alt

রাজনীতি

‘নিষ্ক্রিয়, ব্যর্থদের তালিকা যেন সঠিক হয়’-দাবি আ’লীগ তৃণমূলের

ফয়েজ আহমেদ তুষার : শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

কোটা সংস্কার আন্দোলনে ‘বিএনপি-জামায়াতের নাশকতা প্রতিরোধে’ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার নির্দেশনা দেয়া হলেও মাঠে নামেননি অনেক এলাকার নেতাকর্মীরা। এমন অভিযোগ দলের অভ্যন্তরেই উঠেছে। বলা হচ্ছে, পদ-পদবি নিয়ে, সরকারের সুবিধা নিয়ে এতদিন ‘রাজার হালে চলা’ অনেক নেতাই আন্দোলনের কয়েকদিন গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন। মাঠে ছিলেন না ওই নেতাদের কর্মী-সমর্থকরাও।

অভিযোগ আমলে নিয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। এটি দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা হিসেবেও দেখছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। মাঠে না থাকা নেতাকর্মীদের তালিকা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, দলের পদ নিয়ে যারা ঘরে বসেছিলেন, সংকটকালে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছেন, তাদের তালিকা করা হচ্ছে। সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তবে ওই তালিকা করা নিয়ে তৃণমূল কর্মীদের রয়েছে নানা সংশয়। দাবি উঠেছে, সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে তালিকা করার এবং যারা মাঠে ছিলেন না তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার।

তারা বলছেন, ‘কমিটি গঠনে স্বজনপ্রীতি, অর্থের প্রভাব এবং নিজস্ব বলয় বাড়ানোর অপসংস্কৃতি এখন ওপেন-সিক্রেট। ফলে হর-হামেশই ঘটছে ভিন্ন মতের অনুপ্রবেশ।’ মাঠে না থাকা কর্মীদের তালিকা করার ক্ষেত্রে যাতে এই অপসংস্কৃতির পুনারাবৃত্তি না হয়, কেন্দ্র থেকে এ বিষয়ে নজরদারি বাড়ানোর প্রয়োজন বলেও মনে করছেন তারা।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অবশ্য বলেছেন, কারা মাঠে ছিলেন না সে তথ্য তাদের (কেন্দ্রের) কাছে আছে। তবে ওই তথ্য কীভাবে পাওয়া গেছে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে তৃণমূল কর্মীদের। গত কয়েকদিনের আন্দোলনে আওয়ামী লীগের যারা মাঠে ছিলেন, তাদের মধ্যে কারো কারো মতে ওই তালিকা প্রকাশ করা উচিৎ। যাতে সত্য-মিথ্যা যাচাই করার সুযোগ পায় সবাই।

তালিকার বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এক নেতা সংবাদকে বলেন, ‘এখন তো এসব বিষয়ে কথা বলা আসলে...আমাদের সাধারণ সম্পাদকতো বলেছেনই, তালিকা হচ্ছে। বিভিন্নভাবে খোঁজ নেয়া হচ্ছে কারা মাঠে ছিলেন, কারা ছিলেন না। নানক ভাইয়ের ওখানে তো কতগুলো কমিটি বিলুপ্ত করা হলো। কারণ কী? তারা মাঠে ছিল না।’

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, ২৫ জুলাই বৃহস্পতিবার রাতে আভ্যন্তরীণ বৈঠক করে মোহাম্মদপুর, আদাবর ও শেরেবাংলা নগর থানার ২৭টি ইউনিট কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে। সূত্র বলছে, এসব ইউনিটের নেতারা আন্দোলনের সময় গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন।

এই তিনটি থানা আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের আসন ঢাকা-১৩ এর অধীনে। তিনি সরকারের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্বেও আছেন।

এই তিনটি থানার অন্তর্গত ৮টি ওয়ার্ডে ১২৬ ইউনিট কমিটি রয়েছে। এরমধ্যে ২৭টি কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে ঢাকা উত্তরের কেন্দ্রীয় এক নেতা সংবাদকে বলেন, ‘এসব ইউনিটের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা আন্দোলন মোকাবিলায় সরাসরি অংশ নেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। এই প্রেক্ষিতে এসব ইউনিটের কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ সংক্রান্ত বৈঠক হয়েছে মোহাম্মদুপরে, সূচনা কমিউনিটি সেন্টারে। সেখানে নানক (জাহাঙ্গীর কবির নানক) ভাই ছিলেন। উত্তরের সভাপতি শেখ ফজলুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক রানাও ছিলেন। বৈঠকে স্থানীয় কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন। থানা-ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরাও উপস্থিত ছিলেন। পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠেছে বৈঠকে। আপাতত কমিটি বাতিল করে দেয়া হয়েছে। আর খোঁজখবর নেয়া হবে।’

মোহাম্মদপুর, আদাবর ও শেরেবাংলা নগরে যেভাবে ইউনিট ভেঙে দেয়া হলো, ঢাকার অন্যান্য এলাকায় এমন কিছু করা হবে কিনা, জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের ওই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘তালিকা যেহেতু হচ্ছে, অ্যাকশন তো হবেই।’

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সাম্প্রতিক আন্দোলনে দেশ প্রায় অচল হয়ে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ব্যাপক সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ এবং হতাহতের ঘটনা ঘটে।

ক্ষমতাসীন দল থেকে নির্দেশনা আসে- ‘দলের এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সব সংগঠনের নেতাকর্মীদের পাড়া-মহল্লায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে’। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ দলের এবং সব সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে ‘প্রস্তুত থাকতে বলেন, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বলেন’।

মাঠে না থাকা নেতাদের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে কথা হয় দলের বিভিন্ন উপকমিটিতে থাকা নেতাদের সঙ্গে। সাম্প্রতিক আন্দোলনে মাঠে ছিলেন এমন দাবি করে এক নেতা সংবাদকে বলেন, ‘আমরা কয়েকজনতো কেরানীগঞ্জ থেকে এসেছি। ঢাকা দক্ষিণে তো ট্যাকল দেয়ার লোক ছিল না।’

তার সঙ্গে থাকা আরেকজন (ছাত্রলীগের সাবেক নেতা) বলেন, ‘কেরানীগঞ্জ থেকে ৫০০ ডেডিকেটেড কর্মী ঢাকায় এসেছে। না হলে খবর ছিল। আমরা এরপর বিভিন্ন এলাকায় ভাগ করে মাঠে ছিলাম।’

তালিকা করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আরে ভাই কিসের তালিকা। ক্রাইসিস কি কেটে গেছে। এখন সবাইকে বুঝিয়ে লাইনে আনা হবে। এসব তালিকা-ফালিকা কিছু না। যারা মাঠে ছিলাম তারাই এখন সংখ্যালঘু। যারা লুকিয়ে ছিল সবাই ফিরে এসেছে। আবার তাদের জয়-জয়কার শুরু হয়ে গেছে। আপনি দেখেন না! কাদের ভাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে বলছে। পাহাড়ায় থাকতে বলছে। এখনতো সবাইকেই প্রয়োজন।’

ছবি

‘যুবলীগ-শ্রমিক লীগই’ পরিবহনে বোমা মেরে বিরোধীদের মামলা দিত

ছবি

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের প্রেক্ষিতে জাতীয় নাগরিক কমিটির আত্মপ্রকাশ আজ

ছবি

বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি ভারতের শ্রদ্ধা প্রয়োজন: রুহুল কবির রিজভী

ছবি

অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত যথাযথ ও সময়োপযোগী: মির্জা ফখরুল

ছবি

আশুলিয়ায় বিএনপি’র শ্রমিক সমাবেশে হট্টগোল,আহত-৫

ছবি

এক ফ্যাসিবাদ গেলেও আরেক ফ্যাসিবাদ তৈরি করা হচ্ছে - শিবচরে নুরুল হক নূর

নারায়ণগঞ্জে মহানগর বিএনপির সদস্য সচিবকে দলীয় কর্মীদের মারধর

ছবি

সাবেক স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ও স্বামী–সন্তানের ব্যাংকের তথ্য তলব

ছবি

বিএনপির আহমেদ আযম খানের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগ

ছবি

নির্বাচন কমিশনের সাংবাদিকদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ: পদত্যাগের সম্ভাবনা

ছবি

মুক্তিযুদ্ধ, জাতীয় সংগীত ও সংবিধানের ওপর আঘাতকারীদের রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান সিপিবির

ছবি

বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা ফখর উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা

ছবি

শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে গোপালগঞ্জে বিক্ষোভ

ছবি

বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা চাইলেন তারেক রহমান

একে একে নিবন্ধন পাচ্ছে আগে বাতিল দলগুলো

ছবি

বিএনপির দুই শীর্ষ নেতার কাছে ব্যাখ্যা তলব

ছবি

ইসির নিবন্ধন পেল নাগরিক ঐক্য

ছবি

ইসিতে নিবন্ধন পেল গণ অধিকার পরিষদ

ছবি

ফের ৩ দিনের রিমান্ডে গোলাপ

ছবি

এস আলম গ্রুপের গাড়িতে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন, নিলেন সংবর্ধনা

