দুইদিনে চার দফা ভূমিকম্প নিয়ে আতঙ্ক না কাটতেই আবারও ভূপৃষ্ঠের ঝাঁকুনিতে কাঁপলো বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার, (২৭ নভেম্বর ২০২৫) বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে এই ভূমিকম্প হয় বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা রুবাঈয়্যাৎ কবীর। তিনি বলেন, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদীর ঘোড়াশালে। এটি ছিল মৃদু মাত্রার ভূমিকম্প, রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৬।
এদিকে গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে বাংলাদেশে দুটি ভূমিকম্প হওয়ার তথ্য দিয়েছে ইউরোপিয়ান মেডিটেরিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টার (ইএমসিএস)। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, রাত ৩টা ২৯ মিনিট ৫৫ সেকেন্ডে হওয়া ৪ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল কক্সবাজার থেকে দেড়শ’ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরে। এক মিনিটের ব্যবধানে ৩টা ৩০ মিনিট ৪৯ সেকেন্ডে আরেকটি ভূমিকম্প হয়, যার উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেট থেকে ২৪ কিলোমিটার উত্তরে। রিখটার স্কেলে এটি ছিল ৩ দশমিক ৪ মাত্রার।
গত শুক্রবার সকালে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্প আঘাত হানে বাংলাদেশে। ওই ভূমিকম্পে তিন জেলায় অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয় এবং ৬ শতাধিক মানুষ আহত হন। রিখটার স্কেলে ৫.৭ মাত্রার ওই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরে নরসিংদীর মাধবদীতে এবং এর কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে।
পরদিন গত শনিবার সকালে নরসিংদীর পলাশে ৩.৩ মাত্রার ভূমকম্পি হয়। তার রেশ না কাটতেই সন্ধ্যায় সেকেন্ডের ব্যবধানে দুটি ভূমিকম্প হয়, যার একটি উৎপত্তিস্থল ঢাকার বাড্ডা, আরেকটি সেই নরসিংদীতেই। বারবার ভূমিকম্পের পর এখনই করণীয় ঠিক করতে তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মেহেদি আহমেদ আনসারী সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে গত শুক্রবার বলেন, ‘আজকের ভূমিকম্পটা বলা যেতে পারে ‘ফোরশক’। বড় ভূমিকম্পের আগে ছোট ছোট যে ভূমিকম্প, এটা সেগুলোর একটি।’ ভূতত্ত্ববিদ অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার মনে করেন, বড় ধরনের একটি ভূমিকম্পের বিপদ বাংলাদেশের সামনে অপেক্ষা করছে। ওই ঝুঁকি বিপদজনক মাত্রায় পৌঁছেছে জনগণের সচেতনতা, সরকারের পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতির অভাবে।
তার ভাষ্য- ভূমিকম্প ঠেকানো যাবে না, প্রতিরোধ করা সম্ভব না, আগাম সংকেতও দেয়া যাবে না, কিন্তু এর ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব যদি সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া যায়। ‘সব কথার শেষ কথা যেটা হচ্ছে, আমাদের সক্ষমতা অর্জন করতে হবে এবং ভূমিকম্প প্রতিরোধ বা ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে স্বল্পমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা।’ ভূমিকম্প নিয়ে জনমনে আতঙ্কের মধ্যে গত সোমবার বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক ডাকেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। ওই বৈঠক একটি টাস্কফোর্স গঠন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫
দুইদিনে চার দফা ভূমিকম্প নিয়ে আতঙ্ক না কাটতেই আবারও ভূপৃষ্ঠের ঝাঁকুনিতে কাঁপলো বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার, (২৭ নভেম্বর ২০২৫) বিকেল ৪টা ১৫ মিনিটে এই ভূমিকম্প হয় বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা রুবাঈয়্যাৎ কবীর। তিনি বলেন, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরে নরসিংদীর ঘোড়াশালে। এটি ছিল মৃদু মাত্রার ভূমিকম্প, রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৬।
এদিকে গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে বাংলাদেশে দুটি ভূমিকম্প হওয়ার তথ্য দিয়েছে ইউরোপিয়ান মেডিটেরিয়ান সিসমোলজিক্যাল সেন্টার (ইএমসিএস)। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, রাত ৩টা ২৯ মিনিট ৫৫ সেকেন্ডে হওয়া ৪ মাত্রার ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল কক্সবাজার থেকে দেড়শ’ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরে। এক মিনিটের ব্যবধানে ৩টা ৩০ মিনিট ৪৯ সেকেন্ডে আরেকটি ভূমিকম্প হয়, যার উৎপত্তিস্থল ছিল সিলেট থেকে ২৪ কিলোমিটার উত্তরে। রিখটার স্কেলে এটি ছিল ৩ দশমিক ৪ মাত্রার।
গত শুক্রবার সকালে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্প আঘাত হানে বাংলাদেশে। ওই ভূমিকম্পে তিন জেলায় অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয় এবং ৬ শতাধিক মানুষ আহত হন। রিখটার স্কেলে ৫.৭ মাত্রার ওই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরে নরসিংদীর মাধবদীতে এবং এর কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে।
পরদিন গত শনিবার সকালে নরসিংদীর পলাশে ৩.৩ মাত্রার ভূমকম্পি হয়। তার রেশ না কাটতেই সন্ধ্যায় সেকেন্ডের ব্যবধানে দুটি ভূমিকম্প হয়, যার একটি উৎপত্তিস্থল ঢাকার বাড্ডা, আরেকটি সেই নরসিংদীতেই। বারবার ভূমিকম্পের পর এখনই করণীয় ঠিক করতে তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মেহেদি আহমেদ আনসারী সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে গত শুক্রবার বলেন, ‘আজকের ভূমিকম্পটা বলা যেতে পারে ‘ফোরশক’। বড় ভূমিকম্পের আগে ছোট ছোট যে ভূমিকম্প, এটা সেগুলোর একটি।’ ভূতত্ত্ববিদ অধ্যাপক সৈয়দ হুমায়ুন আখতার মনে করেন, বড় ধরনের একটি ভূমিকম্পের বিপদ বাংলাদেশের সামনে অপেক্ষা করছে। ওই ঝুঁকি বিপদজনক মাত্রায় পৌঁছেছে জনগণের সচেতনতা, সরকারের পরিকল্পনা এবং প্রস্তুতির অভাবে।
তার ভাষ্য- ভূমিকম্প ঠেকানো যাবে না, প্রতিরোধ করা সম্ভব না, আগাম সংকেতও দেয়া যাবে না, কিন্তু এর ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা সম্ভব যদি সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া যায়। ‘সব কথার শেষ কথা যেটা হচ্ছে, আমাদের সক্ষমতা অর্জন করতে হবে এবং ভূমিকম্প প্রতিরোধ বা ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে স্বল্পমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা।’ ভূমিকম্প নিয়ে জনমনে আতঙ্কের মধ্যে গত সোমবার বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক ডাকেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। ওই বৈঠক একটি টাস্কফোর্স গঠন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।