শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিশেষ ফ্ল্যাইটে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া ৩৯ বাংলাদেশি -সংবাদ
অবৈধভাবে বসবাসের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও ৩৯ জন বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার,(২৮ নভেম্বর ২০২৫) ভোর সাড়ে ৫টায় তারা যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশেষ সামরিক ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেছেন। এরপর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ৩৯ জনকে পরিবহন সুবিধাসহ জরুরি সহায়তা দেয় বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক।
এক বার্তায় ব্র্যাক জানিয়েছে, এর আগে চলতি বছরে ১৮৭ বাংলাদেশিকে যুক্তরাষ্ট্র ফেরত পাঠিয়েছে। এই বছরের বিভিন্ন সময়ে ফেরত আসা বাংলাদেশিদের হাতে হাতকড়া, পায়ে শেকল বেঁধে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো হলেও শুক্রবার ফেরত আসা বাংলাদেশিদের ক্ষেত্রে সেটি হয়নি।ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক (মাইগ্রেশন ও ইয়ুথ প্ল্যাটফর্ম) শরিফুল হাসান বলছেন, ফেরত আসা ব্যক্তিদের একেকজন ৩০-৩৫ লাখ টাকা খরচ করে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে এখন খালি হাতে ফিরলেন। এই কর্মীরা বৈধভাবে ব্রাজিলে গিয়ে সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশ করেন বলে জানিয়েছেন শরিফুল হাসান।
তিনি বলেন, ‘এভাবে বৈধভাবে অবৈধ হওয়ার পথে ছেড়ে দেয়া ভীষণ দুর্ভাগ্যজনক এবং দায়িত্বহীনতা। যে এজেন্সি তাদের পাঠিয়েছিল এবং যারা এই অনুমোদন প্রক্রিয়ায় ছিল তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত। কয়েক হাজার কর্মী এভাবে ব্রাজিল গিয়েছে।’ নতুন করে ব্রাজিলে কর্মী পাঠানোর অনুমতি দেয়ার আগে সরকারের সতর্ক হতে হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের এক বার্তায় বলা হয়, এই ৩৯ জনের মধ্যে অন্তত ৩৪ জন জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) ছাড়পত্র নিয়ে ব্রাজিল গিয়েছিলেন। এরপর সেখান থেকে মেক্সিকো হয়ে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন ৩৪ বাংলাদেশি। আর বাকি পাঁচজনের মধ্যে দুইজন সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রে যায় আর তিনজন দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন।
এরপর এই ৩৯ জন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের জন্য আবেদন করলে আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের ওই বার্তার তথ্যানুযায়ী, ফেরত আসা এই কর্মীদের মধ্যে ২৬ জনই নোয়াখালীর। এছাড়া কুমিল্লা সিলেট, ফেনী, ও লক্ষ্মীপুরের দুজন করে এবং চট্টগ্রাম, গাজীপুর, ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ এবং নরসিংদীর একজন করে রয়েছেন।
এর আগে চলতি বছরের ৮ জুন একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে ৪২ বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনা হয়। তার আগে গত ৬ মার্চ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত একাধিক ফ্লাইটে আরও অন্তত ৩৪ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। ২০২৪ সালের শুরু থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো বাংলাদেশির সংখ্যা ২২০ ছাড়িয়েছে।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় দফায় ট্রাম্প জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ অভিবাসীদের তাড়াতে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেন। কড়াকড়ির মধ্যে বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের হাতকড়া পরিয়ে ফেরত পাঠাতে শুরু করে দেশটি, যা নিয়ে দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের আইনানুযায়ী বৈধ কাগজপত্র ছাড়া অবস্থানকারী অভিবাসীদের আদালতের রায় বা প্রশাসনিক আদেশে দেশে ফেরত পাঠানো যায়। আশ্রয়ের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হলে অভিবাসন কর্তৃপক্ষ (আইসিই) তাদের প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করে। সম্প্রতি এ প্রক্রিয়া দ্রুততর করার কারণে চার্টার্ড ও সামরিক ফ্লাইটের ব্যবহার বেড়েছে।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিশেষ ফ্ল্যাইটে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া ৩৯ বাংলাদেশি -সংবাদ
শুক্রবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৫
অবৈধভাবে বসবাসের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও ৩৯ জন বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার,(২৮ নভেম্বর ২০২৫) ভোর সাড়ে ৫টায় তারা যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশেষ সামরিক ফ্লাইটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছেছেন। এরপর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ৩৯ জনকে পরিবহন সুবিধাসহ জরুরি সহায়তা দেয় বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক।
এক বার্তায় ব্র্যাক জানিয়েছে, এর আগে চলতি বছরে ১৮৭ বাংলাদেশিকে যুক্তরাষ্ট্র ফেরত পাঠিয়েছে। এই বছরের বিভিন্ন সময়ে ফেরত আসা বাংলাদেশিদের হাতে হাতকড়া, পায়ে শেকল বেঁধে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো হলেও শুক্রবার ফেরত আসা বাংলাদেশিদের ক্ষেত্রে সেটি হয়নি।ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক (মাইগ্রেশন ও ইয়ুথ প্ল্যাটফর্ম) শরিফুল হাসান বলছেন, ফেরত আসা ব্যক্তিদের একেকজন ৩০-৩৫ লাখ টাকা খরচ করে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে এখন খালি হাতে ফিরলেন। এই কর্মীরা বৈধভাবে ব্রাজিলে গিয়ে সেখান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশ করেন বলে জানিয়েছেন শরিফুল হাসান।
তিনি বলেন, ‘এভাবে বৈধভাবে অবৈধ হওয়ার পথে ছেড়ে দেয়া ভীষণ দুর্ভাগ্যজনক এবং দায়িত্বহীনতা। যে এজেন্সি তাদের পাঠিয়েছিল এবং যারা এই অনুমোদন প্রক্রিয়ায় ছিল তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত। কয়েক হাজার কর্মী এভাবে ব্রাজিল গিয়েছে।’ নতুন করে ব্রাজিলে কর্মী পাঠানোর অনুমতি দেয়ার আগে সরকারের সতর্ক হতে হওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের এক বার্তায় বলা হয়, এই ৩৯ জনের মধ্যে অন্তত ৩৪ জন জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) ছাড়পত্র নিয়ে ব্রাজিল গিয়েছিলেন। এরপর সেখান থেকে মেক্সিকো হয়ে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন ৩৪ বাংলাদেশি। আর বাকি পাঁচজনের মধ্যে দুইজন সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রে যায় আর তিনজন দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন।
এরপর এই ৩৯ জন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসের জন্য আবেদন করলে আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের ওই বার্তার তথ্যানুযায়ী, ফেরত আসা এই কর্মীদের মধ্যে ২৬ জনই নোয়াখালীর। এছাড়া কুমিল্লা সিলেট, ফেনী, ও লক্ষ্মীপুরের দুজন করে এবং চট্টগ্রাম, গাজীপুর, ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ এবং নরসিংদীর একজন করে রয়েছেন।
এর আগে চলতি বছরের ৮ জুন একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে ৪২ বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে আনা হয়। তার আগে গত ৬ মার্চ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত একাধিক ফ্লাইটে আরও অন্তত ৩৪ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়েছিল। ২০২৪ সালের শুরু থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো বাংলাদেশির সংখ্যা ২২০ ছাড়িয়েছে।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় দফায় ট্রাম্প জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ অভিবাসীদের তাড়াতে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেন। কড়াকড়ির মধ্যে বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের হাতকড়া পরিয়ে ফেরত পাঠাতে শুরু করে দেশটি, যা নিয়ে দেশে-বিদেশে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের আইনানুযায়ী বৈধ কাগজপত্র ছাড়া অবস্থানকারী অভিবাসীদের আদালতের রায় বা প্রশাসনিক আদেশে দেশে ফেরত পাঠানো যায়। আশ্রয়ের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হলে অভিবাসন কর্তৃপক্ষ (আইসিই) তাদের প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা করে। সম্প্রতি এ প্রক্রিয়া দ্রুততর করার কারণে চার্টার্ড ও সামরিক ফ্লাইটের ব্যবহার বেড়েছে।