alt

‘নিষ্ক্রিয়, ব্যর্থদের তালিকা যেন সঠিক হয়’-দাবি আ’লীগ তৃণমূলের

ফয়েজ আহমেদ তুষার : শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

কোটা সংস্কার আন্দোলনে ‘বিএনপি-জামায়াতের নাশকতা প্রতিরোধে’ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার নির্দেশনা দেয়া হলেও মাঠে নামেননি অনেক এলাকার নেতাকর্মীরা। এমন অভিযোগ দলের অভ্যন্তরেই উঠেছে। বলা হচ্ছে, পদ-পদবি নিয়ে, সরকারের সুবিধা নিয়ে এতদিন ‘রাজার হালে চলা’ অনেক নেতাই আন্দোলনের কয়েকদিন গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন। মাঠে ছিলেন না ওই নেতাদের কর্মী-সমর্থকরাও।

অভিযোগ আমলে নিয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। এটি দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা হিসেবেও দেখছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। মাঠে না থাকা নেতাকর্মীদের তালিকা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, দলের পদ নিয়ে যারা ঘরে বসেছিলেন, সংকটকালে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছেন, তাদের তালিকা করা হচ্ছে। সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তবে ওই তালিকা করা নিয়ে তৃণমূল কর্মীদের রয়েছে নানা সংশয়। দাবি উঠেছে, সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে তালিকা করার এবং যারা মাঠে ছিলেন না তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার।

তারা বলছেন, ‘কমিটি গঠনে স্বজনপ্রীতি, অর্থের প্রভাব এবং নিজস্ব বলয় বাড়ানোর অপসংস্কৃতি এখন ওপেন-সিক্রেট। ফলে হর-হামেশই ঘটছে ভিন্ন মতের অনুপ্রবেশ।’ মাঠে না থাকা কর্মীদের তালিকা করার ক্ষেত্রে যাতে এই অপসংস্কৃতির পুনারাবৃত্তি না হয়, কেন্দ্র থেকে এ বিষয়ে নজরদারি বাড়ানোর প্রয়োজন বলেও মনে করছেন তারা।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অবশ্য বলেছেন, কারা মাঠে ছিলেন না সে তথ্য তাদের (কেন্দ্রের) কাছে আছে। তবে ওই তথ্য কীভাবে পাওয়া গেছে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে তৃণমূল কর্মীদের। গত কয়েকদিনের আন্দোলনে আওয়ামী লীগের যারা মাঠে ছিলেন, তাদের মধ্যে কারো কারো মতে ওই তালিকা প্রকাশ করা উচিৎ। যাতে সত্য-মিথ্যা যাচাই করার সুযোগ পায় সবাই।

তালিকার বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এক নেতা সংবাদকে বলেন, ‘এখন তো এসব বিষয়ে কথা বলা আসলে...আমাদের সাধারণ সম্পাদকতো বলেছেনই, তালিকা হচ্ছে। বিভিন্নভাবে খোঁজ নেয়া হচ্ছে কারা মাঠে ছিলেন, কারা ছিলেন না। নানক ভাইয়ের ওখানে তো কতগুলো কমিটি বিলুপ্ত করা হলো। কারণ কী? তারা মাঠে ছিল না।’

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, ২৫ জুলাই বৃহস্পতিবার রাতে আভ্যন্তরীণ বৈঠক করে মোহাম্মদপুর, আদাবর ও শেরেবাংলা নগর থানার ২৭টি ইউনিট কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে। সূত্র বলছে, এসব ইউনিটের নেতারা আন্দোলনের সময় গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন।

এই তিনটি থানা আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের আসন ঢাকা-১৩ এর অধীনে। তিনি সরকারের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্বেও আছেন।

এই তিনটি থানার অন্তর্গত ৮টি ওয়ার্ডে ১২৬ ইউনিট কমিটি রয়েছে। এরমধ্যে ২৭টি কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে ঢাকা উত্তরের কেন্দ্রীয় এক নেতা সংবাদকে বলেন, ‘এসব ইউনিটের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা আন্দোলন মোকাবিলায় সরাসরি অংশ নেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। এই প্রেক্ষিতে এসব ইউনিটের কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ সংক্রান্ত বৈঠক হয়েছে মোহাম্মদুপরে, সূচনা কমিউনিটি সেন্টারে। সেখানে নানক (জাহাঙ্গীর কবির নানক) ভাই ছিলেন। উত্তরের সভাপতি শেখ ফজলুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক রানাও ছিলেন। বৈঠকে স্থানীয় কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন। থানা-ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরাও উপস্থিত ছিলেন। পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠেছে বৈঠকে। আপাতত কমিটি বাতিল করে দেয়া হয়েছে। আর খোঁজখবর নেয়া হবে।’

মোহাম্মদপুর, আদাবর ও শেরেবাংলা নগরে যেভাবে ইউনিট ভেঙে দেয়া হলো, ঢাকার অন্যান্য এলাকায় এমন কিছু করা হবে কিনা, জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের ওই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘তালিকা যেহেতু হচ্ছে, অ্যাকশন তো হবেই।’

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সাম্প্রতিক আন্দোলনে দেশ প্রায় অচল হয়ে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ব্যাপক সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ এবং হতাহতের ঘটনা ঘটে।

ক্ষমতাসীন দল থেকে নির্দেশনা আসে- ‘দলের এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সব সংগঠনের নেতাকর্মীদের পাড়া-মহল্লায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে’। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ দলের এবং সব সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে ‘প্রস্তুত থাকতে বলেন, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বলেন’।

মাঠে না থাকা নেতাদের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে কথা হয় দলের বিভিন্ন উপকমিটিতে থাকা নেতাদের সঙ্গে। সাম্প্রতিক আন্দোলনে মাঠে ছিলেন এমন দাবি করে এক নেতা সংবাদকে বলেন, ‘আমরা কয়েকজনতো কেরানীগঞ্জ থেকে এসেছি। ঢাকা দক্ষিণে তো ট্যাকল দেয়ার লোক ছিল না।’

তার সঙ্গে থাকা আরেকজন (ছাত্রলীগের সাবেক নেতা) বলেন, ‘কেরানীগঞ্জ থেকে ৫০০ ডেডিকেটেড কর্মী ঢাকায় এসেছে। না হলে খবর ছিল। আমরা এরপর বিভিন্ন এলাকায় ভাগ করে মাঠে ছিলাম।’

তালিকা করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আরে ভাই কিসের তালিকা। ক্রাইসিস কি কেটে গেছে। এখন সবাইকে বুঝিয়ে লাইনে আনা হবে। এসব তালিকা-ফালিকা কিছু না। যারা মাঠে ছিলাম তারাই এখন সংখ্যালঘু। যারা লুকিয়ে ছিল সবাই ফিরে এসেছে। আবার তাদের জয়-জয়কার শুরু হয়ে গেছে। আপনি দেখেন না! কাদের ভাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে বলছে। পাহাড়ায় থাকতে বলছে। এখনতো সবাইকেই প্রয়োজন।’

ছবি

ঢাকায় আজ জামায়াতসহ ৭ দলের বিক্ষোভ মিছিল

ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে সাংবিধানিক আদেশ ও গণভোট প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত রাজনৈতিক দলগুলো

ছবি

রাজশাহীতে এনসিপি নেত্রীর আকস্মিক পদত্যাগ

ছবি

জামায়াতসহ কয়েক দলের যুগপৎ আন্দোলনের জবাব রাজপথেই দেবে বিএনপি: সালাহউদ্দিন

ছবি

খালেদা জিয়ার ভাগ্নে শাহরিনকে আহ্বায়ক করে এইবির নতুন কমিটি

ছবি

নাশকতার দুই মামলা থেকে ফখরুল ও আব্বাসসহ ১০৬ জনকে অব্যাহতি

ছবি

এখন কার্যকর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়তে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে: মির্জা ফখরুল

ছবি

অভিন্ন দাবিতে তিন ইসলামী দলের যুগপৎ কর্মসূচি ঘোষণা

ছবি

যুগপতে পাঁচ দাবিতে জামায়াতের তিন দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা

ছবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২৫ সনাতন যোগ দিলেন জামায়াতে

ছবি

তারেকের নিরাপত্তা নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বাবরের আলোচনা

ছবি

যুগপতে কারা থাকছে ঠিক হয়নি, তবে খেলাফতের কর্মসূচি ঘোষণা

জামায়াতের আযাদ: মুক্তিযুদ্ধ না মানলে ‘বাংলাদেশ অস্বীকার করা হবে’

ছবি

জুলাই সনদের গেরো: এবার আদালতের মত নিতে বলল বিএনপি

ছবি

‘জুলাই সনদ’ স্বাক্ষরে রাজি বিএনপি, তবে আইনি ভিত্তি নিয়ে মতভেদ

ছবি

ডাকসু-জাকসু নির্বাচনে ‘মাস্টার প্ল্যান’ প্রশ্ন তুললেন রিজভী

ছবি

মৌলবাদীরা ‘বেহেশতের টিকেট’ বিক্রি করছে: বিএনপির গয়েশ্বর

ছবি

সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের দাবি

ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়নসহ ৫ দফা দাবিতে খেলাফত মজলিসের তিন দিনের কর্মসূচি

