বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে অস্ত্র ও বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনায় পল্টন থানার মামলায় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কাজি রওনকুল ইসলাম শ্রাবণসহ সাতজনকে দুই দিনের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।
বুধবার আসামিদের আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড চাওয়া হলেও ঢাকা মহানগর হাকিম শান্ত ইসলাম মল্লিক শুনানি শেষে প্রত্যেকের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বিচারক হাই কোর্টের নির্দেশনা মেনে সতর্কতার সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদিন মেজবাহ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এসব তথ্য জানান।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় মঙ্গলবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে পুলিশ কার্যালয় থেকে ককটেলসহ বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারের দাবি করে। এ ঘটনায় বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ২০০-৩০০ জনকে আসামি করে পল্টন থানায় মামলা করা হয়।
আদালতে রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, মঙ্গলবার রাত ১২টা ১৫ মিনিটের সময় বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে ১০৫টি অবিস্ফোরিত ককটেল, দুটি পাইপগান, তিনটি ওয়ান সুটারগান, একটি পুরাতন ওয়ান সুটারগান, ম্যাগাজিনসহ একটি পিস্তল, এক রাউন্ড গুলি এবং ২১০টি বাঁশের লাঠি উদ্ধার করা হয়।
রিমান্ডে নেওয়া সাতজনের মধ্যে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি কাজি রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ (৩৮), মহানগর দক্ষিণ সেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মো. নজরুল ইসলাম (৪৭), তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মো. ইমাম হোসেন (৩০), বিএনপি কর্মী মো. শাহাদাত হোসেন (৩২), মো. টেনু (৩৮), মো. মনির হোসেন (২৫), ও বিএনপি পার্টি অফিসের স্টাফ বরকত হাওলাদার (৩৭)।
আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড আবেদন বাতিল করে জামিন চান এবং বলেন, বিএনপি অফিস থেকে বিস্ফোরক ও অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা বানোয়াট। তারা অভিযোগ করেন, পুলিশ এসব এনে বিএনপি অফিসে জমা করে উদ্ধার দেখিয়েছে, যে কারণে কোনো গণমাধ্যমকে এ ঘটনা জানানো হয়নি এবং ঘটনাস্থলে কোনো গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিত ছিলেন না।
বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা দাবি করেন, শান্তিপূর্ণ কোটা আন্দোলনকে নস্যাৎ করে বিএনপির ঘাড়ে দায় চাপানোর উদ্দেশ্যে এ মিথ্যা ঘটনা সাজানো হয়েছে। আসামিরা নির্দোষ বলে দাবি করে তারা রিমান্ড বাতিলের আবেদন জানান।
আসামি বরকত হাওলাদার আদালতে বলেন, তিনি বিএনপি অফিসের স্টাফ এবং কোনো অপরাধ করেননি। সাবেক ছাত্রদল নেতা শ্রাবণ বলেন, তিনি ছাত্রলীগ-যুবলীগের হামলায় আহত হয়ে বাসায় ছিলেন এবং তাকে গভীর রাতে বাসা থেকে ধরে এনে মামলায় জড়ানো হয়েছে।
মহানগর দক্ষিণ সেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মো. নজরুল ইসলাম আদালতকে জানান, তাকে বাজার করতে যাওয়ার সময় শান্তিনগর বাজার থেকে ধরে আনা হয়েছে এবং এ মামলার বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
অন্য একজন আসামি বলেন, তিনি ফুটপাতে প্লাস্টিকের জিনিসপত্র বিক্রি করেন এবং কোনো অপরাধ করেননি। তিনি ন্যায় বিচার দাবি করেন।
প্রায় ৪০ মিনিট শুনানি শেষে বিচারক শান্ত ইসলাম মল্লিক প্রত্যেককে দুই দিন করে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন।