আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরদিন এ বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছে একাধিক রাজনৈতিক দল। বিএনপি, জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ও গণঅধিকার পরিষদ তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে।
শনিবার রাতে গণ অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), জামায়াতে ইসলামিসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক দলের দাবির মুখে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ জরুরি বৈঠকে বসে। বৈঠকে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে সংশোধনী এনে দলটিকে বিচারের মুখোমুখি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানান, পরবর্তী কার্যদিবসে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হবে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন সংশোধনের গেজেটও প্রকাশ করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের খবর প্রচারিত হলে শাহবাগ ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল এলাকায় অবস্থানরত এনসিপি, ইসলামী দল এবং ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা উল্লাস প্রকাশ করে। মধ্যরাতে জামায়াতে ইসলামিও শোকরানা সমাবেশ করে। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে এনসিপি ও ছাত্রশিবিরের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয়। পরে বিভিন্ন দলের নেতাদের সংহতি জানানো এবং আন্দোলনের প্রেক্ষিতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়।
রোববার বিকালে বিএনপি এক বিবৃতিতে সিদ্ধান্তকে ‘সঠিক’ বলে উল্লেখ করে। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “আমরা আনন্দিত যে, বিলম্বে হলেও ফ্যাসীবাদী সরকারের সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের বিচার নিশ্চিত করতে তাদের কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” বিএনপি আরও জানায়, বহু আগেই তারা এ দাবি জানিয়েছে এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বৈঠকেও বিষয়টি তুলেছে।
জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে শনিবার রাতেই জানানো হয়, তারা সিদ্ধান্তের পক্ষে নয়। দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, “আমরা বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি করছে এমন কোনো দলকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে নই।” তিনি আরও বলেন, “যদি গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হয়, তাহলে মুক্তিযুদ্ধকালীন গণহত্যায় জড়িত সংগঠনগুলোর বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হবে?”
রোববার দুপুরে গণঅধিকার পরিষদ সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল ও দলটিকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করার দাবি জানায়। দলের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, “শুধু সাংগঠনিক নিষেধাজ্ঞা নয়, নিবন্ধন বাতিল করাও জরুরি।”
বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ এক বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতেরও বিচার দাবি করেন। তিনি বলেন, “জুলাই গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক অধিকার হারিয়েছে। তবে অগণতান্ত্রিক আইন দিয়ে কোনো দল নিষিদ্ধ করা গণতন্ত্রের পথে বাধা।” তিনি মনে করেন, ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচারই হবে যথাযথ প্রক্রিয়া।
আইনজীবী অধ্যাপক শাহদীন মালিক বলেন, “ট্রাইব্যুনালের কাছে আবেদন করা হলে নিষেধাজ্ঞা অধিকতর আইনি হতো।” আরেক আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, “সন্ত্রাসবিরোধী আইনে কার্যক্রম নিষিদ্ধের সুযোগ নেই, রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করাই আইনের আওতায় পড়ে।”
সোমবার, ১২ মে ২০২৫
আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরদিন এ বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছে একাধিক রাজনৈতিক দল। বিএনপি, জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ও গণঅধিকার পরিষদ তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে।
শনিবার রাতে গণ অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), জামায়াতে ইসলামিসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক দলের দাবির মুখে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ জরুরি বৈঠকে বসে। বৈঠকে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে সংশোধনী এনে দলটিকে বিচারের মুখোমুখি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানান, পরবর্তী কার্যদিবসে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হবে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন সংশোধনের গেজেটও প্রকাশ করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের খবর প্রচারিত হলে শাহবাগ ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল এলাকায় অবস্থানরত এনসিপি, ইসলামী দল এবং ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীরা উল্লাস প্রকাশ করে। মধ্যরাতে জামায়াতে ইসলামিও শোকরানা সমাবেশ করে। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে এনসিপি ও ছাত্রশিবিরের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয়। পরে বিভিন্ন দলের নেতাদের সংহতি জানানো এবং আন্দোলনের প্রেক্ষিতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়।
রোববার বিকালে বিএনপি এক বিবৃতিতে সিদ্ধান্তকে ‘সঠিক’ বলে উল্লেখ করে। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “আমরা আনন্দিত যে, বিলম্বে হলেও ফ্যাসীবাদী সরকারের সাথে যুক্ত ব্যক্তিদের বিচার নিশ্চিত করতে তাদের কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” বিএনপি আরও জানায়, বহু আগেই তারা এ দাবি জানিয়েছে এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে বৈঠকেও বিষয়টি তুলেছে।
জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে শনিবার রাতেই জানানো হয়, তারা সিদ্ধান্তের পক্ষে নয়। দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, “আমরা বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি করছে এমন কোনো দলকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে নই।” তিনি আরও বলেন, “যদি গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হয়, তাহলে মুক্তিযুদ্ধকালীন গণহত্যায় জড়িত সংগঠনগুলোর বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত হবে?”
রোববার দুপুরে গণঅধিকার পরিষদ সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল ও দলটিকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করার দাবি জানায়। দলের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান বলেন, “শুধু সাংগঠনিক নিষেধাজ্ঞা নয়, নিবন্ধন বাতিল করাও জরুরি।”
বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ এক বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতেরও বিচার দাবি করেন। তিনি বলেন, “জুলাই গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক অধিকার হারিয়েছে। তবে অগণতান্ত্রিক আইন দিয়ে কোনো দল নিষিদ্ধ করা গণতন্ত্রের পথে বাধা।” তিনি মনে করেন, ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে বিচারই হবে যথাযথ প্রক্রিয়া।
আইনজীবী অধ্যাপক শাহদীন মালিক বলেন, “ট্রাইব্যুনালের কাছে আবেদন করা হলে নিষেধাজ্ঞা অধিকতর আইনি হতো।” আরেক আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, “সন্ত্রাসবিরোধী আইনে কার্যক্রম নিষিদ্ধের সুযোগ নেই, রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করাই আইনের আওতায় পড়ে।”