সংবিধান পুর্নলিখন না করে সংশোধনের জন্য সংবিধান সংস্কার কমিশনে ‘সংস্কার প্রস্তাবনা’ জমা দিয়েছে বিএনপি। নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতায় ভারসাম্য, উপরাষ্ট্রপতি ও উপপ্রধানমন্ত্রীর পদ সৃষ্টিসহ সংবিধানের ৬২ জায়গায় সংশোধনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে দলটির পক্ষ থেকে।
‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের’ লক্ষ্যে বিএনপি যে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিল, তার আলোকেই লিখিত এ প্রস্তাব দিয়েছে দলটি। গণভোটের বিধান পুনঃপ্রবর্তন, দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয়, এই প্রস্তাব ছাড়াও ১৫তম সংশোধনীর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সংবিধান থেকে যে অনুচ্ছেদগুলো উঠিয়ে দিয়েছিল, সেগুলো পুনরায় প্রবর্তনসহ কিছু নতুন প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান আলী রীয়াজের কাছে এ প্রস্তাবনার লিখিত কপি জমা দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে দুই সদস্যের প্রতিনিধিদল। আলী রীয়াজ ছাড়াও সংস্কার কমিশনের অন্য সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
দলটির প্রস্তাবনার বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে সূচনা থেকে শুরু করে তফসিল পর্যন্ত মোট ৬২টি প্রস্তাবনা জমা দিয়েছি। জুলাই-আগস্ট বিপ্লব ও বর্তমান বাস্তবতা ও পরবর্তীকালে যেনো একনায়কতন্ত্র তৈরি না হয় সেসব বিষয় মাথায় রেখে প্রস্তাবনা দিয়েছি।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা প্রস্তাবে প্রজাতন্ত্র, নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ, আইন বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, তফসিলসহ সব বিষয় উল্লেখ করেছি, যাতে সংবিধানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সাধিত হয় এবং সেটার উপকার জনগণ পায়।’
সংবিধান পুনর্লিখনের বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে, এ বিষয়ে বিএনপি কোনো বক্তব্য দিয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নে সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘ব্যাপক ভিত্তিতে সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব করেছেন তারা। যাতে এটা গণতান্ত্রিক সংবিধান সংশোধন হয়। জনগণের আকাক্সক্ষা পূরণ হয়।’ রাষ্ট্রের সব অঙ্গে, সব ক্ষেত্রে যাতে ক্ষমতার ভারসাম্য সৃষ্টি হয়, সেই প্রস্তাবও দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জুডিশিয়ারির ক্ষেত্রেও আমরা প্রস্তাবনা দিয়েছি। উপ-রাষ্ট্রপতি, উপ-প্রধানমন্ত্রী রাখার ব্যাপারেও প্রস্তাবনা দিয়েছি। নির্বাহী, বিচার আইনসহ সব বিষয়ই আমরা এড্রেস করেছি, যাতে পাওয়ার অব ব্যালান্স তৈরি হয়।’
সংসদ না থাকায় সংবিধান সংশোধন কীভাবে হবে, এমন প্রশ্নে সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘সংবিধান সংস্কার কমিশন তাদের প্রস্তাবগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে পেশ করবে। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে সব রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, বিশেষজ্ঞসহ সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে তারা চূড়ান্ত করবেন। এ ক্ষেত্রে দেখা যাবে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে সবাই একমত হবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দ্বিমত থাকতেই পারে। যেসব বিষয়ে ঐকমত্য থাকবে, সেগুলো তারা যদি অঙ্গীকার করেন, নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিফলন করেন, তাহলে সবার অঙ্গীকার থাকবে পরবর্তী নির্বাচনে যারাই ক্ষমতায় আসুক, তারা সংবিধান সেভাবে পরিবর্তন করবে।’
সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান আলী রীয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিএনপির সংস্কার প্রস্তাবনা এখনও পড়ে দেখা হয়নি। তবে সবার সঙ্গে আলোচনা করে যেখানে যতটুকু প্রয়োজন তার সুপারিশ করা হবে।’
আলী রীয়াজ বলেন, ‘সংবিধান তো শুধু একটি নির্বাচনের জন্য নয়। নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেবে অন্তর্বর্তী সরকার। সংযোজন-বিয়োজন পুনর্লিখন যেখানে যে ধরনের সুপারিশ প্রয়োজন আমরা তা করবো। আশা করি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলে আমরা আমাদের সুপারিশগুলো করতে পারব। আমাদের সময় দিন সবার মতের সারাংশ নিয়ে আমরা কাজ করবো।’
গত ৩ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদেরকে সনির্বন্ধ অনুরোধ করব লিখিত মতামত এবং সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পাঠানোর জন্য।’ এই কমিশন ইতোমধ্যে বিশিষ্ট নাগরিকসহ অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় শুরু করেছে।
২৫ নভেম্বর সোমবার সংবিধান সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে সংস্কার নিয়ে এ পর্যন্ত ৪৭ হাজারের বেশি মানুষ মতামত দিয়েছেন।
বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪
সংবিধান পুর্নলিখন না করে সংশোধনের জন্য সংবিধান সংস্কার কমিশনে ‘সংস্কার প্রস্তাবনা’ জমা দিয়েছে বিএনপি। নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা, দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতায় ভারসাম্য, উপরাষ্ট্রপতি ও উপপ্রধানমন্ত্রীর পদ সৃষ্টিসহ সংবিধানের ৬২ জায়গায় সংশোধনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে দলটির পক্ষ থেকে।
‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের’ লক্ষ্যে বিএনপি যে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিল, তার আলোকেই লিখিত এ প্রস্তাব দিয়েছে দলটি। গণভোটের বিধান পুনঃপ্রবর্তন, দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয়, এই প্রস্তাব ছাড়াও ১৫তম সংশোধনীর মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সংবিধান থেকে যে অনুচ্ছেদগুলো উঠিয়ে দিয়েছিল, সেগুলো পুনরায় প্রবর্তনসহ কিছু নতুন প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় সংসদ ভবনে সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান আলী রীয়াজের কাছে এ প্রস্তাবনার লিখিত কপি জমা দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে দুই সদস্যের প্রতিনিধিদল। আলী রীয়াজ ছাড়াও সংস্কার কমিশনের অন্য সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
দলটির প্রস্তাবনার বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে সূচনা থেকে শুরু করে তফসিল পর্যন্ত মোট ৬২টি প্রস্তাবনা জমা দিয়েছি। জুলাই-আগস্ট বিপ্লব ও বর্তমান বাস্তবতা ও পরবর্তীকালে যেনো একনায়কতন্ত্র তৈরি না হয় সেসব বিষয় মাথায় রেখে প্রস্তাবনা দিয়েছি।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা প্রস্তাবে প্রজাতন্ত্র, নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ, আইন বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, তফসিলসহ সব বিষয় উল্লেখ করেছি, যাতে সংবিধানে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সাধিত হয় এবং সেটার উপকার জনগণ পায়।’
সংবিধান পুনর্লিখনের বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে, এ বিষয়ে বিএনপি কোনো বক্তব্য দিয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নে সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘ব্যাপক ভিত্তিতে সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব করেছেন তারা। যাতে এটা গণতান্ত্রিক সংবিধান সংশোধন হয়। জনগণের আকাক্সক্ষা পূরণ হয়।’ রাষ্ট্রের সব অঙ্গে, সব ক্ষেত্রে যাতে ক্ষমতার ভারসাম্য সৃষ্টি হয়, সেই প্রস্তাবও দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘জুডিশিয়ারির ক্ষেত্রেও আমরা প্রস্তাবনা দিয়েছি। উপ-রাষ্ট্রপতি, উপ-প্রধানমন্ত্রী রাখার ব্যাপারেও প্রস্তাবনা দিয়েছি। নির্বাহী, বিচার আইনসহ সব বিষয়ই আমরা এড্রেস করেছি, যাতে পাওয়ার অব ব্যালান্স তৈরি হয়।’
সংসদ না থাকায় সংবিধান সংশোধন কীভাবে হবে, এমন প্রশ্নে সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘সংবিধান সংস্কার কমিশন তাদের প্রস্তাবগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে পেশ করবে। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, বিষয়টি নিয়ে সব রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, বিশেষজ্ঞসহ সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে তারা চূড়ান্ত করবেন। এ ক্ষেত্রে দেখা যাবে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে সবাই একমত হবে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দ্বিমত থাকতেই পারে। যেসব বিষয়ে ঐকমত্য থাকবে, সেগুলো তারা যদি অঙ্গীকার করেন, নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিফলন করেন, তাহলে সবার অঙ্গীকার থাকবে পরবর্তী নির্বাচনে যারাই ক্ষমতায় আসুক, তারা সংবিধান সেভাবে পরিবর্তন করবে।’
সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান আলী রীয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিএনপির সংস্কার প্রস্তাবনা এখনও পড়ে দেখা হয়নি। তবে সবার সঙ্গে আলোচনা করে যেখানে যতটুকু প্রয়োজন তার সুপারিশ করা হবে।’
আলী রীয়াজ বলেন, ‘সংবিধান তো শুধু একটি নির্বাচনের জন্য নয়। নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নেবে অন্তর্বর্তী সরকার। সংযোজন-বিয়োজন পুনর্লিখন যেখানে যে ধরনের সুপারিশ প্রয়োজন আমরা তা করবো। আশা করি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলে আমরা আমাদের সুপারিশগুলো করতে পারব। আমাদের সময় দিন সবার মতের সারাংশ নিয়ে আমরা কাজ করবো।’
গত ৩ নভেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদেরকে সনির্বন্ধ অনুরোধ করব লিখিত মতামত এবং সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পাঠানোর জন্য।’ এই কমিশন ইতোমধ্যে বিশিষ্ট নাগরিকসহ অন্যান্য অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় শুরু করেছে।
২৫ নভেম্বর সোমবার সংবিধান সংস্কার কমিশনের পক্ষ থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, কমিশনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে সংস্কার নিয়ে এ পর্যন্ত ৪৭ হাজারের বেশি মানুষ মতামত দিয়েছেন।