শুক্রবার লন্ডন থেকে বিমানবন্দরে নেমেই শাশুড়িকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান ডা. জোবাইদা রহমান -সংবাদ
সবকিছু ঠিক থাকলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রোববার লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রা করবেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গত ১৩ দিন যাবৎ ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি তিনি, চিকিৎসা চলছে। দলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে অবস্থা ‘সংকটাপন্ন’।
খালেদা জিয়াকে দেখতে শুক্রবার,(০৫ ডিসেম্বর ২০২৫) দুপুরে এভারকেয়ার হাসপাতালে আসেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমান। সেখানে ডাক্তারদের সঙ্গে তার (খালেদা) সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে আলোচনা করেন। চিকিৎসার জন্য শাশুড়িকে লন্ডনে নিতে আগের দিন (গতকাল বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় লন্ডন থেকে তিনি দেশের পথে রওনা হন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে নিয়ে যেতে কাতার সরকারের ব্যবস্থাপনায় জার্মানির একটি প্রতিষ্ঠানের এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে ওই এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় পৌঁছাতে পারে বলে কাতার দূতাবাস থেকে বলা হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘ম্যাডামের শরীর যদি যাত্রার উপযুক্ত থাকে এবং মেডিকেল বোর্ড যদি সিদ্ধান্ত দেয়, তাহলে ইনশাল্লাহ ৭ তারিখ (আগামীকাল) ফ্লাই করবেন।’
*‘কারিগরি জটিলতা’*
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড গতকাল বৃহস্পতিবার সিদ্ধান্ত নেয়, উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে যাওয়া হবে। তখন জানানো হয়, গত জানুয়ারির মতো এবারও কাতারের আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে লন্ডনে পাঠানো হবে। কথা ছিল এয়ার অ্যাম্বুলেন্স এলে শুক্রবার সকালেই তিনি রওনা হবেন।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পরে জানান, ‘কারিগরি জটিলতায়’ শুক্রবার (০৫ ডিসেম্বর ২০২৫) অ্যাম্বুলেন্স আসছে না। সব ঠিক থাকলে এবং চিকিৎসকরা অনুমতি দিলে রোববার (আগামীকাল) খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেয়া হতে পারে।
৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন থেকে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসের পাশাপাশি কিডনি, লিভার, ফুসফুস, হৃদযন্ত্র, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। ফুসফুসে সংক্রমণের কারণে গত ২৩ নভেম্বর থেকে তিনি ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
*কারাবন্দী*
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে বিএনপি চেয়ারপারসনকে কারাগারে পাঠায় আদালত। কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে কারা তত্ত্বাবধানে তখনকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল হাসপাতালে রাখা হয়।
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ অনেকটা আকস্মিকভাবেই আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে খালেদা জিয়াকে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয়। শর্তানুযায়ী তাকে থাকতে হয় গুলশানের বাসায়, চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতিও তার ছিল না। এরমধ্যে কয়েকবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। কয়েক দফা বড় ধরনের অস্ত্রোপচারও হয়।
শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়। ওই বছর ৭ আগস্ট রাষ্ট্রপতির আদেশে মুক্তি পান খালেদা জিয়া। পরে উচ্চ আদালত তাকে দুই মামলা থেকেও খালাস দেয়।
