alt

দল পুনর্গঠনে নেতৃত্বে রদবদল চান বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা

মহসীন ইসলাম টুটুল : সোমবার, ০৪ মার্চ ২০২৪

২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশের পর থেকে আন্দোলনে নেতৃত্বের ব্যর্থতাই বেশি দেখছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা। তাই বড় আন্দোলনে যাওয়ার আগে নেতৃত্বের রদবদল চান তারা। বিশেষ করে তৃণমূল নেতাকর্মীরা ঢাকার নেতৃত্বের ওপর হতাশ। এক দফা আন্দোলনের ব্যর্থতার পর দলকে ঢেলে সাজাতে শীর্ষ নেতৃত্বকে তাগিদ দিচ্ছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। আন্দোলন এবং দলের সাংগঠনিক এই পরিস্থিতিতে মাঠ পর্যায়ের নেতাদের এমন উপলব্ধি প্রকাশ পেতে শুরু করেছে।

২০১৪ সালের পর থেকে বেশ কয়েকবার ঢাকার নেতৃত্বে রদবদল আনে বিএনপি। কিন্তু সফলতা আসেনি আশানুরূপ। এ কারণে ২০১৭ সালে ঢাকা মহানগরকে উত্তর ও দক্ষিণে ভাগ করে পৃথক দুটি কমিটি করা হয়। তাতেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। সর্বশেষ ২০২১ সালের আগস্টে আমান উল্লাহ আমানকে আহ্বায়ক ও আমিনুল হককে সদস্য সচিব করে ঢাকা উত্তর এবং আবদুস সালামকে আহ্বায়ক ও রফিকুল ইসলাম মজনুকে সদস্য সচিব করে দক্ষিণের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এরই মধ্যে ঢাকা উত্তরের ৭১টি ওয়ার্ডের সব এবং দক্ষিণের ৮০টির মধ্যে ৫৬টিতে বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়েছে।

গাজীপুর মহানগর বিএনপির একজন নেতা বলেন, ‘বহির্বিশ^ আমাদের শীর্ষ নেতাকে নিয়ে একটু কানাঘুষা করছে। তারা যেভাবে নেতৃত্ব চান হয়তো সেভাবে সাজানো যাচ্ছে না।’ তবে তৃণমূলে কোনো সমস্যা নেই বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘কমিটি করতে হলে আগে ঢাকাকে ঢেলে সাজাতে হবে। এই সরকার আসার পর থেকে ঢাকা ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ। তাই ঢাকার নেতৃত্বে রদবদল করা উচিত।’ তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকার বাইরের লোক অর্থাৎ জেলার লোকজনকে নিয়ে এসে আমাদের পল্টনের মাঠ ভরতে হয়। আর ঢাকার নেতারা বসে থাকেন মঞ্চে।’

ঢাকা মহানগর বিএনপির উত্তরের যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তফা জামান বলেন, ‘কমিটি পুনর্গঠন করা উচিত। যারা ব্যর্থ তাদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়ে যোগ্যদের সুযোগ দেওয়া উচিত। বড় আন্দোলনে যাওয়ার আগে নতুন কমিটি গঠন ও শূন্য নেতৃত্ব পূরণের বিকল্প নেই।’ ৩ ফেব্রুয়ারীর সংবাদের সাথে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। এরপর তিনি গোয়েন্দা পুলিশের হাতে আটক হন, বর্তমানে তিনি কারাগারে।

ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আ ন ম সাইফুল হক অভিযোগ করেন, ‘মহানগরের অনেক শক্তিধর ইউনিট ২৮ অক্টোবরের পর হঠাৎ ঝিমিয়ে পড়ে। এর কারণ খুঁজে বের করা উচিত সাংগঠনিক নেতাদের। না হলে ভবিষ্যতেও আন্দোলনেও একই চিত্র দেখা যাবে। দায়িত্বশীল নেতাদের কারণ ছাড়া উধাও হয়ে যাওয়া মানে কর্মীদের মনোবল ভেঙে যাওয়া। এখনও সময় আছে সিন্ডিকেট ভেঙে সংগঠনকে গতিশীল করার।’

ঢাকা জেলা বিএনপির একজন নেতা বলেন, ‘গত তিন মাসে একটি বড় পরীক্ষা হয়ে গেল। এতে যারা ফেল করেছে; তাদের বাদ দেওয়া উচিত। আর যারা পাস করেছে তাদের পুরস্কার হিসেবে নেতৃত্বে জায়গা দেওয়া উচিত। বড় একটি আন্দোলনের পর শীর্ষ নেতারা নিশ্চয়ই বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন।’ তিনি বলেন, ‘সংগঠন পুনর্গঠন নিয়ে তাগিদ অনুভব করছি। বড় কর্মসূচিতে যাওয়ার আগে এটি অবশ্যই দরকার। হরতাল-অবরোধে ঝুঁকি নিয়ে অনেকে মিছিল করেছে; আর অনেকে পদ নিয়ে ঘরে বসে ফেসবুক দেখেছে। অনেক সভাপতি সাধারণ স¤পাদককে খুঁজেই পাওয়া যায়নি।’

