alt

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে দিল্লির ভাবনা: কেউ বলছে ‘অপেক্ষা করো এবং দেখো’, অনেকের দ্বিমত

বিবিসি বাংলা : বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশে আগামী ফেব্রুয়ারির শুরুতেই সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়টি এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত। সেই হিসেবে নির্বাচনের বাকি আর মাত্র মাস পাঁচেক। দেশ ও দেশের বাইরে এই নির্বাচন নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। পাশ্ববর্তী দেশ ভারত বিষয়টি নিয়ে আরও সচেতন।

কারো ‘প্ররোচনায়’ পা না দিয়ে ভারতের উচিত হবে নির্বাচন পর্যন্ত দেখা: জহুর সরকার বিশ্বাস

“বাংলাদেশে যদি ‘ভুল’ একটা সরকার সত্যিই ক্ষমতায় আসে, আমাদের নিরাপত্তা, স্বার্থর জন্য আমি সত্যিই দ্বিধান্বিত”: হার্ষ ভার্ধান শ্রিংলা

এর আগে পর পর তিনটি নির্বাচনে প্রতিবেশী ভারতের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে, এমনকি ভারতের সমর্থনেই শেখ হাসিনা সরকার তিনটি প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে উতরে যেতে পেরেছে- এমন অভিযোগও আছে।

এবারের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী দেশের এই নির্বাচন নিয়ে ভারতের মনোভাব এখন কী হতে পারে? বা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের স্বার্থে ঠিক কী হওয়া উচিত? এসব প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে দু’দেশের রাজনীতিতে ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মহলে।

বস্তুত গত এক বছরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বার বার বলেছে, তারা চায় বাংলাদেশে ‘যত দ্রুত সম্ভব’ একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হোক এবং সেই নির্বাচন হোক ‘গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক’।

বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছে। পরবর্তী নির্বাচনে ক্ষমতাচ্যুত দলটি যে তাদের ‘নৌকা’ প্রতীকে লড়তে পারবে, এমন কোনো সম্ভাবনাই এ মুহূর্তে দেখা যাচ্ছে না। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগবিহীন কোনো নির্বাচনকে ভারত অন্তর্ভুক্তিমূলক মনে করবে কিনা- সে বিষয়ে এখনও অস্পষ্টতা রয়েছে।

ভারতের অ্যাকাডেমিক মহলে, বৃহত্তর সিভিল সোসাইটিতেও বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা অব্যাহত, আর সেখানেও উঠে আসছে নানা ধরনের মতামত।

এ সবকিছুই এমন এক সময়ে ঘটছে যখন বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার দলের শীর্ষ নেতাদের একটি বড় অংশ ভারতে অবস্থান করছেন। এ সময়েই ভারতের বৈদেশিক নানা ইস্যু নিয়ে চর্চার একটি প্রধান কেন্দ্র দিল্লির ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার (আইআইসি) সম্প্রতি বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে আয়োজন করেছিল একটি আলোচনা সভার।

ওই নির্বাচনকে সামনে রেখে ভারতের দিক থেকে কী ধরনের ‘প্রস্তুতি’ কাক্সিক্ষত- সেই প্রশ্নকে ঘিরেই বিশ্লেষকরা সেখানে নানা সম্ভাবনা নিয়েই আলোচনা করেছেন। এ থেকে ভারতের বিভিন্ন পর্যায়ের পর্যবেক্ষকদের মনোভাব সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

‘অপেক্ষা করো এবং দেখো’

ভারতের সাবেক শীর্ষস্থানীয় আমলা প্রসার ভারতী বোর্ডের প্রাক্তন সিইও জহর সরকার বিশ্বাস মনে করেন, এই মুহূর্তে কোনো ‘প্ররোচনায়’ পা না দিয়ে ভারতের উচিত হবে নির্বাচনে কী ফলাফল হয়, সেটা দেখার জন্য অপেক্ষা করা।

আলোচনা সভার সঞ্চালক হিসেবে থাকা তৃণমূল কংগ্রেসের এই সাবেক পার্লামেন্টারিয়ান বিবিসিকে বলছিলেন, ‘বাংলাদেশে এখনকার প্রেজেন্ট পরিস্থিতি আমাদের মানতে হবে, বুঝতে হবে। বোঝার থেকেও বেশি কথা হলো মানতে হবে।’

‘আসলে হঠাৎ (পালাবদল) হয়ে যাওয়াতে (দিল্লির) একটা শকের মতো হয়ে গিয়েছিল... এখন মেনে নিতে হবে যে, বাংলাদেশের ভোটাররা যাকেই তাদের শাসক হিসেবে চিহ্নিত করবে তাদেরকে আমাদের মানতে হবে।’

কিন্তু বাংলাদেশের নতুন সরকার যদি ভারতের প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন না হয়, এমন প্রশ্নে জহর সরকার বলেন, ‘এগুলো পরের কথা... কে আসবে কে যাবে - কেউ জানে না।’

তবে তিনি আরও বলেন, ‘আসলে মনে রাখতে হবে (বাংলাদেশে) এখনকার যে সরকার সেটা একটা কেয়ারটেকার গভর্নমেন্ট- তাদের এত বেশি বলার বা খোঁচানোরও প্রয়োজনীয়তা নেই, তারা তো ইলেকশনটা করে নিলেই পারে।’

ফলে এখন আর কয়েকটা মাস ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করে ভারতের উচিত কে ক্ষমতায় আসে সেটা দেখা এবং তাদের বিষয়ে নীতি স্থির করা।

‘বসে দেখার’ বিপক্ষেও কেউ কেউ

দিল্লির পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন- এমন অনেকের মত হলো ‘ভারতের স্বার্থবিরোধী’ কোনো সরকার যদি ক্ষমতায় আসার সত্যিই সম্ভাবনা থাকে, সেটা চুপচাপ বসে দেখে যাওয়ার কোনো অবকাশ নেই! তাদেরই একজন হলেন ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব হার্ষ ভার্ধান শ্রিংলা।

ঢাকায় ভারতের এই সাবেক হাইকমিশনার আইআইসির আলোচনায় বলেন, “বাংলাদেশে যদি ‘ভুল’ একটা সরকার সত্যিই ক্ষমতায় এসে যায়, তাহলে আমাদের নিরাপত্তা ও দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থের জন্য তার পরিণতি কী হতে পারে সেটা ভেবেও আমি কিন্তু সত্যিই দ্বিধান্বিত।”

তিনি আরও যুক্তি দিচ্ছেন, “এটা খুব সহজে বলাই যায়, ‘যে কেউই জিতে ক্ষমতায় আসুক আমরা তাদের সঙ্গেই কাজ করবো। কিন্তু সেই ‘যে কেউ’-টা যদি আপনার স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করে তাহলে তো সেটা নিয়ে আপনাকে অবহিত থাকতে হবে।”

শ্রিংলার মতে, দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের প্রতিবেশী যারা তাদের দেশের পরিস্থিতিকে তাদের ‘অভ্যন্তরীণ ব্যাপার’ বলে ভারত কখনই এড়িয়ে যেতে পারে না। মানে ‘যেখানে ভারতের স্বার্থ জড়িত, সেটা অবশ্যই ভারতেরও ব্যাপার’।

‘আমাদের নিরাপত্তা স্বার্থ যাতে রক্ষিত হয় সেটা আমাদের দেখতেই হবে- আর আমাদের ইমিডিয়েট নেবারহুডের কথা যদি বলি, যেসব দেশের সঙ্গে আমাদের অভিন্ন সীমান্ত আছে, সেখানে তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে কিছু থাকতে পারে না!’ যদিও শ্রিংলা এটাকে তার ‘একান্তই ব্যক্তিগত মত’ বলে তুলে ধরেছেন।

আওয়ামী লীগবিহীন নির্বাচনই বাস্তবতা?

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঘোষিত অবস্থান হলো- তারা বাংলাদেশে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায়। অনেক পর্যবেক্ষকই সে কথার অর্থ করছেন এভাবে যে ভারতের অভিপ্রায় আওয়ামী লীগ কোনো না কোনো আকারে বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনেও থাকুক।

তবে এখনকার বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক শক্তিগুলোর সঙ্গে ভালো যোগাযোগ আছে, দিল্লিতে এমন কেউ কেউ মনে করছেন, বাস্তবে সেটা হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে!

