রাজনৈতিক চরিত্র হারিয়ে আওয়ামী লীগ এখন বন্দুকনির্ভর দলে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এ সময় তিনি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে দুইদিনের কর্মসূচিও ঘোষণা করেন।
গতকাল সোমবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এ মন্তব্য করে দলের কর্মসূচি ঘোষনা করেন।
রিজভী বলেন, ‘একদলীয়, একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দির্ঘস্তায়ীত্ব করে আরও বেপরোয়া হয়ে জনগণের ওপর নতুন মাত্রায় জুলুম চালাচ্ছে সরকার। মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার, জান-মাল, মানবাধিকার, জননিরাপত্তা লণ্ডভণ্ড করে দিচ্ছে। তাদের একগুঁয়েমি ও বৈরিতার আঘাতে গণতন্ত্র কবরে শায়িত। রাষ্ট্রের পেশীশক্তি দিয়ে বিরোধী দল দমনের সব পন্থা অবলম্বন করছে তারা। বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মসূচি মোকাবিলা করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর বাড়াবাড়ি বলপ্রয়োগ, একইসময় ক্ষমতাসীন দলের পাল্টা কর্মসূচি সংঘাতময় বিভীষিকার পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।’
তিনি বলেন, ‘দৃষ্টান্তহীন নতুন মডেলের একদলীয় বাকশাল ২.০ প্রতিষ্ঠার পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, সমর্থক, উচ্ছিষ্টভোগী, দালাল ছাড়া দেশের সাধারণ মানুষ যেন উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে। জনজীবনকে তারা দুর্বিষহ করে তুলেছে। এ দেশে স্বস্তিকর জীবনযাপন বলে কিছু নেই। একটা ভয়ংকর দুঃস্বপ্নের ভেতরে বাংলাদেশকে নিপতিত করা হয়েছে। মানুষ আর সইতে পারছে না। বিরোধী দল নিষ্পেষণ, দলন, পীড়ন, গ্রেপ্তার, হত্যা আর সাধারণ জনগণের রক্ত চুষে খাওয়াই এখন সরকারের উদ্দেশ।
রিজভী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে নারীর শ্লীলতাহানিসহ সন্ত্রাস আর নৈরাজ্যের অভয়ারণ্যে পরিনত করেছে। সরকারি দলের প্রশ্রয়ে শহর, নগর, বন্দর, জনপদে দাপিয়ে বেড়ানো কিশোর গ্যাংয়ের ছিনতাই, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, হামলা ও খুনাখুনিতে মানুষ আতঙ্কিত। দেশকে পরিণত করা হয়েছে পৃথিবীর এক নম্বর শব্দ আর বায়ু দূষণের ভাগাড়ে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নিত্যপণ্যের বাজার সিন্ডিকেটের হাতে বর্গা দিয়ে ক্রমাগত দ্রব্যমূল্যের যাঁতাকলে জনগনকে পিষ্ট করছেন। রমজানকে সামনে রেখে এখন থেকেই সরকারের সিন্ডিকেট চক্র জনগণের পকেট কাটতে বেপরোয়া হয়ে উঠছে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চাল, ভোজ্যতেল, চিনি ও খেজুর আমদানিতে শুল্ক কমানোর ঘোষণা দিলেও বাজারে এর কোনো প্রভাব তো পড়েইনি, উল্টো গত ১০ দিনে রমজানসংশ্লিষ্ট কয়েকটি পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে।’ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত বছরের ব্যবধানে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে ৯ দশমিক ৫৬ শতাংশ। কোনো কোনো পণ্যের দাম দ্বিগুণ ছাড়িয়েছে।’
রাজনৈতিক চরিত্র হারিয়ে আওয়ামী লীগ এখন বন্দুকনির্ভর দলে পরিণত হয়েছে, মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘এই দলটির সব পর্যায়ের নেতাদের কথাবার্তায় আচার-আচরণে জনগণের প্রতি অশ্রদ্ধা-অবহেলা ফুটে ওঠে। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে নিরুদ্দেশ করে শেখ হাসিনা রাজা-প্রজার শাসন কায়েম করেছেন। তিনি নিজেকে রানী বা সম্রাজ্ঞী ভাবেন বলেই বাংলাদেশের মসনদকে তার পৈত্রিক সম্পদ বলে মনে করেন। এই মসনদে জনগণের কোনো অধিকার নেই।’