ছবি

বিএনপির ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নতুন বাংলাদেশ গড়ার শপথ

ছবি

নতুন স্বাধীনতা অর্জনে ১৫ বছর সংগ্রাম করেছে বিএনপি : মির্জা ফখরুল

ছবি

নগদ টাকা উত্তোলনের সীমা বাড়ালো বাংলাদেশ ব্যাংক

ছবি

চট্টগ্রাম বন্দরে ৯ ব্যাংকের সঙ্গে লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা

‘যৌক্তিক সময়ের’ মধ্যে নির্বাচন দাবি বেশিরভাগ দলের

ছবি

সংলাপে একাধিক দাবি, কিন্তু নির্বাচনের সময় নিয়ে আলোচনা হয়নি

ছবি

বিএনপির নামে কেউ চাঁদাবাজি করলে তাকে পুলিশে দিন: মির্জা ফখরুল

ছবি

ষড়যন্ত্রকারীরা সুযোগ পেলে স্বাধীনতাকামী মানুষের ওপর আঘাত করবে : ফখরুল

ছবি

ভোট ছাড়া দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা অসম্ভব : দুদু

ছবি

গাজীপুরে সাবেক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা

ছবি

টাকা দিয়ে ভোট কিনে ক্ষমতায় আসা দুর্ভাগ্য

ছবি

বিএনপিতে দুষ্কৃতকারীর স্থান নেই: তারেক রহমান

ছবি

আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগী মন্ত্রীদের শেয়ারবাজারের বিও হিসাব জব্দ

ছবি

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফলপ্রসু আলোচনা হয়েছে: ফখরুল

ছবি

যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন চান আমীর খসরু

ছবি

ফের রিমান্ডে সালমান-আনিসুল-সাদেক খান-জিয়াউল

tab

রাজনীতি

‘নিষ্ক্রিয়, ব্যর্থদের তালিকা যেন সঠিক হয়’-দাবি আ’লীগ তৃণমূলের

ফয়েজ আহমেদ তুষার

শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

কোটা সংস্কার আন্দোলনে ‘বিএনপি-জামায়াতের নাশকতা প্রতিরোধে’ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার নির্দেশনা দেয়া হলেও মাঠে নামেননি অনেক এলাকার নেতাকর্মীরা। এমন অভিযোগ দলের অভ্যন্তরেই উঠেছে। বলা হচ্ছে, পদ-পদবি নিয়ে, সরকারের সুবিধা নিয়ে এতদিন ‘রাজার হালে চলা’ অনেক নেতাই আন্দোলনের কয়েকদিন গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন। মাঠে ছিলেন না ওই নেতাদের কর্মী-সমর্থকরাও।

অভিযোগ আমলে নিয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। এটি দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা হিসেবেও দেখছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। মাঠে না থাকা নেতাকর্মীদের তালিকা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, দলের পদ নিয়ে যারা ঘরে বসেছিলেন, সংকটকালে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছেন, তাদের তালিকা করা হচ্ছে। সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তবে ওই তালিকা করা নিয়ে তৃণমূল কর্মীদের রয়েছে নানা সংশয়। দাবি উঠেছে, সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে তালিকা করার এবং যারা মাঠে ছিলেন না তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার।

তারা বলছেন, ‘কমিটি গঠনে স্বজনপ্রীতি, অর্থের প্রভাব এবং নিজস্ব বলয় বাড়ানোর অপসংস্কৃতি এখন ওপেন-সিক্রেট। ফলে হর-হামেশই ঘটছে ভিন্ন মতের অনুপ্রবেশ।’ মাঠে না থাকা কর্মীদের তালিকা করার ক্ষেত্রে যাতে এই অপসংস্কৃতির পুনারাবৃত্তি না হয়, কেন্দ্র থেকে এ বিষয়ে নজরদারি বাড়ানোর প্রয়োজন বলেও মনে করছেন তারা।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অবশ্য বলেছেন, কারা মাঠে ছিলেন না সে তথ্য তাদের (কেন্দ্রের) কাছে আছে। তবে ওই তথ্য কীভাবে পাওয়া গেছে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে তৃণমূল কর্মীদের। গত কয়েকদিনের আন্দোলনে আওয়ামী লীগের যারা মাঠে ছিলেন, তাদের মধ্যে কারো কারো মতে ওই তালিকা প্রকাশ করা উচিৎ। যাতে সত্য-মিথ্যা যাচাই করার সুযোগ পায় সবাই।

