alt

মনোনয়নপত্র জমা শেষ বৃহস্পতিবার

মনোনয়নের চিত্র দেখে 'কৌশল সাজাবে' আ'লীগ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৩

বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার তারিখ পেরোলেই বিএনপির কারা কারা ভোটে আসছেন তা স্পষ্ট হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সেটা দেখার পরই ক্ষমতাসীনরা ‘জোটগত ভোট’, ‘ডামি প্রার্থী’সহ নির্বাচনী ‘কৌশল সাজাবে’ বলে জানিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির কেউ কেউ নির্বাচনে আসতে পারেন। কেউ কেউ প্রস্তুতিও নিচ্ছেন। মনোনয়ন ফরম সেটাতো জমা দেয়ার লাস্ট ডেট ৩০ তারিখ, কাল বাদে পরশু। এর মধ্যেই তো পরিষ্কার হয়ে যাবে কারা আসলেন।’

আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণের তারিখ রেখে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় শেষ হবে বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর)। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে থাক বিএনপি ও সমমনা দলগুলো তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছে।

বিএনপি এলে স্বাগতম

বিএনপিকে ভোটে আনার কোনো কৌশল আওয়ামী লীগের আছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা বলেন, ‘আনার কৌশল আমাদের নেই। তারা (বিএনপি) এলে আমাদের আপত্তি নেই। তারা এলে স্বাগতম।’

এদিকে, যথাসময়ে নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে ২৯৮ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। কোনো আসনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় তাদের প্রার্থী যেন বিজয়ী হয়ে না যান, সেজন্য ‘ডামি প্রার্থী’ রাখারও নির্দেশনা এসেছে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে। ফলে মনোনয়ন না পেলেও আওয়ামী লীগের অনেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিচ্ছেন।

এ পরিস্থিতিতে বিদ্রোহী প্রার্থীর ব্যাপারে আওয়ামী লীগ নমনীয় থাকবে কিনা জানতে চাইলে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির কারা আসে, সবকিছু দেখে আমরা আমাদের কৌশল নির্ধারণ করব।’

আওয়ামী লীগ গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও জোটবদ্ধ নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনে জানিয়েছে। তবে ১৪ দলীয় জোট ও মিত্রদের সঙ্গে আসন বণ্টন নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো আলোচনা করেনি। এবার জোটের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ওবায়দুল কাদেরের কৌশলী বক্তব্য জোট শরিকদের মধ্যে ধোঁয়াশার সৃষ্টি করেছে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেছেন, জোটের শরিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার পর আসন সমন্বয় করা হবে।

জোট তো অস্বীকার করি না

জোটের শরিকদের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘১৪ দলের জোট তো অস্বীকার করি না। এখনও তো মনোনয়নপত্র দাখিল ও প্রত্যাহারের সময় আছে।’ জোটের মধ্যে যেসব প্রার্থী জয়ী হওয়ার মতো আছেন, তাদের কথা প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘তারা (বিএনপি) কারা কারা প্রার্থী সেটা আমরা দেখি। আমাদের হাতে কিন্তু সময় আছ। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের তারিখ ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত আমাদের হাতে সময় আছে। এর মধ্যে আমরা অবজার্ভ করব, মনিটর করব, অ্যাডজাস্ট করব, অ্যাকোমোডেট করব। ডামি ক্যান্ডিডেটের ব্যাপারেও বিষয়টা এরকম, ১৭ তারিখের মধ্যে সবকিছু ফাইনাল হয়ে যাবে।’

জোটের সঙ্গে সমঝোতা হলে আওয়ামী লীগ কত আসনে প্রার্থী দেবে জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘একটা কথা বলি, আমরা ৩০০ আসনেই নৌকা দেব। অ্যাডজাস্টমেন্ট যখন হবে, তখন ছেড়ে দেবো। কোনো অসুবিধা নেই।’ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পরে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালে ফের ‘প্রতিদ্বন্দ্বীহীন’ নির্বাচন হতে যাচ্ছে কিনা, জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথমেই নেগেটিভ ভাবছেন কেন? পজিটিভও থাকতে পারে। পরে আমরা যখন সিদ্ধান্ত নেব, তখন আপনি দেখবেন আমরা কি সিদ্ধান্ত নিই। সেটার ওপর আপনি মন্তব্য করতে পারেন।’

আওয়ামী লীগ একেক আসনে একেক কৌশল নিচ্ছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা ইলেকশন করছি, আমরা একটা রাজনৈতিক দল, আমাদের কৌশলগত দিক তো থাকবেই।’