ওপি জিন্দাল ইউনিভার্সিটিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক ও দীর্ঘদিনের বাংলাদেশ গবেষক শ্রীরাধা দত্ত সদ্যই ঢাকা ঘুরে গেছেন। সে সময় তিনি দেখা করেছেন জামায়াত, বিএনপি, এনসিপিসহ বিভিন্ন দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে।

তখনকার আলোচনার প্রেক্ষাপটে তিনি মনে করছেন, অন্তত আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিতে পারছে না। আর ভারতেরও সেই বাস্তবতাটা স্বীকার করে নেয়া উচিত।

তার ভাষায়, ‘আর এতদিন ধরে অন্তর্বর্তী সরকার যে আলোচনাগুলো করছে, ওটাও পর্যালোচনা করা দরকার যে, সে দেশের পলিটিক্যাল পার্টিগুলো কী চাইছে? তো মোটামুটি এখন একটা জায়গা দাঁড়িয়েছে যে, আওয়ামী লীগ ছাড়াই ইলেকশন হয়তো হবে।

জামায়াতকে দিল্লি কোন চোখে দেখবে?

বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে আলোচনার পটভূমিতে দিল্লিতে একটা প্রশ্ন ঘুরে-ফিরেই আসছে, সেটা হলো- জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি এখন কী হওয়া উচিত? জামায়াত এমন একটি দল, যাদের ইসলামী চিন্তাধারার কারণে ভারত চিরকাল তাদের রাজনৈতিকভাবে অস্পৃশ্য মনে করে এসেছে। এমনকি জামায়াতের সঙ্গে সংস্রব আছে বলে বিএনপির সঙ্গেও ভারত অনেকদিন সম্পর্ক পর্যন্ত রাখতে চায়নি।

কিন্তু বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় জামায়াতের যে শক্তি বাড়ছে সেই লক্ষণ স্পষ্ট, বিভিন্ন পাবলিক ইউনিভার্সিটির ছাত্র সংসদের নির্বাচনেও তারা দাপুটে জয় পেয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে দিল্লিতেও কোনো কোনো পর্যবেক্ষক মনে করছেন, জামায়াত এখন সে দেশে সম্পূর্ণ নতুন চেহারার একটি দল, ‘কার্যত তারা যেন জামায়াত ২.০’!

শ্রীরাধা দত্ত যেমন মনে করিয়ে দিচ্ছেন, জামায়াতের নবীন প্রজন্মের নেতারা জিন্স বা টি-শার্ট পরেও টেলিভিশন টক শোতে আসছেন। নতুন নতুন ধ্যান-ধারণার কথা বলছেন।

সাম্প্রতিক ঢাকা সফরে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের সঙ্গে বৈঠকের সূত্র ধরে তিনি বলছিলেন ‘আমি ড. তাহেরকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ধরুন আপনারা সরকার গড়ার মতো সংখ্যা পেয়ে গেলেন, তাহলে কি দেশে শরিয়া আইন আনতে চাইবেন?’

‘উনি তখন বললেন, এটা আবার কোথায় শুনলেন? আমরা কবে কোথায় বলেছি জিতলে আমরা বাংলাদেশে শরিয়া আইন আনবো!’

‘আমি ১৯৭১’র কথাও জিজ্ঞেস করেছিলাম, কারণ অনেককাল ধরেই আমরা জানি মুক্তিযুদ্ধে তাদের ভূমিকা কী ছিল। তার উত্তরে তিনি তখন বললেন, মতিউর রহমান নিজামি বা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর মতো নেতারা কিন্তু প্রকাশ্যেই একাত্তরে জামায়াতের অবস্থানের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন! আমরা ওটা স্বীকার করেছি!’

ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তেও জামায়াতের নতুন নেতৃত্ব আগ্রহী বলে তিনি ধারণা করছেন।

‘জামায়াতের যুক্তি হলো- মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তাদের আপত্তির জায়গাটা হলো শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের পুরো অর্জনটা তার নিজের বলে হাইজ্যাক করে নিয়েছিলেন! তারা এটাও বলছেন যে, ভারত যে বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী, তা স্বীকার করতেও জামায়াতের কোনো দ্বিধা নেই!’