তালিকার বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এক নেতা সংবাদকে বলেন, ‘এখন তো এসব বিষয়ে কথা বলা আসলে...আমাদের সাধারণ সম্পাদকতো বলেছেনই, তালিকা হচ্ছে। বিভিন্নভাবে খোঁজ নেয়া হচ্ছে কারা মাঠে ছিলেন, কারা ছিলেন না। নানক ভাইয়ের ওখানে তো কতগুলো কমিটি বিলুপ্ত করা হলো। কারণ কী? তারা মাঠে ছিল না।’

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, ২৫ জুলাই বৃহস্পতিবার রাতে আভ্যন্তরীণ বৈঠক করে মোহাম্মদপুর, আদাবর ও শেরেবাংলা নগর থানার ২৭টি ইউনিট কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে। সূত্র বলছে, এসব ইউনিটের নেতারা আন্দোলনের সময় গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন।

এই তিনটি থানা আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের আসন ঢাকা-১৩ এর অধীনে। তিনি সরকারের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্বেও আছেন।

এই তিনটি থানার অন্তর্গত ৮টি ওয়ার্ডে ১২৬ ইউনিট কমিটি রয়েছে। এরমধ্যে ২৭টি কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে ঢাকা উত্তরের কেন্দ্রীয় এক নেতা সংবাদকে বলেন, ‘এসব ইউনিটের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা আন্দোলন মোকাবিলায় সরাসরি অংশ নেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। এই প্রেক্ষিতে এসব ইউনিটের কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ সংক্রান্ত বৈঠক হয়েছে মোহাম্মদুপরে, সূচনা কমিউনিটি সেন্টারে। সেখানে নানক (জাহাঙ্গীর কবির নানক) ভাই ছিলেন। উত্তরের সভাপতি শেখ ফজলুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক রানাও ছিলেন। বৈঠকে স্থানীয় কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন। থানা-ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরাও উপস্থিত ছিলেন। পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠেছে বৈঠকে। আপাতত কমিটি বাতিল করে দেয়া হয়েছে। আর খোঁজখবর নেয়া হবে।’

মোহাম্মদপুর, আদাবর ও শেরেবাংলা নগরে যেভাবে ইউনিট ভেঙে দেয়া হলো, ঢাকার অন্যান্য এলাকায় এমন কিছু করা হবে কিনা, জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের ওই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘তালিকা যেহেতু হচ্ছে, অ্যাকশন তো হবেই।’

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সাম্প্রতিক আন্দোলনে দেশ প্রায় অচল হয়ে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ব্যাপক সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ এবং হতাহতের ঘটনা ঘটে।

ক্ষমতাসীন দল থেকে নির্দেশনা আসে- ‘দলের এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সব সংগঠনের নেতাকর্মীদের পাড়া-মহল্লায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে’। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ দলের এবং সব সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে ‘প্রস্তুত থাকতে বলেন, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বলেন’।

মাঠে না থাকা নেতাদের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে কথা হয় দলের বিভিন্ন উপকমিটিতে থাকা নেতাদের সঙ্গে। সাম্প্রতিক আন্দোলনে মাঠে ছিলেন এমন দাবি করে এক নেতা সংবাদকে বলেন, ‘আমরা কয়েকজনতো কেরানীগঞ্জ থেকে এসেছি। ঢাকা দক্ষিণে তো ট্যাকল দেয়ার লোক ছিল না।’

তার সঙ্গে থাকা আরেকজন (ছাত্রলীগের সাবেক নেতা) বলেন, ‘কেরানীগঞ্জ থেকে ৫০০ ডেডিকেটেড কর্মী ঢাকায় এসেছে। না হলে খবর ছিল। আমরা এরপর বিভিন্ন এলাকায় ভাগ করে মাঠে ছিলাম।’

তালিকা করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আরে ভাই কিসের তালিকা। ক্রাইসিস কি কেটে গেছে। এখন সবাইকে বুঝিয়ে লাইনে আনা হবে। এসব তালিকা-ফালিকা কিছু না। যারা মাঠে ছিলাম তারাই এখন সংখ্যালঘু। যারা লুকিয়ে ছিল সবাই ফিরে এসেছে। আবার তাদের জয়-জয়কার শুরু হয়ে গেছে। আপনি দেখেন না! কাদের ভাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে বলছে। পাহাড়ায় থাকতে বলছে। এখনতো সবাইকেই প্রয়োজন।’

back to top