ভারতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তার জন্য জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীর সহায়তা নিতে অন্তর্বতী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
আজ মঙ্গলবার নয়া পল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানান।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, উগ্রবাদী সন্ত্রাসীরা ভারতের বিজেপি সরকারের উসকানিতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের নিস্ক্রিয় উপস্থিতিতে আগরতলার কুঞ্জবনে বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনে নারকীয় হামলা, জাতীয় পতাকা ছিঁড়ে আগুন, পতাকার খুঁটি ভাঙচুর, সহকারী হাই কমিশনের অভ্যন্তরের সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ভারতের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী আমাদের হাই কমিশনের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশ মিশনের কর্মকর্তা কর্মচারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এই অবস্থায় বাংলাদেশ সরকারের উচিত হবে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনীর সহায়তা চাওয়া, সেখানে আমাদের মানুষদের নিরাপত্তার জন্যে ব্যবস্থা নেওয়া।
তিনি বলেন, আগরতলায় কূটনৈতিক মিশনের ওপর এহেন নজিরবিহীন হামলা ভিয়েনা কনভেনশন অন ডিপ্লোমেটিক রিলেশন, ১৯৬১ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ভারতীয় সরকার হামলার জন্য দুঃখ প্রকাশ নাটক করলেও, অতীতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের আগ্রাসী হস্তক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে, যা আরও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। আমরা ভারতের উগ্রবাদী হিন্দুদের বলব, আপনাদের বন্ধুত্ব তো শেখ হাসিনার সাথে। সেই বন্ধুত্ব রক্ষায় বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে যে প্রকাশ্যে শত্রুতায় নেমেছেন, সেটা সৎ প্রতিবেশীসূলভ আচরণ নয়। হাজার হাজার মানুষ হত্যা করে আপনাদের বন্ধু হাসিনা আপনাদের কাছে আশ্রয় পেয়েছে। তাকে নিয়ে সন্তুষ্ট থাকুন। মনে রাখবেন, বাংলাদেশ লাখো প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীন হয়েছে দিল্লীর দাসত্ব করতে নয়। যে সেবাদাসী হতে চেয়েছিলেন, সেই দাসী এখন আপনাদের পদতলে।
রিজভী বলেন, ভারতের বিজেপি সরকার ও উগ্রবাদীরা এখন ক্ষমতাহারা শেখ হাসিনার চেয়েও বেশি পাগল হয়ে গেছে। তারা মরিয়া হয়ে প্রপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে। হিন্দুত্ববাদীদের আরেক ছদ্মবেশী শিখণ্ডি মমতা ব্যানার্জি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী পাঠাতে বলছে। ভারতেই তো বাংলাদেশের মিশনগুলো অরক্ষিত, নিরাপত্তাহীন। মিশনের একজনকে আমরা ভিডিওতে ভাইরাল হতে দেখেছি, কি বেদম প্রহার করা হচ্ছে! তারপরেও মমতা ব্যানার্জি বলবেন… বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী বাহিনী দরকার না ভারতে শান্তিরক্ষী বাহিনী দরকার?”
রিজভী মনে করেন কাশ্মীর, আসাম ও মনিপুরেও জাতীয় সংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনী পাঠানো প্রযোজন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে রিজভী বলেন, আগে নিজের দেশ সামলান। শান্তিরক্ষী বাহিনী আপনার দেশ ইন্ডিয়াতে মোতায়েন করেন। খুব দরকার, বিশেষ করে কাশ্মীরে আর আসামে ও মনিপুরে। ভারতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এক দশকের শাসনামলে ধর্মীয় সংখ্যালঘু মুসলিমদের অধিকার ক্রমশ কমে আসছে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) মুসলিমবিরোধী বলে অভিযোগ রয়েছে।ভারতে একমাত্র মুসলিম অধ্যুষিত জম্মু ও কাশ্মিরের বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা বাতিল করেছে মোদী সরকার। অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের স্থানে নির্মিত হয়েছে রামমন্দির। একাধিক রাজ্যে গরুর মাংস বিক্রি করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মুছে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে মুঘল আমলের বিভিন্ন নাম ও স্মৃতিচিহ্ন।
রিজভী বলেন, ভারতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর অসংখ্য নির্মমতার ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। সেসব নিয়ে দেশটির কোনো সংকোচ বা অনুশোচনা নেই। কিন্তু বাংলাদেশে তাদের মাস্টারপ্ল্যানের পরিস্থিতিতে তারা অযাচিত উদ্বেগ-উগ্রতা প্রকাশ করছে।
তিনি আরও বলেন, সেই পরিস্থিতি কিছুই না… দুয়েকটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। কিন্তু ভারতের মাস্টারপ্ল্যানের অংশ হচ্ছে, বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করো, বাংলাদেশ যাতে সঠিকভাবে চলতে না পারে– এটাই হচ্ছে তাদের আন্তর্জাতিক মাস্টারপ্ল্যান এবং এখানে বাইরের একটি দেশ এর মধ্যে জড়িত বলে বাংলাদেশের জনগণ মনে করে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, আপনি ভারতীয় মিডিয়াগুলো দেখবেন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবিরত তারা কোরাস গাইছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, অপপ্রচার করছে। বাংলাদেশে একটি মৃত্তিকা কাঁপানো যে বিপ্লব ঘটে গেছে ৫ অগাস্ট, সেটা নিয়ে তারা কুৎসা করছে, এদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ছাত্র-জনতার যে আত্মহুতি, তাদের যে আত্মদান সেটা নিয়ে তারা কুৎসা করছে। তাদের একমাত্র আরাধ্য হচ্ছে শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪
ভারতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তার জন্য জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীর সহায়তা নিতে অন্তর্বতী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
আজ মঙ্গলবার নয়া পল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই আহ্বান জানান।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, উগ্রবাদী সন্ত্রাসীরা ভারতের বিজেপি সরকারের উসকানিতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের নিস্ক্রিয় উপস্থিতিতে আগরতলার কুঞ্জবনে বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনে নারকীয় হামলা, জাতীয় পতাকা ছিঁড়ে আগুন, পতাকার খুঁটি ভাঙচুর, সহকারী হাই কমিশনের অভ্যন্তরের সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ভারতের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী আমাদের হাই কমিশনের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশ মিশনের কর্মকর্তা কর্মচারীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এই অবস্থায় বাংলাদেশ সরকারের উচিত হবে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনীর সহায়তা চাওয়া, সেখানে আমাদের মানুষদের নিরাপত্তার জন্যে ব্যবস্থা নেওয়া।
তিনি বলেন, আগরতলায় কূটনৈতিক মিশনের ওপর এহেন নজিরবিহীন হামলা ভিয়েনা কনভেনশন অন ডিপ্লোমেটিক রিলেশন, ১৯৬১ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ভারতীয় সরকার হামলার জন্য দুঃখ প্রকাশ নাটক করলেও, অতীতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের আগ্রাসী হস্তক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে, যা আরও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। আমরা ভারতের উগ্রবাদী হিন্দুদের বলব, আপনাদের বন্ধুত্ব তো শেখ হাসিনার সাথে। সেই বন্ধুত্ব রক্ষায় বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে যে প্রকাশ্যে শত্রুতায় নেমেছেন, সেটা সৎ প্রতিবেশীসূলভ আচরণ নয়। হাজার হাজার মানুষ হত্যা করে আপনাদের বন্ধু হাসিনা আপনাদের কাছে আশ্রয় পেয়েছে। তাকে নিয়ে সন্তুষ্ট থাকুন। মনে রাখবেন, বাংলাদেশ লাখো প্রাণের বিনিময়ে স্বাধীন হয়েছে দিল্লীর দাসত্ব করতে নয়। যে সেবাদাসী হতে চেয়েছিলেন, সেই দাসী এখন আপনাদের পদতলে।
রিজভী বলেন, ভারতের বিজেপি সরকার ও উগ্রবাদীরা এখন ক্ষমতাহারা শেখ হাসিনার চেয়েও বেশি পাগল হয়ে গেছে। তারা মরিয়া হয়ে প্রপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে। হিন্দুত্ববাদীদের আরেক ছদ্মবেশী শিখণ্ডি মমতা ব্যানার্জি জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী পাঠাতে বলছে। ভারতেই তো বাংলাদেশের মিশনগুলো অরক্ষিত, নিরাপত্তাহীন। মিশনের একজনকে আমরা ভিডিওতে ভাইরাল হতে দেখেছি, কি বেদম প্রহার করা হচ্ছে! তারপরেও মমতা ব্যানার্জি বলবেন… বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী বাহিনী দরকার না ভারতে শান্তিরক্ষী বাহিনী দরকার?”
রিজভী মনে করেন কাশ্মীর, আসাম ও মনিপুরেও জাতীয় সংঘের শান্তিরক্ষা বাহিনী পাঠানো প্রযোজন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে রিজভী বলেন, আগে নিজের দেশ সামলান। শান্তিরক্ষী বাহিনী আপনার দেশ ইন্ডিয়াতে মোতায়েন করেন। খুব দরকার, বিশেষ করে কাশ্মীরে আর আসামে ও মনিপুরে। ভারতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর এক দশকের শাসনামলে ধর্মীয় সংখ্যালঘু মুসলিমদের অধিকার ক্রমশ কমে আসছে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) মুসলিমবিরোধী বলে অভিযোগ রয়েছে।ভারতে একমাত্র মুসলিম অধ্যুষিত জম্মু ও কাশ্মিরের বিশেষ রাজ্যের মর্যাদা বাতিল করেছে মোদী সরকার। অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের স্থানে নির্মিত হয়েছে রামমন্দির। একাধিক রাজ্যে গরুর মাংস বিক্রি করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মুছে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে মুঘল আমলের বিভিন্ন নাম ও স্মৃতিচিহ্ন।
রিজভী বলেন, ভারতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর অসংখ্য নির্মমতার ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। সেসব নিয়ে দেশটির কোনো সংকোচ বা অনুশোচনা নেই। কিন্তু বাংলাদেশে তাদের মাস্টারপ্ল্যানের পরিস্থিতিতে তারা অযাচিত উদ্বেগ-উগ্রতা প্রকাশ করছে।
তিনি আরও বলেন, সেই পরিস্থিতি কিছুই না… দুয়েকটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা। কিন্তু ভারতের মাস্টারপ্ল্যানের অংশ হচ্ছে, বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করো, বাংলাদেশ যাতে সঠিকভাবে চলতে না পারে– এটাই হচ্ছে তাদের আন্তর্জাতিক মাস্টারপ্ল্যান এবং এখানে বাইরের একটি দেশ এর মধ্যে জড়িত বলে বাংলাদেশের জনগণ মনে করে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, আপনি ভারতীয় মিডিয়াগুলো দেখবেন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবিরত তারা কোরাস গাইছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে, অপপ্রচার করছে। বাংলাদেশে একটি মৃত্তিকা কাঁপানো যে বিপ্লব ঘটে গেছে ৫ অগাস্ট, সেটা নিয়ে তারা কুৎসা করছে, এদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ছাত্র-জনতার যে আত্মহুতি, তাদের যে আত্মদান সেটা নিয়ে তারা কুৎসা করছে। তাদের একমাত্র আরাধ্য হচ্ছে শেখ হাসিনা।