‘চট্টগ্রামে অস্ত্র পাচার মামলায় বলি বা ২০০১-২০০৬ সালের মধ্যেকার অন্য নানা ভারত-বিরোধী ঘটনা, ওনারা এটাও বললেন যে, ওগুলোতে জামায়াতের কারও হাত ছিল, এরকম একটা প্রমাণ দেখান!’

ফলে জামায়াতকে নিয়ে শ্রীরাধা দত্তর উপসংহার, “ওরা আসলে দারুণ ‘চার্ম অফেনসিভ’, কথায় আপনাকে মুগ্ধ করে দেবে। কিন্তু আসলে ওরা বাস্তবে কী করছে সেটা অবশ্য অন্য গল্প!” আর ভারতকেও সেটা বুঝেই পা ফেলতে হবে বলে তার পরামর্শ।

যদিও হর্ষবর্ধন শ্রিংলা কিন্তু কিছুতেই মানতে রাজি নন বাংলাদেশের জামায়াত আসলে কখনো তাদের চরিত্র পাল্টাতে পারে! বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে গণহত্যার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘তাদের হাতে আসলে রক্ত লেগে আছে- এটা আমাদের বুঝতে হবে!’

‘আর জামায়াত হলো আসলে মুসলিম ব্রাদারহুডের অংশ; এরা সেই একই মুসলিম ব্রাদারহুড, যারা বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মিশরসহ পৃথিবীর নানা দেশেই আছে।’

শ্রিংলা বলেন, ‘এখানে আমাদের আসলে একটা সীমারেখা টানতেই হবে... তারা মুখে কী বলছে সেটা শোনা একটা জিনিস, আর বাস্তবে কী করছে সেটাও দেখা দরকার।’

সব মিলিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভারতকে যে একটা কঠিন সংকট আর প্রবল দ্বিধার মধ্যে ফেলেছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

ইসলামী কয়েকটি দলের যুগপৎ কর্মসূচি ‘গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়’: মির্জা ফখরুল

রাজধানীতে নিষিদ্ধ আ’লীগের ঝটিকা মিছিল, গ্রেপ্তার ১৮

ছবি

পিআর, সংস্কার দাবিতে ইসলামী দলগুলোর বিক্ষোভ

ছবি

পিআর পদ্ধতিতে গণভোটের দাবি জামায়াতে ইসলামী

ছবি

বিএনপি মহাসচিবের মন্তব্য: যুগপৎ আন্দোলন ‘গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়’

ছবি

নরসিংদী বিএনপিতে সংঘর্ষ, গুলিতে নিহত ১, আহত ৫

ছবি

প্রবাসী ভোটারদের জন্য ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপ আসছে, ১৫তম সংসদ নির্বাচনে ডাকযোগে ভোটের ব্যবস্থা

ছবি

১৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মহাসম্মেলনের ডাক তাহাফফুজে খতমে নবুওয়াতের

ছবি

রাজনৈতিক সরকার না আসা পর্যন্ত অস্থিতিশীলতা কাটবে না: আমীর খসরু

ছবি

পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন নিয়ে ক্ষুব্ধ ফয়জুল করীম

ছবি

প্রত্যাশা অনুযায়ী গণমাধ্যম সংস্কার হয়নি, বললেন নাহিদ

ছবি

ঢাকায় আজ জামায়াতসহ ৭ দলের বিক্ষোভ মিছিল

ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে সাংবিধানিক আদেশ ও গণভোট প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত রাজনৈতিক দলগুলো

ছবি

রাজশাহীতে এনসিপি নেত্রীর আকস্মিক পদত্যাগ

ছবি

জামায়াতসহ কয়েক দলের যুগপৎ আন্দোলনের জবাব রাজপথেই দেবে বিএনপি: সালাহউদ্দিন

ছবি

খালেদা জিয়ার ভাগ্নে শাহরিনকে আহ্বায়ক করে এইবির নতুন কমিটি

ছবি

নাশকতার দুই মামলা থেকে ফখরুল ও আব্বাসসহ ১০৬ জনকে অব্যাহতি

ছবি

এখন কার্যকর গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়তে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে: মির্জা ফখরুল