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করেই গত ৭ জানুয়ারি চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। সেখানে লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি রেখে কিছুদিন তার চিকিৎসা চলে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে কিছুদিন লন্ডনে তার ছেলে তারেক রহমানের বাসায় থেকে তিনি চিকিৎসা নেন। অনেকটা সুস্থ হয়ে গত ৬ মে একই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তিনি দেশে ফিরে আসেন।খালেদা জিয়াকে লন্ডনের নেয়ার সময় তার সফরসঙ্গী যারা হবেন তাদের তালিকা করেছে বিএনপি। তাতে আছেন- খালেদা জিয়ার দুই পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান ও সৈয়দা শামিলা রহমান, চিকিৎসকদের মধ্যে- আবু জাফর মো. জাহিদ হোসেন, ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ সিদ্দিকি, মো. শাহাবুদ্দিন তালুকদার, নূরউদ্দিন আহমদ, মো. জাফর ইকবাল, মোহাম্মদ আল মামুন, রিচার্ড জন বিল ও জিয়াউল হক, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোহাম্মদ এনামুল হক চৌধুরী, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সহকারী মো. আবদুল হাই মল্লিক, সহকারী ব্যক্তিগত সচিব মো. মাসুদুর রহমান, খালেদা জিয়ার গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম ও গৃহকর্মী রূপা শিকদার।
এছাড়া স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) কর্মকর্তা হিসেবে তালিকায় আছেন হাসান শাহরিয়ার ইকবাল ও সৈয়দ সামিন মাহফুজ।
*কলেবর ‘ছোট হবে’*
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, ঢাকা থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে খালেদা জিয়ার সঙ্গে লন্ডনে যাওয়া লোকজনের ‘কলেবর ছোট হবে’। প্রাথমিকভাবে বিএনপি (১৮ জন) যে তালিকা করেছে, সেটা থেকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ‘কয়েকজন’ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে খালেদা জিয়ার সঙ্গে লন্ডনে যাবেন। তালিকায় থাকা বাকিরা যাবেন ‘বাণিজ্যিক ফ্লাইটে’।
খালেদা জিয়ার আশু আরোগ্য কামনায় শুক্রবার, বাদ জুমা নয়া পল্টন জামে মসজিদে বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে বিএনপি। সেখান থেকে বেরিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সারাদেশে জুমার নামাজের পরে বাংলাদেশের মানুষ দলমত নির্বিশেষে এই মহান নেত্রীর আরোগ্য লাভের জন্য, তিনি যেন সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসেন এবং দেশের সংকট তার নেতৃত্বে আমরা অতিক্রম করতে পারি সেই দোয়া বাংলাদেশের মানুষ আল্লাহ তালার কাছে চেয়েছেন।’
দেশবাসীকে খালেদা জিয়ার জন্য ‘কায়মনো বাক্যে’ দোয়া করতে অনুরোধ করেন মির্জা ফখরুল।
*তারেক, ভিভিআইপি*
বিএনপির ঘোষণা অনুযায়ী, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারেক রহমানেরই তার দলকে নেতৃত্ব দেয়ার কথা। দলটির নেতারা অবশ্য আগে বলেছিলেন যে গত নভেম্বরেই দেশে ফিরবেন তারেক রহমান।
হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যায় থাকা খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা যখন সংকটাপন্ন, তখন তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়টি ব্যাপক আলোচনায় আসে।
এই প্রেক্ষাপটে মায়ের পাশে থাকার আকুল আকাক্সক্ষা ব্যক্ত করে গত ২৯ নভেম্বর নিজের ফেইসবুক পোস্টে তারেক রহমান লেখেন, দেশে ফেরার বিষয়ে তার ‘একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ অবারিত ও একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়’। যদিও অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে তখন বলা হয়, তারেক রহমান দেশে ফিরতে চাইলে তাকে একদিনেই ট্রাভেল পাস দেয়া হবে।
‘সংকটাপন্ন’ অবস্থায় চিকিৎসাধীন থাকা খালেদা জিয়াকে গত মঙ্গলবার ভিভিআইপি (অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। প্রজ্ঞাপন জারির পর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মতো খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ মোতায়েন করা হয়।
এদিকে খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার খবর পেয়ে সকাল থেকেই এভারকেয়ার হাসপাতালের বাইরে গণমাধ্যমকর্মী ছাড়াও উৎসুক জনতার ভিড় ছিল। হাসপাতালের বাইরে বিজিবি ও পুলিশ এবং হাসপাতালের ভেতরে এসএসএফ সদস্যরা মোতায়েন আছেন।
ইপেপার
জাতীয়
সারাদেশ
আন্তর্জাতিক
নগর-মহানগর
খেলা
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
শিক্ষা
অর্থ-বাণিজ্য
সংস্কৃতি
ক্যাম্পাস
মিডিয়া
অপরাধ ও দুর্নীতি