সমালোচনা হয়তো বন্ধ হয়ে যাবে

সংসদ নির্বাচন ঘিরে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকরা ‘ক্ষমতাসীনদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে’ বলে বিবৃতি দিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। নির্বাচন ঘিরে ঘটে যাওয়া নানা ধরনের সহিংসতার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে তারা। আবার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ‘বাইরের থাবা এসেছে’ মন্তব্য করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, দেশের অর্থনীতি ও ভবিষ্যৎ বাঁচাতে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে হবে, এর কোনো বিকল্প নেই।

এসব বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রথম কথা হচ্ছে, দ্বাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে মন্তব্য করছে। বিদেশি বন্ধুরাও এখানে পরিস্থিতি অবজার্ভ করছে। ইতোমধ্যে ১০০ পর্যবেক্ষক আসবে এমন আভাস আমরা পাচ্ছি। সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এখানে নানা মানুষের নানা মত থাকবেই। আমাদের টার্গেট হলো একটা পিসফুল, ফ্রি, ফেয়ার, ক্রেডিবল ইলেকশন করা। ইলেকশন চলাকালে বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন কথা বলতে পারে। এখন আল্টিমেটলি আমরাও একটা পিসফুল ইলেকশন দিয়ে সবাইকে দেখিয়ে দিতে চাই আমরা ফ্রি, ফেয়ার ইলেকশনের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছি। তারপর অনেক সমালোচনায় হয়তো বন্ধ হয়ে যাবে।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা নির্বাচনী বিধি মানতে প্রার্থী ও দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছেন জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কাল পরশু মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার ব্যাপার আছে, এখন সেখানে একটা শোডাউন বা গ্যাদারিং করে যেটা নির্বাচন কমিশনের আচরণ বিধির পরিপন্থী হয় এমন কিছু করা যাবে না।’

ছবি

জুলাই সনদ দিয়ে রাজনীতিতে নতুন অধ্যায়ের শুরু: ফখরুল

ছবি

জুলাই সনদ: বাস্তবায়নে দেরি হলে রাজনৈতিক সংকটের ঝুঁকি দেখছে জামায়াত

ছবি

কিছু দল ‘ঐকমত্যের’ নামে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করে একটি ‘কাগজে’ সই করছে: নাহিদ ইসলাম

ছবি

জুলাই সনদে সই না করার সিদ্ধান্ত এনসিপির

ছবি

আমলাতন্ত্র চলবে না, প্রয়োজনে ডিসি অফিস ঘেরাও করবেন: মির্জা ফখরুল

জুলাই সনদ সইয়ে অনিশ্চয়তা: সিপিবি, এনসিপি, গণফোরামের আপত্তি

ছবি

জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতৃত্বকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মুহাম্মদ ইউনুস

ছবি

সংশোধিত খসড়া না পেলে জুলাই সনদে সই করবে না বাম ধারার চার দল

ছবি

জাতির কাছে সব কিছু স্পষ্ট করে জুলাই সনদ স্বাক্ষরের আহ্বান এনসিপি’র সদস্য সচিব আখতার হোসেনের

ছবি

‘প্রতিরক্ষা বাহিনীর ভারসাম্য নষ্ট হলে রাষ্ট্র ঝুঁকিতে পড়বে’ — প্রধান উপদেষ্টাকে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন আহমদের সতর্কবার্তা

ছবি

সৈয়দপুরে সিপিবির পথসভা অনুষ্ঠিত

ছবি

বিএনপির ৩১ দফা বাস্তয়নে তারেক মুন্সীর গণসংযোগ

ছবি

তফসিলের আগেই গণভোটের দাবি ইসলামী আন্দোলনের

ছবি

জামায়াতের নভেম্বরে গণভোট দাবি ‘অন্য কোনো মাস্টারপ্ল্যান কি না’: প্রশ্ন রিজভীর

ছবি

আগামী নির্বাচনেই দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে: মির্জা ফখরুল ইসলাম

ছবি

শাপলায় অনড় এনসিপি, ‘নিজস্ব পদ্ধতির’ কথা জানালো ইসি

‘ষড়যন্ত্রে লিপ্ত’ উপদেষ্টাদের নাম ও কণ্ঠ রেকর্ড থাকার দাবি, জনসমক্ষে প্রকাশের হুঁশিয়ারি জামায়াত নেতার

ছবি

জাতীয় লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের অস্তিত্ব যাচাইয়ে পুনঃতদন্ত কমিটি গঠন

