alt

পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচি

যানজট, গণপরিবহন সংকট : দু’দিন ধরে ভোগান্তি রাজধানীবাসীর

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বুধবার, ১৯ জুলাই ২০২৩

বিএনপি ও আ’লীগের পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচিতে দু’দিন ধরে রাজধানীবাসী চরম ভোগান্তিতে। যানজট-যানবাহন সংকটে বাসের অপেক্ষায় উপচেপড়া ভিড়। বুধবার ফার্মগেট এলাকার চিত্র -সংবাদ

বিএনপির ‘একদফা আন্দোলনের’ পদযাত্রা এবং আওয়ামী লীগের ‘শান্তি ও উন্নয়ন’ শোভাযাত্রা ঘিরে বুধবার (১৯ জুলাই) দ্বিতীয় দিনেও বিপাকে পড়েন রাজধানীবাসী। কোথাও তীব্র যানজট আবার কোথাও গণপরিবহন সংকটে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন সাধারণ মানুষ। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন কর্মজীবী মানুষ। গন্তব্যে পৌঁছাতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে নিম্নআয়ের ও খেটে খাওয়া লোকজনকে। তাই পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে মানুষের ‘অসন্তোষ’ দেখা দিয়েছে।

দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের একই দিনে কর্মসূচি পালনে আগেরদিন ঢাকার সড়কগুলোতে যানবাহনের স্থবিরতা দেখা দেয়। বিএনপির পদযাত্রার দ্বিতীয় দিন বুধবারও সকালে সড়কে তীব্র যানজট দেখা দেয়। অন্যদিকে শোভাযাত্রা ঘিরে তেজগাঁও সাত রাস্তা মোড়ে জড়ো হন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এতে আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজটের তৈরি হয়।

দুই দলের কর্মসূচিকে ঘিরে আশপাশের এলাকায় যানজট তৈরি হলেও অন্যান্য এলাকায় তেমন যানজট ছিল না। তবে ওইসব সড়কে গণপরিবহন কম থাকায় বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন কাজে সড়কে নামা মানুষকে যানবাহনের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। অনেকে হেঁটে ও বাড়তি টাকা খরচ করে রিকশায় গন্তব্যে পৌঁছেছেন।

সকালে বিএনপি

পূর্বঘোষিত বিএনপির পদযাত্রায় অংশ নিতে সকাল থেকে ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে আবদুল্লাহপুরে জড়ো হন বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী। পদযাত্রা শুরুর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় সেখানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন দলের নেতারা। আবদুল্লাহপুর থেকে শুরু হয়ে এই পদযাত্রা যাত্রাবাড়ী (চৌরাস্তা) গিয়ে শেষ হয়। আবদুল্লাহপুর থেকে রামপুরা অংশে দলটির ঢাকা মহানগর উত্তরের নেতাকর্মীরা অংশ নেন, আর রামপুরা থেকে বাকি অংশে থাকেন দক্ষিণের নেতাকর্মীরা।

পদযাত্রা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, কুড়িল বিশ্বরোড, নতুনবাজার, বাড্ডা, রামপুরা ব্রিজ, মালিবাগের আবুল হোটেলের সামনে দিয়ে খিলগাঁও, বাসাবো, মুগদা, সায়েদাবাদ হয়ে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় গিয়ে শেষ হয়। মূল সড়কে এই পদযাত্রা করায় বন্ধ হয়ে যায় সড়কে যান চলাচল। যার প্রভাব পড়ে এই সড়কের আশপাশের সড়কগুলোতেও। যার ফলে সকালে অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজগামী ছাত্রছাত্রীসহ সাধারণ মানুষ দীর্ঘসময় তীব্র গরমে জ্যামে বসে হাঁসফাঁস করেন। কেউ কেউ অসুস্থও হয়ে পড়েন।

আবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই রুটে যান চলাচল একপ্রকার বন্ধ হয়ে যায়। ওই সময় সড়কে গণপরিবহন চলাচলও কমে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ বিভিন্ন গন্তব্যে পৌঁছাতে চরম বিপাকে পড়েন। অনেকে বাড়তি টাকা খরচ করে রিকশায় এবং হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছান।

