alt

‘নিষ্ক্রিয়, ব্যর্থদের তালিকা যেন সঠিক হয়’-দাবি আ’লীগ তৃণমূলের

ফয়েজ আহমেদ তুষার : শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

কোটা সংস্কার আন্দোলনে ‘বিএনপি-জামায়াতের নাশকতা প্রতিরোধে’ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার নির্দেশনা দেয়া হলেও মাঠে নামেননি অনেক এলাকার নেতাকর্মীরা। এমন অভিযোগ দলের অভ্যন্তরেই উঠেছে। বলা হচ্ছে, পদ-পদবি নিয়ে, সরকারের সুবিধা নিয়ে এতদিন ‘রাজার হালে চলা’ অনেক নেতাই আন্দোলনের কয়েকদিন গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন। মাঠে ছিলেন না ওই নেতাদের কর্মী-সমর্থকরাও।

অভিযোগ আমলে নিয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। এটি দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা হিসেবেও দেখছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। মাঠে না থাকা নেতাকর্মীদের তালিকা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, দলের পদ নিয়ে যারা ঘরে বসেছিলেন, সংকটকালে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছেন, তাদের তালিকা করা হচ্ছে। সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তবে ওই তালিকা করা নিয়ে তৃণমূল কর্মীদের রয়েছে নানা সংশয়। দাবি উঠেছে, সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে তালিকা করার এবং যারা মাঠে ছিলেন না তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার।

তারা বলছেন, ‘কমিটি গঠনে স্বজনপ্রীতি, অর্থের প্রভাব এবং নিজস্ব বলয় বাড়ানোর অপসংস্কৃতি এখন ওপেন-সিক্রেট। ফলে হর-হামেশই ঘটছে ভিন্ন মতের অনুপ্রবেশ।’ মাঠে না থাকা কর্মীদের তালিকা করার ক্ষেত্রে যাতে এই অপসংস্কৃতির পুনারাবৃত্তি না হয়, কেন্দ্র থেকে এ বিষয়ে নজরদারি বাড়ানোর প্রয়োজন বলেও মনে করছেন তারা।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অবশ্য বলেছেন, কারা মাঠে ছিলেন না সে তথ্য তাদের (কেন্দ্রের) কাছে আছে। তবে ওই তথ্য কীভাবে পাওয়া গেছে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে তৃণমূল কর্মীদের। গত কয়েকদিনের আন্দোলনে আওয়ামী লীগের যারা মাঠে ছিলেন, তাদের মধ্যে কারো কারো মতে ওই তালিকা প্রকাশ করা উচিৎ। যাতে সত্য-মিথ্যা যাচাই করার সুযোগ পায় সবাই।

তালিকার বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এক নেতা সংবাদকে বলেন, ‘এখন তো এসব বিষয়ে কথা বলা আসলে...আমাদের সাধারণ সম্পাদকতো বলেছেনই, তালিকা হচ্ছে। বিভিন্নভাবে খোঁজ নেয়া হচ্ছে কারা মাঠে ছিলেন, কারা ছিলেন না। নানক ভাইয়ের ওখানে তো কতগুলো কমিটি বিলুপ্ত করা হলো। কারণ কী? তারা মাঠে ছিল না।’

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, ২৫ জুলাই বৃহস্পতিবার রাতে আভ্যন্তরীণ বৈঠক করে মোহাম্মদপুর, আদাবর ও শেরেবাংলা নগর থানার ২৭টি ইউনিট কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে। সূত্র বলছে, এসব ইউনিটের নেতারা আন্দোলনের সময় গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন।

এই তিনটি থানা আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের আসন ঢাকা-১৩ এর অধীনে। তিনি সরকারের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্বেও আছেন।

এই তিনটি থানার অন্তর্গত ৮টি ওয়ার্ডে ১২৬ ইউনিট কমিটি রয়েছে। এরমধ্যে ২৭টি কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে ঢাকা উত্তরের কেন্দ্রীয় এক নেতা সংবাদকে বলেন, ‘এসব ইউনিটের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা আন্দোলন মোকাবিলায় সরাসরি অংশ নেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। এই প্রেক্ষিতে এসব ইউনিটের কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ সংক্রান্ত বৈঠক হয়েছে মোহাম্মদুপরে, সূচনা কমিউনিটি সেন্টারে। সেখানে নানক (জাহাঙ্গীর কবির নানক) ভাই ছিলেন। উত্তরের সভাপতি শেখ ফজলুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক রানাও ছিলেন। বৈঠকে স্থানীয় কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন। থানা-ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরাও উপস্থিত ছিলেন। পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠেছে বৈঠকে। আপাতত কমিটি বাতিল করে দেয়া হয়েছে। আর খোঁজখবর নেয়া হবে।’

মোহাম্মদপুর, আদাবর ও শেরেবাংলা নগরে যেভাবে ইউনিট ভেঙে দেয়া হলো, ঢাকার অন্যান্য এলাকায় এমন কিছু করা হবে কিনা, জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের ওই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘তালিকা যেহেতু হচ্ছে, অ্যাকশন তো হবেই।’

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সাম্প্রতিক আন্দোলনে দেশ প্রায় অচল হয়ে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ব্যাপক সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ এবং হতাহতের ঘটনা ঘটে।

ক্ষমতাসীন দল থেকে নির্দেশনা আসে- ‘দলের এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সব সংগঠনের নেতাকর্মীদের পাড়া-মহল্লায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে’। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ দলের এবং সব সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে ‘প্রস্তুত থাকতে বলেন, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বলেন’।

মাঠে না থাকা নেতাদের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে কথা হয় দলের বিভিন্ন উপকমিটিতে থাকা নেতাদের সঙ্গে। সাম্প্রতিক আন্দোলনে মাঠে ছিলেন এমন দাবি করে এক নেতা সংবাদকে বলেন, ‘আমরা কয়েকজনতো কেরানীগঞ্জ থেকে এসেছি। ঢাকা দক্ষিণে তো ট্যাকল দেয়ার লোক ছিল না।’

তার সঙ্গে থাকা আরেকজন (ছাত্রলীগের সাবেক নেতা) বলেন, ‘কেরানীগঞ্জ থেকে ৫০০ ডেডিকেটেড কর্মী ঢাকায় এসেছে। না হলে খবর ছিল। আমরা এরপর বিভিন্ন এলাকায় ভাগ করে মাঠে ছিলাম।’

তালিকা করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আরে ভাই কিসের তালিকা। ক্রাইসিস কি কেটে গেছে। এখন সবাইকে বুঝিয়ে লাইনে আনা হবে। এসব তালিকা-ফালিকা কিছু না। যারা মাঠে ছিলাম তারাই এখন সংখ্যালঘু। যারা লুকিয়ে ছিল সবাই ফিরে এসেছে। আবার তাদের জয়-জয়কার শুরু হয়ে গেছে। আপনি দেখেন না! কাদের ভাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে বলছে। পাহাড়ায় থাকতে বলছে। এখনতো সবাইকেই প্রয়োজন।’

ছবি

সনদ বাস্তবায়নে প্রথম প্রস্তাবটি গ্রহণ করতে হবে: সরকারকে এনসিপি

ছবি

ক্ষমা চাইতে নারাজ, সমর্থকদের ভোট বর্জনের হুঁশিয়ারি হাসিনার

ছবি

ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ: হতাশ বিএনপি, বললো ‘প্রতারণা’

ছবি

উখিয়া-টেকনাফে ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করতে ঐক্যবদ্ধ হোন

ছবি

জুলাই সনদে সইয়ে যেসব শর্ত দিলো এনসিপি

ছবি

গণভোট আয়োজনের প্রস্তাবসহ নির্বাচন কমিশনকে জামায়াতের ১৮ দফা সুপারিশ

ছবি

আইসিসিতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর ‘সহিংসতা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের’ অভিযোগ

ছবি

জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের সুযোগ নেই: আমীর খসরু

ছবি

ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশে ‘বহির্ভূত বিষয়’ যুক্তের অভিযোগ বিএনপির সালাহউদ্দিনের

ছবি

বিএনপির অবস্থান স্পষ্ট: নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে

ছবি

এনসিপির শর্তে জুলাই সনদে সইয়ের ঘোষণা

ছবি

গণভোটে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ, সাংবিধানিক আদেশ চায় ঐকমত্য কমিশন

ছবি

অস্ত্র মামলায় যুবলীগের সাবেক নেতা সম্রাটের যাবজ্জীবন

ছবি

নির্বাচন: ভোটকেন্দ্রে থাকবে ১৩ জন আনসার, প্রিজাইডিং কর্মকর্তার নিরাপত্তায় থাক‌বে একজন সশস্ত্র আনসার

ছবি

ইসলামী ব্যাংক কর্মীদের নির্বাচনী দায়িত্ব না দিতে ‘বিএনপির আহ্বানে’ জামায়াতের উদ্বেগ

ছবি

সমাবেশে বক্তাদের হুঁশিয়ারি, বিদেশিদের বন্দর দেয়ার সিদ্ধান্ত না পাল্টালে তীব্র আন্দোলন

ছবি

রংপুর বিভাগের ৩৩ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে তারেকের রুদ্ধদ্বার বৈঠক

ছবি

রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির শতাধিক নেতা কর্মীর বিএনপিতে যোগদান

ছবি

নির্বাচনী জোট নিয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়নি এনসিপি: সারজিস