ছবি

১৯ অক্টোবরের মধ্যে প্রতীক বাছাইয়ের নির্দেশ এনসিপিকে

ছবি

রাজনীতিতে আসছি সেবা করতে, ব্যবসা করতে না: মাসুদুজ্জামান

ছবি

পিআরের বিষয়টি আগামী সংসদের ওপর ছেড়ে দেয়া উচিত: ফখরুল

ছবি

আওয়ামী লীগ নেতা আহসানের ‘মুক্তিতে বাধা নেই’

ছবি

আমরা উচ্চ কক্ষে পিআরের পক্ষে, নিম্ন কক্ষে নই: সারজিস

ছবি

আগামী মাসেই গণভোটের দাবি জামায়াতে ইসলামী, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে তিন ঘণ্টার বৈঠক

ছবি

নির্বাচন: ১০০ আসনে এবি পার্টির প্রার্থী চূড়ান্ত

ছবি

ক্ষোভ ঝাড়তে গিয়ে যে উপমা ব্যবহার করেছি, সেটা করা উচিত হয়নি: ফেসবুক পোস্টে সারজিস

ছবি

পিআরের দাবিতে আন্দোলন: নির্বাচন ‘বিলম্বিত করার ষড়যন্ত্র’ দেখছেন ফখরুল

পঞ্চগড়ে এনসিপির কর্মসূচিতে বিদ্যুৎ–বিভ্রাট, নেসকোর কর্মকর্তাদের কলিজা ছিঁড়ে ফেলার হুমকি সারজিসের

ছবি

ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই, তবে সমতার ভিত্তিতে: ফখরুল

ছবি

জামালপুরে এলডিবি মনোনীত সদর আসনে এমপি প্রার্থী মুহাম্মদ মাসুদ হোসাইনের গণসংযোগ শুরু

ছবি

বিচার না হলে বাহিনী জনগণের প্রতিষ্ঠান হবে না: এনসিপি নেতা আখতার হোসেন

ছবি

শাপলা প্রতীক নিয়ে বিতর্কের মধ্যে রংপুর-৬ আসনে এনসিপির হয়ে প্রচারণায় তাকিয়া জাহান চৌধুরী

ছবি

তারেক রহমানের নেতৃত্বে বহুমূখী কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে: কর্নেল আজাদ

ছবি

আদর্শ সমাজ গঠনে কাজ করছে জামায়াত

ছবি

কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কর্মী সমাবেশে পুলিশ-নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ

ছবি

বঙ্গবন্ধুর ছবি নিয়ে মতামত চাওয়ায় ‘অশুভ উদ্দেশ্য’ দেখছে জাসদ

tab

মনোনয়নপত্র জমা শেষ বৃহস্পতিবার

মনোনয়নের চিত্র দেখে 'কৌশল সাজাবে' আ'লীগ

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৩

বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার তারিখ পেরোলেই বিএনপির কারা কারা ভোটে আসছেন তা স্পষ্ট হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সেটা দেখার পরই ক্ষমতাসীনরা ‘জোটগত ভোট’, ‘ডামি প্রার্থী’সহ নির্বাচনী ‘কৌশল সাজাবে’ বলে জানিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির কেউ কেউ নির্বাচনে আসতে পারেন। কেউ কেউ প্রস্তুতিও নিচ্ছেন। মনোনয়ন ফরম সেটাতো জমা দেয়ার লাস্ট ডেট ৩০ তারিখ, কাল বাদে পরশু। এর মধ্যেই তো পরিষ্কার হয়ে যাবে কারা আসলেন।’

আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণের তারিখ রেখে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন। মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় শেষ হবে বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর)। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে থাক বিএনপি ও সমমনা দলগুলো তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছে।

বিএনপি এলে স্বাগতম

বিএনপিকে ভোটে আনার কোনো কৌশল আওয়ামী লীগের আছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে ক্ষমতাসীন দলের এই নেতা বলেন, ‘আনার কৌশল আমাদের নেই। তারা (বিএনপি) এলে আমাদের আপত্তি নেই। তারা এলে স্বাগতম।’

এদিকে, যথাসময়ে নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আওয়ামী লীগ ইতোমধ্যে ২৯৮ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। কোনো আসনে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় তাদের প্রার্থী যেন বিজয়ী হয়ে না যান, সেজন্য ‘ডামি প্রার্থী’ রাখারও নির্দেশনা এসেছে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে। ফলে মনোনয়ন না পেলেও আওয়ামী লীগের অনেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিচ্ছেন।

এ পরিস্থিতিতে বিদ্রোহী প্রার্থীর ব্যাপারে আওয়ামী লীগ নমনীয় থাকবে কিনা জানতে চাইলে দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির কারা আসে, সবকিছু দেখে আমরা আমাদের কৌশল নির্ধারণ করব।’