ছবি

অভিন্ন দাবিতে তিন ইসলামী দলের যুগপৎ কর্মসূচি ঘোষণা

ছবি

যুগপতে পাঁচ দাবিতে জামায়াতের তিন দিনের বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা

ছবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২৫ সনাতন যোগ দিলেন জামায়াতে

ছবি

তারেকের নিরাপত্তা নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বাবরের আলোচনা

ছবি

যুগপতে কারা থাকছে ঠিক হয়নি, তবে খেলাফতের কর্মসূচি ঘোষণা

জামায়াতের আযাদ: মুক্তিযুদ্ধ না মানলে ‘বাংলাদেশ অস্বীকার করা হবে’

ছবি

জুলাই সনদের গেরো: এবার আদালতের মত নিতে বলল বিএনপি

ছবি

‘জুলাই সনদ’ স্বাক্ষরে রাজি বিএনপি, তবে আইনি ভিত্তি নিয়ে মতভেদ

ছবি

ডাকসু-জাকসু নির্বাচনে ‘মাস্টার প্ল্যান’ প্রশ্ন তুললেন রিজভী

ছবি

মৌলবাদীরা ‘বেহেশতের টিকেট’ বিক্রি করছে: বিএনপির গয়েশ্বর

ছবি

সংরক্ষিত নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের দাবি

ছবি

জুলাই সনদ বাস্তবায়নসহ ৫ দফা দাবিতে খেলাফত মজলিসের তিন দিনের কর্মসূচি

ছবি

সাবেক প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান এবার তুহিন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার

ছবি

রাষ্ট্রে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে বাস্তুতন্ত্রও নিরাপদ থাকবে: তারেক রহমান

ছবি

সরকার ও উপদেষ্টারা মাহফুজদের যথেচ্ছ ব্যবহার করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে: নাহিদ ইসলাম

ছবি

দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে পশু-পাখি ও বাস্তুতন্ত্রের অধিকার নিশ্চিত হবে: তারেক রহমান

ছবি

বসুন্ধরায় গোপন বৈঠক: ময়মনসিংহ জেলা আ.লীগ নেতার দোষ স্বীকার

ছবি

ঢাকার আগারগাঁওয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ‘নিষিদ্ধ’ আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ মিছিল

tab

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে দিল্লির ভাবনা: কেউ বলছে ‘অপেক্ষা করো এবং দেখো’, অনেকের দ্বিমত

বিবিসি বাংলা

বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশে আগামী ফেব্রুয়ারির শুরুতেই সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়টি এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত। সেই হিসেবে নির্বাচনের বাকি আর মাত্র মাস পাঁচেক। দেশ ও দেশের বাইরে এই নির্বাচন নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। পাশ্ববর্তী দেশ ভারত বিষয়টি নিয়ে আরও সচেতন।

কারো ‘প্ররোচনায়’ পা না দিয়ে ভারতের উচিত হবে নির্বাচন পর্যন্ত দেখা: জহুর সরকার বিশ্বাস

“বাংলাদেশে যদি ‘ভুল’ একটা সরকার সত্যিই ক্ষমতায় আসে, আমাদের নিরাপত্তা, স্বার্থর জন্য আমি সত্যিই দ্বিধান্বিত”: হার্ষ ভার্ধান শ্রিংলা

এর আগে পর পর তিনটি নির্বাচনে প্রতিবেশী ভারতের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে, এমনকি ভারতের সমর্থনেই শেখ হাসিনা সরকার তিনটি প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচনে উতরে যেতে পেরেছে- এমন অভিযোগও আছে।

এবারের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রতিবেশী দেশের এই নির্বাচন নিয়ে ভারতের মনোভাব এখন কী হতে পারে? বা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের স্বার্থে ঠিক কী হওয়া উচিত? এসব প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে দু’দেশের রাজনীতিতে ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মহলে।

বস্তুত গত এক বছরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বার বার বলেছে, তারা চায় বাংলাদেশে ‘যত দ্রুত সম্ভব’ একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন হোক এবং সেই নির্বাচন হোক ‘গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক’।

বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছে। পরবর্তী নির্বাচনে ক্ষমতাচ্যুত দলটি যে তাদের ‘নৌকা’ প্রতীকে লড়তে পারবে, এমন কোনো সম্ভাবনাই এ মুহূর্তে দেখা যাচ্ছে না। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগবিহীন কোনো নির্বাচনকে ভারত অন্তর্ভুক্তিমূলক মনে করবে কিনা- সে বিষয়ে এখনও অস্পষ্টতা রয়েছে।

ভারতের অ্যাকাডেমিক মহলে, বৃহত্তর সিভিল সোসাইটিতেও বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা অব্যাহত, আর সেখানেও উঠে আসছে নানা ধরনের মতামত।

এ সবকিছুই এমন এক সময়ে ঘটছে যখন বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার দলের শীর্ষ নেতাদের একটি বড় অংশ ভারতে অবস্থান করছেন। এ সময়েই ভারতের বৈদেশিক নানা ইস্যু নিয়ে চর্চার একটি প্রধান কেন্দ্র দিল্লির ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার (আইআইসি) সম্প্রতি বাংলাদেশের পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে আয়োজন করেছিল একটি আলোচনা সভার।

ওই নির্বাচনকে সামনে রেখে ভারতের দিক থেকে কী ধরনের ‘প্রস্তুতি’ কাক্সিক্ষত- সেই প্রশ্নকে ঘিরেই বিশ্লেষকরা সেখানে নানা সম্ভাবনা নিয়েই আলোচনা করেছেন। এ থেকে ভারতের বিভিন্ন পর্যায়ের পর্যবেক্ষকদের মনোভাব সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

‘অপেক্ষা করো এবং দেখো’

ভারতের সাবেক শীর্ষস্থানীয় আমলা প্রসার ভারতী বোর্ডের প্রাক্তন সিইও জহর সরকার বিশ্বাস মনে করেন, এই মুহূর্তে কোনো ‘প্ররোচনায়’ পা না দিয়ে ভারতের উচিত হবে নির্বাচনে কী ফলাফল হয়, সেটা দেখার জন্য অপেক্ষা করা।

আলোচনা সভার সঞ্চালক হিসেবে থাকা তৃণমূল কংগ্রেসের এই সাবেক পার্লামেন্টারিয়ান বিবিসিকে বলছিলেন, ‘বাংলাদেশে এখনকার প্রেজেন্ট পরিস্থিতি আমাদের মানতে হবে, বুঝতে হবে। বোঝার থেকেও বেশি কথা হলো মানতে হবে।’

‘আসলে হঠাৎ (পালাবদল) হয়ে যাওয়াতে (দিল্লির) একটা শকের মতো হয়ে গিয়েছিল... এখন মেনে নিতে হবে যে, বাংলাদেশের ভোটাররা যাকেই তাদের শাসক হিসেবে চিহ্নিত করবে তাদেরকে আমাদের মানতে হবে।’

কিন্তু বাংলাদেশের নতুন সরকার যদি ভারতের প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন না হয়, এমন প্রশ্নে জহর সরকার বলেন, ‘এগুলো পরের কথা... কে আসবে কে যাবে - কেউ জানে না।’

তবে তিনি আরও বলেন, ‘আসলে মনে রাখতে হবে (বাংলাদেশে) এখনকার যে সরকার সেটা একটা কেয়ারটেকার গভর্নমেন্ট- তাদের এত বেশি বলার বা খোঁচানোরও প্রয়োজনীয়তা নেই, তারা তো ইলেকশনটা করে নিলেই পারে।’

ফলে এখন আর কয়েকটা মাস ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করে ভারতের উচিত কে ক্ষমতায় আসে সেটা দেখা এবং তাদের বিষয়ে নীতি স্থির করা।

‘বসে দেখার’ বিপক্ষেও কেউ কেউ

দিল্লির পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন- এমন অনেকের মত হলো ‘ভারতের স্বার্থবিরোধী’ কোনো সরকার যদি ক্ষমতায় আসার সত্যিই সম্ভাবনা থাকে, সেটা চুপচাপ বসে দেখে যাওয়ার কোনো অবকাশ নেই! তাদেরই একজন হলেন ভারতের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব হার্ষ ভার্ধান শ্রিংলা।

ঢাকায় ভারতের এই সাবেক হাইকমিশনার আইআইসির আলোচনায় বলেন, “বাংলাদেশে যদি ‘ভুল’ একটা সরকার সত্যিই ক্ষমতায় এসে যায়, তাহলে আমাদের নিরাপত্তা ও দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থের জন্য তার পরিণতি কী হতে পারে সেটা ভেবেও আমি কিন্তু সত্যিই দ্বিধান্বিত।”

তিনি আরও যুক্তি দিচ্ছেন, “এটা খুব সহজে বলাই যায়, ‘যে কেউই জিতে ক্ষমতায় আসুক আমরা তাদের সঙ্গেই কাজ করবো। কিন্তু সেই ‘যে কেউ’-টা যদি আপনার স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করে তাহলে তো সেটা নিয়ে আপনাকে অবহিত থাকতে হবে।”

শ্রিংলার মতে, দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের প্রতিবেশী যারা তাদের দেশের পরিস্থিতিকে তাদের ‘অভ্যন্তরীণ ব্যাপার’ বলে ভারত কখনই এড়িয়ে যেতে পারে না। মানে ‘যেখানে ভারতের স্বার্থ জড়িত, সেটা অবশ্যই ভারতেরও ব্যাপার’।

‘আমাদের নিরাপত্তা স্বার্থ যাতে রক্ষিত হয় সেটা আমাদের দেখতেই হবে- আর আমাদের ইমিডিয়েট নেবারহুডের কথা যদি বলি, যেসব দেশের সঙ্গে আমাদের অভিন্ন সীমান্ত আছে, সেখানে তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে কিছু থাকতে পারে না!’ যদিও শ্রিংলা এটাকে তার ‘একান্তই ব্যক্তিগত মত’ বলে তুলে ধরেছেন।

আওয়ামী লীগবিহীন নির্বাচনই বাস্তবতা?

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঘোষিত অবস্থান হলো- তারা বাংলাদেশে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায়। অনেক পর্যবেক্ষকই সে কথার অর্থ করছেন এভাবে যে ভারতের অভিপ্রায় আওয়ামী লীগ কোনো না কোনো আকারে বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনেও থাকুক।

তবে এখনকার বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক শক্তিগুলোর সঙ্গে ভালো যোগাযোগ আছে, দিল্লিতে এমন কেউ কেউ মনে করছেন, বাস্তবে সেটা হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে!

ওপি জিন্দাল ইউনিভার্সিটিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক ও দীর্ঘদিনের বাংলাদেশ গবেষক শ্রীরাধা দত্ত সদ্যই ঢাকা ঘুরে গেছেন। সে সময় তিনি দেখা করেছেন জামায়াত, বিএনপি, এনসিপিসহ বিভিন্ন দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে।

তখনকার আলোচনার প্রেক্ষাপটে তিনি মনে করছেন, অন্তত আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিতে পারছে না। আর ভারতেরও সেই বাস্তবতাটা স্বীকার করে নেয়া উচিত।

তার ভাষায়, ‘আর এতদিন ধরে অন্তর্বর্তী সরকার যে আলোচনাগুলো করছে, ওটাও পর্যালোচনা করা দরকার যে, সে দেশের পলিটিক্যাল পার্টিগুলো কী চাইছে? তো মোটামুটি এখন একটা জায়গা দাঁড়িয়েছে যে, আওয়ামী লীগ ছাড়াই ইলেকশন হয়তো হবে।

জামায়াতকে দিল্লি কোন চোখে দেখবে?

বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে আলোচনার পটভূমিতে দিল্লিতে একটা প্রশ্ন ঘুরে-ফিরেই আসছে, সেটা হলো- জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি এখন কী হওয়া উচিত? জামায়াত এমন একটি দল, যাদের ইসলামী চিন্তাধারার কারণে ভারত চিরকাল তাদের রাজনৈতিকভাবে অস্পৃশ্য মনে করে এসেছে। এমনকি জামায়াতের সঙ্গে সংস্রব আছে বলে বিএনপির সঙ্গেও ভারত অনেকদিন সম্পর্ক পর্যন্ত রাখতে চায়নি।

কিন্তু বাংলাদেশের নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় জামায়াতের যে শক্তি বাড়ছে সেই লক্ষণ স্পষ্ট, বিভিন্ন পাবলিক ইউনিভার্সিটির ছাত্র সংসদের নির্বাচনেও তারা দাপুটে জয় পেয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে দিল্লিতেও কোনো কোনো পর্যবেক্ষক মনে করছেন, জামায়াত এখন সে দেশে সম্পূর্ণ নতুন চেহারার একটি দল, ‘কার্যত তারা যেন জামায়াত ২.০’!