‘দেশে বিএনপি সবচেয়ে বড় উগ্রবাদী দল। দেশে উগ্রবাদের জন্ম বিএনপির হাত ধরে’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেবের কিছু বলার আর করার কিছু নেই। তিনি আওয়ামী লীগের জড় পদার্থে পরিণত হয়েছেন। যেভাবে চালানো হয় তিনি সেভাবেই চলেন।’ তিনি বলেন, ‘যে দেশে আওয়ামী লীগের মতো একটি দলের অস্তিত্ব থাকে সে দেশে উগ্রবাদ খুঁজতে যাওয়া মূর্খের স্বর্গে বাস করা। জনপীড়ক অত্যাচারী, ন্যায়বিচার শূন্য প্রশাসন, স্বার্থপর, লোভী আওয়ামী লীগ মাত্র তিন মাসেই বেছে বেছে বিএনপির ৩৪ জন নেতাকর্মীকে খুন করেছে। সরকারি মদদে ও অবহেলায় কারাগারে ১৫ জন নেতাকর্মীর মৃত্যু নিশ্চিত করার পরও ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনারা কাকে উগ্রশক্তি বলেন? ওবায়দুল কাদের সাহেবকে জিজ্ঞাসা করি, গণতান্ত্রিক বিশ্বের তালিকায় বাংলাদেশের নাম নেই কেন? গণতন্ত্রের সূচকে বাংলাদেশের আরও পতন হচ্ছে কেন? পৃথিবীর বিশ্বাসযোগ্য মর্যাদাসম্পন্ন সংগঠনগুলোর জরিপে বাংলাদেশের অবস্থান কোথায়? তার বক্তব্য বরাবরই বিরোধের ছায়াকে প্রলম্বিত করে। তিনি দখলদার মাফিয়া টিমের মুখপাত্র।’
এরপর রিজভী মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণা করেন। মঙ্গলবার দুপুর ২টায় রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের মিলনায়তনে বিএনপির আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। আর ২১ ফেব্রুয়ারি ভোর ৬টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ এবং কালো পতাকা উত্তোলন করবে বিএনপি।
এরপর কালো ব্যাজ পরে প্রভাতফেরিতে অংশগ্রহণের জন্য বলাকা সিনেমা হলের সামনে দলীয় নেতাকর্মীদের জমায়েত এবং আজিমপুর কবরস্থানে ভাষা শহীদদের মাজার জিয়ারত শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করবে বিএনপি।
সোমবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
রাজনৈতিক চরিত্র হারিয়ে আওয়ামী লীগ এখন বন্দুকনির্ভর দলে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এ সময় তিনি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে দুইদিনের কর্মসূচিও ঘোষণা করেন।
গতকাল সোমবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এ মন্তব্য করে দলের কর্মসূচি ঘোষনা করেন।
রিজভী বলেন, ‘একদলীয়, একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দির্ঘস্তায়ীত্ব করে আরও বেপরোয়া হয়ে জনগণের ওপর নতুন মাত্রায় জুলুম চালাচ্ছে সরকার। মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার, জান-মাল, মানবাধিকার, জননিরাপত্তা লণ্ডভণ্ড করে দিচ্ছে। তাদের একগুঁয়েমি ও বৈরিতার আঘাতে গণতন্ত্র কবরে শায়িত। রাষ্ট্রের পেশীশক্তি দিয়ে বিরোধী দল দমনের সব পন্থা অবলম্বন করছে তারা। বিরোধী দলের রাজনৈতিক কর্মসূচি মোকাবিলা করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর বাড়াবাড়ি বলপ্রয়োগ, একইসময় ক্ষমতাসীন দলের পাল্টা কর্মসূচি সংঘাতময় বিভীষিকার পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।’
তিনি বলেন, ‘দৃষ্টান্তহীন নতুন মডেলের একদলীয় বাকশাল ২.০ প্রতিষ্ঠার পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, সমর্থক, উচ্ছিষ্টভোগী, দালাল ছাড়া দেশের সাধারণ মানুষ যেন উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে। জনজীবনকে তারা দুর্বিষহ করে তুলেছে। এ দেশে স্বস্তিকর জীবনযাপন বলে কিছু নেই। একটা ভয়ংকর দুঃস্বপ্নের ভেতরে বাংলাদেশকে নিপতিত করা হয়েছে। মানুষ আর সইতে পারছে না। বিরোধী দল নিষ্পেষণ, দলন, পীড়ন, গ্রেপ্তার, হত্যা আর সাধারণ জনগণের রক্ত চুষে খাওয়াই এখন সরকারের উদ্দেশ।
