সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের স্ত্রী জীশান মির্জা ও মেয়ে তাহসীন রাইসা বিনতে বেনজীরের আয়কর নথি জব্দের আদেশ দিয়েছে আদালত। এছাড়া ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাবেক প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের আয়কর নথি জব্দের আদেশ এসেছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীনের পৃথক তিনটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার,(২৬ নভেম্বর ২০২৫) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ সাব্বির ফয়েজ এ আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী রিয়াজ হোসেন এ তথ্য দিয়ে বলেছেন, তাদের আয়কর নথি দুদককে সরবরাহ করতে আদালত ঢাকার কর অঞ্চল-২০ এর প্রতি নির্দেশ দিয়েছে।
গত বছর ১৫ ডিসেম্বর বেনজীর, তার স্ত্রী জীশান মির্জা এবং দুই মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও তাহসীন রাইসার বিরুদ্ধে প্রায় ৭৫ কোটি কোটি টাকার ‘অবৈধ সম্পদ অর্জনের’ অভিযোগে চারটি মামলা করেছে দুদক। স্ত্রী-কন্যাদের মামলায় বেনজীরকেও আসামি করা হয়েছে।
বেনজীর আহমেদ বাংলাদেশের প্রথম পুলিশ প্রধান, যিনি একাধারে ঢাকা মহানগর পুলিশ ও পুলিশের বিশেষ ইউনিট র্যাবেরও প্রধান ছিলেন। ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি অবসরে যান।
গত ৩১ মার্চ ‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ এবং ৩ এপ্রিল ‘বনের জমিতে বেনজীরের রিসোর্ট’ শিরোনামে তাকে নিয়ে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে একটি জাতীয় পত্রিকা। সেখানে সাবেক আইজিপির বিরুদ্ধে ‘অবৈধ সম্পদ’ অর্জনের অভিযোগ উঠে আসে। এরপর আলোচনা শুরু হয় তাকে নিয়ে।
এরপর ২২ এপ্রিল দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন বলেন, বেনজীরের ‘অবৈধ সম্পদ’ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছেন তারা। পরবর্তীতে সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর ও তার পরিবারের সম্পদের খোঁজে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ আটটি প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেয় দুদক।
পরবর্তীতে দুদকের আবেদনে বেনজীর, তার স্ত্রী ও তিন মেয়ের স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন।
সেই সঙ্গে তাদের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব এবং বিভিন্ন কোম্পানিতে তাদের নামে থাকা শেয়ারও অবরুদ্ধ করার আদেশ আসে। সেই অনুযায়ী পরে ব্যবস্থাও নেয় দুদক।
বেনজীর ও তার স্ত্রী-কন্যাদের দেশের বাইরে যাওয়ার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কিছু বলা হয়নি। তবে বোট ক্লাবের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগের জন্য দেয়া চিঠিতে তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিদেশে থাকার কথা বলেন।
জীশানের নথি জব্দের আবেদনে বলা হয়েছে, তিনি ‘মিথ্যা’ তথ্য দিয়ে ১৬ কোটি ১ লাখ ৭১ হাজার ৩৩৬ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জনের তথ্য ‘গোপন’ করেছেন। এছাড়া ৩১ কোটি ৬৯ লাখ ৫৫ হাজার ১৪৯ টাকা মূল্যের জ্ঞাত ‘আয়বহির্ভূত’ স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। তার স্বামী বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ করে জীশানকে অপরাধে সহায়তা করার অভিযোগ এনেছে দুদক। এ ঘটনায় মামলা করার বিষয়টি তুলে ধরে দুদক বলেছে, মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে জীশানের সব আয়কর রিটার্নসহ সংশ্লিষ্ট নথি জব্দ করে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন।
বেনজীরের মেয়ে তাহসীন রাইসার আয়কর নথি জব্দের আবেদনে বলা হয়েছে, তিনি ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৫৫ হাজার ৮৫ টাকার জ্ঞাত ‘আয়বহির্ভূত’ স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ করে মেয়েকে এ অপরাধ সহায়তা করার অভিযোগও আনা হয়েছে সাবেক আইজিপি বেনজীরের বিরুদ্ধে।
এ অভিযোগে মামলা করার বিষয়টি তুলে ধরে দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে, মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাহসীন রাইসার আয়কর নথি জব্দ করা প্রয়োজন।
এর আগে এ বছর ৮ জানুয়ারি জীশান মির্জা ও তাহসীনা রাইসার আয়কর নথি জব্দের আদেশ দিয়েছিল আদালত।
ডিবি হারুন:
ডিবির হারুনের আয়কর নথি জব্দের আবেদনে বলা হয়েছে, তিনি ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ করে ১৭ কোটি ৫১ হাজার ১৭ হাজার ৮০৬ টাকার জ্ঞাত ‘আয়বহির্ভূত’ সম্পদ অর্জন করেছেন। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তার আয়কর নথি জব্দ করে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন।
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর ‘অবৈধ সম্পদ’ অর্জনের অভিযোগে হারুন, তার স্ত্রী ও হারুনের ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বুধবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৫
সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদের স্ত্রী জীশান মির্জা ও মেয়ে তাহসীন রাইসা বিনতে বেনজীরের আয়কর নথি জব্দের আদেশ দিয়েছে আদালত। এছাড়া ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সাবেক প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের আয়কর নথি জব্দের আদেশ এসেছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীনের পৃথক তিনটি আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার,(২৬ নভেম্বর ২০২৫) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ সাব্বির ফয়েজ এ আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী রিয়াজ হোসেন এ তথ্য দিয়ে বলেছেন, তাদের আয়কর নথি দুদককে সরবরাহ করতে আদালত ঢাকার কর অঞ্চল-২০ এর প্রতি নির্দেশ দিয়েছে।
গত বছর ১৫ ডিসেম্বর বেনজীর, তার স্ত্রী জীশান মির্জা এবং দুই মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও তাহসীন রাইসার বিরুদ্ধে প্রায় ৭৫ কোটি কোটি টাকার ‘অবৈধ সম্পদ অর্জনের’ অভিযোগে চারটি মামলা করেছে দুদক। স্ত্রী-কন্যাদের মামলায় বেনজীরকেও আসামি করা হয়েছে।
বেনজীর আহমেদ বাংলাদেশের প্রথম পুলিশ প্রধান, যিনি একাধারে ঢাকা মহানগর পুলিশ ও পুলিশের বিশেষ ইউনিট র্যাবেরও প্রধান ছিলেন। ২০২২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি অবসরে যান।
গত ৩১ মার্চ ‘বেনজীরের ঘরে আলাদীনের চেরাগ’ এবং ৩ এপ্রিল ‘বনের জমিতে বেনজীরের রিসোর্ট’ শিরোনামে তাকে নিয়ে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে একটি জাতীয় পত্রিকা। সেখানে সাবেক আইজিপির বিরুদ্ধে ‘অবৈধ সম্পদ’ অর্জনের অভিযোগ উঠে আসে। এরপর আলোচনা শুরু হয় তাকে নিয়ে।
এরপর ২২ এপ্রিল দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন বলেন, বেনজীরের ‘অবৈধ সম্পদ’ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত অভিযোগের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছেন তারা। পরবর্তীতে সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক বেনজীর ও তার পরিবারের সম্পদের খোঁজে বাংলাদেশ ব্যাংকসহ আটটি প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেয় দুদক।
পরবর্তীতে দুদকের আবেদনে বেনজীর, তার স্ত্রী ও তিন মেয়ের স্থাবর সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন।
সেই সঙ্গে তাদের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব এবং বিভিন্ন কোম্পানিতে তাদের নামে থাকা শেয়ারও অবরুদ্ধ করার আদেশ আসে। সেই অনুযায়ী পরে ব্যবস্থাও নেয় দুদক।
বেনজীর ও তার স্ত্রী-কন্যাদের দেশের বাইরে যাওয়ার বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কিছু বলা হয়নি। তবে বোট ক্লাবের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগের জন্য দেয়া চিঠিতে তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিদেশে থাকার কথা বলেন।
জীশানের নথি জব্দের আবেদনে বলা হয়েছে, তিনি ‘মিথ্যা’ তথ্য দিয়ে ১৬ কোটি ১ লাখ ৭১ হাজার ৩৩৬ টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জনের তথ্য ‘গোপন’ করেছেন। এছাড়া ৩১ কোটি ৬৯ লাখ ৫৫ হাজার ১৪৯ টাকা মূল্যের জ্ঞাত ‘আয়বহির্ভূত’ স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। তার স্বামী বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ করে জীশানকে অপরাধে সহায়তা করার অভিযোগ এনেছে দুদক। এ ঘটনায় মামলা করার বিষয়টি তুলে ধরে দুদক বলেছে, মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে জীশানের সব আয়কর রিটার্নসহ সংশ্লিষ্ট নথি জব্দ করে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন।
বেনজীরের মেয়ে তাহসীন রাইসার আয়কর নথি জব্দের আবেদনে বলা হয়েছে, তিনি ৫ কোটি ৫৯ লাখ ৫৫ হাজার ৮৫ টাকার জ্ঞাত ‘আয়বহির্ভূত’ স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ করে মেয়েকে এ অপরাধ সহায়তা করার অভিযোগও আনা হয়েছে সাবেক আইজিপি বেনজীরের বিরুদ্ধে।
এ অভিযোগে মামলা করার বিষয়টি তুলে ধরে দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে, মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাহসীন রাইসার আয়কর নথি জব্দ করা প্রয়োজন।
এর আগে এ বছর ৮ জানুয়ারি জীশান মির্জা ও তাহসীনা রাইসার আয়কর নথি জব্দের আদেশ দিয়েছিল আদালত।
ডিবি হারুন:
ডিবির হারুনের আয়কর নথি জব্দের আবেদনে বলা হয়েছে, তিনি ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ করে ১৭ কোটি ৫১ হাজার ১৭ হাজার ৮০৬ টাকার জ্ঞাত ‘আয়বহির্ভূত’ সম্পদ অর্জন করেছেন। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তার আয়কর নথি জব্দ করে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন।
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর ‘অবৈধ সম্পদ’ অর্জনের অভিযোগে হারুন, তার স্ত্রী ও হারুনের ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।