২০১৬ সালের ১৯ মার্চ ঢাকায় ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলন করেছিল বিএনপি। গঠনতান্ত্রিকভাবে তিন বছর পরপর এই সম্মেলন হওয়ার কথা। তবে সাত বছর পার হলেও সপ্তম জাতীয় সম্মেলন হয়নি। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন পর্যায়ের অনেক নেতা মারা গেছেন। নানা কারণে বাদ পড়েছেন কেউ কেউ। সব মিলিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির ১৩০টির মতো পদ শূন্য হয়ে আছে। শুধু তাই নয়, সাত বছরে কেন্দ্রীয় কমিটির সভা হয়েছে মাত্র একবার। ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ওই সভার পর কেটে গেছে আরও পাঁচ বছর। শুধু কেন্দ্র নয়, জেলা-উপজেলাসহ সব স্তরেই স্থবির হয়ে আছে বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম।

বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জেলা, উপজেলা ও পৌর কমিটির মেয়াদ দুই বছর। কিন্তু অধিকাংশ জেলা-উপজেলা কমিটির মেয়াদ ৩ থেকে ১০ বছরে গড়িয়েছে। সাংগঠনিক জেলার সংখ্যা ৮২। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী মাত্র ১০টিতে মূল কমিটি রয়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি আবার আংশিক। ৫২টি জেলা কমিটি চলছে আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে। বাকিগুলোর হালনাগাদ তথ্য নেই। সব মিলিয়ে ৫০টির বেশি জেলা কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির ১৯ পদের মধ্যে বর্তমানে শূন্য আছে পাঁচটি। এ ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যানের ১৩টি, উপদেষ্টা ১৫টি, স¤পাদক ও সহ-স¤পাদকসহ প্রায় একশ’র মতো পদ শূন্য হয়ে আছে।

এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, ‘সাংগঠনিক রদবদল কিংবা পুনর্গঠন একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এটি বছরব্যাপী চলে। প্রয়োজন ও পরিস্থিতি বিবেচনায় সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

বিএনপির কেন্দ্রিয় নেতারা বলছেন, এত বৈরী পরিবেশেও আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম চলছে। এখনও অনেক নেতা গ্রেফতার হচ্ছেন, কারাগারে আছেন, কেউ মারা গেছেন, কেউ কেউ অসুস্থ, অনেকে নিষ্ক্রিয় আছেন। সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে আমরা চেষ্টা করব সংগঠনকে পুনর্গঠন করতে।

ছবি

৯ রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা , জাতীয় সনদ ও গণভোটে দূরত্ব ঘোচানোর উদ্যোগ

ছবি

৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়ার প্রস্তুতিতে এনসিপি, জোট না হলে সরাসরি লড়াই

ছবি

পদ ছেড়ে ‘ভোট করবেন’ অ্যাটর্নি জেনারেল, বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ‘আশাবাদী’

ছবি

বিএনপিতে যোগ দিলেন শহীদ মুগ্ধের ভাই স্নিগ্ধ

মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপি নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ

ছবি

জাতীয় নির্বাচনে সেনাবাহিনীর সক্রিয় ভূমিকা ও পৃথক দিনে গণভোট চায় জামায়াতে ইসলামী

নীলফামারী ১ আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা না করায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া

ছবি

বরিশাল বিভাগে একমাত্র নারী প্রার্থী ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টো

ছবি

শেষ নির্বাচন ঘোষণা দিয়ে আবেগঘন বার্তা দিলেন বিএনপি মহাসচিব

ছবি

প্রার্থী ঘোষণা: সিলেট বিএনপিতে অস্থিরতা

ছবি

চাঁদপুরে জাতীয় পার্টি ও জাতীয় জাসদ থেকে শতাধিক নেতাকর্মীর এনসিপিতে যোগদান

ছবি

বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণার পর কোথাও আনন্দ, কোথাও বিক্ষোভ

ছবি

জামায়াত ‘যথাসময়ে’ চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা দেবে: শফিকুর রহমান

ছবি

জাতিসংঘকে নির্বাচনি সহায়তা স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ

ছবি

মাদারীপুর-১ আসনে কামাল জামান মোল্লার মনোনয়ন স্থগিত করেছে বিএনপি

ছবি

দিনাজপুর-৬ আসনে বিএনপির প্রার্থী ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন

ছবি

বরগুনার দু’টি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন নজরুল ও মনি

ছবি

কুড়িগ্রামে ৪টি আসনের বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা, নেতাকর্মীদের মাঝে উচ্ছ্বাস