বিকেলে আওয়ামী লীগ

বিএনপির কর্মসূচির বিপরীতে ‘শান্তি ও উন্নয়ন’ বিষয়ে শোভাযাত্রার কর্মসূচি পালন করেছে আওয়ামী লীগ। আগের দিনের মতো বুধবারও কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচিতে অংশ নিতে এদিন দুপুরের পর থেকে মিছিল নিয়ে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে জড়ো হন ক্ষমতাসীন দলটির নেতাকর্মীরা। সরকারের উন্নয়নের নানা চিত্র তুলে ধরে নেতাকর্মীরা ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ডে।

সমাবেশ ও শোভাযাত্রা উপলক্ষে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে সাতরাস্তা মোড়। সমাবেশ শেষে মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শোভাযাত্রা মহাখালী পর্যন্ত যাওয়ার কথা। এতে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিকল্প পথ ব্যবহার করে যানবাহনগুলো চলাচল করায় আশপাশের সড়কে চাপ বাড়ে। বেলা ২টার পর থেকে শাহবাগ হয়ে মৎস্য ভবন, প্রেসক্লাব ও পল্টন মোড় পর্যন্ত দীর্ঘ যানজট দেখা গেছে। এতে অফিস ফেরত মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।

মানুষের দুর্ভোগ

বিকেল ৫টা বাজে সচিবালয় থেকে বের হোন কর্মচারী শাহদাৎ হোসেন। অফিসের কাজ শেষ করে বের হতে বিলম্ব হওয়ায় সরকারি গাড়ি ধরতে পারেননি। তার গন্তব্য মধ্যবাড্ডা। তিনি পল্টন থেকে গণপরিবহনে উঠেন। কিন্তু রাস্তায় তখন প্রচন্ড যানজট। শাহাদাৎ বলেন, ‘বাস নড়ে না ৩০ মিনিট হলো। বাসের অর্ধেক যাত্রী নেমে হাঁটা শুরু করেছেন। কিন্তু আমার পায়ে সমস্যা তাই রয়ে গেছি।’

শাকিল আহমেদ নামের একজন পথচারী বলেন, ‘এই গরমে বাসে বসে থাকা অসম্ভব। ঘেমে শরীর ভিজে গেছে। নেমে যে হাঁটা দেব, তার শক্তিও নেই।’ বাহাদুর নামের আরেক যাত্রী বলেন, ‘জরুরি কাজে বের হইছিলাম। কিন্তু জ্যামে পড়ে আছি। খুব ঝামেলায় পড়ে গেলাম।’

রাইয়ান নামের পথচারী বলেন, সকালে একটি কাজে উত্তরায় গিয়েছিলেন। পদযাত্রার কথা মাথায় রেখে দ্রুত কাজ শেষ করে কারওয়ান বাজারের অফিসে ফিরতেও চেয়েছিলেন। কিন্তু কাজ শেষ করতে দেরি হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী জেসি বলেন, রাস্তায় কোন ট্রান্সপোর্ট ‘পাচ্ছেন না’। শাজাহানের একজন যাত্রী বলেন, ‘এয়ারপোর্ট সড়কের একপাশ বন্ধ। গাড়ি যাচ্ছে না। তাই ভেঙে ভেঙে যাওয়ার চেষ্টা করছি।’

মালিবাগে রিকশাচালক মোবারক হোসেন বলেন, ‘সারাদিন যদি রাস্তা বন্ধ থাকে আমরা গাড়ি চালাবো কী করে। গাড়ি না চালালে কী খাবো। গরিবদের ভোগান্তি দিয়ে রাস্তা আটকে মিছিল করার কোন মানে নেই।’

ভোগান্তিতে পড়া পথচারীরা বলেন, চলতি সপ্তাহের শুরু থেকেই রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কে বিভিন্ন আন্দোলন ও রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের কারণে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। এর মধ্যে বিগত দুই দিনে বিপাকে পড়েছেন বেশি।

ছবি

চোরা রাস্তা দিয়ে আওয়ামী লীগ দেশে আসার স্বপ্ন দেখছে: রিজভী

সুনামগঞ্জ-১ আসন: ‘প্রাথমিক মনোনীত প্রার্থী’ বলায় মাইক্রোফোন কেড়ে নিলেন বিএনপির প্রার্থী আনিসুল

