ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। যাচাই-বাছাই শেষে তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, ক্ষমতার অপব্যবহার ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে এ অনুসন্ধান চালানো হবে। এর মাধ্যমে দুদক চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করা কোনো ব্যক্তি প্রথমবারের মতো নিজ সংস্থার অনুসন্ধানের মুখোমুখি হচ্ছেন।
দুদকের মহাপরিচালক (মানিলন্ডারিং) মো. মোকাম্মেল হক সংবাদমাধ্যমকে জানান, সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
স্বাস্থ্য খাতে ‘সিন্ডিকেট করে অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারে’ জড়িত থাকার অভিযোগে গত ১১ সেপ্টেম্বর এ খাতের ঠিকাদার মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে দুদক বলছে, স্বাস্থ্য খাতের বিস্তৃত অনিয়ম, পাচারকৃত অর্থ এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সম্পৃক্ততা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই ইকবাল মাহমুদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
দুদক সূত্রে জানা যায়, ‘আলোচিত স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতিবাজ ঠিকাদার মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠু এবং ইকবাল মাহমুদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়িক যোগসাজশের অভিযোগ রয়েছে। ইকবাল মাহমুদের ভাই সাদিক মাহমুদ বকুল ছিলেন ঠিকাদার মিঠুর ব্যবসায়িক সহযোগী। এই সম্পর্কের সুযোগে তারা স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। কিন্তু ইকবাল মাহমুদের প্রভাবের কারণে মিঠু ও বকুল দীর্ঘদিন ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন।’
সূত্রে আরও জানা যায়, ‘ঠিকাদার মিঠুর কাছ থেকে ঢাকার গুলশানে দুটি ফ্ল্যাট নিয়েছিলেন ইকবাল মাহমুদÑ এমন অভিযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে অর্থপাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের বিষয়েও অনুসন্ধান চালানো হবে। এছাড়া ইকবাল মাহমুদের ভাই সাদিক মাহমুদ বকুলের সম্পদের উৎস, বিদেশে সম্ভাব্য লেনদেন এবং যৌথ ব্যবসার আর্থিক তথ্যও পর্যালোচনা করা হবে।’
বিসিএস ১৯৮১ ব্যাচের কর্মকর্তা ইকবাল মাহমুদ এক সময় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ছিলেন। ২০০৮ সালের জুনে পদোন্নতি পেয়ে সচিব হন তিনি। পরের বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তাকে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের (বর্তমান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়) সচিব করা হয়।
এরপর ২০১২ সালে সরকার ‘সিনিয়র সচিব’ নামে নতুন পদ সৃষ্টি করলে আরও সাতজনের সঙ্গে ইকবাল মাহমুদও ওই পদ পান। তখন তিনি ছিলেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের দায়িত্বে। একই বছরের নভেম্বরে তাকে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) বিকল্প নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব দেয়া হয়। সেই দায়িত্ব শেষে ২০১৪ সালের ২৯ নভেম্বর ইকবাল মাহমুদ সরকারি চাকরি থেকে অবসরে যান।
অবসরে যাওয়ার পর ২০১৫ সালের আগস্টে ইকবাল মাহমুদকে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। কিন্তু এক মাসের মাথায় ওই পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয় তাকে। এরপর ২০১৬ সালের মার্চে বদিউজ্জামানের স্থলাভিষিক্ত হয়ে দুদকের চেয়ারম্যান পদে বসেন ইকবাল মাহমুদ।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
সোমবার, ০১ ডিসেম্বর ২০২৫
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। যাচাই-বাছাই শেষে তার বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ, ক্ষমতার অপব্যবহার ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে এ অনুসন্ধান চালানো হবে। এর মাধ্যমে দুদক চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করা কোনো ব্যক্তি প্রথমবারের মতো নিজ সংস্থার অনুসন্ধানের মুখোমুখি হচ্ছেন।
দুদকের মহাপরিচালক (মানিলন্ডারিং) মো. মোকাম্মেল হক সংবাদমাধ্যমকে জানান, সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
স্বাস্থ্য খাতে ‘সিন্ডিকেট করে অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারে’ জড়িত থাকার অভিযোগে গত ১১ সেপ্টেম্বর এ খাতের ঠিকাদার মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে দুদক বলছে, স্বাস্থ্য খাতের বিস্তৃত অনিয়ম, পাচারকৃত অর্থ এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সম্পৃক্ততা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই ইকবাল মাহমুদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
দুদক সূত্রে জানা যায়, ‘আলোচিত স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতিবাজ ঠিকাদার মোতাজ্জেরুল ইসলাম মিঠু এবং ইকবাল মাহমুদের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়িক যোগসাজশের অভিযোগ রয়েছে। ইকবাল মাহমুদের ভাই সাদিক মাহমুদ বকুল ছিলেন ঠিকাদার মিঠুর ব্যবসায়িক সহযোগী। এই সম্পর্কের সুযোগে তারা স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। কিন্তু ইকবাল মাহমুদের প্রভাবের কারণে মিঠু ও বকুল দীর্ঘদিন ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন।’
সূত্রে আরও জানা যায়, ‘ঠিকাদার মিঠুর কাছ থেকে ঢাকার গুলশানে দুটি ফ্ল্যাট নিয়েছিলেন ইকবাল মাহমুদÑ এমন অভিযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে অর্থপাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের বিষয়েও অনুসন্ধান চালানো হবে। এছাড়া ইকবাল মাহমুদের ভাই সাদিক মাহমুদ বকুলের সম্পদের উৎস, বিদেশে সম্ভাব্য লেনদেন এবং যৌথ ব্যবসার আর্থিক তথ্যও পর্যালোচনা করা হবে।’
বিসিএস ১৯৮১ ব্যাচের কর্মকর্তা ইকবাল মাহমুদ এক সময় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ছিলেন। ২০০৮ সালের জুনে পদোন্নতি পেয়ে সচিব হন তিনি। পরের বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তাকে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের (বর্তমান জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়) সচিব করা হয়।
এরপর ২০১২ সালে সরকার ‘সিনিয়র সচিব’ নামে নতুন পদ সৃষ্টি করলে আরও সাতজনের সঙ্গে ইকবাল মাহমুদও ওই পদ পান। তখন তিনি ছিলেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের দায়িত্বে। একই বছরের নভেম্বরে তাকে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) বিকল্প নির্বাহী পরিচালকের দায়িত্ব দেয়া হয়। সেই দায়িত্ব শেষে ২০১৪ সালের ২৯ নভেম্বর ইকবাল মাহমুদ সরকারি চাকরি থেকে অবসরে যান।
অবসরে যাওয়ার পর ২০১৫ সালের আগস্টে ইকবাল মাহমুদকে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। কিন্তু এক মাসের মাথায় ওই পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয় তাকে। এরপর ২০১৬ সালের মার্চে বদিউজ্জামানের স্থলাভিষিক্ত হয়ে দুদকের চেয়ারম্যান পদে বসেন ইকবাল মাহমুদ।