রিজভী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে নারীর শ্লীলতাহানিসহ সন্ত্রাস আর নৈরাজ্যের অভয়ারণ্যে পরিনত করেছে। সরকারি দলের প্রশ্রয়ে শহর, নগর, বন্দর, জনপদে দাপিয়ে বেড়ানো কিশোর গ্যাংয়ের ছিনতাই, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, হামলা ও খুনাখুনিতে মানুষ আতঙ্কিত। দেশকে পরিণত করা হয়েছে পৃথিবীর এক নম্বর শব্দ আর বায়ু দূষণের ভাগাড়ে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নিত্যপণ্যের বাজার সিন্ডিকেটের হাতে বর্গা দিয়ে ক্রমাগত দ্রব্যমূল্যের যাঁতাকলে জনগনকে পিষ্ট করছেন। রমজানকে সামনে রেখে এখন থেকেই সরকারের সিন্ডিকেট চক্র জনগণের পকেট কাটতে বেপরোয়া হয়ে উঠছে। গত ৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চাল, ভোজ্যতেল, চিনি ও খেজুর আমদানিতে শুল্ক কমানোর ঘোষণা দিলেও বাজারে এর কোনো প্রভাব তো পড়েইনি, উল্টো গত ১০ দিনে রমজানসংশ্লিষ্ট কয়েকটি পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে।’ বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত বছরের ব্যবধানে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে ৯ দশমিক ৫৬ শতাংশ। কোনো কোনো পণ্যের দাম দ্বিগুণ ছাড়িয়েছে।’
রাজনৈতিক চরিত্র হারিয়ে আওয়ামী লীগ এখন বন্দুকনির্ভর দলে পরিণত হয়েছে, মন্তব্য করে রিজভী বলেন, ‘এই দলটির সব পর্যায়ের নেতাদের কথাবার্তায় আচার-আচরণে জনগণের প্রতি অশ্রদ্ধা-অবহেলা ফুটে ওঠে। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে নিরুদ্দেশ করে শেখ হাসিনা রাজা-প্রজার শাসন কায়েম করেছেন। তিনি নিজেকে রানী বা সম্রাজ্ঞী ভাবেন বলেই বাংলাদেশের মসনদকে তার পৈত্রিক সম্পদ বলে মনে করেন। এই মসনদে জনগণের কোনো অধিকার নেই।’
‘দেশে বিএনপি সবচেয়ে বড় উগ্রবাদী দল। দেশে উগ্রবাদের জন্ম বিএনপির হাত ধরে’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্যের উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেবের কিছু বলার আর করার কিছু নেই। তিনি আওয়ামী লীগের জড় পদার্থে পরিণত হয়েছেন। যেভাবে চালানো হয় তিনি সেভাবেই চলেন।’ তিনি বলেন, ‘যে দেশে আওয়ামী লীগের মতো একটি দলের অস্তিত্ব থাকে সে দেশে উগ্রবাদ খুঁজতে যাওয়া মূর্খের স্বর্গে বাস করা। জনপীড়ক অত্যাচারী, ন্যায়বিচার শূন্য প্রশাসন, স্বার্থপর, লোভী আওয়ামী লীগ মাত্র তিন মাসেই বেছে বেছে বিএনপির ৩৪ জন নেতাকর্মীকে খুন করেছে। সরকারি মদদে ও অবহেলায় কারাগারে ১৫ জন নেতাকর্মীর মৃত্যু নিশ্চিত করার পরও ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনারা কাকে উগ্রশক্তি বলেন? ওবায়দুল কাদের সাহেবকে জিজ্ঞাসা করি, গণতান্ত্রিক বিশ্বের তালিকায় বাংলাদেশের নাম নেই কেন? গণতন্ত্রের সূচকে বাংলাদেশের আরও পতন হচ্ছে কেন? পৃথিবীর বিশ্বাসযোগ্য মর্যাদাসম্পন্ন সংগঠনগুলোর জরিপে বাংলাদেশের অবস্থান কোথায়? তার বক্তব্য বরাবরই বিরোধের ছায়াকে প্রলম্বিত করে। তিনি দখলদার মাফিয়া টিমের মুখপাত্র।’
এরপর রিজভী মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বিএনপির কর্মসূচি ঘোষণা করেন। মঙ্গলবার দুপুর ২টায় রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের মিলনায়তনে বিএনপির আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। আর ২১ ফেব্রুয়ারি ভোর ৬টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ এবং কালো পতাকা উত্তোলন করবে বিএনপি।
এরপর কালো ব্যাজ পরে প্রভাতফেরিতে অংশগ্রহণের জন্য বলাকা সিনেমা হলের সামনে দলীয় নেতাকর্মীদের জমায়েত এবং আজিমপুর কবরস্থানে ভাষা শহীদদের মাজার জিয়ারত শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করবে বিএনপি।