ছবি

জুলাই সনদের বাইরে যে কোনো সিদ্ধান্তের দায় সরকারের ওপরই বর্তাবে: বিএনপি

এনসিপি কার্যালয়ের সামনে ককটেল নিক্ষেপ, দুইজন কারাগারে

ছবি

গণভোটের আগে কোনো নির্বাচন নয়, জামায়াত ও সঙ্গী-সাথীদের হুঁশিয়ারি

ছবি

অবশ্যই নির্বাচন হতে হবে, গণতান্ত্রিক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যেতে হবে: হাসনাত

ছবি

ভোটকে এতো ভয় কেন... কারন অস্তিত্বই থাকবে না : মির্জা ফখরুল

ছবি

জামায়াত আমিরের হুঁশিয়ারি: জুলাই সনদ ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না

ছবি

‘সিটের বিনিময়ে স্বপ্ন বিক্রি’: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর ফেইসবুক স্ট্যাটাস নিয়ে আলোচনা

ছবি

এনসিপি কার্যালয়ের   ককটেল হামলার দুই আসামি কারাগারে

নির্বাচন নিয়ে গভীর সংশয় তৈরি হয়েছে: হাওলাদার

ছবি

একাত্তরের ইতিহাস ভুলিয়ে দিতে চায় একটি চক্র: মির্জা ফখরুল

ছবি

সংবিধানে গণভোট নেই বললে ২০২৬ সালেও নির্বাচন নেই : জামায়াতের নেতা হামিদুর রহমান

ছবি

"পোস্টাল ভোট বিডি" অ্যাপ উদ্বোধন ১৮ নভেম্বর :  নির্বাচন কমিশন

ছবি

বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে পাল্টাপাল্টি মামলা, সাবেক দুই এমপিসহ আসামি ৮ শতাধিক

অর্থনীতি ও সংস্কার নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক

ছবি

খালেদা জিয়ার আসনে এনসিপির চূড়ান্ত মনোনয়ন চান জোবায়ের

ছবি

বহিষ্কৃত ৪০ নেতার পদ ফিরিয়ে দিলো বিএনপি

নির্বাচনের অপেক্ষায় স্থবির দেশ, বিনিয়োগ ও পারিবারিক সিদ্ধান্তও থমকে গেছে: আমীর খসরু

ছবি

অর্থনীতি ও সংস্কার নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক

ছবি

নির্বাচনের অপেক্ষায় স্থবির দেশ: আমীর খসরু

ছবি

ঢাকা থেকে নির্বাচনের ঘোষণা আসিফ মাহমুদের, বললেন, ‘সরকারের সিদ্ধান্তে পদত্যাগ’

‘বিএনপি ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশে থাকবে গণতন্ত্র মানবাধিকার ও ভোটাধিকার’

ছবি

‘আমেরিকা থেকে আসা শিক্ষিত লোকজন আমাদের ঘাড়ে গণভোট চাপাচ্ছে’ : মির্জা ফখরুল

ছবি

নিবন্ধন প্রশ্নে আমজনতার দলকে আইনসম্মত পথে আসার আহ্বান ইসি সচিবের

বিএনপির হাত ধরে বারবার গণতন্ত্র এসেছে: অ্যাটর্নি জেনারেল

বিএনপি থেকে ৫ শতাংশ শিক্ষককে মনোনয়ন দেয়ার দাবি

ছবি

নিবন্ধনের দাবিতে ১০০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অনশনে আমজনতার সদস্য সচিব

ছবি

সংবিধানে গণভোটের কিছু নেই: আমীর খসরু

ছবি

আগেই গণভোট, নইলে কঠোর আন্দোলন: জামায়াতসহ ৮ দলের হুঁশিয়ারি

ছবি

কারও দলীয় স্বার্থ বাস্তবায়ন করা এই সরকারের কাজ নয়: তারেক রহমান

ছবি

বিএনপি বলছে, প্রধান উপদেষ্টা আহ্বান জানালে ‘আলোচনায় রাজি’, তবে ‘রাজনৈতিক দল দিয়ে আহ্বান কেন?’

