ক্ষতিপূরণ বা পুনর্বাসন কিছুই মেলেনি তাজরীন গার্মেন্টসের আহত ও নিহতের স্বজনদের।
ঢাকার অদূরে সাভারের আশুলিয়ায় ভয়াবহ সেই অগ্নিকাণ্ডে আহত ও নিহতের পরিবারের লোকজন দিনটি স্মরণ করে সোমবার, (২৪ নভেম্বর ২০২৫) সকাল থেকে নিশ্চিন্তপুরে পরিত্যক্ত তাজরীন গার্মেন্টসের সামনে জড়ো হন।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আবারও কারখানা মালিক দেলোয়ারসহ দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের জোর দাবি তোলেন তারা
আসে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনও। নিহতদের স্মরণ করে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান তারা।
এ সময় নিহতের স্বজন, আহত ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের সদস্যরা কয়েকটি দাবি তুলে ধরে বলেন, তাজরীন গার্মেন্টস ট্র্যাজেডির ১৩ বছর পূর্তি। কিন্তু এতগুলো বছর কেটে গেলেও নিহতের স্বজনরা ও আহতরা পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ পায়নি। অনেকেই পঙ্গুত্ব জীবন-যাপন করছে। অনেকে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। কিন্তু কেউ কোনো খোঁজ নিচ্ছে না। এ সময় নিহত ও আহত শ্রমিকদের এক জীবন সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ, পরিত্যক্ত তাজরীন গার্মেন্টসের ভবন ভেঙে শ্রমিকদের আবাসন ব্যবস্থা বা হাসপাতাল তৈরি এবং পুনর্বাসনের দাবি জানায়।
এ সময় তাজরীন গার্মেন্টসের মালিক দেলোয়ারের ফাঁসির দাবি জানান তারা।
তাজরীন গার্মেন্টসের শ্রমিক আহত নাসিমা বলেন, আমি সেদিন কারখানার ভেতরে কাজ করছিলাম। জীবন রক্ষার জন্য সেদিন কারখানার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে প্রাণে বাঁচি। কিন্তু এখন আমার শরীরের অবস্থা অনেক খারাপ। আমার কোমড় ও ঘাড়ে অনেক সমস্যা। এই রকম সমস্যা নিয়ে বেঁচে আছি, কিন্তু কেউ খবর নেয় না। তেমন কোনো ক্ষতিপূরণ পাইনি, কেউ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেনি বলেও ক্ষোভ জানান তিনি।
আরেক আহত শ্রমিক হালিমা কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি এখন কোনো কাজ করতে পারি না। পঙ্গু না হয়েও পঙ্গুত্ব জীবনে আছি। কিন্তু আমাদের কেউ খবর নেয় না। আমরা চাই, এই তাজরীন গার্মেন্টসে অনেক মানুষ মারা গেছে। মূলত কারখানার মালিক দেলোয়ারের কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে তাই আমরা তার বিচার চাই, ফাঁসি চাই। এছাড়া নিহতের পরিবার ও আহত যারা বেঁচে আছে তাদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে বলে দাবি জানায় তিনি। এ সময় বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়োটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, ‘২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে অবস্থিত তোবা গ্রুপের গার্মেন্টস কারখানা তাজরীন ফ্যাশন লিমিটেডের মালিক দেলোয়ারের পরিকল্পিত লাগানো আগুনে ১১৪ শ্রমিক নিহত এবং ১৭২ জন শ্রমিক গুরুতর আহত হয়েছে। এছাড়াও অনেক শ্রমিক আহত হয়ে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন, ক্ষতিপূরণ, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কারখানা মালিক দেলোয়ারসহ দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের দাবি জানান তিনি।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫
অগ্নিকাণ্ডের ১৩ বছরেও ক্ষতিপূরণ বা পুনর্বাসন কিছুই মেলেনি তাজরীন গার্মেন্টসের আহত ও নিহতের স্বজনদের।
ঢাকার অদূরে সাভারের আশুলিয়ায় ভয়াবহ সেই অগ্নিকাণ্ডে আহত ও নিহতের পরিবারের লোকজন দিনটি স্মরণ করে সোমবার, (২৪ নভেম্বর ২০২৫) সকাল থেকে নিশ্চিন্তপুরে পরিত্যক্ত তাজরীন গার্মেন্টসের সামনে জড়ো হন।
অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আবারও কারখানা মালিক দেলোয়ারসহ দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের জোর দাবি তোলেন তারা
আসে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনও। নিহতদের স্মরণ করে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান তারা।
এ সময় নিহতের স্বজন, আহত ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের সদস্যরা কয়েকটি দাবি তুলে ধরে বলেন, তাজরীন গার্মেন্টস ট্র্যাজেডির ১৩ বছর পূর্তি। কিন্তু এতগুলো বছর কেটে গেলেও নিহতের স্বজনরা ও আহতরা পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ পায়নি। অনেকেই পঙ্গুত্ব জীবন-যাপন করছে। অনেকে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। কিন্তু কেউ কোনো খোঁজ নিচ্ছে না। এ সময় নিহত ও আহত শ্রমিকদের এক জীবন সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ, পরিত্যক্ত তাজরীন গার্মেন্টসের ভবন ভেঙে শ্রমিকদের আবাসন ব্যবস্থা বা হাসপাতাল তৈরি এবং পুনর্বাসনের দাবি জানায়।
এ সময় তাজরীন গার্মেন্টসের মালিক দেলোয়ারের ফাঁসির দাবি জানান তারা।
তাজরীন গার্মেন্টসের শ্রমিক আহত নাসিমা বলেন, আমি সেদিন কারখানার ভেতরে কাজ করছিলাম। জীবন রক্ষার জন্য সেদিন কারখানার ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে প্রাণে বাঁচি। কিন্তু এখন আমার শরীরের অবস্থা অনেক খারাপ। আমার কোমড় ও ঘাড়ে অনেক সমস্যা। এই রকম সমস্যা নিয়ে বেঁচে আছি, কিন্তু কেউ খবর নেয় না। তেমন কোনো ক্ষতিপূরণ পাইনি, কেউ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেনি বলেও ক্ষোভ জানান তিনি।
আরেক আহত শ্রমিক হালিমা কান্না জড়িত কণ্ঠে বলেন, আমি এখন কোনো কাজ করতে পারি না। পঙ্গু না হয়েও পঙ্গুত্ব জীবনে আছি। কিন্তু আমাদের কেউ খবর নেয় না। আমরা চাই, এই তাজরীন গার্মেন্টসে অনেক মানুষ মারা গেছে। মূলত কারখানার মালিক দেলোয়ারের কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে তাই আমরা তার বিচার চাই, ফাঁসি চাই। এছাড়া নিহতের পরিবার ও আহত যারা বেঁচে আছে তাদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে বলে দাবি জানায় তিনি। এ সময় বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও সোয়োটার্স শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় কমিটির আইন বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু বলেন, ‘২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে অবস্থিত তোবা গ্রুপের গার্মেন্টস কারখানা তাজরীন ফ্যাশন লিমিটেডের মালিক দেলোয়ারের পরিকল্পিত লাগানো আগুনে ১১৪ শ্রমিক নিহত এবং ১৭২ জন শ্রমিক গুরুতর আহত হয়েছে। এছাড়াও অনেক শ্রমিক আহত হয়ে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন, ক্ষতিপূরণ, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কারখানা মালিক দেলোয়ারসহ দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের দাবি জানান তিনি।