ছবি

সাবেক প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান এবার তুহিন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার

ছবি

রাষ্ট্রে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে বাস্তুতন্ত্রও নিরাপদ থাকবে: তারেক রহমান

ছবি

সরকার ও উপদেষ্টারা মাহফুজদের যথেচ্ছ ব্যবহার করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে: নাহিদ ইসলাম

ছবি

দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে পশু-পাখি ও বাস্তুতন্ত্রের অধিকার নিশ্চিত হবে: তারেক রহমান

ছবি

বসুন্ধরায় গোপন বৈঠক: ময়মনসিংহ জেলা আ.লীগ নেতার দোষ স্বীকার

ছবি

ঢাকার আগারগাঁওয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ‘নিষিদ্ধ’ আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিল

ছবি

আওয়ামী লীগ লুটপাট করে দেশকে দেউলিয়া করে দিয়েছে: মঈন খান

ছবি

ইসরায়েলের ওপর চাপ বাড়াতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি তারেকের আহ্বান

ছবি

বাংলাদেশের সংবিধানে শ্রমিক, জনতার অধিকার নিশ্চিত করা হয়নি: এনসিপি

ছবি

নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হলেই দেশে ফিরবেন তারেক রহমান: মিন্টু

ছবি

জাতীয় নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে: বিএনপি

ছবি

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে গাজীপুরে সমাবেশ ও গণমিছিল করেছে ইসলামিক আন্দোলন

ছবি

নির্বাচনের আগে পরিবেশ সৃষ্টি জরুরি: আনিসুল ইসলাম মাহমুদ

ছবি

সংবিধান সংশোধন: মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়ন পদ্ধতিতে ভিন্নমত রাজনৈতিক দলগুলোর

ছবি

বর্তমান পরিস্থিতিতে জাতীয় নির্বাচন হলে দেশের সংকট আরও বাড়বে: আনিসুল ইসলাম

ছবি

‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়নে কোনো কিছু চাপিয়ে দেবে না কমিশন: আলী রীয়াজ

ছবি

ডাকসু জয়ে ছাত্র শিবিরকে অভিনন্দন পাকিস্তানের জামায়াতে ইসলামীর

tab

‘নিষ্ক্রিয়, ব্যর্থদের তালিকা যেন সঠিক হয়’-দাবি আ’লীগ তৃণমূলের

ফয়েজ আহমেদ তুষার

শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

কোটা সংস্কার আন্দোলনে ‘বিএনপি-জামায়াতের নাশকতা প্রতিরোধে’ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার নির্দেশনা দেয়া হলেও মাঠে নামেননি অনেক এলাকার নেতাকর্মীরা। এমন অভিযোগ দলের অভ্যন্তরেই উঠেছে। বলা হচ্ছে, পদ-পদবি নিয়ে, সরকারের সুবিধা নিয়ে এতদিন ‘রাজার হালে চলা’ অনেক নেতাই আন্দোলনের কয়েকদিন গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন। মাঠে ছিলেন না ওই নেতাদের কর্মী-সমর্থকরাও।

অভিযোগ আমলে নিয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। এটি দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা হিসেবেও দেখছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। মাঠে না থাকা নেতাকর্মীদের তালিকা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, দলের পদ নিয়ে যারা ঘরে বসেছিলেন, সংকটকালে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছেন, তাদের তালিকা করা হচ্ছে। সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তবে ওই তালিকা করা নিয়ে তৃণমূল কর্মীদের রয়েছে নানা সংশয়। দাবি উঠেছে, সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে তালিকা করার এবং যারা মাঠে ছিলেন না তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার।

তারা বলছেন, ‘কমিটি গঠনে স্বজনপ্রীতি, অর্থের প্রভাব এবং নিজস্ব বলয় বাড়ানোর অপসংস্কৃতি এখন ওপেন-সিক্রেট। ফলে হর-হামেশই ঘটছে ভিন্ন মতের অনুপ্রবেশ।’ মাঠে না থাকা কর্মীদের তালিকা করার ক্ষেত্রে যাতে এই অপসংস্কৃতির পুনারাবৃত্তি না হয়, কেন্দ্র থেকে এ বিষয়ে নজরদারি বাড়ানোর প্রয়োজন বলেও মনে করছেন তারা।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অবশ্য বলেছেন, কারা মাঠে ছিলেন না সে তথ্য তাদের (কেন্দ্রের) কাছে আছে। তবে ওই তথ্য কীভাবে পাওয়া গেছে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে তৃণমূল কর্মীদের। গত কয়েকদিনের আন্দোলনে আওয়ামী লীগের যারা মাঠে ছিলেন, তাদের মধ্যে কারো কারো মতে ওই তালিকা প্রকাশ করা উচিৎ। যাতে সত্য-মিথ্যা যাচাই করার সুযোগ পায় সবাই।