ছবি

জামালপুরে জামায়াত প্রার্থীর গণসংযোগে হামলার অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ যুবদলের বিরুদ্ধে

ছবি

বিএনপির আচরণে আওয়ামী লীগের ছায়া দেখছেন হামিদুর রহমান আযাদ

ছবি

বাংলাদেশে মানুষ সংঘর্ষ নয়, স্থিতিশীলতা চায়: আমীর খসরু

ছবি

৫ আগস্টের আগের স্বপ্ন ১৫ মাসেও পূরণ হয়নি: নুরুল হক

tab

পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচি

যানজট, গণপরিবহন সংকট : দু’দিন ধরে ভোগান্তি রাজধানীবাসীর

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বিএনপি ও আ’লীগের পাল্টা-পাল্টি কর্মসূচিতে দু’দিন ধরে রাজধানীবাসী চরম ভোগান্তিতে। যানজট-যানবাহন সংকটে বাসের অপেক্ষায় উপচেপড়া ভিড়। বুধবার ফার্মগেট এলাকার চিত্র -সংবাদ

বুধবার, ১৯ জুলাই ২০২৩

বিএনপির ‘একদফা আন্দোলনের’ পদযাত্রা এবং আওয়ামী লীগের ‘শান্তি ও উন্নয়ন’ শোভাযাত্রা ঘিরে বুধবার (১৯ জুলাই) দ্বিতীয় দিনেও বিপাকে পড়েন রাজধানীবাসী। কোথাও তীব্র যানজট আবার কোথাও গণপরিবহন সংকটে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন সাধারণ মানুষ। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন কর্মজীবী মানুষ। গন্তব্যে পৌঁছাতে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে নিম্নআয়ের ও খেটে খাওয়া লোকজনকে। তাই পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে মানুষের ‘অসন্তোষ’ দেখা দিয়েছে।

দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের একই দিনে কর্মসূচি পালনে আগেরদিন ঢাকার সড়কগুলোতে যানবাহনের স্থবিরতা দেখা দেয়। বিএনপির পদযাত্রার দ্বিতীয় দিন বুধবারও সকালে সড়কে তীব্র যানজট দেখা দেয়। অন্যদিকে শোভাযাত্রা ঘিরে তেজগাঁও সাত রাস্তা মোড়ে জড়ো হন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এতে আশপাশের এলাকায় তীব্র যানজটের তৈরি হয়।

দুই দলের কর্মসূচিকে ঘিরে আশপাশের এলাকায় যানজট তৈরি হলেও অন্যান্য এলাকায় তেমন যানজট ছিল না। তবে ওইসব সড়কে গণপরিবহন কম থাকায় বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন কাজে সড়কে নামা মানুষকে যানবাহনের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। অনেকে হেঁটে ও বাড়তি টাকা খরচ করে রিকশায় গন্তব্যে পৌঁছেছেন।

সকালে বিএনপি

পূর্বঘোষিত বিএনপির পদযাত্রায় অংশ নিতে সকাল থেকে ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে আবদুল্লাহপুরে জড়ো হন বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী। পদযাত্রা শুরুর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় সেখানে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন দলের নেতারা। আবদুল্লাহপুর থেকে শুরু হয়ে এই পদযাত্রা যাত্রাবাড়ী (চৌরাস্তা) গিয়ে শেষ হয়। আবদুল্লাহপুর থেকে রামপুরা অংশে দলটির ঢাকা মহানগর উত্তরের নেতাকর্মীরা অংশ নেন, আর রামপুরা থেকে বাকি অংশে থাকেন দক্ষিণের নেতাকর্মীরা।

পদযাত্রা হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, কুড়িল বিশ্বরোড, নতুনবাজার, বাড্ডা, রামপুরা ব্রিজ, মালিবাগের আবুল হোটেলের সামনে দিয়ে খিলগাঁও, বাসাবো, মুগদা, সায়েদাবাদ হয়ে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় গিয়ে শেষ হয়। মূল সড়কে এই পদযাত্রা করায় বন্ধ হয়ে যায় সড়কে যান চলাচল। যার প্রভাব পড়ে এই সড়কের আশপাশের সড়কগুলোতেও। যার ফলে সকালে অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজগামী ছাত্রছাত্রীসহ সাধারণ মানুষ দীর্ঘসময় তীব্র গরমে জ্যামে বসে হাঁসফাঁস করেন। কেউ কেউ অসুস্থও হয়ে পড়েন।

আবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই রুটে যান চলাচল একপ্রকার বন্ধ হয়ে যায়। ওই সময় সড়কে গণপরিবহন চলাচলও কমে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ বিভিন্ন গন্তব্যে পৌঁছাতে চরম বিপাকে পড়েন। অনেকে বাড়তি টাকা খরচ করে রিকশায় এবং হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছান।

বিকেলে আওয়ামী লীগ

বিএনপির কর্মসূচির বিপরীতে ‘শান্তি ও উন্নয়ন’ বিষয়ে শোভাযাত্রার কর্মসূচি পালন করেছে আওয়ামী লীগ। আগের দিনের মতো বুধবারও কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচিতে অংশ নিতে এদিন দুপুরের পর থেকে মিছিল নিয়ে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে জড়ো হন ক্ষমতাসীন দলটির নেতাকর্মীরা। সরকারের উন্নয়নের নানা চিত্র তুলে ধরে নেতাকর্মীরা ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ডে।

সমাবেশ ও শোভাযাত্রা উপলক্ষে স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে সাতরাস্তা মোড়। সমাবেশ শেষে মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শোভাযাত্রা মহাখালী পর্যন্ত যাওয়ার কথা। এতে ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বিকল্প পথ ব্যবহার করে যানবাহনগুলো চলাচল করায় আশপাশের সড়কে চাপ বাড়ে। বেলা ২টার পর থেকে শাহবাগ হয়ে মৎস্য ভবন, প্রেসক্লাব ও পল্টন মোড় পর্যন্ত দীর্ঘ যানজট দেখা গেছে। এতে অফিস ফেরত মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়।

মানুষের দুর্ভোগ

বিকেল ৫টা বাজে সচিবালয় থেকে বের হোন কর্মচারী শাহদাৎ হোসেন। অফিসের কাজ শেষ করে বের হতে বিলম্ব হওয়ায় সরকারি গাড়ি ধরতে পারেননি। তার গন্তব্য মধ্যবাড্ডা। তিনি পল্টন থেকে গণপরিবহনে উঠেন। কিন্তু রাস্তায় তখন প্রচন্ড যানজট। শাহাদাৎ বলেন, ‘বাস নড়ে না ৩০ মিনিট হলো। বাসের অর্ধেক যাত্রী নেমে হাঁটা শুরু করেছেন। কিন্তু আমার পায়ে সমস্যা তাই রয়ে গেছি।’

শাকিল আহমেদ নামের একজন পথচারী বলেন, ‘এই গরমে বাসে বসে থাকা অসম্ভব। ঘেমে শরীর ভিজে গেছে। নেমে যে হাঁটা দেব, তার শক্তিও নেই।’ বাহাদুর নামের আরেক যাত্রী বলেন, ‘জরুরি কাজে বের হইছিলাম। কিন্তু জ্যামে পড়ে আছি। খুব ঝামেলায় পড়ে গেলাম।’

রাইয়ান নামের পথচারী বলেন, সকালে একটি কাজে উত্তরায় গিয়েছিলেন। পদযাত্রার কথা মাথায় রেখে দ্রুত কাজ শেষ করে কারওয়ান বাজারের অফিসে ফিরতেও চেয়েছিলেন। কিন্তু কাজ শেষ করতে দেরি হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

রাস্তা দিয়ে হাঁটার সময় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী জেসি বলেন, রাস্তায় কোন ট্রান্সপোর্ট ‘পাচ্ছেন না’। শাজাহানের একজন যাত্রী বলেন, ‘এয়ারপোর্ট সড়কের একপাশ বন্ধ। গাড়ি যাচ্ছে না। তাই ভেঙে ভেঙে যাওয়ার চেষ্টা করছি।’

মালিবাগে রিকশাচালক মোবারক হোসেন বলেন, ‘সারাদিন যদি রাস্তা বন্ধ থাকে আমরা গাড়ি চালাবো কী করে। গাড়ি না চালালে কী খাবো। গরিবদের ভোগান্তি দিয়ে রাস্তা আটকে মিছিল করার কোন মানে নেই।’

ভোগান্তিতে পড়া পথচারীরা বলেন, চলতি সপ্তাহের শুরু থেকেই রাজধানীর প্রধান প্রধান সড়কে বিভিন্ন আন্দোলন ও রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের কারণে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। এর মধ্যে বিগত দুই দিনে বিপাকে পড়েছেন বেশি।

back to top