আওয়ামী লীগ গত তিনটি জাতীয় নির্বাচনের মতো এবারও জোটবদ্ধ নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনে জানিয়েছে। তবে ১৪ দলীয় জোট ও মিত্রদের সঙ্গে আসন বণ্টন নিয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো আলোচনা করেনি। এবার জোটের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে ওবায়দুল কাদেরের কৌশলী বক্তব্য জোট শরিকদের মধ্যে ধোঁয়াশার সৃষ্টি করেছে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেছেন, জোটের শরিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার পর আসন সমন্বয় করা হবে।

জোট তো অস্বীকার করি না

জোটের শরিকদের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘১৪ দলের জোট তো অস্বীকার করি না। এখনও তো মনোনয়নপত্র দাখিল ও প্রত্যাহারের সময় আছে।’ জোটের মধ্যে যেসব প্রার্থী জয়ী হওয়ার মতো আছেন, তাদের কথা প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘তারা (বিএনপি) কারা কারা প্রার্থী সেটা আমরা দেখি। আমাদের হাতে কিন্তু সময় আছ। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের তারিখ ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত আমাদের হাতে সময় আছে। এর মধ্যে আমরা অবজার্ভ করব, মনিটর করব, অ্যাডজাস্ট করব, অ্যাকোমোডেট করব। ডামি ক্যান্ডিডেটের ব্যাপারেও বিষয়টা এরকম, ১৭ তারিখের মধ্যে সবকিছু ফাইনাল হয়ে যাবে।’

জোটের সঙ্গে সমঝোতা হলে আওয়ামী লীগ কত আসনে প্রার্থী দেবে জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘একটা কথা বলি, আমরা ৩০০ আসনেই নৌকা দেব। অ্যাডজাস্টমেন্ট যখন হবে, তখন ছেড়ে দেবো। কোনো অসুবিধা নেই।’ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পরে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালে ফের ‘প্রতিদ্বন্দ্বীহীন’ নির্বাচন হতে যাচ্ছে কিনা, জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথমেই নেগেটিভ ভাবছেন কেন? পজিটিভও থাকতে পারে। পরে আমরা যখন সিদ্ধান্ত নেব, তখন আপনি দেখবেন আমরা কি সিদ্ধান্ত নিই। সেটার ওপর আপনি মন্তব্য করতে পারেন।’

আওয়ামী লীগ একেক আসনে একেক কৌশল নিচ্ছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা ইলেকশন করছি, আমরা একটা রাজনৈতিক দল, আমাদের কৌশলগত দিক তো থাকবেই।’

সমালোচনা হয়তো বন্ধ হয়ে যাবে

সংসদ নির্বাচন ঘিরে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকরা ‘ক্ষমতাসীনদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে’ বলে বিবৃতি দিয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। নির্বাচন ঘিরে ঘটে যাওয়া নানা ধরনের সহিংসতার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে তারা। আবার দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ‘বাইরের থাবা এসেছে’ মন্তব্য করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, দেশের অর্থনীতি ও ভবিষ্যৎ বাঁচাতে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে হবে, এর কোনো বিকল্প নেই।

এসব বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রথম কথা হচ্ছে, দ্বাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে মন্তব্য করছে। বিদেশি বন্ধুরাও এখানে পরিস্থিতি অবজার্ভ করছে। ইতোমধ্যে ১০০ পর্যবেক্ষক আসবে এমন আভাস আমরা পাচ্ছি। সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে।’

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এখানে নানা মানুষের নানা মত থাকবেই। আমাদের টার্গেট হলো একটা পিসফুল, ফ্রি, ফেয়ার, ক্রেডিবল ইলেকশন করা। ইলেকশন চলাকালে বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন কথা বলতে পারে। এখন আল্টিমেটলি আমরাও একটা পিসফুল ইলেকশন দিয়ে সবাইকে দেখিয়ে দিতে চাই আমরা ফ্রি, ফেয়ার ইলেকশনের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছি। তারপর অনেক সমালোচনায় হয়তো বন্ধ হয়ে যাবে।’

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা নির্বাচনী বিধি মানতে প্রার্থী ও দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছেন জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কাল পরশু মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার ব্যাপার আছে, এখন সেখানে একটা শোডাউন বা গ্যাদারিং করে যেটা নির্বাচন কমিশনের আচরণ বিধির পরিপন্থী হয় এমন কিছু করা যাবে না।’

back to top