জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, রাজনীতি নিয়ে কোনো রাষ্ট্রীয় সংস্থা বা সেনাবাহিনীর প্রস্তাব বা সিদ্ধান্ত দেওয়ার এখতিয়ার নেই।
শুক্রবার রাতে দলের এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, "নির্বাচন কিংবা আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধের বিষয়টি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এটি সরকার, জনগণ এবং বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর নির্ভরশীল। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত বা প্রস্তাব দেওয়ার অধিকার নেই।"
বাংলা মোটরের রূপায়ন টাওয়ারে এনসিপির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, সাত মাস আগে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশ থেকে ‘ফ্যাসিবাদ’ উৎখাত করা হয়েছে। কিন্তু এরপরও বিভিন্ন মহল থেকে আওয়ামী লীগকে ‘পুনর্বাসনের’ চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, "রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায় থেকে আওয়ামী লীগকে ফের রাজনীতিতে আনার অপচেষ্টা চলছে। বিদেশি শক্তিগুলোও আওয়ামী লীগের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করছে। তবে এনসিপি এসব চক্রান্তের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে।"
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নাহিদ ইসলাম বলেন, "গণঅভ্যুত্থানের সাত মাস পেরিয়ে গেলেও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কোনো দৃশ্যমান বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। গণহত্যার দায়ে অভিযুক্তদের বিচারের আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতি চালিয়ে যাওয়ার কোনো নৈতিক অধিকার নেই।"
তিনি আরও বলেন, "আওয়ামী লীগ কোনো গণতান্ত্রিক দল নয়, এটি একটি ফ্যাসিবাদী সংগঠন। জনগণের বিপুল প্রতিবাদ এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দলটি ক্ষমতা থেকে উৎখাত হয়েছে। তাই আওয়ামী লীগকে গণতান্ত্রিক ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যে ফেলা যাবে না।"
এনসিপি দাবি জানায়, "বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলে সংঘটিত সব গণহত্যার বিচার নিশ্চিত না করে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ফেরার যেকোনো প্রচেষ্টা বন্ধ করতে হবে। বিচারিক প্রক্রিয়া চলাকালীন দলটির নিবন্ধন বাতিল করা উচিত।"
এদিকে, এনসিপির সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ দাবি করেন, সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাদের সাম্প্রতিক সাক্ষাতে রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপের আভাস পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, "রাজনীতি রাজনীতিবিদদের বিষয়। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর এ ধরনের কর্মকাণ্ড রাজনৈতিক শিষ্টাচারের পরিপন্থী। সেনাপ্রধানের সাম্প্রতিক কিছু বক্তব্যও রাজনৈতিক অঙ্গনে অশোভন বলে মনে করা হচ্ছে।"
নিরাপত্তার ঝুঁকি সম্পর্কে এক প্রশ্নের উত্তরে হাসনাত বলেন, "ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক শক্তিগুলো ঐক্যবদ্ধ থাকলে নিরাপত্তার ঝুঁকি নেই। তবে আওয়ামী লীগ এখনও তার অপরাধ স্বীকার করেনি বা অনুশোচনা দেখায়নি। বিচার নিশ্চিত না করে দলটির সঙ্গে কোনো আলোচনা সম্ভব নয়।"
এনসিপি একাত্তরের গণহত্যার পাশাপাশি ২০২৪ সালের ‘গণহত্যার’ বিচারও চায় বলে জানান নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, "আমরা চাই, ৭১-এর গণহত্যার বিচার সম্পন্ন হোক। তবে বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আওয়ামী লীগের বিচারের ব্যবস্থা করা।"
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবির বিষয়ে সাম্প্রতিক সময়ে এনসিপির কয়েকজন নেতার ফেসবুক পোস্ট আলোচনার জন্ম দিয়েছে। হাসনাত আব্দুল্লাহ তার এক পোস্টে দাবি করেন, "আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে ফেরাতে সেনাবাহিনী চাপ দিচ্ছে।" তবে সেনা সদর বা আইএসপিআর এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি বিএনপিও উড়িয়ে দিচ্ছে না বলে জানিয়েছেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, "যারা অপরাধ করেছে, তাদের বিচার হওয়া দরকার। তবে বিচার সম্পন্ন হলে জনগণ যদি তাদের রাজনীতি করতে দেয়, তাহলে আমাদের আপত্তি থাকবে না।"
শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, রাজনীতি নিয়ে কোনো রাষ্ট্রীয় সংস্থা বা সেনাবাহিনীর প্রস্তাব বা সিদ্ধান্ত দেওয়ার এখতিয়ার নেই।
শুক্রবার রাতে দলের এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, "নির্বাচন কিংবা আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধের বিষয়টি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। এটি সরকার, জনগণ এবং বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর নির্ভরশীল। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত বা প্রস্তাব দেওয়ার অধিকার নেই।"
বাংলা মোটরের রূপায়ন টাওয়ারে এনসিপির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে দলের সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, সাত মাস আগে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশ থেকে ‘ফ্যাসিবাদ’ উৎখাত করা হয়েছে। কিন্তু এরপরও বিভিন্ন মহল থেকে আওয়ামী লীগকে ‘পুনর্বাসনের’ চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, "রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায় থেকে আওয়ামী লীগকে ফের রাজনীতিতে আনার অপচেষ্টা চলছে। বিদেশি শক্তিগুলোও আওয়ামী লীগের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করছে। তবে এনসিপি এসব চক্রান্তের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে।"
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নাহিদ ইসলাম বলেন, "গণঅভ্যুত্থানের সাত মাস পেরিয়ে গেলেও আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কোনো দৃশ্যমান বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। গণহত্যার দায়ে অভিযুক্তদের বিচারের আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতি চালিয়ে যাওয়ার কোনো নৈতিক অধিকার নেই।"
তিনি আরও বলেন, "আওয়ামী লীগ কোনো গণতান্ত্রিক দল নয়, এটি একটি ফ্যাসিবাদী সংগঠন। জনগণের বিপুল প্রতিবাদ এবং ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দলটি ক্ষমতা থেকে উৎখাত হয়েছে। তাই আওয়ামী লীগকে গণতান্ত্রিক ফ্রেমওয়ার্কের মধ্যে ফেলা যাবে না।"
এনসিপি দাবি জানায়, "বিগত ফ্যাসিবাদী শাসনামলে সংঘটিত সব গণহত্যার বিচার নিশ্চিত না করে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ফেরার যেকোনো প্রচেষ্টা বন্ধ করতে হবে। বিচারিক প্রক্রিয়া চলাকালীন দলটির নিবন্ধন বাতিল করা উচিত।"
এদিকে, এনসিপির সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ দাবি করেন, সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাদের সাম্প্রতিক সাক্ষাতে রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপের আভাস পাওয়া গেছে।
তিনি বলেন, "রাজনীতি রাজনীতিবিদদের বিষয়। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর এ ধরনের কর্মকাণ্ড রাজনৈতিক শিষ্টাচারের পরিপন্থী। সেনাপ্রধানের সাম্প্রতিক কিছু বক্তব্যও রাজনৈতিক অঙ্গনে অশোভন বলে মনে করা হচ্ছে।"
নিরাপত্তার ঝুঁকি সম্পর্কে এক প্রশ্নের উত্তরে হাসনাত বলেন, "ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক শক্তিগুলো ঐক্যবদ্ধ থাকলে নিরাপত্তার ঝুঁকি নেই। তবে আওয়ামী লীগ এখনও তার অপরাধ স্বীকার করেনি বা অনুশোচনা দেখায়নি। বিচার নিশ্চিত না করে দলটির সঙ্গে কোনো আলোচনা সম্ভব নয়।"
এনসিপি একাত্তরের গণহত্যার পাশাপাশি ২০২৪ সালের ‘গণহত্যার’ বিচারও চায় বলে জানান নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, "আমরা চাই, ৭১-এর গণহত্যার বিচার সম্পন্ন হোক। তবে বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো আওয়ামী লীগের বিচারের ব্যবস্থা করা।"
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবির বিষয়ে সাম্প্রতিক সময়ে এনসিপির কয়েকজন নেতার ফেসবুক পোস্ট আলোচনার জন্ম দিয়েছে। হাসনাত আব্দুল্লাহ তার এক পোস্টে দাবি করেন, "আওয়ামী লীগকে রাজনীতিতে ফেরাতে সেনাবাহিনী চাপ দিচ্ছে।" তবে সেনা সদর বা আইএসপিআর এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি বিএনপিও উড়িয়ে দিচ্ছে না বলে জানিয়েছেন দলটির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, "যারা অপরাধ করেছে, তাদের বিচার হওয়া দরকার। তবে বিচার সম্পন্ন হলে জনগণ যদি তাদের রাজনীতি করতে দেয়, তাহলে আমাদের আপত্তি থাকবে না।"