ছবি

বিএনপি যুবকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সুযোগ্য করে গড়ে তুলতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ : ডঃ মঈন খান

ছবি

বিএনপি ক্ষমতায় এলে বিলুপ্ত হবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ: আমীর খসরু

ছবি

ঘিওরে বিএনপির ৩১ দফা প্রচারে পথসভা

ছবি

বিএনপির লক্ষ্য ‘বৃহৎ জোট গঠন’, বললেন সালাহউদ্দিন আহমদ

ছবি

মাহফুজ আলমের বক্তব্যে বিভ্রান্তি এড়াতে অন্তর্বর্তী সরকারের বিবৃতি

ছবি

ভবিষ্যতে প্রশ্ন উঠতে পারে, এমন কিছুতে যাওয়া ঠিক হবে না: সালাহউদ্দিন আহমদ

ছবি

‘আপত্তিকর মন্তব্যের’ অভিযোগ, পুবাইল থানার ওসির শাস্তি দাবি জামায়াতের

পিএসসি স্বায়ত্তশাসন চাইলেও জনপ্রশাসন ‘গুম চালায়’: হাসনাত

ছবি

জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নেয়া মানেই আওয়ামী লীগ নির্বাচনে: আখতার

ছবি

‘জোট করলেও ভোট দলীয় প্রতীকে’: বিএনপির আপত্তি, ইসিকে চিঠি

ছবি

সংসদ নির্বাচন ঘিরে নিরাপত্তা ও পরিবেশ নিয়ে খোঁজ নিল কমনওয়েলথ প্রতিনিধি দল

ছবি

দেশের অশান্তি সৃষ্টির জন্য বিদেশ থেকে অর্থ পাঠানো হচ্ছে: অলি আহমদ

ছবি

দলগুলোর মধ্যে ‘কোনো বিভেদ নেই’: আমীর খসরু

ছবি

শফিকের বিরুদ্ধে ‘আপত্তিকর মন্তব্যের’ অভিযোগ, পুবাইল থানার ওসির শাস্তি দাবি জামায়াতের

ছবি

আরপিও সংশোধনে আপত্তি বিএনপির: জোটবদ্ধ দলগুলোর প্রতীকে ভোটের সুযোগ রাখার দাবি

ছবি

সনদ বাস্তবায়নে বিএনপির বাধা, নির্বাচনকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

ছবি

‘জুলাই সনদে স্বাক্ষরকারী’ দলগুলোর ঐক্য চান ফখরুল

tab

‘নিষ্ক্রিয়, ব্যর্থদের তালিকা যেন সঠিক হয়’-দাবি আ’লীগ তৃণমূলের

ফয়েজ আহমেদ তুষার

শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

কোটা সংস্কার আন্দোলনে ‘বিএনপি-জামায়াতের নাশকতা প্রতিরোধে’ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার নির্দেশনা দেয়া হলেও মাঠে নামেননি অনেক এলাকার নেতাকর্মীরা। এমন অভিযোগ দলের অভ্যন্তরেই উঠেছে। বলা হচ্ছে, পদ-পদবি নিয়ে, সরকারের সুবিধা নিয়ে এতদিন ‘রাজার হালে চলা’ অনেক নেতাই আন্দোলনের কয়েকদিন গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন। মাঠে ছিলেন না ওই নেতাদের কর্মী-সমর্থকরাও।

অভিযোগ আমলে নিয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। এটি দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা হিসেবেও দেখছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। মাঠে না থাকা নেতাকর্মীদের তালিকা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, দলের পদ নিয়ে যারা ঘরে বসেছিলেন, সংকটকালে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছেন, তাদের তালিকা করা হচ্ছে। সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তবে ওই তালিকা করা নিয়ে তৃণমূল কর্মীদের রয়েছে নানা সংশয়। দাবি উঠেছে, সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে তালিকা করার এবং যারা মাঠে ছিলেন না তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার।

তারা বলছেন, ‘কমিটি গঠনে স্বজনপ্রীতি, অর্থের প্রভাব এবং নিজস্ব বলয় বাড়ানোর অপসংস্কৃতি এখন ওপেন-সিক্রেট। ফলে হর-হামেশই ঘটছে ভিন্ন মতের অনুপ্রবেশ।’ মাঠে না থাকা কর্মীদের তালিকা করার ক্ষেত্রে যাতে এই অপসংস্কৃতির পুনারাবৃত্তি না হয়, কেন্দ্র থেকে এ বিষয়ে নজরদারি বাড়ানোর প্রয়োজন বলেও মনে করছেন তারা।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অবশ্য বলেছেন, কারা মাঠে ছিলেন না সে তথ্য তাদের (কেন্দ্রের) কাছে আছে। তবে ওই তথ্য কীভাবে পাওয়া গেছে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে তৃণমূল কর্মীদের। গত কয়েকদিনের আন্দোলনে আওয়ামী লীগের যারা মাঠে ছিলেন, তাদের মধ্যে কারো কারো মতে ওই তালিকা প্রকাশ করা উচিৎ। যাতে সত্য-মিথ্যা যাচাই করার সুযোগ পায় সবাই।

