বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর ভোট ব্যবস্থা চালু করা হবে কি না, তার সিদ্ধান্ত নিতে হবে জনগণকেই।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত তারুণ্যের রাষ্ট্র চিন্তা–এর তৃতীয় সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। “মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন শিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গন” শীর্ষক এ আলোচনার আয়োজন করে অর্পণ আলোক ফাউন্ডেশন।
“জনগণই ঠিক করবে”
সালাহউদ্দিন বলেন, “কেউ বলছেন, ‘পিআর চাই’। চাইলে সেটা জনগণ ঠিক করবে। আমরা কে কয়টা সভা করলাম বা কত মানুষ নিয়ে মিছিল করলাম, তাতে তো পিআর প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেল না। নির্বাচনী ইশতেহারে দাবি তুলে ধরুন, জনগণ সমর্থন দিলে বাস্তবায়ন করুন—এটাই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া।”
তিনি আরও বলেন, “আলোচনার টেবিল আর আন্দোলন একই ইস্যুতে হলে সেটি স্ববিরোধী আচরণ। তাই আমি বলব, সংকট সৃষ্টি নয়, বরং ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা এখন জরুরি।”
ঐক্যের আহ্বান
বিএনপি নেতা জানান, “ফ্যাসিবাদবিরোধী যে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছে, সেটি অটুট রাখতে হবে। এ ঐক্যকে শক্তিতে রূপান্তর করতে পারলে আমরা গণতান্ত্রিক চর্চাকে টিকিয়ে রাখতে পারব এবং একটি শক্তিশালী, অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়তে সক্ষম হব।”
এনসিপি প্রসঙ্গ
এ সময় তিনি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “সরকার বিরোধী মনোভাব জনগণের মধ্যে সবসময় থাকে। যেকোনো ব্যর্থতার দায় জনগণ প্রথমেই সরকারের ওপর দেয়। এই অবস্থায় এনসিপি যদি সরকারের অংশ না হয়ে প্রেসার গ্রুপ হিসেবে থাকত, তাহলে তাদের ভূমিকা আরও গ্রহণযোগ্য হতো। কিন্তু এখন ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে থেকে প্রতিদিনই তাদের দায় বহন করতে হচ্ছে।”
জামায়াতকে চ্যালেঞ্জ
সালাহউদ্দিন বলেন, “শুনছি, জামায়াতে ইসলামী সরকার গঠন করবে, বিএনপি বিরোধী দলে যাবে। জনগণ না ঠিক করে তারা কিভাবে নির্ধারণ করে ফেলল? যদি এতটাই আত্মবিশ্বাস থাকে, তাহলে নির্বাচনে আসুক না কেন? নানা অজুহাতে নির্বাচন এড়িয়ে যাওয়ার পেছনে উদ্দেশ্য আছে, যা সময়মতো বলব।”
তিনি প্রশ্ন রাখেন, “যুগপৎ আন্দোলনে এখন যাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন, তাদের মধ্যে এমন দল আছে যারা ২০২৪ সালের ‘আমি-ডামি’ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। তারা যদি সঙ্গী হয়ে নির্দোষ হয়, তাহলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যাওয়া ২৮ দলের কী হবে? নীতিতে এই বৈপরীত্য গ্রহণযোগ্য নয়।”
আলোচনার টেবিলেই সমাধান
তিনি বলেন, “প্রত্যেকের গণতান্ত্রিক অধিকার আছে দাবি তোলার। তবে অনেক বিষয় এখনো আলোচনার টেবিলে সমাধানের অপেক্ষায়। অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগের জন্য আন্দোলনে গেলে আমাদেরও মাঠে নামতে হবে। কিন্তু সেটা কি আমরা চাই? বরং আলোচনার মাধ্যমেই নিষ্পত্তি হওয়া উচিত।”
দুই সংবিধান বিতর্ক
সালাহউদ্দিন আরও বলেন, “যদি জুলাই সনদের আলোকে সাংবিধানিক আদেশ কার্যকর করতে হয়, তাহলে তো দেশে দুটি সংবিধান থাকবে। প্রশাসন বা বিচার বিভাগ কোনটি মানবে? সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকা এখানেই গুরুত্বপূর্ণ। শেখ হাসিনার মতামত না নেওয়া নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করা হয়েছে, কিন্তু বাস্তবতায় তো সেটি সম্ভব ছিল না।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, “সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি হলে লাভবান হবে অসাংবিধানিক শক্তি। পতিত স্বৈরাচারকে সুযোগ দেওয়া যাবে না।”
জবরদস্তি নয়
বিএনপি নেতা বলেন, “কোনো দাবি জোর করে চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। এনসিপি বলছে, গণপরিষদ ও সংসদ নির্বাচন একসাথে করতে হবে। আলোচনা হলে সম্মতিতে সমাধান আসবে, না হলে প্রচলিত বিধান মেনেই নির্বাচন হবে।”
তার মতে, “পরিবর্তন ধাপে ধাপে আসবে। রাতারাতি কিছু সম্ভব নয়। তবে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির চর্চার মধ্য দিয়েই আমরা বৈষম্যহীন, ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গড়তে পারব।”
অংশগ্রহণকারীরা
অর্পণ আলোক ফাউন্ডেশনের সভানেত্রী বীথিকা বিনতে হোসাইনের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন আবদুস সালাম, এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ, ছাত্রদল নেতা আবিদুল ইসলাম খান, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শেখ তানভীর বারী হামীম এবং এজিএস প্রার্থী তানভীর আল হাদী মায়েদ।
শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব বা পিআর ভোট ব্যবস্থা চালু করা হবে কি না, তার সিদ্ধান্ত নিতে হবে জনগণকেই।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত তারুণ্যের রাষ্ট্র চিন্তা–এর তৃতীয় সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। “মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন শিক্ষা ও শিক্ষাঙ্গন” শীর্ষক এ আলোচনার আয়োজন করে অর্পণ আলোক ফাউন্ডেশন।
“জনগণই ঠিক করবে”
সালাহউদ্দিন বলেন, “কেউ বলছেন, ‘পিআর চাই’। চাইলে সেটা জনগণ ঠিক করবে। আমরা কে কয়টা সভা করলাম বা কত মানুষ নিয়ে মিছিল করলাম, তাতে তো পিআর প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেল না। নির্বাচনী ইশতেহারে দাবি তুলে ধরুন, জনগণ সমর্থন দিলে বাস্তবায়ন করুন—এটাই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া।”
তিনি আরও বলেন, “আলোচনার টেবিল আর আন্দোলন একই ইস্যুতে হলে সেটি স্ববিরোধী আচরণ। তাই আমি বলব, সংকট সৃষ্টি নয়, বরং ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা এখন জরুরি।”
ঐক্যের আহ্বান
বিএনপি নেতা জানান, “ফ্যাসিবাদবিরোধী যে জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছে, সেটি অটুট রাখতে হবে। এ ঐক্যকে শক্তিতে রূপান্তর করতে পারলে আমরা গণতান্ত্রিক চর্চাকে টিকিয়ে রাখতে পারব এবং একটি শক্তিশালী, অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়তে সক্ষম হব।”
এনসিপি প্রসঙ্গ
এ সময় তিনি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “সরকার বিরোধী মনোভাব জনগণের মধ্যে সবসময় থাকে। যেকোনো ব্যর্থতার দায় জনগণ প্রথমেই সরকারের ওপর দেয়। এই অবস্থায় এনসিপি যদি সরকারের অংশ না হয়ে প্রেসার গ্রুপ হিসেবে থাকত, তাহলে তাদের ভূমিকা আরও গ্রহণযোগ্য হতো। কিন্তু এখন ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে সরকারে থেকে প্রতিদিনই তাদের দায় বহন করতে হচ্ছে।”
জামায়াতকে চ্যালেঞ্জ
সালাহউদ্দিন বলেন, “শুনছি, জামায়াতে ইসলামী সরকার গঠন করবে, বিএনপি বিরোধী দলে যাবে। জনগণ না ঠিক করে তারা কিভাবে নির্ধারণ করে ফেলল? যদি এতটাই আত্মবিশ্বাস থাকে, তাহলে নির্বাচনে আসুক না কেন? নানা অজুহাতে নির্বাচন এড়িয়ে যাওয়ার পেছনে উদ্দেশ্য আছে, যা সময়মতো বলব।”
তিনি প্রশ্ন রাখেন, “যুগপৎ আন্দোলনে এখন যাদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন, তাদের মধ্যে এমন দল আছে যারা ২০২৪ সালের ‘আমি-ডামি’ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। তারা যদি সঙ্গী হয়ে নির্দোষ হয়, তাহলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যাওয়া ২৮ দলের কী হবে? নীতিতে এই বৈপরীত্য গ্রহণযোগ্য নয়।”
আলোচনার টেবিলেই সমাধান
তিনি বলেন, “প্রত্যেকের গণতান্ত্রিক অধিকার আছে দাবি তোলার। তবে অনেক বিষয় এখনো আলোচনার টেবিলে সমাধানের অপেক্ষায়। অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগের জন্য আন্দোলনে গেলে আমাদেরও মাঠে নামতে হবে। কিন্তু সেটা কি আমরা চাই? বরং আলোচনার মাধ্যমেই নিষ্পত্তি হওয়া উচিত।”
দুই সংবিধান বিতর্ক
সালাহউদ্দিন আরও বলেন, “যদি জুলাই সনদের আলোকে সাংবিধানিক আদেশ কার্যকর করতে হয়, তাহলে তো দেশে দুটি সংবিধান থাকবে। প্রশাসন বা বিচার বিভাগ কোনটি মানবে? সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকা এখানেই গুরুত্বপূর্ণ। শেখ হাসিনার মতামত না নেওয়া নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করা হয়েছে, কিন্তু বাস্তবতায় তো সেটি সম্ভব ছিল না।”
তিনি সতর্ক করে বলেন, “সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি হলে লাভবান হবে অসাংবিধানিক শক্তি। পতিত স্বৈরাচারকে সুযোগ দেওয়া যাবে না।”
জবরদস্তি নয়
বিএনপি নেতা বলেন, “কোনো দাবি জোর করে চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। এনসিপি বলছে, গণপরিষদ ও সংসদ নির্বাচন একসাথে করতে হবে। আলোচনা হলে সম্মতিতে সমাধান আসবে, না হলে প্রচলিত বিধান মেনেই নির্বাচন হবে।”
তার মতে, “পরিবর্তন ধাপে ধাপে আসবে। রাতারাতি কিছু সম্ভব নয়। তবে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির চর্চার মধ্য দিয়েই আমরা বৈষম্যহীন, ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গড়তে পারব।”
অংশগ্রহণকারীরা
অর্পণ আলোক ফাউন্ডেশনের সভানেত্রী বীথিকা বিনতে হোসাইনের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ডিন আবদুস সালাম, এনসিপি নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ, ছাত্রদল নেতা আবিদুল ইসলাম খান, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী শেখ তানভীর বারী হামীম এবং এজিএস প্রার্থী তানভীর আল হাদী মায়েদ।