রাজনীতি
শোক ও স্মরন
প্রবাস
নারীর প্রতি সহিংসতা
বিনোদন
সম্পাদকীয়
উপ-সম্পাদকীয়
মুক্ত আলোচনা
চিঠিপত্র
পাঠকের চিঠি
শুক্রবার লন্ডন থেকে বিমানবন্দরে নেমেই শাশুড়িকে দেখতে এভারকেয়ার হাসপাতালে যান ডা. জোবাইদা রহমান -সংবাদ
শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫
সবকিছু ঠিক থাকলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রোববার লন্ডনের উদ্দেশে যাত্রা করবেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গত ১৩ দিন যাবৎ ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি তিনি, চিকিৎসা চলছে। দলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে অবস্থা ‘সংকটাপন্ন’।
খালেদা জিয়াকে দেখতে শুক্রবার,(০৫ ডিসেম্বর ২০২৫) দুপুরে এভারকেয়ার হাসপাতালে আসেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমান। সেখানে ডাক্তারদের সঙ্গে তার (খালেদা) সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে আলোচনা করেন। চিকিৎসার জন্য শাশুড়িকে লন্ডনে নিতে আগের দিন (গতকাল বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় লন্ডন থেকে তিনি দেশের পথে রওনা হন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে নিয়ে যেতে কাতার সরকারের ব্যবস্থাপনায় জার্মানির একটি প্রতিষ্ঠানের এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে ওই এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় পৌঁছাতে পারে বলে কাতার দূতাবাস থেকে বলা হয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘ম্যাডামের শরীর যদি যাত্রার উপযুক্ত থাকে এবং মেডিকেল বোর্ড যদি সিদ্ধান্ত দেয়, তাহলে ইনশাল্লাহ ৭ তারিখ (আগামীকাল) ফ্লাই করবেন।’
*‘কারিগরি জটিলতা’*
খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ড গতকাল বৃহস্পতিবার সিদ্ধান্ত নেয়, উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে যাওয়া হবে। তখন জানানো হয়, গত জানুয়ারির মতো এবারও কাতারের আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে লন্ডনে পাঠানো হবে। কথা ছিল এয়ার অ্যাম্বুলেন্স এলে শুক্রবার সকালেই তিনি রওনা হবেন।
কিন্তু মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পরে জানান, ‘কারিগরি জটিলতায়’ শুক্রবার (০৫ ডিসেম্বর ২০২৫) অ্যাম্বুলেন্স আসছে না। সব ঠিক থাকলে এবং চিকিৎসকরা অনুমতি দিলে রোববার (আগামীকাল) খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নেয়া হতে পারে।
৭৯ বছর বয়সী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন থেকে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসের পাশাপাশি কিডনি, লিভার, ফুসফুস, হৃদযন্ত্র, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। ফুসফুসে সংক্রমণের কারণে গত ২৩ নভেম্বর থেকে তিনি ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
*কারাবন্দী*
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে বিএনপি চেয়ারপারসনকে কারাগারে পাঠায় আদালত। কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে কারা তত্ত্বাবধানে তখনকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল হাসপাতালে রাখা হয়।
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ অনেকটা আকস্মিকভাবেই আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে খালেদা জিয়াকে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দেয়। শর্তানুযায়ী তাকে থাকতে হয় গুলশানের বাসায়, চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতিও তার ছিল না। এরমধ্যে কয়েকবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। কয়েক দফা বড় ধরনের অস্ত্রোপচারও হয়।
শিক্ষার্থী-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পরিস্থিতি পাল্টে যায়। ওই বছর ৭ আগস্ট রাষ্ট্রপতির আদেশে মুক্তি পান খালেদা জিয়া। পরে উচ্চ আদালত তাকে দুই মামলা থেকেও খালাস দেয়।
