জননন্দিত কিশোর থ্রিলার ‘তিন গোয়েন্দা’ সিরিজের লেখক রকিব হাসান আর নেই। গতকাল দুপুরে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। পারিবারিক কবরস্থানেই চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন রকিব হাসান।
বয়সে তিন গোয়েন্দা পড়ে বেড়ে ওঠা পাঠকরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানায় শোক ও শ্রদ্ধা
বাংলাদেশের কিশোর সাহিত্যে রোমাঞ্চ ও রহস্যের জগৎ তৈরি করা জনপ্রিয় এই লেখকের মৃত্যুতে দেশের সাহিত্যপ্রেমী পাঠকদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন রকিব হাসান। প্রতি সপ্তাহে একাধিকবার তাকে ডায়ালাইসিস করাতে হতো। রুটিন অনুযায়ী ডায়ালাইসিস এর জন্যই হাসপাতালে যান তিনি। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সমন্বয়ক ডা. মুহিব উল্লাহ খন্দকার জানান, ‘দুপুরের পর ডায়ালাইসিস করাতে এসেছিলেন রকিব হাসান। তবে ডায়ালাইসিস শুরু হওয়ার আগেই তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। দ্রুত চিকিৎসা দেয়া হলেও তাকে বাঁচানো যায়নি।’
রকিব হাসানের ছেলে রাহিদ হাসান বলেন, ‘তিন মাস ধরেই বাবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। দুটি কিডনিতেই সমস্যা ছিল। গতকাল দুপুরে ডায়ালাইসিসের পরপরই তিনি মারা যান।’
১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন তিন গোয়েন্দা সিরিজের অমর ¯্রষ্টা রকিব হাসান। বাবার চাকরির সুবাদে শৈশব কেটেছে ফেনীতে। আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে বিএসসি পাস করে তিনি বিভিন্ন চাকরিতে চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত লেখালেখিকেই পেশা হিসেবে নেন।
সেবা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত ‘রহস্যপত্রিকা’র সহকারী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৭৭ সালে রকিব হাসানের প্রথম বই প্রকাশিত হয় ছদ্মনামে। নিজের নামে প্রথম প্রকাশিত বই ছিল অনুবাদগ্রন্থ ‘ব্রাম স্টোকারের ড্রাকুলা’। এরপর রবার্ট আর্থারের ইংরেজি সিরিজ The Three Investigators থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি সৃষ্টি করেন ‘তিন গোয়েন্দা’-বাংলাদেশের পাঠকদের সবচেয়ে জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ।
সেবা প্রকাশনী ১৯৮৫ সালে তিন গোয়েন্দা সিরিজ প্রকাশ শুরু করে। এরপর থেকে সিরিজটির ৪৫০টির বেশি বই প্রকাশিত হয়েছে, যার মধ্যে দেড়শ’র বেশি লিখেছেন রকিব হাসান নিজে। কিশোর, মুসা ও রবিন- তার সৃষ্ট এই তিন চরিত্র হয়ে ওঠে কয়েক প্রজন্মের কিশোর-কিশোরীর প্রিয় নায়ক।
সেবা প্রকাশনীর উপদেষ্টা মাসুমা মায়মুর বলেন, ‘তিনি বহু বছর ধরে অসুস্থ ছিলেন। দুর্বল হয়ে পড়লে বারবার আইসিইউতে নিতে হতো। তার মৃত্যু আমাদের জন্য এক যুগের অবসান।’
গোয়েন্দা গল্পের বাইরেও রকিব হাসান লিখেছেন ‘কিশোর গোয়েন্দা’, ‘খুদে গোয়েন্দা’, ‘রোমহর্ষক’ ও ‘গোয়েন্দা রাজু’ সিরিজ। অনুবাদ করেছেন এরিক ফন দানিকেন, ফার্লে মোয়াট, জেরাল্ড ডুরেল, জুল ভার্নসহ বহু বিশ্বখ্যাত লেখকের বই। সবমিলিয়ে তার রচিত ও অনুদিত বইয়ের সংখ্যা পাঁচ শতাধিক।
কিশোর বয়সে তিন গোয়েন্দা পড়ে বেড়ে ওঠা পাঠকরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক প্রকাশ করে লিখছেন, ‘আমাদের শৈশব ও কৈশোর জানে, রকিব হাসানের কাছে আমরা কতটা ঋণী।’
রকিব হাসানের মরদেহ গতকাল বিকেলেই রাজধানীর বাসাবোতে নিজ বাসায় নেয়া হয়। সেখানে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।
বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫
জননন্দিত কিশোর থ্রিলার ‘তিন গোয়েন্দা’ সিরিজের লেখক রকিব হাসান আর নেই। গতকাল দুপুরে রাজধানীর গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। পারিবারিক কবরস্থানেই চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন রকিব হাসান।
বয়সে তিন গোয়েন্দা পড়ে বেড়ে ওঠা পাঠকরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানায় শোক ও শ্রদ্ধা
বাংলাদেশের কিশোর সাহিত্যে রোমাঞ্চ ও রহস্যের জগৎ তৈরি করা জনপ্রিয় এই লেখকের মৃত্যুতে দেশের সাহিত্যপ্রেমী পাঠকদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
দীর্ঘদিন ধরে কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন রকিব হাসান। প্রতি সপ্তাহে একাধিকবার তাকে ডায়ালাইসিস করাতে হতো। রুটিন অনুযায়ী ডায়ালাইসিস এর জন্যই হাসপাতালে যান তিনি। গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সমন্বয়ক ডা. মুহিব উল্লাহ খন্দকার জানান, ‘দুপুরের পর ডায়ালাইসিস করাতে এসেছিলেন রকিব হাসান। তবে ডায়ালাইসিস শুরু হওয়ার আগেই তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। দ্রুত চিকিৎসা দেয়া হলেও তাকে বাঁচানো যায়নি।’
রকিব হাসানের ছেলে রাহিদ হাসান বলেন, ‘তিন মাস ধরেই বাবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। দুটি কিডনিতেই সমস্যা ছিল। গতকাল দুপুরে ডায়ালাইসিসের পরপরই তিনি মারা যান।’
১৯৫০ সালের ১২ ডিসেম্বর কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন তিন গোয়েন্দা সিরিজের অমর ¯্রষ্টা রকিব হাসান। বাবার চাকরির সুবাদে শৈশব কেটেছে ফেনীতে। আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে বিএসসি পাস করে তিনি বিভিন্ন চাকরিতে চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত লেখালেখিকেই পেশা হিসেবে নেন।
সেবা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত ‘রহস্যপত্রিকা’র সহকারী সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ১৯৭৭ সালে রকিব হাসানের প্রথম বই প্রকাশিত হয় ছদ্মনামে। নিজের নামে প্রথম প্রকাশিত বই ছিল অনুবাদগ্রন্থ ‘ব্রাম স্টোকারের ড্রাকুলা’। এরপর রবার্ট আর্থারের ইংরেজি সিরিজ The Three Investigators থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তিনি সৃষ্টি করেন ‘তিন গোয়েন্দা’-বাংলাদেশের পাঠকদের সবচেয়ে জনপ্রিয় কিশোর গোয়েন্দা সিরিজ।
সেবা প্রকাশনী ১৯৮৫ সালে তিন গোয়েন্দা সিরিজ প্রকাশ শুরু করে। এরপর থেকে সিরিজটির ৪৫০টির বেশি বই প্রকাশিত হয়েছে, যার মধ্যে দেড়শ’র বেশি লিখেছেন রকিব হাসান নিজে। কিশোর, মুসা ও রবিন- তার সৃষ্ট এই তিন চরিত্র হয়ে ওঠে কয়েক প্রজন্মের কিশোর-কিশোরীর প্রিয় নায়ক।
সেবা প্রকাশনীর উপদেষ্টা মাসুমা মায়মুর বলেন, ‘তিনি বহু বছর ধরে অসুস্থ ছিলেন। দুর্বল হয়ে পড়লে বারবার আইসিইউতে নিতে হতো। তার মৃত্যু আমাদের জন্য এক যুগের অবসান।’
গোয়েন্দা গল্পের বাইরেও রকিব হাসান লিখেছেন ‘কিশোর গোয়েন্দা’, ‘খুদে গোয়েন্দা’, ‘রোমহর্ষক’ ও ‘গোয়েন্দা রাজু’ সিরিজ। অনুবাদ করেছেন এরিক ফন দানিকেন, ফার্লে মোয়াট, জেরাল্ড ডুরেল, জুল ভার্নসহ বহু বিশ্বখ্যাত লেখকের বই। সবমিলিয়ে তার রচিত ও অনুদিত বইয়ের সংখ্যা পাঁচ শতাধিক।
কিশোর বয়সে তিন গোয়েন্দা পড়ে বেড়ে ওঠা পাঠকরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শোক প্রকাশ করে লিখছেন, ‘আমাদের শৈশব ও কৈশোর জানে, রকিব হাসানের কাছে আমরা কতটা ঋণী।’
রকিব হাসানের মরদেহ গতকাল বিকেলেই রাজধানীর বাসাবোতে নিজ বাসায় নেয়া হয়। সেখানে জানাজা শেষে স্থানীয় কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে।