পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে জালিয়াতির অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলার রায় জানা যাবে আগামী ১ ডিসেম্বর। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে মঙ্গলবার, (২৫ নভেম্বর ২০২৫) ঢাকার বিশেষ জজ-৪ এর বিচারক রবিউল আলম রায়ের এ দিন ধার্য করেন বলে দুদকের আইনজীবী তরিকুল ইসলাম জানান।

এ মামলায় অন্য আসামিরা হলেন- জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউক-এর সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।

তাদের মধ্যে আসামি খুরশীদ আলম কারাগারে আটক রয়েছেন। অন্য আসামিরা পলাতক। পলাতক থাকায় তাদের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন হয়নি। তারা আত্মপক্ষ শুনানিতে নিজেদের নির্দোষ দাবি করতে পারেননি। এদিন দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর তরিকুল ইসলাম যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। তিনি আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা হিসেবে যাবজ্জীবন কারাদ- প্রত্যাশা করেন।

কারাগারে থাকা একমাত্র আসামি রাজউকের সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের পক্ষে অ্যাডভোকেট শাহীনুর রহমান যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন। তিনি অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি দাবি করে আসামির খালাসের আর্জি জানান। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত রায় ঘোষণার জন্য আগামী ১ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন।

প্লট বরাদ্দের দুর্নীতির অভিযোগে শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা এবং তাদের ছেলেমেয়েদের বিরুদ্ধে গত জানুয়ারিতে ছয়টি মামলা করে দুদক। সব মামলাতেই শেখ হাসিনাকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে ১৩ জানুয়ারি শেখ রেহানার বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন। ‘ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মাধ্যমে’ পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেয়ার অভিযোগ করা হয় সেখানে।

তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ ১৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া। গত ৩১ জুলাই একই আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেয়। বিচার চলাকালে আদালত ৩২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। ওই ৬ মামলার মধ্যে শেখ হাসিনা, তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের বিরুদ্ধে তিন মামলায় রায়ের জন্য ইতোমধ্যে আগামীকাল দিন রাখা হয়েছে। শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক এবং মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে আরো দুটি মামলা শুনানির শেষ পর্যায়ে রয়েছে।