তালিকার বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এক নেতা সংবাদকে বলেন, ‘এখন তো এসব বিষয়ে কথা বলা আসলে...আমাদের সাধারণ সম্পাদকতো বলেছেনই, তালিকা হচ্ছে। বিভিন্নভাবে খোঁজ নেয়া হচ্ছে কারা মাঠে ছিলেন, কারা ছিলেন না। নানক ভাইয়ের ওখানে তো কতগুলো কমিটি বিলুপ্ত করা হলো। কারণ কী? তারা মাঠে ছিল না।’

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, ২৫ জুলাই বৃহস্পতিবার রাতে আভ্যন্তরীণ বৈঠক করে মোহাম্মদপুর, আদাবর ও শেরেবাংলা নগর থানার ২৭টি ইউনিট কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে। সূত্র বলছে, এসব ইউনিটের নেতারা আন্দোলনের সময় গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন।

এই তিনটি থানা আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের আসন ঢাকা-১৩ এর অধীনে। তিনি সরকারের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্বেও আছেন।

এই তিনটি থানার অন্তর্গত ৮টি ওয়ার্ডে ১২৬ ইউনিট কমিটি রয়েছে। এরমধ্যে ২৭টি কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে ঢাকা উত্তরের কেন্দ্রীয় এক নেতা সংবাদকে বলেন, ‘এসব ইউনিটের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা আন্দোলন মোকাবিলায় সরাসরি অংশ নেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। এই প্রেক্ষিতে এসব ইউনিটের কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ সংক্রান্ত বৈঠক হয়েছে মোহাম্মদুপরে, সূচনা কমিউনিটি সেন্টারে। সেখানে নানক (জাহাঙ্গীর কবির নানক) ভাই ছিলেন। উত্তরের সভাপতি শেখ ফজলুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক রানাও ছিলেন। বৈঠকে স্থানীয় কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন। থানা-ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরাও উপস্থিত ছিলেন। পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠেছে বৈঠকে। আপাতত কমিটি বাতিল করে দেয়া হয়েছে। আর খোঁজখবর নেয়া হবে।’

মোহাম্মদপুর, আদাবর ও শেরেবাংলা নগরে যেভাবে ইউনিট ভেঙে দেয়া হলো, ঢাকার অন্যান্য এলাকায় এমন কিছু করা হবে কিনা, জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের ওই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘তালিকা যেহেতু হচ্ছে, অ্যাকশন তো হবেই।’

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সাম্প্রতিক আন্দোলনে দেশ প্রায় অচল হয়ে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ব্যাপক সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ এবং হতাহতের ঘটনা ঘটে।

ক্ষমতাসীন দল থেকে নির্দেশনা আসে- ‘দলের এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সব সংগঠনের নেতাকর্মীদের পাড়া-মহল্লায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে’। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ দলের এবং সব সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে ‘প্রস্তুত থাকতে বলেন, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বলেন’।

মাঠে না থাকা নেতাদের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে কথা হয় দলের বিভিন্ন উপকমিটিতে থাকা নেতাদের সঙ্গে। সাম্প্রতিক আন্দোলনে মাঠে ছিলেন এমন দাবি করে এক নেতা সংবাদকে বলেন, ‘আমরা কয়েকজনতো কেরানীগঞ্জ থেকে এসেছি। ঢাকা দক্ষিণে তো ট্যাকল দেয়ার লোক ছিল না।’

তার সঙ্গে থাকা আরেকজন (ছাত্রলীগের সাবেক নেতা) বলেন, ‘কেরানীগঞ্জ থেকে ৫০০ ডেডিকেটেড কর্মী ঢাকায় এসেছে। না হলে খবর ছিল। আমরা এরপর বিভিন্ন এলাকায় ভাগ করে মাঠে ছিলাম।’

তালিকা করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আরে ভাই কিসের তালিকা। ক্রাইসিস কি কেটে গেছে। এখন সবাইকে বুঝিয়ে লাইনে আনা হবে। এসব তালিকা-ফালিকা কিছু না। যারা মাঠে ছিলাম তারাই এখন সংখ্যালঘু। যারা লুকিয়ে ছিল সবাই ফিরে এসেছে। আবার তাদের জয়-জয়কার শুরু হয়ে গেছে। আপনি দেখেন না! কাদের ভাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে বলছে। পাহাড়ায় থাকতে বলছে। এখনতো সবাইকেই প্রয়োজন।’

back to top