মুক্তিযুদ্ধ না মানলে ‘বাংলাদেশকে অস্বীকার করা হবে’ বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ।
রোববার ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সবাই যেমন ‘বাংলাদেশকে মেনে নিয়ে’ রাজনীতি করছে, জামায়াতও তাই।
এদিন ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বৈঠক হয়, যেখানে জামায়াতে ইসলামীও অংশ নেন। বৈঠক থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন হামিদুর রহমান আযাদ।
তিনি বলেন, “বারবার ভুল পদক্ষেপ নিয়ে হাঁটি এবং জুলাই সনদ আবার চ্যালেঞ্জে পড়ে যায়। তাহলে আমরা কি সারা জীবনে এই সংকটে ভুগব? সারাজীবন রক্ত দেব; জীবন দেব?”
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির যৌক্তিকতা তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমরা কি বারবার ফ্যাসিবাদকে ফিরিয়ে আনার অবকাশ তৈরির জন্য সংস্কার করছি? অবশ্যই নয়। সেজন্য ‘সংবিধান অর্ডার ২০২৫’ নামে যদি সেটা জারি হয়, কোথাও চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ নেই এবং এটাই আইনিভাবে শক্তিশালী একটা অবস্থান।”
তিনি আরও বলেন, “আর্টিকেল ৭ এ জনগণের পরম অভিপ্রায়ের কথা বলা আছে। তার ভিত্তিতে যদি এই কনস্টিটিউশন অর্ডারটা হয়, এটা সবচাইতে শক্তিশালী হবে। এরপরে আমরা বলেছি, সরকার এটাকে পরে আরও শক্তিশালী করতে পারে। মানে শক্তির উপর শক্তি। জোরের উপর জোর হবে যদি এটার ওপর আবার গণভোট দেওয়া হয়। তাহলে আর বিন্দু পরিমাণও ছিদ্র উন্মুক্ত থাকার সুযোগ নেই। আইনি চ্যালেঞ্জ বা অন্য কোনোভাবে চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ থাকবে না। আমরা এ প্রস্তাবটা দিয়েছি।”
এক সাংবাদিকের প্রশ্নে, “জুলাই সনদ যদি কেউ না মানে, সেটা তাদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়। এজন্য কি রাজনীতিতে কাউকে ‘ডিসকোয়ালিফাই’ করা যায়?”
তার উত্তরে আযাদ বলেন, “জুলাই তো রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি নয়, এটা জনআকাঙ্ক্ষা।”
সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, “তাহলে যারা একাত্তর মানবে না, তারা নির্বাচন করবে কীভাবে? জুলাই সনদ মানতেই হবে বলছেন কেন?”
জামায়াতের এই নেতা জবাবে বলেন, “আমরা বাংলাদেশের আইনি প্রক্রিয়া ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়া মেনেই রাজনীতি করে আসছি। দেশটা বাহাত্তরের সংবিধান অনুযায়ী চলেছে, নানা সময়ে সংশোধন হয়েছে। এখন প্রেক্ষাপট যেটা তৈরি হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধ আমাদের একটি অর্জন, এটা বারবার বলেছি। বাংলাদেশকে মেনে নিয়েই কিন্তু সবাই রাজনীতি করছে। আমরাও তাই।
“সুতরাং এখানে পেছনের কথা টানার কোনো সুযোগ নেই। মুক্তিযুদ্ধ না মানলে বাংলাদেশকে তো অস্বীকার করা হয়ে যাবে। নির্বাচনের প্রশ্ন আসবে কীভাবে। জুলাইটা হুবহু না হলেও জনআকাঙ্ক্ষার জায়গা থেকে এমন জায়গায় পৌঁছে গেছে, যেটা ধারণ না করে ভবিষ্যতে রাজনীতি করা কঠিন। সেই জায়গা থেকে আমরা বলেছি, যে জুলাই স্পিরিটকে আমরা ধারণ করি।”
একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য জামায়াতকে ‘ক্ষমা চেয়ে’ স্বাভাবিক রাজনীতিতে আসার আহ্বান জানিয়ে আসছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। এমনকি বিএনপি নেতারাও এখন এই সুরে কথা বলছেন।
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে দলের আমির মতিউর রহমান নিজামীসহ শীর্ষ পাঁচ নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
তবে ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রত্যাখ্যান করে আসা জামায়াত বলে আসছে, তাদের নেতারা ‘বিচারিক হত্যাকাণ্ডের শিকার’। আর একাত্তরের ভূমিকার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে কখনও ক্ষমাও চায়নি দলটি।
রোববার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
মুক্তিযুদ্ধ না মানলে ‘বাংলাদেশকে অস্বীকার করা হবে’ বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ।
রোববার ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সবাই যেমন ‘বাংলাদেশকে মেনে নিয়ে’ রাজনীতি করছে, জামায়াতও তাই।
এদিন ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বৈঠক হয়, যেখানে জামায়াতে ইসলামীও অংশ নেন। বৈঠক থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন হামিদুর রহমান আযাদ।
তিনি বলেন, “বারবার ভুল পদক্ষেপ নিয়ে হাঁটি এবং জুলাই সনদ আবার চ্যালেঞ্জে পড়ে যায়। তাহলে আমরা কি সারা জীবনে এই সংকটে ভুগব? সারাজীবন রক্ত দেব; জীবন দেব?”