ছবি

কুড়িগ্রামে ৪টি আসনের বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা, নেতাকর্মীদের মাঝে উচ্ছ্বাস

ছবি

নাসিরনগর বিএনপি প্রার্থী এমএ হান্নান

ছবি

সিরাজগঞ্জে বিএনপি ও জামায়াতের দলীয় মনোনায়ন পেয়ে প্রচারণায় নেমেছে

ছবি

কুড়িগ্রাম-৪ আসনে বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থী আপন দুই ভাইকে নিয়ে আলোচনার ঝড়

ছবি

রাজবাড়ী-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম

ছবি

নরসিংদীর ৪টি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যারা

ছবি

শেরপুর থেকে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যারা

ছবি

জয়পুরহাটে বিএনপির দুই প্রার্থী মাসুদ রানা ও আব্দুল বারী

ছবি

সিলেট বিএনপির প্রার্থী লুনা

ছবি

কিশোরগঞ্জের ৪টি আসনের বিএনপির প্রার্থীতা ঘোষণা

ছবি

কবিরহাটে ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার চালকসহ ছয়জন নিহত

ছবি

মেহেরপুরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও সড়ক অবরোধ

ছবি

এই নির্বাচন হয়তো আমার জীবনের শেষ” : মির্জা ফখরুল

ছবি

২৩৭ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা, তিন আসনে খালেদা জিয়া, একটিতে তারেক

ছবি

তিন দলকে নিবন্ধন দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন

ছবি

গণভোট নিয়ে সংলাপ চায় জামায়াতসহ ৮ দল, ইউনূসকে রেফারি হওয়ার প্রস্তাব বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি

ছবি

সীতাকুণ্ডে মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপি নেতার সমর্থকদের মহাসড়ক অবরোধ

ছবি

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন: ৫ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী দিচ্ছে বিএনপি

tab

দল পুনর্গঠনে নেতৃত্বে রদবদল চান বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীরা

মহসীন ইসলাম টুটুল

সোমবার, ০৪ মার্চ ২০২৪

২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশের পর থেকে আন্দোলনে নেতৃত্বের ব্যর্থতাই বেশি দেখছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা। তাই বড় আন্দোলনে যাওয়ার আগে নেতৃত্বের রদবদল চান তারা। বিশেষ করে তৃণমূল নেতাকর্মীরা ঢাকার নেতৃত্বের ওপর হতাশ। এক দফা আন্দোলনের ব্যর্থতার পর দলকে ঢেলে সাজাতে শীর্ষ নেতৃত্বকে তাগিদ দিচ্ছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। আন্দোলন এবং দলের সাংগঠনিক এই পরিস্থিতিতে মাঠ পর্যায়ের নেতাদের এমন উপলব্ধি প্রকাশ পেতে শুরু করেছে।

২০১৪ সালের পর থেকে বেশ কয়েকবার ঢাকার নেতৃত্বে রদবদল আনে বিএনপি। কিন্তু সফলতা আসেনি আশানুরূপ। এ কারণে ২০১৭ সালে ঢাকা মহানগরকে উত্তর ও দক্ষিণে ভাগ করে পৃথক দুটি কমিটি করা হয়। তাতেও কাজের কাজ কিছু হয়নি। সর্বশেষ ২০২১ সালের আগস্টে আমান উল্লাহ আমানকে আহ্বায়ক ও আমিনুল হককে সদস্য সচিব করে ঢাকা উত্তর এবং আবদুস সালামকে আহ্বায়ক ও রফিকুল ইসলাম মজনুকে সদস্য সচিব করে দক্ষিণের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এরই মধ্যে ঢাকা উত্তরের ৭১টি ওয়ার্ডের সব এবং দক্ষিণের ৮০টির মধ্যে ৫৬টিতে বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়েছে।

গাজীপুর মহানগর বিএনপির একজন নেতা বলেন, ‘বহির্বিশ^ আমাদের শীর্ষ নেতাকে নিয়ে একটু কানাঘুষা করছে। তারা যেভাবে নেতৃত্ব চান হয়তো সেভাবে সাজানো যাচ্ছে না।’ তবে তৃণমূলে কোনো সমস্যা নেই বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘কমিটি করতে হলে আগে ঢাকাকে ঢেলে সাজাতে হবে। এই সরকার আসার পর থেকে ঢাকা ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ। তাই ঢাকার নেতৃত্বে রদবদল করা উচিত।’ তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকার বাইরের লোক অর্থাৎ জেলার লোকজনকে নিয়ে এসে আমাদের পল্টনের মাঠ ভরতে হয়। আর ঢাকার নেতারা বসে থাকেন মঞ্চে।’

