প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া এনসিপি নেতা আখতার হোসেনের ওপর ডিম নিক্ষেপে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোজাম্মেল হকের ‘অর্থায়ন’ থাকার কথা বলছে পুলিশ।
ঢাকার মহানগর হাকিম মো. সেফাতুল্লাহর আদালতে বৃহস্পতিবার রিমান্ড শুনানিতে এ কথা বলেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার এসআই আব্দুস সালাম।
এদিন গুলশান থানার সন্ত্রাসবিরোধ আইনের মামলায় নড়াইল-১ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তি এবং মোজাম্মেল হকের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন আব্দুস সালাম। বেলা পৌনে ৩টার দিকে তাদের এজলাসে তোলা হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুস সালাম দুজনের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আসামিরা আওয়ামী লীগের সব কর্মসূচির আয়োজক। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতারের ওপর নিউ ইয়র্কে ডিম নিক্ষেপে মোজাম্মেল হক বিকাশে টাকা দিয়েছেন। দেশকে অস্থিতিশীল, আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন ঘটাতে, দেশকে অস্থির করতে তারা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।”
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। তিনি বলেন, “আসামিরা হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার গ্রুপ খুলে সরকারবিরোধী কাজ করতেন। মুক্তি পেছন থেকে ভূমিকা পালন করেছে। তাদের সনাক্তে কাজ চলছিল। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “মুক্তি অবৈধ সংসদের সংসদ সদস্য। ফ্যাসিস্টের সহযোগী। নিউ ইয়র্কে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী তিন রাজনৈতিক দলের নেতাদের হয়রানি, মানহানি, অপমান করার চেষ্টা করেছেন। আখতারের ওপর ডিম নিক্ষেপ করেছেন। এতে মোজাম্মেল হকের যোগসাজস ও সহযোগিতা আছে। তিনি অর্থায়নও করেছেন।”
কবিরুল হক মুক্তির পক্ষে জাহাঙ্গীর আলম রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। তিনি বলেন, “বলা হচ্ছে, ছাত্রলীগ সন্ত্রাসবিরোধ কর্মকাণ্ড করছে। তার বয়স ৬০ বছর। ছাত্রলীগ করার বয়স নেই। জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হলে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। রিমান্ডে নেওয়ার মতো শারীরিকভাবে ফিট নন।”
আরেক আইনজীবী জনি সিকদার ডিম নিক্ষেপের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “আমাদের দেশে ডিম নিক্ষেপের প্রচলন ছিল না। সেই ডিম নিক্ষেপ নিউ ইয়র্কে চলে গেছে। আমাদের আদালত প্রাঙ্গণে বিচারপতি, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিদের ওপরও ডিম নিক্ষেপ করা হয়েছে।”
জবাবে ওমর ফারুক বলেন, “আমরা প্রসিকিউশন পক্ষ থেকে যদি ডিম নিক্ষেপ প্রটেক্ট না করতাম, দীপু মনিকে চাঁদপুর থেকে লোকজন এসেছিল নিয়ে যেতে। দোহার থেকে লোকজন এসেছিল সালমান এফ রহমানকে ধরে নিয়ে যেতে। ১৬ বছর মানুষের ওপর অত্যাচার করেছে; ভোট থেকে বঞ্চিত করেছে। গুম, খুন, অপহরণ করেছে। ফসল হিসেবে ডিম নিক্ষেপ পেয়েছে। নিজের জীবন বাজি রেখে ডিম নিক্ষেপ প্রটেক্ট করেছি।”
তবে মোজাম্মেলের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। তিনি আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলেন। আদালতকে জানান, “আমার বয়স ৭০ বছরের বেশি। ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপসহ নানা রোগে আক্রান্ত। ৫ অগাস্টের পর (গত বছর) রাজনীতিতে জড়িত ছিলাম না। বাঁচার তাগিদে রিমান্ড নামঞ্জুরের প্রার্থণা করছি।”
মোজাম্মেল হক বলেন, “শরীর অত্যন্ত খারাপ। আমাকে বাঁচতে দিন। বাঁচার সুযোগ করে দিন। কৃতজ্ঞ থাকব। দরকার হলে গুলশান থানায় যাব। সেখানো থাকব।”
পরে আদালত শুনানি নিয়ে প্রত্যেকের ৬ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেয়।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, গত ১২ সেপ্টেম্বর দুপুরে গুলশানের ফজলে রাব্বী পার্কের পাশে ‘নিষিদ্ধ’ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ব্যানার হাতে উসকানিমূলক স্লোগান দেন। এসময় তারা সড়কে ভাংচুরের চেষ্টা করে জনমনে ভীতি সঞ্চার করে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে পালানোর চেষ্টাকালে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং জব্দ করা হয় তাদের মোবাইল ফোন। এসব ফোনে ব্যবহৃত মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম গ্রুপ দেখে পুলিশ দেখতে পেয়েছে, আসামিরা রাষ্ট্রকে ‘অস্থিতিশীল ও রাষ্ট্রের অবকাঠামোকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে’ সংগঠিত হওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন।
এ মামলায় বাদী হয়েছেন গুলশান থানার এসআই মাহাবুব হোসাইন।
বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫
প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া এনসিপি নেতা আখতার হোসেনের ওপর ডিম নিক্ষেপে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোজাম্মেল হকের ‘অর্থায়ন’ থাকার কথা বলছে পুলিশ।
ঢাকার মহানগর হাকিম মো. সেফাতুল্লাহর আদালতে বৃহস্পতিবার রিমান্ড শুনানিতে এ কথা বলেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার এসআই আব্দুস সালাম।
এদিন গুলশান থানার সন্ত্রাসবিরোধ আইনের মামলায় নড়াইল-১ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য কবিরুল হক মুক্তি এবং মোজাম্মেল হকের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন আব্দুস সালাম। বেলা পৌনে ৩টার দিকে তাদের এজলাসে তোলা হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুস সালাম দুজনের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “আসামিরা আওয়ামী লীগের সব কর্মসূচির আয়োজক। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতারের ওপর নিউ ইয়র্কে ডিম নিক্ষেপে মোজাম্মেল হক বিকাশে টাকা দিয়েছেন। দেশকে অস্থিতিশীল, আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন ঘটাতে, দেশকে অস্থির করতে তারা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।”
রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। তিনি বলেন, “আসামিরা হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার গ্রুপ খুলে সরকারবিরোধী কাজ করতেন। মুক্তি পেছন থেকে ভূমিকা পালন করেছে। তাদের সনাক্তে কাজ চলছিল। পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “মুক্তি অবৈধ সংসদের সংসদ সদস্য। ফ্যাসিস্টের সহযোগী। নিউ ইয়র্কে প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী তিন রাজনৈতিক দলের নেতাদের হয়রানি, মানহানি, অপমান করার চেষ্টা করেছেন। আখতারের ওপর ডিম নিক্ষেপ করেছেন। এতে মোজাম্মেল হকের যোগসাজস ও সহযোগিতা আছে। তিনি অর্থায়নও করেছেন।”
কবিরুল হক মুক্তির পক্ষে জাহাঙ্গীর আলম রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। তিনি বলেন, “বলা হচ্ছে, ছাত্রলীগ সন্ত্রাসবিরোধ কর্মকাণ্ড করছে। তার বয়স ৬০ বছর। ছাত্রলীগ করার বয়স নেই। জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হলে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক। তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। রিমান্ডে নেওয়ার মতো শারীরিকভাবে ফিট নন।”
আরেক আইনজীবী জনি সিকদার ডিম নিক্ষেপের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “আমাদের দেশে ডিম নিক্ষেপের প্রচলন ছিল না। সেই ডিম নিক্ষেপ নিউ ইয়র্কে চলে গেছে। আমাদের আদালত প্রাঙ্গণে বিচারপতি, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিদের ওপরও ডিম নিক্ষেপ করা হয়েছে।”
জবাবে ওমর ফারুক বলেন, “আমরা প্রসিকিউশন পক্ষ থেকে যদি ডিম নিক্ষেপ প্রটেক্ট না করতাম, দীপু মনিকে চাঁদপুর থেকে লোকজন এসেছিল নিয়ে যেতে। দোহার থেকে লোকজন এসেছিল সালমান এফ রহমানকে ধরে নিয়ে যেতে। ১৬ বছর মানুষের ওপর অত্যাচার করেছে; ভোট থেকে বঞ্চিত করেছে। গুম, খুন, অপহরণ করেছে। ফসল হিসেবে ডিম নিক্ষেপ পেয়েছে। নিজের জীবন বাজি রেখে ডিম নিক্ষেপ প্রটেক্ট করেছি।”
তবে মোজাম্মেলের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। তিনি আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলেন। আদালতকে জানান, “আমার বয়স ৭০ বছরের বেশি। ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপসহ নানা রোগে আক্রান্ত। ৫ অগাস্টের পর (গত বছর) রাজনীতিতে জড়িত ছিলাম না। বাঁচার তাগিদে রিমান্ড নামঞ্জুরের প্রার্থণা করছি।”
মোজাম্মেল হক বলেন, “শরীর অত্যন্ত খারাপ। আমাকে বাঁচতে দিন। বাঁচার সুযোগ করে দিন। কৃতজ্ঞ থাকব। দরকার হলে গুলশান থানায় যাব। সেখানো থাকব।”
পরে আদালত শুনানি নিয়ে প্রত্যেকের ৬ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেয়।
মামলার বিবরণ অনুযায়ী, গত ১২ সেপ্টেম্বর দুপুরে গুলশানের ফজলে রাব্বী পার্কের পাশে ‘নিষিদ্ধ’ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ব্যানার হাতে উসকানিমূলক স্লোগান দেন। এসময় তারা সড়কে ভাংচুরের চেষ্টা করে জনমনে ভীতি সঞ্চার করে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে পালানোর চেষ্টাকালে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং জব্দ করা হয় তাদের মোবাইল ফোন। এসব ফোনে ব্যবহৃত মেসেঞ্জার, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম গ্রুপ দেখে পুলিশ দেখতে পেয়েছে, আসামিরা রাষ্ট্রকে ‘অস্থিতিশীল ও রাষ্ট্রের অবকাঠামোকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে’ সংগঠিত হওয়ার জন্য বিভিন্ন প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন।
এ মামলায় বাদী হয়েছেন গুলশান থানার এসআই মাহাবুব হোসাইন।