মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এবং বাংলাদেশের প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যের প্রয়াণ
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য, খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ এবং রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী আনিসুর রহমান আর নেই। রোববার দুপুর ১টা ১০ মিনিটে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর।
আনিসুর রহমান দীর্ঘদিন শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন এবং শয্যাশায়ী ছিলেন। তার ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুল জলিল জানান, শনিবার থেকে তিনি খাবার গ্রহণ বন্ধ করে দেন এবং রাতে শ্বাসকষ্ট শুরু হলে ভোরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রোববার দুপুরে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহ বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা বিদেশ থেকে এসে তার দাফনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
জীবনী ও পেশাগত অবদান
১৯৩৩ সালে ময়মনসিংহে জন্ম নেওয়া আনিসুর রহমান অর্থনীতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেন। তিনি শিক্ষকতা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইসলামাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে। ষাটের দশকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় দফা ঘোষণাপত্র তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং মুক্তিযুদ্ধে সংগঠক হিসেবে যুক্ত ছিলেন।
স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে গঠিত প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসেবে তিনি অর্থনীতিবিদ নুরুল ইসলামের সঙ্গে কাজ করেন।
সাংস্কৃতিক জীবন ও সাহিত্যকর্ম
অর্থনীতিবিদ হিসেবে খ্যাতি অর্জনের পাশাপাশি আনিসুর রহমান ছিলেন রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী ও গবেষক। তিনি ছায়ানটের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং রবীন্দ্রসংগীতের প্রচার ও গবেষণায় অবদান রেখেছেন।
তার উল্লেখযোগ্য বইগুলোর মধ্যে রয়েছে:
উন্নয়ন জিজ্ঞাসা
অপহৃত বাংলাদেশ
অসীমের স্পন্দ: রবীন্দ্রসংগীত বোধ ও সাধনা
যে আগুন জ্বলেছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার স্বতঃস্ফূর্ত প্রকাশ
মাই স্টোরি অব ১৯৭১
পিপলস সেলফ ডেভেলপমেন্ট।
দুই খণ্ডে প্রকাশিত তার আত্মজীবনী ‘পথে যা পেয়েছি’ বইটি পাঠকদের মধ্যে বিশেষভাবে সমাদৃত।
স্মরণ ও শ্রদ্ধাঞ্জলি
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, “উনার মতো চিন্তাশীল অর্থনীতিবিদকে হারানো আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষ তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাবে।”
কোভিডের সময় একবার স্ট্রোক করায় তার শারীরিক অবস্থা ক্রমশ অবনতি হয়। তার প্রকাশক সৈয়দ জাকির হোসাইন বলেন, “তিনি শয্যাশায়ী ছিলেন এবং শেষ কয়েক বছর অনেককে চিনতে পারতেন না। তবে তার চিন্তাভাবনা এবং সাহিত্যিক অবদান আমাদের মধ্যে বেঁচে থাকবে।”
বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সংস্কৃতিতে অনন্য অবদান রাখা আনিসুর রহমানের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার প্রজ্ঞা, সংগীত এবং লেখনী প্রজন্মের পর প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।
মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এবং বাংলাদেশের প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যের প্রয়াণ
রোববার, ০৫ জানুয়ারী ২০২৫
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য, খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ এবং রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী আনিসুর রহমান আর নেই। রোববার দুপুর ১টা ১০ মিনিটে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর।
আনিসুর রহমান দীর্ঘদিন শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন এবং শয্যাশায়ী ছিলেন। তার ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুল জলিল জানান, শনিবার থেকে তিনি খাবার গ্রহণ বন্ধ করে দেন এবং রাতে শ্বাসকষ্ট শুরু হলে ভোরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রোববার দুপুরে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মরদেহ বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে। পরিবারের সদস্যরা বিদেশ থেকে এসে তার দাফনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
জীবনী ও পেশাগত অবদান
১৯৩৩ সালে ময়মনসিংহে জন্ম নেওয়া আনিসুর রহমান অর্থনীতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেন। তিনি শিক্ষকতা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইসলামাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে। ষাটের দশকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছয় দফা ঘোষণাপত্র তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং মুক্তিযুদ্ধে সংগঠক হিসেবে যুক্ত ছিলেন।
স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে গঠিত প্রথম পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য হিসেবে তিনি অর্থনীতিবিদ নুরুল ইসলামের সঙ্গে কাজ করেন।
সাংস্কৃতিক জীবন ও সাহিত্যকর্ম
অর্থনীতিবিদ হিসেবে খ্যাতি অর্জনের পাশাপাশি আনিসুর রহমান ছিলেন রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী ও গবেষক। তিনি ছায়ানটের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং রবীন্দ্রসংগীতের প্রচার ও গবেষণায় অবদান রেখেছেন।
তার উল্লেখযোগ্য বইগুলোর মধ্যে রয়েছে:
উন্নয়ন জিজ্ঞাসা
অপহৃত বাংলাদেশ
অসীমের স্পন্দ: রবীন্দ্রসংগীত বোধ ও সাধনা
যে আগুন জ্বলেছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনার স্বতঃস্ফূর্ত প্রকাশ
মাই স্টোরি অব ১৯৭১
পিপলস সেলফ ডেভেলপমেন্ট।
দুই খণ্ডে প্রকাশিত তার আত্মজীবনী ‘পথে যা পেয়েছি’ বইটি পাঠকদের মধ্যে বিশেষভাবে সমাদৃত।
স্মরণ ও শ্রদ্ধাঞ্জলি
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, “উনার মতো চিন্তাশীল অর্থনীতিবিদকে হারানো আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষ তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাবে।”
কোভিডের সময় একবার স্ট্রোক করায় তার শারীরিক অবস্থা ক্রমশ অবনতি হয়। তার প্রকাশক সৈয়দ জাকির হোসাইন বলেন, “তিনি শয্যাশায়ী ছিলেন এবং শেষ কয়েক বছর অনেককে চিনতে পারতেন না। তবে তার চিন্তাভাবনা এবং সাহিত্যিক অবদান আমাদের মধ্যে বেঁচে থাকবে।”
বাংলাদেশের অর্থনীতি ও সংস্কৃতিতে অনন্য অবদান রাখা আনিসুর রহমানের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার প্রজ্ঞা, সংগীত এবং লেখনী প্রজন্মের পর প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে।