বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা বাদ দিলে বড় কোনো গোলযোগ ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলো উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপের ভোটগ্রহণ। চতুর্থ ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৩৪.৩৩ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য জানান তিনি। এর আগে দুপুরে ইসি সচিব শফিউল আজিম জানিয়েছিলেন প্রথম চার ঘণ্টায় ১৭.৩১ শতাংশ ভোট পড়েছে।
ভোটের পরে সাংবাদিকদের সিইসি বলেন, ‘৬০ উপজেলায় ভোট হয়েছে। ভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে। কিছু ইনসিডেন্ট হয়েছে। এজন্য ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছি, ৯ জনকে বিভিন্ন অপরাধে দণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া ব্যালটবাক্স ছিনতাইয়ের ঘটনায় ভৈরব উপজেলায় ভোট স্থগিত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সহিংসতার কথা যদি বলি খুব মাইনর আহত হয়েছেন, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার কারণে। বরিশালে ৫ জন আহত হয়েছে। ওখানে একটু কোপাকুপি হয়েছে। খ্বু গুরুতর নয়। তবে মাইনরের চেয়ে একটু বেশি। নেত্রকোণার কেন্দুয়াতে একজন প্রিজাইডিং অফিসার নিজেই ব্যালট পেপারে সিল মেরেছিলেন তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। টোটাল জাল ভোটের ইনসিডেন্ট ঘটেছে পাঁচটি। ইভিএমে যেখানে ভোট হয়েছে, সেখানে কোনো ইনসিডেন্ট হয়নি।’
গতকাল সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দেশের ৬০ উপজেলায় একযোগে ভোটগ্রহণ চলে। এবার দেশের ৪৯৫টি উপজেলার মধ্যে নির্বাচন উপযোগী ৪৮৫ উপজেলায় চার ধাপে ভোট হয়েছে। এর আগের তিন ধাপে ৩৮২টি উপজেলায় ভোট সম্পন্ন হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে তৃতীয় ধাপের ২০ উপজেলার নির্বাচন স্থগিত করা হয়। আগামী ৯ জুন স্থগিত হওয়া উপজেলাগুলোতে ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
চতুর্থ ধাপে ৬০ উপজেলায় ৩ পদে মোট ৭২১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ২৫১ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৬৫ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২০৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
চতুর্থ ধাপের নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, ভোট কেন্দ্রের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ৬৭ হাজার ৭০৭ জন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন ছিল। পাশাপাশি নির্বাচনী এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ১৭৫ প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করেছে।
ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনে প্রথম ধাপে ২২, দ্বিতীয় ধাপে ২৪, তৃতীয় ধাপে ১৬ ও চতুর্থ ধাপে ৬ উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) এবং বাকিগুলোতে ব্যালট পেপারে ভোটগ্রহণ হয়েছে। এবার এই ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম ধাপে ২৮ জন, দ্বিতীয় ধাপে ২২ জন, তৃতীয় ধাপে ১২ জন এবং চতুর্থ ধাপে ৬ জন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
ইস’র তথ্য অনুযায়ী, ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলা নির্বাচনে ভোট পড়ে ৩৬.১ শতাংশ, এরপর ২১ মে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে ভোট পড়ে ৩৭.৫৭ শতাংশ এবং ২৯ মে তৃতীয় ধাপে ৮৭ উপজেলায় ৩৬.২৪ শতাংশ ভোট পড়ে। আর গতকাল চতুর্থ ধাপে ৬০ উপজেলায় ৩৪.৩৩ শতাংশ ভোট পড়ে।
২০০৯ সালে তৃতীয় উপজেলা নির্বাচনে ৬৭.৬৯ শতাংশ ভোট পড়ে, ২০১৪ সালে চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনে ৬১ শতাংশ এবং ২০১৯ সালে পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনে ৪১ শতাংশ ভোট পড়ে। গত দেড় দশকের মধ্যে স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে ভোটের হার এবারই সবচেয়ে কম।
আওয়ামী লীগ নৌকা প্রতীক না দিয়ে নিজ দলের সবাইকে উন্মুক্ত নির্বাচন করার নির্দেশ দিয়েছে। যাতে নিজেদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা সৃষ্টি হয়, ভোটের হার বাড়ানো যায়। বিএনপি ভোট বর্জন করেছে। তবে বিএনপির অনেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছেন। একারনে দলটি তাদের দুইশতাধিক নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করে।
ভোট নিয়ে সন্তুষ্ট কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে, এটা নিয়ে সন্তুষ্ট। তবে পলিটিক্যাল (রাজনৈতিক) বিচার বিশ্লেষণ করবো না।’
বুধবার, ০৫ জুন ২০২৪
বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা বাদ দিলে বড় কোনো গোলযোগ ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হলো উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপের ভোটগ্রহণ। চতুর্থ ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৩৪.৩৩ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য জানান তিনি। এর আগে দুপুরে ইসি সচিব শফিউল আজিম জানিয়েছিলেন প্রথম চার ঘণ্টায় ১৭.৩১ শতাংশ ভোট পড়েছে।
ভোটের পরে সাংবাদিকদের সিইসি বলেন, ‘৬০ উপজেলায় ভোট হয়েছে। ভোট শান্তিপূর্ণ হয়েছে। কিছু ইনসিডেন্ট হয়েছে। এজন্য ২৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছি, ৯ জনকে বিভিন্ন অপরাধে দণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া ব্যালটবাক্স ছিনতাইয়ের ঘটনায় ভৈরব উপজেলায় ভোট স্থগিত করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সহিংসতার কথা যদি বলি খুব মাইনর আহত হয়েছেন, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার কারণে। বরিশালে ৫ জন আহত হয়েছে। ওখানে একটু কোপাকুপি হয়েছে। খ্বু গুরুতর নয়। তবে মাইনরের চেয়ে একটু বেশি। নেত্রকোণার কেন্দুয়াতে একজন প্রিজাইডিং অফিসার নিজেই ব্যালট পেপারে সিল মেরেছিলেন তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। টোটাল জাল ভোটের ইনসিডেন্ট ঘটেছে পাঁচটি। ইভিএমে যেখানে ভোট হয়েছে, সেখানে কোনো ইনসিডেন্ট হয়নি।’
গতকাল সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দেশের ৬০ উপজেলায় একযোগে ভোটগ্রহণ চলে। এবার দেশের ৪৯৫টি উপজেলার মধ্যে নির্বাচন উপযোগী ৪৮৫ উপজেলায় চার ধাপে ভোট হয়েছে। এর আগের তিন ধাপে ৩৮২টি উপজেলায় ভোট সম্পন্ন হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় রিমালের কারণে তৃতীয় ধাপের ২০ উপজেলার নির্বাচন স্থগিত করা হয়। আগামী ৯ জুন স্থগিত হওয়া উপজেলাগুলোতে ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
চতুর্থ ধাপে ৬০ উপজেলায় ৩ পদে মোট ৭২১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। এদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ২৫১ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৬৫ জন এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২০৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
চতুর্থ ধাপের নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, ভোট কেন্দ্রের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ৬৭ হাজার ৭০৭ জন বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন ছিল। পাশাপাশি নির্বাচনী এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার্থে ১৭৫ প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করেছে।
ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনে প্রথম ধাপে ২২, দ্বিতীয় ধাপে ২৪, তৃতীয় ধাপে ১৬ ও চতুর্থ ধাপে ৬ উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) এবং বাকিগুলোতে ব্যালট পেপারে ভোটগ্রহণ হয়েছে। এবার এই ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম ধাপে ২৮ জন, দ্বিতীয় ধাপে ২২ জন, তৃতীয় ধাপে ১২ জন এবং চতুর্থ ধাপে ৬ জন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
ইস’র তথ্য অনুযায়ী, ৮ মে প্রথম ধাপে ১৩৯ উপজেলা নির্বাচনে ভোট পড়ে ৩৬.১ শতাংশ, এরপর ২১ মে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে ভোট পড়ে ৩৭.৫৭ শতাংশ এবং ২৯ মে তৃতীয় ধাপে ৮৭ উপজেলায় ৩৬.২৪ শতাংশ ভোট পড়ে। আর গতকাল চতুর্থ ধাপে ৬০ উপজেলায় ৩৪.৩৩ শতাংশ ভোট পড়ে।
২০০৯ সালে তৃতীয় উপজেলা নির্বাচনে ৬৭.৬৯ শতাংশ ভোট পড়ে, ২০১৪ সালে চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনে ৬১ শতাংশ এবং ২০১৯ সালে পঞ্চম উপজেলা নির্বাচনে ৪১ শতাংশ ভোট পড়ে। গত দেড় দশকের মধ্যে স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে ভোটের হার এবারই সবচেয়ে কম।
আওয়ামী লীগ নৌকা প্রতীক না দিয়ে নিজ দলের সবাইকে উন্মুক্ত নির্বাচন করার নির্দেশ দিয়েছে। যাতে নিজেদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা সৃষ্টি হয়, ভোটের হার বাড়ানো যায়। বিএনপি ভোট বর্জন করেছে। তবে বিএনপির অনেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছেন। একারনে দলটি তাদের দুইশতাধিক নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করে।
ভোট নিয়ে সন্তুষ্ট কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে, এটা নিয়ে সন্তুষ্ট। তবে পলিটিক্যাল (রাজনৈতিক) বিচার বিশ্লেষণ করবো না।’