alt

রাজনীতি

‘নিষ্ক্রিয়, ব্যর্থদের তালিকা যেন সঠিক হয়’-দাবি আ’লীগ তৃণমূলের

ফয়েজ আহমেদ তুষার : শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

কোটা সংস্কার আন্দোলনে ‘বিএনপি-জামায়াতের নাশকতা প্রতিরোধে’ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার নির্দেশনা দেয়া হলেও মাঠে নামেননি অনেক এলাকার নেতাকর্মীরা। এমন অভিযোগ দলের অভ্যন্তরেই উঠেছে। বলা হচ্ছে, পদ-পদবি নিয়ে, সরকারের সুবিধা নিয়ে এতদিন ‘রাজার হালে চলা’ অনেক নেতাই আন্দোলনের কয়েকদিন গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন। মাঠে ছিলেন না ওই নেতাদের কর্মী-সমর্থকরাও।

অভিযোগ আমলে নিয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। এটি দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা হিসেবেও দেখছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। মাঠে না থাকা নেতাকর্মীদের তালিকা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, দলের পদ নিয়ে যারা ঘরে বসেছিলেন, সংকটকালে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছেন, তাদের তালিকা করা হচ্ছে। সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তবে ওই তালিকা করা নিয়ে তৃণমূল কর্মীদের রয়েছে নানা সংশয়। দাবি উঠেছে, সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে তালিকা করার এবং যারা মাঠে ছিলেন না তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার।

তারা বলছেন, ‘কমিটি গঠনে স্বজনপ্রীতি, অর্থের প্রভাব এবং নিজস্ব বলয় বাড়ানোর অপসংস্কৃতি এখন ওপেন-সিক্রেট। ফলে হর-হামেশই ঘটছে ভিন্ন মতের অনুপ্রবেশ।’ মাঠে না থাকা কর্মীদের তালিকা করার ক্ষেত্রে যাতে এই অপসংস্কৃতির পুনারাবৃত্তি না হয়, কেন্দ্র থেকে এ বিষয়ে নজরদারি বাড়ানোর প্রয়োজন বলেও মনে করছেন তারা।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অবশ্য বলেছেন, কারা মাঠে ছিলেন না সে তথ্য তাদের (কেন্দ্রের) কাছে আছে। তবে ওই তথ্য কীভাবে পাওয়া গেছে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে তৃণমূল কর্মীদের। গত কয়েকদিনের আন্দোলনে আওয়ামী লীগের যারা মাঠে ছিলেন, তাদের মধ্যে কারো কারো মতে ওই তালিকা প্রকাশ করা উচিৎ। যাতে সত্য-মিথ্যা যাচাই করার সুযোগ পায় সবাই।

তালিকার বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এক নেতা সংবাদকে বলেন, ‘এখন তো এসব বিষয়ে কথা বলা আসলে...আমাদের সাধারণ সম্পাদকতো বলেছেনই, তালিকা হচ্ছে। বিভিন্নভাবে খোঁজ নেয়া হচ্ছে কারা মাঠে ছিলেন, কারা ছিলেন না। নানক ভাইয়ের ওখানে তো কতগুলো কমিটি বিলুপ্ত করা হলো। কারণ কী? তারা মাঠে ছিল না।’

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, ২৫ জুলাই বৃহস্পতিবার রাতে আভ্যন্তরীণ বৈঠক করে মোহাম্মদপুর, আদাবর ও শেরেবাংলা নগর থানার ২৭টি ইউনিট কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে। সূত্র বলছে, এসব ইউনিটের নেতারা আন্দোলনের সময় গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন।

এই তিনটি থানা আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের আসন ঢাকা-১৩ এর অধীনে। তিনি সরকারের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্বেও আছেন।

এই তিনটি থানার অন্তর্গত ৮টি ওয়ার্ডে ১২৬ ইউনিট কমিটি রয়েছে। এরমধ্যে ২৭টি কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে ঢাকা উত্তরের কেন্দ্রীয় এক নেতা সংবাদকে বলেন, ‘এসব ইউনিটের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা আন্দোলন মোকাবিলায় সরাসরি অংশ নেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। এই প্রেক্ষিতে এসব ইউনিটের কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ সংক্রান্ত বৈঠক হয়েছে মোহাম্মদুপরে, সূচনা কমিউনিটি সেন্টারে। সেখানে নানক (জাহাঙ্গীর কবির নানক) ভাই ছিলেন। উত্তরের সভাপতি শেখ ফজলুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক রানাও ছিলেন। বৈঠকে স্থানীয় কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন। থানা-ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরাও উপস্থিত ছিলেন। পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠেছে বৈঠকে। আপাতত কমিটি বাতিল করে দেয়া হয়েছে। আর খোঁজখবর নেয়া হবে।’

মোহাম্মদপুর, আদাবর ও শেরেবাংলা নগরে যেভাবে ইউনিট ভেঙে দেয়া হলো, ঢাকার অন্যান্য এলাকায় এমন কিছু করা হবে কিনা, জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের ওই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘তালিকা যেহেতু হচ্ছে, অ্যাকশন তো হবেই।’

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সাম্প্রতিক আন্দোলনে দেশ প্রায় অচল হয়ে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ব্যাপক সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ এবং হতাহতের ঘটনা ঘটে।

ক্ষমতাসীন দল থেকে নির্দেশনা আসে- ‘দলের এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সব সংগঠনের নেতাকর্মীদের পাড়া-মহল্লায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে’। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ দলের এবং সব সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে ‘প্রস্তুত থাকতে বলেন, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বলেন’।

মাঠে না থাকা নেতাদের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে কথা হয় দলের বিভিন্ন উপকমিটিতে থাকা নেতাদের সঙ্গে। সাম্প্রতিক আন্দোলনে মাঠে ছিলেন এমন দাবি করে এক নেতা সংবাদকে বলেন, ‘আমরা কয়েকজনতো কেরানীগঞ্জ থেকে এসেছি। ঢাকা দক্ষিণে তো ট্যাকল দেয়ার লোক ছিল না।’

তার সঙ্গে থাকা আরেকজন (ছাত্রলীগের সাবেক নেতা) বলেন, ‘কেরানীগঞ্জ থেকে ৫০০ ডেডিকেটেড কর্মী ঢাকায় এসেছে। না হলে খবর ছিল। আমরা এরপর বিভিন্ন এলাকায় ভাগ করে মাঠে ছিলাম।’

তালিকা করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আরে ভাই কিসের তালিকা। ক্রাইসিস কি কেটে গেছে। এখন সবাইকে বুঝিয়ে লাইনে আনা হবে। এসব তালিকা-ফালিকা কিছু না। যারা মাঠে ছিলাম তারাই এখন সংখ্যালঘু। যারা লুকিয়ে ছিল সবাই ফিরে এসেছে। আবার তাদের জয়-জয়কার শুরু হয়ে গেছে। আপনি দেখেন না! কাদের ভাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে বলছে। পাহাড়ায় থাকতে বলছে। এখনতো সবাইকেই প্রয়োজন।’

আনুপাতিক ভোটের পক্ষে একমত হওয়ার আহ্বান ‘৬০ নাগরিকের

ছবি

‘ভোটকেন্দ্র স্থাপন নীতিমালা ২০২৫’ প্রকাশ, বাদ ডিসি-এসপি, ইভিএম সংশ্লিষ্ট ধারা

ছবি

নির্বাচিত সরকার এলে সম্পর্ক আরও গভীর হবে—চীন সফর শেষে বললেন মির্জা ফখরুল

ছবি

‘জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্রেই ঐতিহাসিক দায়িত্ব পূরণ সম্ভব’: এনসিপি আহ্বায়ক

ছবি

একজন উপদেষ্টা মুরাদনগরে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন: মির্জা ফখরুল

ছবি

“নারীর নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ সরকার” — জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের প্রশ্ন

ছবি

মুরাদনগরে হিন্দু নারী নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানাল বিএনপি

ছবি

নিয়োগ কমিটি গঠনের প্রস্তাবে এখনো একমত নয় সব রাজনৈতিক দল

ছবি

নির্বাচনের সময় বিলম্বে জাতিকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে: মির্জা আব্বাস

ছবি

আনুপাতিক নির্বাচন দেশের উপযোগী নয়: সালাহউদ্দিন

ছবি

‘রাষ্ট্র সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া, চিরস্থায়ী নয়’— বললেন বিএনপি নেতা

ছবি

সংসদের পিআর পদ্ধতি ও আল্লাহর ওপর আস্থার দাবি তুলে ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশ

ছবি

আলোচনা, দোয়া, গণমিছিলসহ ৮ আগস্ট পর্যন্ত কর্মসূচি পালন করবে জামায়াত

ছবি

সংস্কার ও পিআর পদ্ধতির দাবিতে সোহরাওয়ার্দীতে ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশ

ছবি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ালেন উমামা ফাতেমা

ছবি

ছাত্র-জনতার গণপ্রতিরোধকে ‘মব’ বলা ফ্যাসিস্ট ষড়যন্ত্র: হেফাজত

ছবি

হাসনাতের ভিডিও পোস্ট ঘিরে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত, দুদকের পাল্টা সতর্কতা

ছবি

বটবাহিনীর সহযোগিতায় মুনাফেকি রাজনীতি করছে জামায়াত-শিবির: ছাত্রদল সভাপতি

ছবি

হাসনাতের ফেসবুক পোস্ট নিয়ে তদন্তে দুদক

ছবি

স্বৈরাচার ঠেকাতে দরকার স্বাধীন নির্বাচন কমিশন: বিএনপি নেতা

ছবি

অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও কর্মী সভায় মারধর: এনসিপির মাদারীপুর জেলা ও সদর কমিটি স্থগিত

ছবি

‘চা-নাস্তার জন্য এক লাখ টাকা’ দাবি: মাহমুদা মিতুর অভিযোগে দুদকের প্রতিবাদ

ছবি

কে এম নূরুল হুদা হেনস্তা মামলায় জামিন পেলেন মোজাম্মেল, হানিফ ও কাইয়ুম

ছবি

“রাষ্ট্রপতি-প্রধান বিচারপতি বাদ, নিয়োগ কমিটিতে থাকছেন স্পিকার ও রাজনৈতিক নেতারা”

ছবি

ইশরাকের সমর্থকদের বিরুদ্ধে মারধর, হুমকি ও সাংবাদিক হয়রানির অভিযোগ

ছবি

দুদকের আবেদনে আদালতের আদেশ, হাছান মাহমুদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

দলের নিবন্ধন পেতে ইসিতে আবেদনের ‘হিড়িক’

১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয়: একমত জামায়াত-এনসিপি, বিএনপিসহ ৩ দলের ভিন্নমত

নিবন্ধন ও প্রতীক নিয়ে নির্বাচন কমিশনে এনসিপির আবেদন

ছবি

প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ: ঐকমত্যে অধিকাংশ দল, ভিন্নমত বিএনপি-এনডিএম-বিএলডিপির

ছবি

‘নিবন্ধনের শর্ত কঠিন, তবু প্রত্যাশা করছি অনুমোদন’: আবেদন জমায় ব্যস্ত দলগুলো

ছবি

মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সাথে বিএনপির আলোচনায় শুল্ক, বাণিজ্য, নির্বাচন

ছবি

সাবেক সামরিক কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে নতুন দল ‘বাংলাদেশ রিপাবলিক পার্টি’

ছবি

খালেদা জিয়ার সঙ্গে বিদায়ী জার্মান রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ

ছবি

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি বদলাবে— তবে কিভাবে, তাতে এখনো মতানৈক্য

ছবি

আচরণবিধি লঙ্ঘনে দেড় লাখ টাকা জরিমানা, প্রার্থিতা বাতিলের বিধান যুক্ত

tab

রাজনীতি

‘নিষ্ক্রিয়, ব্যর্থদের তালিকা যেন সঠিক হয়’-দাবি আ’লীগ তৃণমূলের

ফয়েজ আহমেদ তুষার

শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

কোটা সংস্কার আন্দোলনে ‘বিএনপি-জামায়াতের নাশকতা প্রতিরোধে’ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার নির্দেশনা দেয়া হলেও মাঠে নামেননি অনেক এলাকার নেতাকর্মীরা। এমন অভিযোগ দলের অভ্যন্তরেই উঠেছে। বলা হচ্ছে, পদ-পদবি নিয়ে, সরকারের সুবিধা নিয়ে এতদিন ‘রাজার হালে চলা’ অনেক নেতাই আন্দোলনের কয়েকদিন গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন। মাঠে ছিলেন না ওই নেতাদের কর্মী-সমর্থকরাও।

অভিযোগ আমলে নিয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। এটি দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা হিসেবেও দেখছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। মাঠে না থাকা নেতাকর্মীদের তালিকা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, দলের পদ নিয়ে যারা ঘরে বসেছিলেন, সংকটকালে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছেন, তাদের তালিকা করা হচ্ছে। সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তবে ওই তালিকা করা নিয়ে তৃণমূল কর্মীদের রয়েছে নানা সংশয়। দাবি উঠেছে, সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করে তালিকা করার এবং যারা মাঠে ছিলেন না তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার।

তারা বলছেন, ‘কমিটি গঠনে স্বজনপ্রীতি, অর্থের প্রভাব এবং নিজস্ব বলয় বাড়ানোর অপসংস্কৃতি এখন ওপেন-সিক্রেট। ফলে হর-হামেশই ঘটছে ভিন্ন মতের অনুপ্রবেশ।’ মাঠে না থাকা কর্মীদের তালিকা করার ক্ষেত্রে যাতে এই অপসংস্কৃতির পুনারাবৃত্তি না হয়, কেন্দ্র থেকে এ বিষয়ে নজরদারি বাড়ানোর প্রয়োজন বলেও মনে করছেন তারা।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অবশ্য বলেছেন, কারা মাঠে ছিলেন না সে তথ্য তাদের (কেন্দ্রের) কাছে আছে। তবে ওই তথ্য কীভাবে পাওয়া গেছে, তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে তৃণমূল কর্মীদের। গত কয়েকদিনের আন্দোলনে আওয়ামী লীগের যারা মাঠে ছিলেন, তাদের মধ্যে কারো কারো মতে ওই তালিকা প্রকাশ করা উচিৎ। যাতে সত্য-মিথ্যা যাচাই করার সুযোগ পায় সবাই।

