ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
জুলাই সনদ বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দাবিতে চারটি দল যুগপৎ আন্দোলনে মাঠে নামছে বলে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। এ খবরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তবে খবরটি প্রকাশিত হওয়ার পর দুটি দল জানিয়েছে, তারা যুগপৎ আন্দোলনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়নি। এরই মধ্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস পাঁচ দফা দাবিতে দেশব্যাপী তিন দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশও সোমবার সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে। এর আগে জামায়াতে ইসলামীসহ আটটি দলের জোট বাধা ও যুগপৎ আন্দোলনে যাওয়ার খবরেও বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়।
যুগপৎ আন্দোলন নিয়ে বিভ্রান্তি, পৃথক কর্মসূচিতে খেলাফত মজলিস
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে উচ্চকক্ষে পিআর বাস্তবায়ন করবে না, তাই পিআর পদ্ধতিবিহীন উচ্চকক্ষ বাস্তবায়ন করতে দেয়া হবে না: মামুনুল হক
সোমবার ইসলামী আন্দোলনের সংবাদ সম্মেলন
রোববার,(১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫) রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক তাদের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে বিক্ষোভ, ১৯ সেপ্টেম্বর বিভাগীয় শহরগুলোতে এবং ২৬ সেপ্টেম্বর সারাদেশে জেলা ও উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল।
মামুনুল হক সংবাদ সম্মেলনে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো- জুলাই সনদের অবিলম্বে বাস্তবায়ন।
‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ হিসেবে জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের রাজনীতি নিষিদ্ধকরণ। জুলাই গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান করা। সংসদের উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতি বাস্তবায়ন ও নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বা সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি। মামুনুল হক লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘আমাদের পাঁচ দফা দাবি কেবল রাজনৈতিক অংশগ্রহণের জন্য নয়, এগুলো দেশের জনগণের অধিকার এবং ন্যায়পরায়ণতার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত।’
তবে মামুনুল হকের খেলাফত মজলিশ এককভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করলেও যুগপৎ আন্দোলন নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল শনিবার একটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ আটটি দল চার দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনে যাচ্ছে। কিন্তু এ খবর প্রকাশের পরই এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব এটিকে ‘বিভ্রান্তিকর’ বলে নাকচ করে দেন। তিনি জানান, এনসিপি কোনো জোট বা যুগপৎ আন্দোলনের বিষয়ে সিদ্ধান্তগ্রহণ করেনি। আদীব স্পষ্ট করে জানান, এনসিপি শুধুমাত্র সংসদের উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতির ব্যাপারে একমত কিন্তু পূর্ণ সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের বিষয়ে তাদের কোনো অবস্থান নেই।
একইভাবে এবি পার্টিও এক বিবৃতিতে খবরটিকে বিভ্রান্তিকর বলে মন্তব্য করেছে। গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানও জোটবদ্ধ আন্দোলনে যাওয়ার বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন।
জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপিসহ কয়েকটি দলের সঙ্গে যুগপৎ কর্মসূচির বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে নিজেই জানিয়েছেন মামুনুল হক। তিনি বলেন, এ বিষয়ে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে এবং বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। আলোচনার পরই এ বিষয়ে বলা যাবে কারা থাকছে আর কারা থাকছে না। খেলাফত মজলিশের সংবাদ সম্মেলনের আমন্ত্রণপত্রেও ‘যুগপৎ কর্মসূচি’ উল্লেখ ছিল।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মামুনুল হক বলেন, ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংসদের উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতি হওয়ার কথা থাকলেও বিএনপি তাতে আপত্তি (নোট অব ডিসেন্ট) দিয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে উচ্চকক্ষে পিআর বাস্তবায়ন করবে না, তাই পিআর পদ্ধতিবিহীন উচ্চকক্ষ বাস্তবায়ন করতে দেয়া হবে না।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে কোনো দিকনির্দেশনা না থাকায় মাঠের কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হচ্ছে বলেও তিনি জানান। মামুনুল হক বলেন, ‘সরকার সহজে বিষয়টি কার্যকর করবে বলে মনে হচ্ছে না। এজন্য আন্দোলনের বিকল্প নেই।’
সোমবার ইসলামী আন্দোলনের সংবাদ সম্মেলন
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই) সোমবার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের কর্মসূচি তুলে ধরবেন। তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না করে ‘যেনতেন উপায়ে নির্বাচন আয়োজন করে দেশকে আবারও পুরনো অশুভ আবর্তে নিক্ষেপ করার বন্দোবস্ত করা হচ্ছে।’ এমন পরিস্থিতিতে স্বৈরাচারবিরোধী সব শক্তিকে একত্রিত হয়ে যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তোলার কথা বলেন তিনি।
ইসলামী আন্দোলনের আমীর বলেন, ‘আমাদের দাবি সুস্পষ্ট। আমরা জুলাই সনদের বাস্তবায়ন চাই, এর আইনি ভিত্তি চাই। দ্রুততার সঙ্গে ফ্যাসিবাদের বিচার নিশ্চিত করতে চাই। ফ্যাসিবাদের দোসরদের রাজনীতিতে পুনর্বাসন বন্ধ করতে চাই। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চাই।
আমাদের অবস্থান কোনো দলের বিরুদ্ধে নয়। বরং জুলাই অভ্যুত্থানের রক্ত ও জীবনের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে আমাদের এ অবস্থান। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ দাবির পক্ষে আমাদের কর্মসূচি তুলে ধরা হবে।’
দলগুলোর পৃথক অবস্থান ও কর্মসূচি ঘোষণার ফলে একটি ঐক্যবদ্ধ যুগপৎ আন্দোলন শুরু হওয়া নিয়ে রাজনৈতিক মহলে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
ছবি: ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
রোববার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
জুলাই সনদ বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দাবিতে চারটি দল যুগপৎ আন্দোলনে মাঠে নামছে বলে সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। এ খবরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তবে খবরটি প্রকাশিত হওয়ার পর দুটি দল জানিয়েছে, তারা যুগপৎ আন্দোলনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়নি। এরই মধ্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস পাঁচ দফা দাবিতে দেশব্যাপী তিন দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশও সোমবার সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে। এর আগে জামায়াতে ইসলামীসহ আটটি দলের জোট বাধা ও যুগপৎ আন্দোলনে যাওয়ার খবরেও বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়।
যুগপৎ আন্দোলন নিয়ে বিভ্রান্তি, পৃথক কর্মসূচিতে খেলাফত মজলিস
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে উচ্চকক্ষে পিআর বাস্তবায়ন করবে না, তাই পিআর পদ্ধতিবিহীন উচ্চকক্ষ বাস্তবায়ন করতে দেয়া হবে না: মামুনুল হক
সোমবার ইসলামী আন্দোলনের সংবাদ সম্মেলন
রোববার,(১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫) রাজধানীর পুরানা পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক তাদের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় বায়তুল মোকাররম মসজিদের সামনে বিক্ষোভ, ১৯ সেপ্টেম্বর বিভাগীয় শহরগুলোতে এবং ২৬ সেপ্টেম্বর সারাদেশে জেলা ও উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল।
মামুনুল হক সংবাদ সম্মেলনে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো- জুলাই সনদের অবিলম্বে বাস্তবায়ন।
‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ হিসেবে জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের রাজনীতি নিষিদ্ধকরণ। জুলাই গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান করা। সংসদের উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতি বাস্তবায়ন ও নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড বা সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি। মামুনুল হক লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘আমাদের পাঁচ দফা দাবি কেবল রাজনৈতিক অংশগ্রহণের জন্য নয়, এগুলো দেশের জনগণের অধিকার এবং ন্যায়পরায়ণতার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত।’
তবে মামুনুল হকের খেলাফত মজলিশ এককভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করলেও যুগপৎ আন্দোলন নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল শনিবার একটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপিসহ আটটি দল চার দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনে যাচ্ছে। কিন্তু এ খবর প্রকাশের পরই এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব এটিকে ‘বিভ্রান্তিকর’ বলে নাকচ করে দেন। তিনি জানান, এনসিপি কোনো জোট বা যুগপৎ আন্দোলনের বিষয়ে সিদ্ধান্তগ্রহণ করেনি। আদীব স্পষ্ট করে জানান, এনসিপি শুধুমাত্র সংসদের উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতির ব্যাপারে একমত কিন্তু পূর্ণ সংখ্যানুপাতিক নির্বাচনের বিষয়ে তাদের কোনো অবস্থান নেই।
একইভাবে এবি পার্টিও এক বিবৃতিতে খবরটিকে বিভ্রান্তিকর বলে মন্তব্য করেছে। গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানও জোটবদ্ধ আন্দোলনে যাওয়ার বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন।
জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপিসহ কয়েকটি দলের সঙ্গে যুগপৎ কর্মসূচির বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে নিজেই জানিয়েছেন মামুনুল হক। তিনি বলেন, এ বিষয়ে দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে এবং বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। আলোচনার পরই এ বিষয়ে বলা যাবে কারা থাকছে আর কারা থাকছে না। খেলাফত মজলিশের সংবাদ সম্মেলনের আমন্ত্রণপত্রেও ‘যুগপৎ কর্মসূচি’ উল্লেখ ছিল।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মামুনুল হক বলেন, ঐকমত্য কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সংসদের উচ্চকক্ষে পিআর পদ্ধতি হওয়ার কথা থাকলেও বিএনপি তাতে আপত্তি (নোট অব ডিসেন্ট) দিয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে উচ্চকক্ষে পিআর বাস্তবায়ন করবে না, তাই পিআর পদ্ধতিবিহীন উচ্চকক্ষ বাস্তবায়ন করতে দেয়া হবে না।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে কোনো দিকনির্দেশনা না থাকায় মাঠের কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হচ্ছে বলেও তিনি জানান। মামুনুল হক বলেন, ‘সরকার সহজে বিষয়টি কার্যকর করবে বলে মনে হচ্ছে না। এজন্য আন্দোলনের বিকল্প নেই।’
সোমবার ইসলামী আন্দোলনের সংবাদ সম্মেলন
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম (পীর সাহেব চরমোনাই) সোমবার সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের কর্মসূচি তুলে ধরবেন। তিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না করে ‘যেনতেন উপায়ে নির্বাচন আয়োজন করে দেশকে আবারও পুরনো অশুভ আবর্তে নিক্ষেপ করার বন্দোবস্ত করা হচ্ছে।’ এমন পরিস্থিতিতে স্বৈরাচারবিরোধী সব শক্তিকে একত্রিত হয়ে যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তোলার কথা বলেন তিনি।
ইসলামী আন্দোলনের আমীর বলেন, ‘আমাদের দাবি সুস্পষ্ট। আমরা জুলাই সনদের বাস্তবায়ন চাই, এর আইনি ভিত্তি চাই। দ্রুততার সঙ্গে ফ্যাসিবাদের বিচার নিশ্চিত করতে চাই। ফ্যাসিবাদের দোসরদের রাজনীতিতে পুনর্বাসন বন্ধ করতে চাই। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চাই।
আমাদের অবস্থান কোনো দলের বিরুদ্ধে নয়। বরং জুলাই অভ্যুত্থানের রক্ত ও জীবনের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে আমাদের এ অবস্থান। সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ দাবির পক্ষে আমাদের কর্মসূচি তুলে ধরা হবে।’
দলগুলোর পৃথক অবস্থান ও কর্মসূচি ঘোষণার ফলে একটি ঐক্যবদ্ধ যুগপৎ আন্দোলন শুরু হওয়া নিয়ে রাজনৈতিক মহলে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।