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির যৌক্তিকতা তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমরা কি বারবার ফ্যাসিবাদকে ফিরিয়ে আনার অবকাশ তৈরির জন্য সংস্কার করছি? অবশ্যই নয়। সেজন্য ‘সংবিধান অর্ডার ২০২৫’ নামে যদি সেটা জারি হয়, কোথাও চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ নেই এবং এটাই আইনিভাবে শক্তিশালী একটা অবস্থান।”
তিনি আরও বলেন, “আর্টিকেল ৭ এ জনগণের পরম অভিপ্রায়ের কথা বলা আছে। তার ভিত্তিতে যদি এই কনস্টিটিউশন অর্ডারটা হয়, এটা সবচাইতে শক্তিশালী হবে। এরপরে আমরা বলেছি, সরকার এটাকে পরে আরও শক্তিশালী করতে পারে। মানে শক্তির উপর শক্তি। জোরের উপর জোর হবে যদি এটার ওপর আবার গণভোট দেওয়া হয়। তাহলে আর বিন্দু পরিমাণও ছিদ্র উন্মুক্ত থাকার সুযোগ নেই। আইনি চ্যালেঞ্জ বা অন্য কোনোভাবে চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ থাকবে না। আমরা এ প্রস্তাবটা দিয়েছি।”
এক সাংবাদিকের প্রশ্নে, “জুলাই সনদ যদি কেউ না মানে, সেটা তাদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়। এজন্য কি রাজনীতিতে কাউকে ‘ডিসকোয়ালিফাই’ করা যায়?”
তার উত্তরে আযাদ বলেন, “জুলাই তো রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি নয়, এটা জনআকাঙ্ক্ষা।”
সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, “তাহলে যারা একাত্তর মানবে না, তারা নির্বাচন করবে কীভাবে? জুলাই সনদ মানতেই হবে বলছেন কেন?”
জামায়াতের এই নেতা জবাবে বলেন, “আমরা বাংলাদেশের আইনি প্রক্রিয়া ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়া মেনেই রাজনীতি করে আসছি। দেশটা বাহাত্তরের সংবিধান অনুযায়ী চলেছে, নানা সময়ে সংশোধন হয়েছে। এখন প্রেক্ষাপট যেটা তৈরি হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধ আমাদের একটি অর্জন, এটা বারবার বলেছি। বাংলাদেশকে মেনে নিয়েই কিন্তু সবাই রাজনীতি করছে। আমরাও তাই।
“সুতরাং এখানে পেছনের কথা টানার কোনো সুযোগ নেই। মুক্তিযুদ্ধ না মানলে বাংলাদেশকে তো অস্বীকার করা হয়ে যাবে। নির্বাচনের প্রশ্ন আসবে কীভাবে। জুলাইটা হুবহু না হলেও জনআকাঙ্ক্ষার জায়গা থেকে এমন জায়গায় পৌঁছে গেছে, যেটা ধারণ না করে ভবিষ্যতে রাজনীতি করা কঠিন। সেই জায়গা থেকে আমরা বলেছি, যে জুলাই স্পিরিটকে আমরা ধারণ করি।”
একাত্তরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য জামায়াতকে ‘ক্ষমা চেয়ে’ স্বাভাবিক রাজনীতিতে আসার আহ্বান জানিয়ে আসছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। এমনকি বিএনপি নেতারাও এখন এই সুরে কথা বলছেন।
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে দলের আমির মতিউর রহমান নিজামীসহ শীর্ষ পাঁচ নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
তবে ট্রাইব্যুনালের বিচার প্রত্যাখ্যান করে আসা জামায়াত বলে আসছে, তাদের নেতারা ‘বিচারিক হত্যাকাণ্ডের শিকার’। আর একাত্তরের ভূমিকার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে কখনও ক্ষমাও চায়নি দলটি।