image

৫ দিন জনসংযোগ করবে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও নাগরিক কমিটি

শনিবার, ০৪ জানুয়ারী ২০২৫
সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি ‘জুলাই ঘোষণষাপত্র’ নিয়ে মানুষের মনোভাব জানতে যৌথভাবে সারাদেশে জনসংযোগ করবে। ৬ থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত এই জনসংযোগ কর্মসূচি চলবে বলে শনিবার (৪ জানুয়ারি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি বিশ্বাস করে এই প্রোক্লেমেশন অব রেভ্যুলেশন বাস্তবায়ন ও ঘোষণা জাতীয় এবং ঐতিহাসিক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। এই অভ্যুত্থানে বাংলাদেশের প্রত্যেক শ্রেণীর মানুষের অংশগ্রহণ ছিল। আমাদের প্রত্যাশা এই ঘোষণাপত্রে জনমানুষের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটবে।’

৬ থেকে ১১ জানুয়ারি সারাদেশে জনসংযোগ করার ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, ‘এ সময় আমরা লিফলেট বিতরণ, সমাবেশ এবং বিভিন্ন মাত্রায় জনসংযোগ করব। বাংলাদেশের মানুষের আশা-আকাক্সক্ষা কী, তারা কী দেখতে চায় এ প্রক্লেমেশনে, সেটা শোনার জন্য আমরা মানুষের কাছে ছুটে যাব।

হাসনাত আব্দুল্লাহ জানান, ‘আগামী সপ্তাহ জুড়ে দেশের প্রতিটি জেলায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, প্রত্যেক জেলা-উপজেলায় ছাত্র- নাগরিক-কৃষক-শ্রমিক, সর্বস্তরের মানুষের মাঝে একযোগে জনসংযোগ চালাব।’

২০২৪ সালের শেষ দিন মঙ্গলবার ‘মার্চ ফর ইউনিটি কর্মসূচি’ ঘোষণা করে জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন। শহীদ মিনারের ওই কর্মসূচি থেকেই ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের কথা ছিল। সেই প্রস্তুতি নিয়ে সারাদেশ থেকে ছাত্র-জনতাকে শহীদ মিনারে সমবেত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। বলা হয়েছিল, এই ‘জুলাই প্রোক্লেমেশন’ হবে ‘আগামীর বাংলাদেশের ঘোষণাপত্র’। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে এর মাধ্যমে ‘নাৎসি বাহিনীর’ মত ‘অপ্রাসঙ্গিক’ ঘোষণা করা হবে। একইসঙ্গে ১৯৭২ সালের ‘মুজিববাদী’ সংবিধানের ‘কবর’ রচনা করা হবে।

এই কর্মসূচি নিয়ে নানা জল্পনা কল্পনার মধ্যে গত রোববার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘোষণাপত্রের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের সম্পর্ক কোনো সম্পর্ক নেই। কিন্তু এক দিনের ব্যবধানে সোমবার সন্ধ্যায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে একই ধরনের ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ নেয়ার কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

এরপর গত সোমবার গভীর রাতে জরুরি বৈঠক শেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘোষণা দেয়, অন্তর্বর্তী সরকার যেহেতু ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে, তারা তাতেই সমর্থন দেবে।

এরপর নতুন বছরের প্রথম দিন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘জুলাই প্রোক্লেমেশন’ এর খসড়া তৈরির কাজ এখনও শুরু হয়নি।

শনিবার সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘ঘোষণাপত্র প্রণয়নে সরকারের কার্যক্রম এখনও দৃশ্যমান নয়। সরকার অবিলম্বে এ বিষয়ে পদক্ষেপ না নিলে কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে।’

মানুষের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে বিপ্লবের ঘোষণাপত্র প্রণয়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

নাসীরুদ্দীন বলেন, ‘ঘোষণাপত্র প্রণয়নে সব রাজনৈতিক দলগুলোর ইতিবাচক সাড়া ও সহযোগিতা রয়েছে। দৃষ্টিভঙ্গিগত কিছু পার্থক্য থাকলেও সবার মতামতের ভিত্তিতেই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের কাজ চলছে।’

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদসহ প্রমুখ।

‘রাজনীতি’ : আরও খবর

সম্প্রতি