তালিকার বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এক নেতা সংবাদকে বলেন, ‘এখন তো এসব বিষয়ে কথা বলা আসলে...আমাদের সাধারণ সম্পাদকতো বলেছেনই, তালিকা হচ্ছে। বিভিন্নভাবে খোঁজ নেয়া হচ্ছে কারা মাঠে ছিলেন, কারা ছিলেন না। নানক ভাইয়ের ওখানে তো কতগুলো কমিটি বিলুপ্ত করা হলো। কারণ কী? তারা মাঠে ছিল না।’

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, ২৫ জুলাই বৃহস্পতিবার রাতে আভ্যন্তরীণ বৈঠক করে মোহাম্মদপুর, আদাবর ও শেরেবাংলা নগর থানার ২৭টি ইউনিট কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে। সূত্র বলছে, এসব ইউনিটের নেতারা আন্দোলনের সময় গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন।

এই তিনটি থানা আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের আসন ঢাকা-১৩ এর অধীনে। তিনি সরকারের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্বেও আছেন।

এই তিনটি থানার অন্তর্গত ৮টি ওয়ার্ডে ১২৬ ইউনিট কমিটি রয়েছে। এরমধ্যে ২৭টি কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে ঢাকা উত্তরের কেন্দ্রীয় এক নেতা সংবাদকে বলেন, ‘এসব ইউনিটের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা আন্দোলন মোকাবিলায় সরাসরি অংশ নেননি বলে অভিযোগ উঠেছে। এই প্রেক্ষিতে এসব ইউনিটের কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এ সংক্রান্ত বৈঠক হয়েছে মোহাম্মদুপরে, সূচনা কমিউনিটি সেন্টারে। সেখানে নানক (জাহাঙ্গীর কবির নানক) ভাই ছিলেন। উত্তরের সভাপতি শেখ ফজলুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক রানাও ছিলেন। বৈঠকে স্থানীয় কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন। থানা-ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরাও উপস্থিত ছিলেন। পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠেছে বৈঠকে। আপাতত কমিটি বাতিল করে দেয়া হয়েছে। আর খোঁজখবর নেয়া হবে।’

মোহাম্মদপুর, আদাবর ও শেরেবাংলা নগরে যেভাবে ইউনিট ভেঙে দেয়া হলো, ঢাকার অন্যান্য এলাকায় এমন কিছু করা হবে কিনা, জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের ওই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, ‘তালিকা যেহেতু হচ্ছে, অ্যাকশন তো হবেই।’

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের সাম্প্রতিক আন্দোলনে দেশ প্রায় অচল হয়ে পড়ে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ব্যাপক সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ এবং হতাহতের ঘটনা ঘটে।

ক্ষমতাসীন দল থেকে নির্দেশনা আসে- ‘দলের এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতীম সব সংগঠনের নেতাকর্মীদের পাড়া-মহল্লায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে’। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ দলের এবং সব সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিজ নিজ অবস্থান থেকে ‘প্রস্তুত থাকতে বলেন, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বলেন’।

মাঠে না থাকা নেতাদের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে কথা হয় দলের বিভিন্ন উপকমিটিতে থাকা নেতাদের সঙ্গে। সাম্প্রতিক আন্দোলনে মাঠে ছিলেন এমন দাবি করে এক নেতা সংবাদকে বলেন, ‘আমরা কয়েকজনতো কেরানীগঞ্জ থেকে এসেছি। ঢাকা দক্ষিণে তো ট্যাকল দেয়ার লোক ছিল না।’

তার সঙ্গে থাকা আরেকজন (ছাত্রলীগের সাবেক নেতা) বলেন, ‘কেরানীগঞ্জ থেকে ৫০০ ডেডিকেটেড কর্মী ঢাকায় এসেছে। না হলে খবর ছিল। আমরা এরপর বিভিন্ন এলাকায় ভাগ করে মাঠে ছিলাম।’

তালিকা করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আরে ভাই কিসের তালিকা। ক্রাইসিস কি কেটে গেছে। এখন সবাইকে বুঝিয়ে লাইনে আনা হবে। এসব তালিকা-ফালিকা কিছু না। যারা মাঠে ছিলাম তারাই এখন সংখ্যালঘু। যারা লুকিয়ে ছিল সবাই ফিরে এসেছে। আবার তাদের জয়-জয়কার শুরু হয়ে গেছে। আপনি দেখেন না! কাদের ভাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে বলছে। পাহাড়ায় থাকতে বলছে। এখনতো সবাইকেই প্রয়োজন।’

back to top