ঢাকা মহানগর বিএনপির উত্তরের যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তফা জামান বলেন, ‘কমিটি পুনর্গঠন করা উচিত। যারা ব্যর্থ তাদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়ে যোগ্যদের সুযোগ দেওয়া উচিত। বড় আন্দোলনে যাওয়ার আগে নতুন কমিটি গঠন ও শূন্য নেতৃত্ব পূরণের বিকল্প নেই।’ ৩ ফেব্রুয়ারীর সংবাদের সাথে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি। এরপর তিনি গোয়েন্দা পুলিশের হাতে আটক হন, বর্তমানে তিনি কারাগারে।

ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আ ন ম সাইফুল হক অভিযোগ করেন, ‘মহানগরের অনেক শক্তিধর ইউনিট ২৮ অক্টোবরের পর হঠাৎ ঝিমিয়ে পড়ে। এর কারণ খুঁজে বের করা উচিত সাংগঠনিক নেতাদের। না হলে ভবিষ্যতেও আন্দোলনেও একই চিত্র দেখা যাবে। দায়িত্বশীল নেতাদের কারণ ছাড়া উধাও হয়ে যাওয়া মানে কর্মীদের মনোবল ভেঙে যাওয়া। এখনও সময় আছে সিন্ডিকেট ভেঙে সংগঠনকে গতিশীল করার।’

ঢাকা জেলা বিএনপির একজন নেতা বলেন, ‘গত তিন মাসে একটি বড় পরীক্ষা হয়ে গেল। এতে যারা ফেল করেছে; তাদের বাদ দেওয়া উচিত। আর যারা পাস করেছে তাদের পুরস্কার হিসেবে নেতৃত্বে জায়গা দেওয়া উচিত। বড় একটি আন্দোলনের পর শীর্ষ নেতারা নিশ্চয়ই বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন।’ তিনি বলেন, ‘সংগঠন পুনর্গঠন নিয়ে তাগিদ অনুভব করছি। বড় কর্মসূচিতে যাওয়ার আগে এটি অবশ্যই দরকার। হরতাল-অবরোধে ঝুঁকি নিয়ে অনেকে মিছিল করেছে; আর অনেকে পদ নিয়ে ঘরে বসে ফেসবুক দেখেছে। অনেক সভাপতি সাধারণ স¤পাদককে খুঁজেই পাওয়া যায়নি।’

২০১৬ সালের ১৯ মার্চ ঢাকায় ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলন করেছিল বিএনপি। গঠনতান্ত্রিকভাবে তিন বছর পরপর এই সম্মেলন হওয়ার কথা। তবে সাত বছর পার হলেও সপ্তম জাতীয় সম্মেলন হয়নি। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটির বিভিন্ন পর্যায়ের অনেক নেতা মারা গেছেন। নানা কারণে বাদ পড়েছেন কেউ কেউ। সব মিলিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির ১৩০টির মতো পদ শূন্য হয়ে আছে। শুধু তাই নয়, সাত বছরে কেন্দ্রীয় কমিটির সভা হয়েছে মাত্র একবার। ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ওই সভার পর কেটে গেছে আরও পাঁচ বছর। শুধু কেন্দ্র নয়, জেলা-উপজেলাসহ সব স্তরেই স্থবির হয়ে আছে বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম।

বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জেলা, উপজেলা ও পৌর কমিটির মেয়াদ দুই বছর। কিন্তু অধিকাংশ জেলা-উপজেলা কমিটির মেয়াদ ৩ থেকে ১০ বছরে গড়িয়েছে। সাংগঠনিক জেলার সংখ্যা ৮২। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী মাত্র ১০টিতে মূল কমিটি রয়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি আবার আংশিক। ৫২টি জেলা কমিটি চলছে আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে। বাকিগুলোর হালনাগাদ তথ্য নেই। সব মিলিয়ে ৫০টির বেশি জেলা কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির ১৯ পদের মধ্যে বর্তমানে শূন্য আছে পাঁচটি। এ ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যানের ১৩টি, উপদেষ্টা ১৫টি, স¤পাদক ও সহ-স¤পাদকসহ প্রায় একশ’র মতো পদ শূন্য হয়ে আছে।

এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, ‘সাংগঠনিক রদবদল কিংবা পুনর্গঠন একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এটি বছরব্যাপী চলে। প্রয়োজন ও পরিস্থিতি বিবেচনায় সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

বিএনপির কেন্দ্রিয় নেতারা বলছেন, এত বৈরী পরিবেশেও আমাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম চলছে। এখনও অনেক নেতা গ্রেফতার হচ্ছেন, কারাগারে আছেন, কেউ মারা গেছেন, কেউ কেউ অসুস্থ, অনেকে নিষ্ক্রিয় আছেন। সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে আমরা চেষ্টা করব সংগঠনকে পুনর্গঠন করতে।

back to top