তালিকার বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এক নেতা সংবাদকে বলেন, ‘এখন তো এসব বিষয়ে কথা বলা আসলে...আমাদের সাধারণ সম্পাদকতো বলেছেনই, তালিকা হচ্ছে। বিভিন্নভাবে খোঁজ নেয়া হচ্ছে কারা মাঠে ছিলেন, কারা ছিলেন না। নানক ভাইয়ের ওখানে তো কতগুলো কমিটি বিলুপ্ত করা হলো। কারণ কী? তারা মাঠে ছিল না।’

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, ২৫ জুলাই বৃহস্পতিবার রাতে আভ্যন্তরীণ বৈঠক করে মোহাম্মদপুর, আদাবর ও শেরেবাংলা নগর থানার ২৭টি ইউনিট কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে। সূত্র বলছে, এসব ইউনিটের নেতারা আন্দোলনের সময় গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন।

এই তিনটি থানা আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের আসন ঢাকা-১৩ এর অধীনে। তিনি সরকারের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্বেও আছেন।

এই তিনটি থানার অন্তর্গত ৮টি ওয়ার্ডে ১২৬ ইউনিট কমিটি রয়েছে। এরমধ্যে ২৭টি কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে ঢাকা উত্তরের কেন্দ্রীয় এক নেতা সংবাদকে বলেন, ‘এসব ইউনিটের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা আন্দোলন মোকাবিলায় সরাসরি অংশ নেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। এই প্রেক্ষিতে এসব ইউনিটের কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ সংক্রান্ত বৈঠক হয়েছে মোহাম্মদুপরে, সূচনা কমিউনিটি সেন্টারে। সেখানে নানক (জাহাঙ্গীর কবির নানক) ভাই ছিলেন। উত্তরের সভাপতি শেখ ফজলুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক রানাও ছিলেন। বৈঠকে স্থানীয় কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন। থানা-ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরাও উপস্থিত ছিলেন। পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠেছে বৈঠকে। আপাতত কমিটি বাতিল করে দেয়া হয়েছে। আর খোঁজখবর নেয়া হবে।’

মোহাম্মদপুর, আদাবর ও শেরেবাংলা নগরে যেভাবে ইউনিট ভেঙে দেয়া হলো, ঢাকার অন্যান্য এলাকায় এমন কিছু করা হবে কিনা, জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের ওই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘তালিকা যেহেতু হচ্ছে, অ্যাকশন তো হবেই।’

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সাম্প্রতিক আন্দোলনে দেশ প্রায় অচল হয়ে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ব্যাপক সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ এবং হতাহতের ঘটনা ঘটে।

ক্ষমতাসীন দল থেকে নির্দেশনা আসে- ‘দলের এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সব সংগঠনের নেতাকর্মীদের পাড়া-মহল্লায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে’। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ দলের এবং সব সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে ‘প্রস্তুত থাকতে বলেন, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বলেন’।

মাঠে না থাকা নেতাদের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে কথা হয় দলের বিভিন্ন উপকমিটিতে থাকা নেতাদের সঙ্গে। সাম্প্রতিক আন্দোলনে মাঠে ছিলেন এমন দাবি করে এক নেতা সংবাদকে বলেন, ‘আমরা কয়েকজনতো কেরানীগঞ্জ থেকে এসেছি। ঢাকা দক্ষিণে তো ট্যাকল দেয়ার লোক ছিল না।’

তার সঙ্গে থাকা আরেকজন (ছাত্রলীগের সাবেক নেতা) বলেন, ‘কেরানীগঞ্জ থেকে ৫০০ ডেডিকেটেড কর্মী ঢাকায় এসেছে। না হলে খবর ছিল। আমরা এরপর বিভিন্ন এলাকায় ভাগ করে মাঠে ছিলাম।’

তালিকা করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আরে ভাই কিসের তালিকা। ক্রাইসিস কি কেটে গেছে। এখন সবাইকে বুঝিয়ে লাইনে আনা হবে। এসব তালিকা-ফালিকা কিছু না। যারা মাঠে ছিলাম তারাই এখন সংখ্যালঘু। যারা লুকিয়ে ছিল সবাই ফিরে এসেছে। আবার তাদের জয়-জয়কার শুরু হয়ে গেছে। আপনি দেখেন না! কাদের ভাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে বলছে। পাহাড়ায় থাকতে বলছে। এখনতো সবাইকেই প্রয়োজন।’

back to top