ডেঙ্গুতে বাড়ছে শিশু রোগী। মুগদা হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডের চিত্র -সোহরাব আলম
ডেঙ্গুতে একদিনে আরও ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৫৬৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি থেকে বৃহস্পতিবার, (২৭ নভেম্বর ২০২৫) পর্যন্ত মোট ৯২ হাজার ৭৮৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তার মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৩৭৭ জন।
আক্রান্তদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৬৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৮৬ জন, ঢাকা বিভাগে ৯২ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১২৫ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৮৬ জন, খুলনা বিভাগে ৪১ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৭ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৫ জন, রংপুর বিভাগে ২ জন ও সিলেট বিভাগে ৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ১ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৩ জন ও ময়মনসিংহ বিভাগে ২ জন মারা গেছেন।
হাসপাতালে ভর্তিকৃতদের মধ্যে ৫ বছর বয়সের ৪৬ জন, ৬-১০ বছর বয়সের ৩০ জন, ১১-১৫ বছর বয়সের ৩০ জন, ১৬-২০ বছর বয়সের ৭৭ জন, ২১-২৫ বছর বয়সের ৮১ জন, ২৬-৩০ বছর বয়সের ৬৪ জন, ৩৬-৪০ বছর বয়সের ৫১ জন, ৪১-৪৫ বছর বয়সের ৪১ জন এবং ৮০ বছর বয়সের ২ জন। এভাবে নানা বয়সের মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে নারী ও শিশু ৩৭ দশমিক ৭ ভাগ এবং পুরুষ ৬২ দশমিক ৩ ভাগ। নিহতদের মধ্যে মহিলা ৪৮ ভাগ ও পুরুষ ৫২ ভাগ। নভেম্বর মাসের বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মোট মৃত্যু ৯৪ জন।
হাসপাতালগুলোর দেয়া তথ্য মতে, রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ৫৩৯ জন এবং সারাদেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ২,১৮৯ জন ভর্তি আছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক কবিরুল বাসার তার এক প্রতিবেদনে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন এখন মানব স্বাস্থ্যের জন্য এক বৈশ্বিক সংকটে রূপ নিয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে স্বাস্থ্যেও ওপর প্রভাব পড়ছে, বিশেষ করে ভেক্টরবাহিত রোগ যেমনÑ ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাসের বিস্তার। ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত এবং আদ্রতার পরিবর্তন এই রোগগুলোর সংক্রমণ পরিধি ও মৌসুমী ধরন আমূল বদলে দিচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতোমধ্যে সতর্ক করেছে যে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও আফ্রিকার শহরগুলোতে এডিস ইজিপ্টি ও এডিস অ্যালবোপিকটাস মশার প্রজনন ও টিকে থাকার হার দ্রুত বাড়ছে।
আগে ডেঙ্গু জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকতো এখন ডেঙ্গু সংক্রমণ জানুয়ারি পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। ডেঙ্গুর বিস্তার জলবায়ু উপাদানের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের আবহাওয়ার ধরন বদলে গেছে।
বর্ষাকাল দীর্ঘায়িত হয়েছে। অক্টোবর ও নভেম্বর পর্যন্ত বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকে। এডিস মশা এই বৃষ্টিপাতের সুবিধা নিয়ে প্রজননচক্র চালিয়ে যায়।
অক্টোবরের শেষের দিকের বৃষ্টিতে ফুলের টব, ছাদের বালতি, পানির মিটার বা নির্মাণাধীন ভবনের জলাধারে জমে থাকা পরিষ্কার পানি মশার ডিম থেকে লার্ভা বিকাশের সুযোগ তৈরি করে। যা মশার বেঁচে থাকা ও মশার শরীরের ভাইরাস পরিপূর্ণভাবে বিকাশের জন্য সবচেয়ে অনুকূল।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ডেঙ্গুতে বাড়ছে শিশু রোগী। মুগদা হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডের চিত্র -সোহরাব আলম
বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫
ডেঙ্গুতে একদিনে আরও ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৫৬৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বছরের পহেলা জানুয়ারি থেকে বৃহস্পতিবার, (২৭ নভেম্বর ২০২৫) পর্যন্ত মোট ৯২ হাজার ৭৮৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তার মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে ৩৭৭ জন।
আক্রান্তদের মধ্যে বরিশাল বিভাগে ৬৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৮৬ জন, ঢাকা বিভাগে ৯২ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১২৫ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৮৬ জন, খুলনা বিভাগে ৪১ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৭ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৫ জন, রংপুর বিভাগে ২ জন ও সিলেট বিভাগে ৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগে ১ জন, ঢাকা উত্তর সিটিতে ১ জন, ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ৩ জন ও ময়মনসিংহ বিভাগে ২ জন মারা গেছেন।
হাসপাতালে ভর্তিকৃতদের মধ্যে ৫ বছর বয়সের ৪৬ জন, ৬-১০ বছর বয়সের ৩০ জন, ১১-১৫ বছর বয়সের ৩০ জন, ১৬-২০ বছর বয়সের ৭৭ জন, ২১-২৫ বছর বয়সের ৮১ জন, ২৬-৩০ বছর বয়সের ৬৪ জন, ৩৬-৪০ বছর বয়সের ৫১ জন, ৪১-৪৫ বছর বয়সের ৪১ জন এবং ৮০ বছর বয়সের ২ জন। এভাবে নানা বয়সের মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে নারী ও শিশু ৩৭ দশমিক ৭ ভাগ এবং পুরুষ ৬২ দশমিক ৩ ভাগ। নিহতদের মধ্যে মহিলা ৪৮ ভাগ ও পুরুষ ৫২ ভাগ। নভেম্বর মাসের বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মোট মৃত্যু ৯৪ জন।
হাসপাতালগুলোর দেয়া তথ্য মতে, রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ৫৩৯ জন এবং সারাদেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ২,১৮৯ জন ভর্তি আছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক কবিরুল বাসার তার এক প্রতিবেদনে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন এখন মানব স্বাস্থ্যের জন্য এক বৈশ্বিক সংকটে রূপ নিয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে স্বাস্থ্যেও ওপর প্রভাব পড়ছে, বিশেষ করে ভেক্টরবাহিত রোগ যেমনÑ ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, চিকুনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাসের বিস্তার। ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা, অনিয়মিত বৃষ্টিপাত এবং আদ্রতার পরিবর্তন এই রোগগুলোর সংক্রমণ পরিধি ও মৌসুমী ধরন আমূল বদলে দিচ্ছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতোমধ্যে সতর্ক করেছে যে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও আফ্রিকার শহরগুলোতে এডিস ইজিপ্টি ও এডিস অ্যালবোপিকটাস মশার প্রজনন ও টিকে থাকার হার দ্রুত বাড়ছে।
আগে ডেঙ্গু জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকতো এখন ডেঙ্গু সংক্রমণ জানুয়ারি পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। ডেঙ্গুর বিস্তার জলবায়ু উপাদানের সঙ্গে নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের আবহাওয়ার ধরন বদলে গেছে।
বর্ষাকাল দীর্ঘায়িত হয়েছে। অক্টোবর ও নভেম্বর পর্যন্ত বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকে। এডিস মশা এই বৃষ্টিপাতের সুবিধা নিয়ে প্রজননচক্র চালিয়ে যায়।
অক্টোবরের শেষের দিকের বৃষ্টিতে ফুলের টব, ছাদের বালতি, পানির মিটার বা নির্মাণাধীন ভবনের জলাধারে জমে থাকা পরিষ্কার পানি মশার ডিম থেকে লার্ভা বিকাশের সুযোগ তৈরি করে। যা মশার বেঁচে থাকা ও মশার শরীরের ভাইরাস পরিপূর্ণভাবে বিকাশের জন্য সবচেয়ে অনুকূল।