শ্রীরাধা দত্ত যেমন মনে করিয়ে দিচ্ছেন, জামায়াতের নবীন প্রজন্মের নেতারা জিন্স বা টি-শার্ট পরেও টেলিভিশন টক শোতে আসছেন। নতুন নতুন ধ্যান-ধারণার কথা বলছেন।

সাম্প্রতিক ঢাকা সফরে জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরের সঙ্গে বৈঠকের সূত্র ধরে তিনি বলছিলেন ‘আমি ড. তাহেরকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ধরুন আপনারা সরকার গড়ার মতো সংখ্যা পেয়ে গেলেন, তাহলে কি দেশে শরিয়া আইন আনতে চাইবেন?’

‘উনি তখন বললেন, এটা আবার কোথায় শুনলেন? আমরা কবে কোথায় বলেছি জিতলে আমরা বাংলাদেশে শরিয়া আইন আনবো!’

‘আমি ১৯৭১’র কথাও জিজ্ঞেস করেছিলাম, কারণ অনেককাল ধরেই আমরা জানি মুক্তিযুদ্ধে তাদের ভূমিকা কী ছিল। তার উত্তরে তিনি তখন বললেন, মতিউর রহমান নিজামি বা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর মতো নেতারা কিন্তু প্রকাশ্যেই একাত্তরে জামায়াতের অবস্থানের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন! আমরা ওটা স্বীকার করেছি!’

ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তেও জামায়াতের নতুন নেতৃত্ব আগ্রহী বলে তিনি ধারণা করছেন।

‘জামায়াতের যুক্তি হলো- মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে তাদের আপত্তির জায়গাটা হলো শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের পুরো অর্জনটা তার নিজের বলে হাইজ্যাক করে নিয়েছিলেন! তারা এটাও বলছেন যে, ভারত যে বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী, তা স্বীকার করতেও জামায়াতের কোনো দ্বিধা নেই!’

‘চট্টগ্রামে অস্ত্র পাচার মামলায় বলি বা ২০০১-২০০৬ সালের মধ্যেকার অন্য নানা ভারত-বিরোধী ঘটনা, ওনারা এটাও বললেন যে, ওগুলোতে জামায়াতের কারও হাত ছিল, এরকম একটা প্রমাণ দেখান!’

ফলে জামায়াতকে নিয়ে শ্রীরাধা দত্তর উপসংহার, “ওরা আসলে দারুণ ‘চার্ম অফেনসিভ’, কথায় আপনাকে মুগ্ধ করে দেবে। কিন্তু আসলে ওরা বাস্তবে কী করছে সেটা অবশ্য অন্য গল্প!” আর ভারতকেও সেটা বুঝেই পা ফেলতে হবে বলে তার পরামর্শ।

যদিও হর্ষবর্ধন শ্রিংলা কিন্তু কিছুতেই মানতে রাজি নন বাংলাদেশের জামায়াত আসলে কখনো তাদের চরিত্র পাল্টাতে পারে! বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে গণহত্যার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘তাদের হাতে আসলে রক্ত লেগে আছে- এটা আমাদের বুঝতে হবে!’

‘আর জামায়াত হলো আসলে মুসলিম ব্রাদারহুডের অংশ; এরা সেই একই মুসলিম ব্রাদারহুড, যারা বাংলাদেশ, পাকিস্তান, মিশরসহ পৃথিবীর নানা দেশেই আছে।’

শ্রিংলা বলেন, ‘এখানে আমাদের আসলে একটা সীমারেখা টানতেই হবে... তারা মুখে কী বলছে সেটা শোনা একটা জিনিস, আর বাস্তবে কী করছে সেটাও দেখা দরকার।’

সব মিলিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভারতকে যে একটা কঠিন সংকট আর প্রবল দ্বিধার মধ্যে ফেলেছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।

back to top