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করেই গত ৭ জানুয়ারি চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। সেখানে লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি রেখে কিছুদিন তার চিকিৎসা চলে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে কিছুদিন লন্ডনে তার ছেলে তারেক রহমানের বাসায় থেকে তিনি চিকিৎসা নেন। অনেকটা সুস্থ হয়ে গত ৬ মে একই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তিনি দেশে ফিরে আসেন।খালেদা জিয়াকে লন্ডনের নেয়ার সময় তার সফরসঙ্গী যারা হবেন তাদের তালিকা করেছে বিএনপি। তাতে আছেন- খালেদা জিয়ার দুই পুত্রবধূ জুবাইদা রহমান ও সৈয়দা শামিলা রহমান, চিকিৎসকদের মধ্যে- আবু জাফর মো. জাহিদ হোসেন, ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ সিদ্দিকি, মো. শাহাবুদ্দিন তালুকদার, নূরউদ্দিন আহমদ, মো. জাফর ইকবাল, মোহাম্মদ আল মামুন, রিচার্ড জন বিল ও জিয়াউল হক, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোহাম্মদ এনামুল হক চৌধুরী, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সহকারী মো. আবদুল হাই মল্লিক, সহকারী ব্যক্তিগত সচিব মো. মাসুদুর রহমান, খালেদা জিয়ার গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম ও গৃহকর্মী রূপা শিকদার।
এছাড়া স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) কর্মকর্তা হিসেবে তালিকায় আছেন হাসান শাহরিয়ার ইকবাল ও সৈয়দ সামিন মাহফুজ।
*কলেবর ‘ছোট হবে’*
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, ঢাকা থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে খালেদা জিয়ার সঙ্গে লন্ডনে যাওয়া লোকজনের ‘কলেবর ছোট হবে’। প্রাথমিকভাবে বিএনপি (১৮ জন) যে তালিকা করেছে, সেটা থেকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ‘কয়েকজন’ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে খালেদা জিয়ার সঙ্গে লন্ডনে যাবেন। তালিকায় থাকা বাকিরা যাবেন ‘বাণিজ্যিক ফ্লাইটে’।
খালেদা জিয়ার আশু আরোগ্য কামনায় শুক্রবার, বাদ জুমা নয়া পল্টন জামে মসজিদে বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে বিএনপি। সেখান থেকে বেরিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সারাদেশে জুমার নামাজের পরে বাংলাদেশের মানুষ দলমত নির্বিশেষে এই মহান নেত্রীর আরোগ্য লাভের জন্য, তিনি যেন সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসেন এবং দেশের সংকট তার নেতৃত্বে আমরা অতিক্রম করতে পারি সেই দোয়া বাংলাদেশের মানুষ আল্লাহ তালার কাছে চেয়েছেন।’
দেশবাসীকে খালেদা জিয়ার জন্য ‘কায়মনো বাক্যে’ দোয়া করতে অনুরোধ করেন মির্জা ফখরুল।
*তারেক, ভিভিআইপি*
বিএনপির ঘোষণা অনুযায়ী, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারেক রহমানেরই তার দলকে নেতৃত্ব দেয়ার কথা। দলটির নেতারা অবশ্য আগে বলেছিলেন যে গত নভেম্বরেই দেশে ফিরবেন তারেক রহমান।
হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যায় থাকা খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা যখন সংকটাপন্ন, তখন তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়টি ব্যাপক আলোচনায় আসে।
এই প্রেক্ষাপটে মায়ের পাশে থাকার আকুল আকাক্সক্ষা ব্যক্ত করে গত ২৯ নভেম্বর নিজের ফেইসবুক পোস্টে তারেক রহমান লেখেন, দেশে ফেরার বিষয়ে তার ‘একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ অবারিত ও একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়’। যদিও অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে তখন বলা হয়, তারেক রহমান দেশে ফিরতে চাইলে তাকে একদিনেই ট্রাভেল পাস দেয়া হবে।
‘সংকটাপন্ন’ অবস্থায় চিকিৎসাধীন থাকা খালেদা জিয়াকে গত মঙ্গলবার ভিভিআইপি (অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি) ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। প্রজ্ঞাপন জারির পর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মতো খালেদা জিয়ার নিরাপত্তায় এসএসএফ মোতায়েন করা হয়।
এদিকে খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার খবর পেয়ে সকাল থেকেই এভারকেয়ার হাসপাতালের বাইরে গণমাধ্যমকর্মী ছাড়াও উৎসুক জনতার ভিড় ছিল। হাসপাতালের বাইরে বিজিবি ও পুলিশ এবং হাসপাতালের ভেতরে এসএসএফ সদস্যরা মোতায়েন আছেন।