বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখতে হলে তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা দ্রুত দিতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, “যদি সত্যিই বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চান, তাহলে তাড়াতাড়ি তিস্তার পানি দেন। সীমান্তে গুলি করে মানুষ হত্যা বন্ধ করুন। আমরা ভারতকে বন্ধু হিসেবে দেখতে চাই, তবে সেই বন্ধুত্ব হবে ন্যায্য পাওনা বুঝে নিয়ে, সম্মানের সঙ্গে।”
সোমবার দুপুরে লালমনিরহাটের তিস্তা রেলসেতু সংলগ্ন এলাকায় ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’-এর ব্যানারে আয়োজিত ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব।
অন্তর্বর্তী সরকারকে ভারতকে চাপে রাখার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “আপনারা তো বলেন, আপনারা নিরপেক্ষ সরকার। তাহলে আপনাদের এখন মুখ খুলতে হবে। ভারতকে বলতে হবে, আমরা আমাদের পানির ন্যায্য হিস্যা চাই।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে ভারতের যে বন্ধুত্ব, সেটা কেবল রাজনৈতিক ভাষণ বা কূটনৈতিক সৌজন্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না। এই বন্ধুত্বের প্রকৃত রূপ দিতে হলে পানির সমবণ্টন নিশ্চিত করতে হবে, সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে হবে।”
তিস্তা ইস্যুতে আওয়ামী লীগের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, “বিগত সরকার যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন মনে হয়েছিল, এইবার বুঝি তিস্তা চুক্তি হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল, গত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকার ভারতকে খুশি করার জন্য বাংলাদেশকে অনেক কিছু দিয়েছে, অথচ তিস্তার এক ফোঁটা পানিও আনতে পারেনি।”
তিনি বলেন, “লড়াই ছাড়া কিছু পাওয়া যায় না। লড়াই করেই আমাদের অধিকার আদায় করতে হবে। তিস্তা পাড়ের মানুষের দুঃখ-দুর্দশার শেষ নেই। বছরের পর বছর ধরে আমরা তিস্তার ন্যায্য হিস্যার জন্য কথা বলছি, কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি।”
শুধু তিস্তা নয়, উজানে ভারতের পানি নিয়ন্ত্রণের কারণে বাংলাদেশের আরও অনেক নদীর পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের উজানে থাকা ৫৪টি নদীতে ভারত বাঁধ দিয়েছে। এসব নদী থেকে একতরফা পানি তুলে নিয়ে তারা বিদ্যুৎ উৎপাদন করে, অথচ আমাদের দেশের কৃষকরা পানির অভাবে ফসল ফলাতে পারেন না, জেলেরা মাছ ধরতে পারেন না।”
তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হলে উত্তরাঞ্চলের কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় বিএনপির মহাসচিব অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দ্রুত নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন করার দাবি জানান।
তিনি বলেন, “অবিলম্বে নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিন। সরকার যদি জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে না দেয়, তবে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে তা আদায় করা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা ১৫ বছর ধরে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। আমাদের তরুণদের ৩৬ দিনের সফল লড়াইয়ের পর হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেছেন।”
‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’-এর প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে এই কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এবং জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামান হায়দার।
এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার ১১টি স্থানে সমাবেশ, পদযাত্রা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নদীর পাড়ে তাঁবু স্থাপন করে আন্দোলনকারীরা রাত্রিযাপনেরও ব্যবস্থা করেছেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভার্চুয়ালি আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে। তার বক্তব্যে আন্দোলনের পরবর্তী করণীয় নিয়ে দিকনির্দেশনা আসতে পারে বলে জানিয়েছেন দলের নেতারা।
সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখতে হলে তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা দ্রুত দিতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, “যদি সত্যিই বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চান, তাহলে তাড়াতাড়ি তিস্তার পানি দেন। সীমান্তে গুলি করে মানুষ হত্যা বন্ধ করুন। আমরা ভারতকে বন্ধু হিসেবে দেখতে চাই, তবে সেই বন্ধুত্ব হবে ন্যায্য পাওনা বুঝে নিয়ে, সম্মানের সঙ্গে।”
সোমবার দুপুরে লালমনিরহাটের তিস্তা রেলসেতু সংলগ্ন এলাকায় ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’-এর ব্যানারে আয়োজিত ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বিএনপির মহাসচিব।
অন্তর্বর্তী সরকারকে ভারতকে চাপে রাখার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “আপনারা তো বলেন, আপনারা নিরপেক্ষ সরকার। তাহলে আপনাদের এখন মুখ খুলতে হবে। ভারতকে বলতে হবে, আমরা আমাদের পানির ন্যায্য হিস্যা চাই।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে ভারতের যে বন্ধুত্ব, সেটা কেবল রাজনৈতিক ভাষণ বা কূটনৈতিক সৌজন্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে হবে না। এই বন্ধুত্বের প্রকৃত রূপ দিতে হলে পানির সমবণ্টন নিশ্চিত করতে হবে, সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে হবে।”
তিস্তা ইস্যুতে আওয়ামী লীগের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, “বিগত সরকার যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন মনে হয়েছিল, এইবার বুঝি তিস্তা চুক্তি হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল, গত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ সরকার ভারতকে খুশি করার জন্য বাংলাদেশকে অনেক কিছু দিয়েছে, অথচ তিস্তার এক ফোঁটা পানিও আনতে পারেনি।”
তিনি বলেন, “লড়াই ছাড়া কিছু পাওয়া যায় না। লড়াই করেই আমাদের অধিকার আদায় করতে হবে। তিস্তা পাড়ের মানুষের দুঃখ-দুর্দশার শেষ নেই। বছরের পর বছর ধরে আমরা তিস্তার ন্যায্য হিস্যার জন্য কথা বলছি, কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি।”
শুধু তিস্তা নয়, উজানে ভারতের পানি নিয়ন্ত্রণের কারণে বাংলাদেশের আরও অনেক নদীর পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের উজানে থাকা ৫৪টি নদীতে ভারত বাঁধ দিয়েছে। এসব নদী থেকে একতরফা পানি তুলে নিয়ে তারা বিদ্যুৎ উৎপাদন করে, অথচ আমাদের দেশের কৃষকরা পানির অভাবে ফসল ফলাতে পারেন না, জেলেরা মাছ ধরতে পারেন না।”
তিস্তা চুক্তি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হলে উত্তরাঞ্চলের কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়বে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় বিএনপির মহাসচিব অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দ্রুত নিরপেক্ষ নির্বাচনের আয়োজন করার দাবি জানান।
তিনি বলেন, “অবিলম্বে নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিন। সরকার যদি জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে না দেয়, তবে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে তা আদায় করা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমরা ১৫ বছর ধরে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। আমাদের তরুণদের ৩৬ দিনের সফল লড়াইয়ের পর হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেছেন।”
‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’-এর প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে এই কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এবং জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামান হায়দার।
এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার ১১টি স্থানে সমাবেশ, পদযাত্রা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নদীর পাড়ে তাঁবু স্থাপন করে আন্দোলনকারীরা রাত্রিযাপনেরও ব্যবস্থা করেছেন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভার্চুয়ালি আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে। তার বক্তব্যে আন্দোলনের পরবর্তী করণীয় নিয়ে দিকনির্দেশনা আসতে পারে বলে জানিয়েছেন দলের নেতারা।