স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও দেশে সংস্কারের গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি তৈরি হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান। তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের আর মাত্র ছয় মাস বাকি, এখনও প্রক্রিয়া শেষ না করলে সংস্কার কীভাবে বাস্তবায়িত হবে। কী কী সংস্কার হবে, সেটা এখনও আমরা জানি না।’
সোমবার, (০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫) গুলশানের একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ওয়াচ’ নামের একটি নতুন উদ্যোগের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন রেহমান সোবহান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ও গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, ‘কোনো একটি লিখিত কাগজে ৩০টি দল স্বাক্ষর করে দিলেই তো আর সংস্কার হয় না। এসব বাস্তবায়নের জন্য নির্বাহী আদেশ লাগে, অধ্যাদেশ লাগে, নির্দিষ্ট বাজেট লাগে। কিছু কিছু দল বলছে, সংস্কার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না। কিন্তু কী সংস্কার হবে, কীভাবে হবে, সেটা এখনও আমরা জানি না।’
সংস্কারের প্রক্রিয়া নিয়ে রেহমান সোবহান বলেন, ‘সংসদে বিশদ আলোচনার মাধ্যমে সংস্কার কার্যক্রম পাস হওয়ার কথা। কিন্তু এত বছরেও সেই সংস্কৃতি চালু হয়নি। নাগরিক সমাজের কাজ শুধু কাগজপত্র তৈরি করা নয়। তাদের প্রতিনিয়ত প্রশ্ন তোলা উচিত ছিল, কিন্তু সেই দায়িত্ব তারা পালন করেনি। তার প্রশ্ন, এখন কি আমরা একত্র হয়ে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কাজ করতে পারি?’
সুশীল সমাজের ভূমিকা নিয়ে রেহমান সোবহান বলেন, ‘এ সমাজ যদি শুধু সেমিনার আয়োজন ছেড়ে আরেকটু এগিয়ে আসে, তাহলে তা মানুষের জন্য বেশি কাজে লাগবে।’
বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ও গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবনে সেই ঝড় অনুভূত হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার কি পথ হারিয়েছে?’
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের শুরুতে আমরা সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে যুক্ত হয়েছিলাম। কিন্তু এখন সেই সংস্কারের উৎসাহ-উচ্ছ্বাস অনেকটা স্তিমিত হয়ে গেছে। এটা কি আকাক্সক্ষার অভাব, নাকি স্বার্থের সংঘাত, নাকি অন্য কিছু? অন্তর্বর্তী সরকার কি পথ হারিয়েছে? এ প্রশ্ন আমাদের মধ্যে বড় করে আসছে।’দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, ‘সংস্কারের কারিগরি জ্ঞান অনেকেই দিতে পারেন, কিন্তু বাস্তবায়নের বিষয়টি আলাদা। তাই সংস্কারের এ চাহিদা তৈরি করার জন্য আমরা সামাজিক কণ্ঠস্বরের সঙ্গে মিলিত হয়ে আজকের এ উদ্যোগ নিয়েছি।’
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সবার প্রত্যাশা ছিল বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার। এক বছরে সেই সংস্কার কার্যক্রম কত দূর এগোলো? অন্তর্বর্তী সরকার তার অবশিষ্ট সময়ে সংস্কারকে আর কতটুকু এগিয়ে নিতে পারবে? রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহারে সংস্কারের আকাক্সক্ষার কতটুকুই বা প্রতিফলিত হবে? এ বিষয়গুলো দেখার জন্য নাগরিক প্ল্যাটফর্ম থেকে বাংলাদেশ রিফর্ম ওয়াচ উদ্যোগ শুরু করছে, যার মাধ্যমে সংস্কার কার্যক্রমে পিছিয়ে পড়া মানুষের কণ্ঠস্বর বা অংশগ্রহণ কতটা থাকে, সেটা দেখার চেষ্টা করা হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, ‘সংস্কারের আলোচনা দীর্ঘদিন ধরেই আছে। কিন্তু যারা সংস্কার করবেন, তারা কতটা অনুধাবন করছেন? এখানে রাষ্ট্র ও সরকারের সক্ষমতা ও ইচ্ছার বড় বিষয় জড়িত। তাছাড়া আমলা, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক এলিটদের সংস্কারবিরোধিতার বিষয় রয়েছে। তাই সংস্কারের জন্য রাজনৈতিক দলগুলো কতটা অঙ্গীকারবদ্ধ, সেটাও দেখতে হবে।’
আলোচনায় সিপিডির সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আগের অনেক সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়নি। এবার কি হবে? সেটার জবাব জরুরি। তবে এবার আমরা সাফল্যের বিষয়ে আশাবাদী। তাই সবাইকে এ কার্যক্রমে যুক্ত করেছি।’
সেমিনারে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের বিভিন্ন প্রতিনিধি সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন।
সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও দেশে সংস্কারের গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি তৈরি হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের চেয়ারম্যান রেহমান সোবহান। তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের আর মাত্র ছয় মাস বাকি, এখনও প্রক্রিয়া শেষ না করলে সংস্কার কীভাবে বাস্তবায়িত হবে। কী কী সংস্কার হবে, সেটা এখনও আমরা জানি না।’
সোমবার, (০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫) গুলশানের একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশ রিফর্ম ওয়াচ’ নামের একটি নতুন উদ্যোগের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন রেহমান সোবহান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ও গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, ‘কোনো একটি লিখিত কাগজে ৩০টি দল স্বাক্ষর করে দিলেই তো আর সংস্কার হয় না। এসব বাস্তবায়নের জন্য নির্বাহী আদেশ লাগে, অধ্যাদেশ লাগে, নির্দিষ্ট বাজেট লাগে। কিছু কিছু দল বলছে, সংস্কার ছাড়া নির্বাচনে যাবে না। কিন্তু কী সংস্কার হবে, কীভাবে হবে, সেটা এখনও আমরা জানি না।’
সংস্কারের প্রক্রিয়া নিয়ে রেহমান সোবহান বলেন, ‘সংসদে বিশদ আলোচনার মাধ্যমে সংস্কার কার্যক্রম পাস হওয়ার কথা। কিন্তু এত বছরেও সেই সংস্কৃতি চালু হয়নি। নাগরিক সমাজের কাজ শুধু কাগজপত্র তৈরি করা নয়। তাদের প্রতিনিয়ত প্রশ্ন তোলা উচিত ছিল, কিন্তু সেই দায়িত্ব তারা পালন করেনি। তার প্রশ্ন, এখন কি আমরা একত্র হয়ে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে কাজ করতে পারি?’
সুশীল সমাজের ভূমিকা নিয়ে রেহমান সোবহান বলেন, ‘এ সমাজ যদি শুধু সেমিনার আয়োজন ছেড়ে আরেকটু এগিয়ে আসে, তাহলে তা মানুষের জন্য বেশি কাজে লাগবে।’
বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ঝড় বয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক প্ল্যাটফর্মের আহ্বায়ক ও গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক জীবনে সেই ঝড় অনুভূত হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার কি পথ হারিয়েছে?’
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের শুরুতে আমরা সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে যুক্ত হয়েছিলাম। কিন্তু এখন সেই সংস্কারের উৎসাহ-উচ্ছ্বাস অনেকটা স্তিমিত হয়ে গেছে। এটা কি আকাক্সক্ষার অভাব, নাকি স্বার্থের সংঘাত, নাকি অন্য কিছু? অন্তর্বর্তী সরকার কি পথ হারিয়েছে? এ প্রশ্ন আমাদের মধ্যে বড় করে আসছে।’দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য আরও বলেন, ‘সংস্কারের কারিগরি জ্ঞান অনেকেই দিতে পারেন, কিন্তু বাস্তবায়নের বিষয়টি আলাদা। তাই সংস্কারের এ চাহিদা তৈরি করার জন্য আমরা সামাজিক কণ্ঠস্বরের সঙ্গে মিলিত হয়ে আজকের এ উদ্যোগ নিয়েছি।’
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষক তৌফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সবার প্রত্যাশা ছিল বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার। এক বছরে সেই সংস্কার কার্যক্রম কত দূর এগোলো? অন্তর্বর্তী সরকার তার অবশিষ্ট সময়ে সংস্কারকে আর কতটুকু এগিয়ে নিতে পারবে? রাজনৈতিক দলগুলোর ইশতেহারে সংস্কারের আকাক্সক্ষার কতটুকুই বা প্রতিফলিত হবে? এ বিষয়গুলো দেখার জন্য নাগরিক প্ল্যাটফর্ম থেকে বাংলাদেশ রিফর্ম ওয়াচ উদ্যোগ শুরু করছে, যার মাধ্যমে সংস্কার কার্যক্রমে পিছিয়ে পড়া মানুষের কণ্ঠস্বর বা অংশগ্রহণ কতটা থাকে, সেটা দেখার চেষ্টা করা হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, ‘সংস্কারের আলোচনা দীর্ঘদিন ধরেই আছে। কিন্তু যারা সংস্কার করবেন, তারা কতটা অনুধাবন করছেন? এখানে রাষ্ট্র ও সরকারের সক্ষমতা ও ইচ্ছার বড় বিষয় জড়িত। তাছাড়া আমলা, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক এলিটদের সংস্কারবিরোধিতার বিষয় রয়েছে। তাই সংস্কারের জন্য রাজনৈতিক দলগুলো কতটা অঙ্গীকারবদ্ধ, সেটাও দেখতে হবে।’
আলোচনায় সিপিডির সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আগের অনেক সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হয়নি। এবার কি হবে? সেটার জবাব জরুরি। তবে এবার আমরা সাফল্যের বিষয়ে আশাবাদী। তাই সবাইকে এ কার্যক্রমে যুক্ত করেছি।’
সেমিনারে নাগরিক প্ল্যাটফর্মের বিভিন্ন প্রতিনিধি সংস্কার কার্যক্রম নিয়ে তাদের মতামত তুলে ধরেন।