দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণের দায়িত্ব দেশের মানুষের হাতেই—এ কথা মনে করিয়ে দিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমেরিকার ডনাল্ড ট্রাম্প, চীনের শি জিনপিং কিংবা ভারতের নরেন্দ্র মোদী এসে কিছু করতে পারবেন না।
শনিবার দুপুরে ঢাকার বসুন্ধরার নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে ‘বাংলাদেশ ক্ষমতায়ন: নেতৃত্ব, ঐক্য এবং প্রবৃদ্ধির পথ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নেই দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “একটা কথা জোর দিয়ে বলতে চাই, গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নাই এবং গণতন্ত্রকে চাপিয়ে দেওয়া যায় না। আপনি আমার ওপরে চাপিয়ে দেবেন, তা দেওয়া যাবে না। গণতন্ত্র চর্চা করতে হবে, প্র্যাকটিস করতে হবে। সেই জায়গাগুলোকে খোলা রাখতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এই আশা রেখে আবারও বলতে চাই, সেই বিহঙ্গের মত একদিন না একদিন তীরে এসে পৌঁছাবই।”
‘দেশটা আমাদের, বিদেশের কেউ এসে করে দেবে না’ মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমি অত্যন্ত আশাবাদী। আমি বিশ্বাস করি, আমরা সবাই যদি আজকে এইটুকু বুঝতে পারি যে দেশটা আমাদের, এর ভবিষ্যৎ আমাদেরই নির্মাণ করতে হবে।
“ওই আমেরিকা থেকে এসে ট্রাম্প তৈরি করে দেবেন না বা চীন থেকে শি এসেও এটা করে দেবেন না। অথবা ভারত থেকে মোদী ধাক্কা দিয়ে কিছু করতে পারবেন না। এই বিষয়গুলো আমাদের মনের মধ্যে, অন্তরের মধ্যে গেঁথে নিতে হবে।”
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আস্থা রেখে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমি প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুসকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন, আমার বিশ্বাস আছে যে তিনি সফল হবেন। আসুন আমরা সবাই মিলে তাকে সাহায্য করি। আমরা নিজেরাই নিজেদেরকে সাহায্য করে সামনে দিকে এগিয়ে যাই।”
তিনি বলেন, “এতো রক্তপাত হল, এতো রক্ত ঝরলো, এতো মায়ের বুক খালি হল, তার পরিণতি কী হবে শেষ পর্যন্ত? আমি বিশ্বাস করি, দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে ভালো হবে এবং খুব ভালো হবে।”
এই বিশ্বাসের কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “আমরা বাংলাদেশের মানুষেরা চিরকাল ভালোর জন্য সংগ্রাম করেছি, লড়াই করেছি এবং জয়ী হয়েছি। বিশেষ করে আমাদের তরুণেরা।
“৫২ থেকে ২৪ পর্যন্ত সব আন্দোলনে তরুণরা ভ্যানগার্ডের ভূমিকা পালন করেছেন। সেখানেই আমাদের শক্তি—সেই প্রান্তিক মানুষগুলো।”
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা এখন খুব ব্যস্ত হয়ে পড়েছি যে, আমেরিকা ট্র্যারিফ আরোপ করে ফেলেছে এবং খুব দ্রুত যদি এই ট্যারিফের বিষয়ে সুরাহা না করা যায়, তাহলে আরও বড় বিপদে পড়তে হবে, এটা সত্য কথা।”
এই সংকট মোকাবিলায় কৃষকদের সামনের সারিতে আনার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমার মনে হয়, আমরা এই শ্রেণির মানুষগুলোকে (কৃষক) যদি সামনের দিকে এগিয়ে আনতে পারি, তাদের কাজ দিতে পারি, তাদের বিভিন্ন প্রযুক্তি দিতে পারি তাহলে এই সমস্যাগুলো আমরা অতিদ্রুত কাটিয়ে উঠতে পারব।”
আলোচনায় দেশের রাজনৈতিক বিকাশ এবং বিভিন্ন ধারার চিন্তার গুরুত্ব তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “বাংলাদেশে অনেক রাজনীতি আছে, এটার জন্মটা হয়েছিল বহুত্ববাদের মধ্য দিয়ে, মানে বহু চিন্তার মধ্য দিয়ে। স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে আমাদের নেতা অনেকেই ছিলেন—মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেখ মুজিবুর রহমান।”
তিনি বলেন, “একেক জনের একেক চিন্তা ছিল—কেউ সমাজতন্ত্র করব, কেউ সমাজকে পাল্টাব, কেউ কমিউনিজম, কেউ ধর্মীয় ব্যবস্থা, ইসলাম প্রতিষ্ঠা করব। সব মিলিয়ে যখন যুদ্ধ শুরু হয়েছে তখন আমরা এক হয়েছি, এক হয়ে লড়াইটা করেছি।
“আজকে ২৪ সালের আন্দোলনেও একই ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন চিন্তা নিয়ে আমরা এসেছি। ছাত্রদের ওপর গুলি শুরু হলে সবাই রাস্তায় নেমে এসেছে। আসুন, সবাই মিলে এক হয়ে যাই। আমাদের সমস্যা আছে, সমস্যার সমাধান হবে। ইতিমধ্যে অনেক দূর এগিয়েছে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হান্নান চৌধুরী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রয়াত রাষ্ট্রদূত সিরাজুল ইসলামের বড় মেয়ে সাবরিনা ইসলাম রহমান।
প্রথম পর্বে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ভিডিও বার্তা দেন। বক্তব্য দেন পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর।
দ্বিতীয় পর্বে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা জামান।
অনুষ্ঠানে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের ‘অ্যাম্বাসেডর সিরাজুল ইসলাম ফিউচার লিডারস স্কলারশিপ’ বৃত্তি প্রদান করা হয়।
শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণের দায়িত্ব দেশের মানুষের হাতেই—এ কথা মনে করিয়ে দিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমেরিকার ডনাল্ড ট্রাম্প, চীনের শি জিনপিং কিংবা ভারতের নরেন্দ্র মোদী এসে কিছু করতে পারবেন না।
শনিবার দুপুরে ঢাকার বসুন্ধরার নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে ‘বাংলাদেশ ক্ষমতায়ন: নেতৃত্ব, ঐক্য এবং প্রবৃদ্ধির পথ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নেই দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “একটা কথা জোর দিয়ে বলতে চাই, গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নাই এবং গণতন্ত্রকে চাপিয়ে দেওয়া যায় না। আপনি আমার ওপরে চাপিয়ে দেবেন, তা দেওয়া যাবে না। গণতন্ত্র চর্চা করতে হবে, প্র্যাকটিস করতে হবে। সেই জায়গাগুলোকে খোলা রাখতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “এই আশা রেখে আবারও বলতে চাই, সেই বিহঙ্গের মত একদিন না একদিন তীরে এসে পৌঁছাবই।”
‘দেশটা আমাদের, বিদেশের কেউ এসে করে দেবে না’ মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমি অত্যন্ত আশাবাদী। আমি বিশ্বাস করি, আমরা সবাই যদি আজকে এইটুকু বুঝতে পারি যে দেশটা আমাদের, এর ভবিষ্যৎ আমাদেরই নির্মাণ করতে হবে।
“ওই আমেরিকা থেকে এসে ট্রাম্প তৈরি করে দেবেন না বা চীন থেকে শি এসেও এটা করে দেবেন না। অথবা ভারত থেকে মোদী ধাক্কা দিয়ে কিছু করতে পারবেন না। এই বিষয়গুলো আমাদের মনের মধ্যে, অন্তরের মধ্যে গেঁথে নিতে হবে।”
বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আস্থা রেখে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আমি প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুসকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন, আমার বিশ্বাস আছে যে তিনি সফল হবেন। আসুন আমরা সবাই মিলে তাকে সাহায্য করি। আমরা নিজেরাই নিজেদেরকে সাহায্য করে সামনে দিকে এগিয়ে যাই।”
তিনি বলেন, “এতো রক্তপাত হল, এতো রক্ত ঝরলো, এতো মায়ের বুক খালি হল, তার পরিণতি কী হবে শেষ পর্যন্ত? আমি বিশ্বাস করি, দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে ভালো হবে এবং খুব ভালো হবে।”
এই বিশ্বাসের কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, “আমরা বাংলাদেশের মানুষেরা চিরকাল ভালোর জন্য সংগ্রাম করেছি, লড়াই করেছি এবং জয়ী হয়েছি। বিশেষ করে আমাদের তরুণেরা।
“৫২ থেকে ২৪ পর্যন্ত সব আন্দোলনে তরুণরা ভ্যানগার্ডের ভূমিকা পালন করেছেন। সেখানেই আমাদের শক্তি—সেই প্রান্তিক মানুষগুলো।”
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা এখন খুব ব্যস্ত হয়ে পড়েছি যে, আমেরিকা ট্র্যারিফ আরোপ করে ফেলেছে এবং খুব দ্রুত যদি এই ট্যারিফের বিষয়ে সুরাহা না করা যায়, তাহলে আরও বড় বিপদে পড়তে হবে, এটা সত্য কথা।”
এই সংকট মোকাবিলায় কৃষকদের সামনের সারিতে আনার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমার মনে হয়, আমরা এই শ্রেণির মানুষগুলোকে (কৃষক) যদি সামনের দিকে এগিয়ে আনতে পারি, তাদের কাজ দিতে পারি, তাদের বিভিন্ন প্রযুক্তি দিতে পারি তাহলে এই সমস্যাগুলো আমরা অতিদ্রুত কাটিয়ে উঠতে পারব।”
আলোচনায় দেশের রাজনৈতিক বিকাশ এবং বিভিন্ন ধারার চিন্তার গুরুত্ব তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “বাংলাদেশে অনেক রাজনীতি আছে, এটার জন্মটা হয়েছিল বহুত্ববাদের মধ্য দিয়ে, মানে বহু চিন্তার মধ্য দিয়ে। স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে আমাদের নেতা অনেকেই ছিলেন—মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেখ মুজিবুর রহমান।”
তিনি বলেন, “একেক জনের একেক চিন্তা ছিল—কেউ সমাজতন্ত্র করব, কেউ সমাজকে পাল্টাব, কেউ কমিউনিজম, কেউ ধর্মীয় ব্যবস্থা, ইসলাম প্রতিষ্ঠা করব। সব মিলিয়ে যখন যুদ্ধ শুরু হয়েছে তখন আমরা এক হয়েছি, এক হয়ে লড়াইটা করেছি।
“আজকে ২৪ সালের আন্দোলনেও একই ঘটনা ঘটেছে। বিভিন্ন চিন্তা নিয়ে আমরা এসেছি। ছাত্রদের ওপর গুলি শুরু হলে সবাই রাস্তায় নেমে এসেছে। আসুন, সবাই মিলে এক হয়ে যাই। আমাদের সমস্যা আছে, সমস্যার সমাধান হবে। ইতিমধ্যে অনেক দূর এগিয়েছে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল হান্নান চৌধুরী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রয়াত রাষ্ট্রদূত সিরাজুল ইসলামের বড় মেয়ে সাবরিনা ইসলাম রহমান।
প্রথম পর্বে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ভিডিও বার্তা দেন। বক্তব্য দেন পররাষ্ট্র সচিব জসীম উদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর।
দ্বিতীয় পর্বে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, অর্থনীতিবিদ হোসেন জিল্লুর ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক দিলারা জামান।
অনুষ্ঠানে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের ‘অ্যাম্বাসেডর সিরাজুল ইসলাম ফিউচার লিডারস স্কলারশিপ’ বৃত্তি প্রদান করা হয়।